leadT1ad

দোহায় আলোচনার পর আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৪৩
কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর পর আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফের সাথে করমর্দন করছেন। ছবি: সংগৃহীত।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তান কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার পর তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই আলোচনায় দুই দেশ তাদের বিতর্কিত সীমান্তে সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসানে একমত হয়।

রবিবার সকালে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় যৌথ কাঠামো গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখা ও এর কার্যকারিতা যাচাই করতে শিগগিরই পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে শনিবার দুই দেশ দোহায় শান্তি আলোচনায় বসে। গত এক সপ্তাহের সংঘর্ষে বহু মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হয়। ২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা।

আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’ তিনি জানান, আফগানিস্তানের প্রতিনিধি দলটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। বৈঠকে সীমান্ত অতিক্রম করে সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ ও সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

দুই দেশের মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্তে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় যখন ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলার পর পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় বিমান হামলা চালায়।

তবে তালেবান সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়নি। বরং তারা অভিযোগ করে, পাকিস্তানই মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে এবং ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল)-এর যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে, যারা আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অন্যদিকে ইসলামাবাদ দাবি করেছে, আফগানিস্তান বহু বছর ধরে পাকিস্তানবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে, যারা পাকিস্তান সরকারের পতন ঘটিয়ে কট্টর ইসলামি শাসন কায়েমের চেষ্টা করতে চায়।

শুক্রবার সীমান্তের কাছে এক আত্মঘাতী হামলায় ৭জন পাকিস্তানি সেনা নিহত ও ১৩ জন আহত হন।

শনিবার এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেন, ‘আফগান সরকারকে অবশ্যই তাদের মদদপুষ্ট গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, যারা আফগান মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভেতরে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে।’

এ চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা প্রশমনের আশাবাদ দেখা দিয়েছে। যদিও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে আরও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আস্থার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত