স্ট্রিম ডেস্ক
গত শুক্রবার গ্রেস জিন ড্রেক্সেল চীনে থাকা তার বাবা খ্রিষ্টান ধর্মযাজক জিন মিনগ্রির কাছ থেকে একটি খুদে বার্তা পান। সেখানে গ্রেসকে বলা হয়, অপর এক ধর্মযাজককে পাওয়া যাচ্ছে না। তার জন্য যেন প্রার্থনা করে।
ওই বার্তায় বলা হয়, দক্ষিণের শেনজেন শহর ভ্রমণের সময় অন্যান্য খ্রিস্টান যাজকদেরও আটক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা গ্রেস জিন বিবিসিকে বলেন, এর কিছু পর মায়ের কাছ থেকে ফোন পান। এসময় মা তাকে জানায়, তার বাবার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এর কয়েক ঘণ্টা পরই পরিবারটি বুঝতে পারে মিনগ্রিকেও আটক করা হয়েছে। আর এই ধরপাকড় চীনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খ্রিস্টানদের আটকের ঘটনা।
চীনের কেউ কেউ এখন আশঙ্কা, গত সপ্তাহান্তে মিনগ্রির প্রতিষ্ঠিত জিওন চার্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ জন খ্রিস্টানকে আটক, চীনে গোপনে নির্মিত চার্চের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরুর ইঙ্গিত।
তারা চীনে নতুন হওয়া একটি আইনের কথা বলছেন। যে আইনের লক্ষ্য হলো গোপনে চলা চার্চের কর্মকান্ডের লাগাম টেনে ধরা এবং চার্চ সদস্যদের ওপর চাপ তৈরি করা।
নাস্তিক চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দেশ শাসন করলেও দেশটিতে কয়েক মিলিয়ন খ্রিস্টানের বসবাস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকারের হিসাবে, দেশটিতে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন প্রোটেস্ট্যান্ট এবং প্রায় ছয় মিলিয়ন ক্যাথলিক খ্রিস্টান রয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যা শুধু সরকারের অনুমোদিত ক্যাথোলিক প্যাট্রিয়টিক অ্যাসোসিয়েশন এবং প্রোটেস্টান থ্রি-সেল্ফ প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্টের সদস্য। এই সংগঠনগুলোর চীন এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য আছে।
অধিকার কর্মী এবং স্কলারদের ধারণা, চীনা লাখ লাখ খ্রিস্টান চার্চে যান যেগুলো চার্চ হাউস হিসেবে পরিচিত। তারা রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধ মেনে চলেন না।
বছরের পর বছর ধরে এসব চার্চের অধিকাংশের ওপরই সরকারের ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অংশ হিসেবে চাপ বাড়াচ্ছে। চার্চ ভবনগুলো গুঁড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে যেন দূর থেকে মানুষজন সেগুলো দেখতে না পায়। আর ধর্মীয় উপাদানগুলো পুলিশ ব্যাপাক নজরদারিতে রাখে। এছাড়া দেশটিতে কিছু খ্রিস্টান অ্যাপের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
প্রথমে ২০০৫ এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালে চীন সরকার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলার ওপর দেওয়া নিয়ম নীতির কড়াকড়ি করে। আর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ধর্মকে ‘চীনাকরণের’ আহ্বান জানান।
জিয়ওনের মতো গোপনে চলা চার্চগুলো বিশেষভাবে ২০১৮ সালের নিয়মে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে প্রার্থনার জন্য সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। এতে করে অনেকে প্রকাশ্যে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বাধ্য হন। আবার অনেকে অনলাইনে তা করেন। আবার অনেকে একেবারেই বন্ধে করে দেন।
এর পরের বছরগুলোতেও বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ধর্মযাজককে গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আবারও সেই কড়াকড়ি আরোপের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
মে মাসে জি’আনের লাইট অব জিওন চার্চের যাজক গাও কোয়ানফুকে ‘আইনের বাস্তবায়নকে দুর্বল করার জন্য কুসংস্কারাচ্ছন্ন কার্যকলপের’ অভিযোগে আটক করা হয়। পরের মাসে শানসির লিনফেন গোল্ডেন ল্যাম্পস্ট্যান্ড চার্চের বেশ কয়েকজন সদস্যকে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর কয়েক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অধিকার গোষ্ঠীগুলি এসব অভিযোগকে মিথ্যা বলে সমালোচনা করেছে।
এরপর সেপ্টেম্বরে চীন কর্তৃপক্ষ ধর্মীয় কর্মীদের জন্য নতুন একটি অনলাইন আচরণবিধি ঘোষণা করে। যেখানে বলা হয়, লাইসেন্সপ্রাপ্ত গোষ্ঠীগুলিই কেবল অনলাইন ধর্মোপদেশ দিতে পারবে। এই ঘোষণাকে গোপনে চালানো চার্চের অনলাইন পরিষেবা সীমিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জিন ড্রেক্সেল বলেন, গত কয়েক মাসে জিওন চার্চের সদস্যরা ক্রমবর্ধমানভাবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন।
