স্ট্রিম ডেস্ক
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আলি শামখানির মেয়ের পশ্চিমা ধাঁচের বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সেদেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ইরানজুড়ে ক্ষমতাবান শ্রেণির দ্বিচারিতা ও বিশেষ সুবিধাভোগের অভিযোগকে আরও উসকে দিয