তিনি বলেন, জিওনের অনেকেই এই বাড়তি চাপকে দমন-পীড়নের পূর্ব কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছেন। কিন্তু খুব কম লোকেরই ধারণা ছিল—এটি এত বড় আকার ধারণ করবে।
চার্চ সূত্র বলছে, গত শুক্রবার এবং শনিবার চীনা কর্তৃপক্ষ বেইজিং এবং সাংহাই সহ কমপক্ষে ১০টি শহরে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। গুয়াংজি প্রদেশের বেইহাই শহরে মিনগ্রিনের প্রধান ঘাঁটি থেকে তাকে আটক করা ছাড়াও, তারা অন্যান্য যাজক, নেতা এবং ধর্মসভার সদস্যদের আটক করেছে।
বিবিসি বেইহাইয়ের পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো কর্তৃক জারি করা মিনগ্রিনকে আটকের সরকারি নোটিশের একটি অনুলিপি পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তাকে বর্তমানে বেইহাই নম্বর টু কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ‘তথ্য নেটওয়ার্কের অবৈধ ব্যবহারের’ অভিযোগের সন্দেহ করা হচ্ছে। বিবিসি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে এর মধ্যে চার্চের কিছু আটক সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও অধিকাংশই এখনও আটক রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে মিনগ্রিনের সঙ্গে কারাগারে রাখা হয়েছে।
খ্রিস্টান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ লুক অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা কোরি জ্যাকসন বলেছেন, চীনজুড়ে গ্রেপ্তারের এই মাত্রা নজিরবিহীন। আমরা ধারণা করছি, এটি একটি বৃহত্তর অভিযানের মাত্র শুরু। চীনের অন্যান্য গোপন চার্চ সদস্যরা এখন আটক হওয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।
আরেকটি খ্রিস্টান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ, ওপেন ডোরসের এক মুখপাত্র বলেছে, ‘জিওন চার্চ খুব সুপরিচিত এবং স্পষ্টভাষী ছিল এবং এটি সম্ভবত সংগঠনের এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই এমন সংগঠিত সামাজিক গোষ্ঠী সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, চীনের চার্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নীতি অব্যাহত থাকবে’ এবং কর্তৃপক্ষ ‘ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবে’ চার্চের আরও সদস্যদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং অর্থনৈতিক অপরাধের অভিযোগও আনতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জিওন চার্চের একজন যাজক এবং মুখপাত্র শন লং বলেছেন, ‘চীনজুড়ে দ্রুত ধর্মীয় নিপীড়নের একটি নতুন ঢেউ উঠছে’, অন্যান্য চার্চগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হবে।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে চীনা নাগরিকরা আইন অনুসারে ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা উপভোগ করেন। তবে, সমস্ত ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধর্মীয় কার্যকলাপে চীনের আইন ও বিধি মেনে চলতে হবে।’
এই সপ্তাহের শুরুতে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন তারা ‘তথাকথিত ধর্মীয় বিষয়গুলোতে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে চীনের সরকারের বিরুদ্ধে শিনজিয়ান অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য তুর্কি মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটা এবং নিপীড়ন অথবা গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এ পর্যন্ত নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং আটক, নির্যাতন, ব্যাপক নজরদারি, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন, পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা, বাধ্যতামূলক শ্রম, যৌন সহিংসতা এবং প্রজনন অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, শিনজিয়ান প্রদেশে চীন উইঘুর মুসলমানদের প্রতি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ করেছে বলে জাতিসংঘও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
গত শুক্রবার গ্রেস জিন ড্রেক্সেল চীনে থাকা তার বাবা খ্রিষ্টান ধর্মযাজক জিন মিনগ্রির কাছ থেকে একটি খুদে বার্তা পান। সেখানে গ্রেসকে বলা হয়, অপর এক ধর্মযাজককে পাওয়া যাচ্ছে না। তার জন্য যেন প্রার্থনা করে।
ওই বার্তায় বলা হয়, দক্ষিণের শেনজেন শহর ভ্রমণের সময় অন্যান্য খ্রিস্টান যাজকদেরও আটক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা গ্রেস জিন বিবিসিকে বলেন, এর কিছু পর মায়ের কাছ থেকে ফোন পান। এসময় মা তাকে জানায়, তার বাবার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এর কয়েক ঘণ্টা পরই পরিবারটি বুঝতে পারে মিনগ্রিকেও আটক করা হয়েছে। আর এই ধরপাকড় চীনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খ্রিস্টানদের আটকের ঘটনা।
চীনের কেউ কেউ এখন আশঙ্কা, গত সপ্তাহান্তে মিনগ্রির প্রতিষ্ঠিত জিওন চার্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ জন খ্রিস্টানকে আটক, চীনে গোপনে নির্মিত চার্চের ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরুর ইঙ্গিত।
তারা চীনে নতুন হওয়া একটি আইনের কথা বলছেন। যে আইনের লক্ষ্য হলো গোপনে চলা চার্চের কর্মকান্ডের লাগাম টেনে ধরা এবং চার্চ সদস্যদের ওপর চাপ তৈরি করা।
নাস্তিক চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দেশ শাসন করলেও দেশটিতে কয়েক মিলিয়ন খ্রিস্টানের বসবাস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকারের হিসাবে, দেশটিতে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন প্রোটেস্ট্যান্ট এবং প্রায় ছয় মিলিয়ন ক্যাথলিক খ্রিস্টান রয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যা শুধু সরকারের অনুমোদিত ক্যাথোলিক প্যাট্রিয়টিক অ্যাসোসিয়েশন এবং প্রোটেস্টান থ্রি-সেল্ফ প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্টের সদস্য। এই সংগঠনগুলোর চীন এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য আছে।
অধিকার কর্মী এবং স্কলারদের ধারণা, চীনা লাখ লাখ খ্রিস্টান চার্চে যান যেগুলো চার্চ হাউস হিসেবে পরিচিত। তারা রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধ মেনে চলেন না।
বছরের পর বছর ধরে এসব চার্চের অধিকাংশের ওপরই সরকারের ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অংশ হিসেবে চাপ বাড়াচ্ছে। চার্চ ভবনগুলো গুঁড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে যেন দূর থেকে মানুষজন সেগুলো দেখতে না পায়। আর ধর্মীয় উপাদানগুলো পুলিশ ব্যাপাক নজরদারিতে রাখে। এছাড়া দেশটিতে কিছু খ্রিস্টান অ্যাপের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
প্রথমে ২০০৫ এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালে চীন সরকার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলার ওপর দেওয়া নিয়ম নীতির কড়াকড়ি করে। আর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ধর্মকে ‘চীনাকরণের’ আহ্বান জানান।
জিয়ওনের মতো গোপনে চলা চার্চগুলো বিশেষভাবে ২০১৮ সালের নিয়মে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে প্রার্থনার জন্য সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। এতে করে অনেকে প্রকাশ্যে ধর্মীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বাধ্য হন। আবার অনেকে অনলাইনে তা করেন। আবার অনেকে একেবারেই বন্ধে করে দেন।
এর পরের বছরগুলোতেও বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ধর্মযাজককে গ্রেপ্তার ও সাজা দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আবারও সেই কড়াকড়ি আরোপের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
মে মাসে জি’আনের লাইট অব জিওন চার্চের যাজক গাও কোয়ানফুকে ‘আইনের বাস্তবায়নকে দুর্বল করার জন্য কুসংস্কারাচ্ছন্ন কার্যকলপের’ অভিযোগে আটক করা হয়। পরের মাসে শানসির লিনফেন গোল্ডেন ল্যাম্পস্ট্যান্ড চার্চের বেশ কয়েকজন সদস্যকে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর কয়েক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অধিকার গোষ্ঠীগুলি এসব অভিযোগকে মিথ্যা বলে সমালোচনা করেছে।
এরপর সেপ্টেম্বরে চীন কর্তৃপক্ষ ধর্মীয় কর্মীদের জন্য নতুন একটি অনলাইন আচরণবিধি ঘোষণা করে। যেখানে বলা হয়, লাইসেন্সপ্রাপ্ত গোষ্ঠীগুলিই কেবল অনলাইন ধর্মোপদেশ দিতে পারবে। এই ঘোষণাকে গোপনে চালানো চার্চের অনলাইন পরিষেবা সীমিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জিন ড্রেক্সেল বলেন, গত কয়েক মাসে জিওন চার্চের সদস্যরা ক্রমবর্ধমানভাবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন।
তিনি বলেন, জিওনের অনেকেই এই বাড়তি চাপকে দমন-পীড়নের পূর্ব কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছেন। কিন্তু খুব কম লোকেরই ধারণা ছিল—এটি এত বড় আকার ধারণ করবে।
চার্চ সূত্র বলছে, গত শুক্রবার এবং শনিবার চীনা কর্তৃপক্ষ বেইজিং এবং সাংহাই সহ কমপক্ষে ১০টি শহরে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। গুয়াংজি প্রদেশের বেইহাই শহরে মিনগ্রিনের প্রধান ঘাঁটি থেকে তাকে আটক করা ছাড়াও, তারা অন্যান্য যাজক, নেতা এবং ধর্মসভার সদস্যদের আটক করেছে।
বিবিসি বেইহাইয়ের পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো কর্তৃক জারি করা মিনগ্রিনকে আটকের সরকারি নোটিশের একটি অনুলিপি পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তাকে বর্তমানে বেইহাই নম্বর টু কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ‘তথ্য নেটওয়ার্কের অবৈধ ব্যবহারের’ অভিযোগের সন্দেহ করা হচ্ছে। বিবিসি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে এর মধ্যে চার্চের কিছু আটক সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও অধিকাংশই এখনও আটক রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে মিনগ্রিনের সঙ্গে কারাগারে রাখা হয়েছে।
খ্রিস্টান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ লুক অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা কোরি জ্যাকসন বলেছেন, চীনজুড়ে গ্রেপ্তারের এই মাত্রা নজিরবিহীন। আমরা ধারণা করছি, এটি একটি বৃহত্তর অভিযানের মাত্র শুরু। চীনের অন্যান্য গোপন চার্চ সদস্যরা এখন আটক হওয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।
আরেকটি খ্রিস্টান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ, ওপেন ডোরসের এক মুখপাত্র বলেছে, ‘জিওন চার্চ খুব সুপরিচিত এবং স্পষ্টভাষী ছিল এবং এটি সম্ভবত সংগঠনের এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই এমন সংগঠিত সামাজিক গোষ্ঠী সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, চীনের চার্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নীতি অব্যাহত থাকবে’ এবং কর্তৃপক্ষ ‘ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবে’ চার্চের আরও সদস্যদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং অর্থনৈতিক অপরাধের অভিযোগও আনতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জিওন চার্চের একজন যাজক এবং মুখপাত্র শন লং বলেছেন, ‘চীনজুড়ে দ্রুত ধর্মীয় নিপীড়নের একটি নতুন ঢেউ উঠছে’, অন্যান্য চার্চগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হবে।
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে চীনা নাগরিকরা আইন অনুসারে ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতা উপভোগ করেন। তবে, সমস্ত ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধর্মীয় কার্যকলাপে চীনের আইন ও বিধি মেনে চলতে হবে।’
এই সপ্তাহের শুরুতে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন তারা ‘তথাকথিত ধর্মীয় বিষয়গুলোতে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের দৃঢ় বিরোধিতা করে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে চীনের সরকারের বিরুদ্ধে শিনজিয়ান অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য তুর্কি মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটা এবং নিপীড়ন অথবা গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এ পর্যন্ত নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং আটক, নির্যাতন, ব্যাপক নজরদারি, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন, পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা, বাধ্যতামূলক শ্রম, যৌন সহিংসতা এবং প্রজনন অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, শিনজিয়ান প্রদেশে চীন উইঘুর মুসলমানদের প্রতি ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’ করেছে বলে জাতিসংঘও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি ভেনিজুয়েলায় গোপন অভিযান চালাতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিআইএ) অনুমতি দিয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগেপ্রচ্ছদে দেওয়া ট্রাম্পের ছবিটি নিচের দিক থেকে তোলা হয়েছে। ছবির পেছনে ছিল উজ্জ্বল সূর্যের আলো, যা তাঁর মুখ ও মাথার অংশ ছায়ার আড়ালে ফেলে দেয়। এতে তাঁর পরিচিত চুলের ছাঁট অদৃশ্য হয়ে যায়। মাথার ওপরে একটি ঝাপসা আলো যেন একটি ছোট মুকুটের মতো দেখা যায়।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে উন্নত টমাহক ক্রুজ মিসাইল সরবরাহ করতে পারে। এর মাধ্যমে মস্কোকে ইউক্রেনে আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য চাপ দেওয়া হবে। এর জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট দফতর ক্রেমলিন তাৎক্ষণিকভাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায়।
১ দিন আগেগাজার স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামোগত ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে পদ্ধতিগতভাবে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে গাজার হাসপাতালগুলো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
১ দিন আগে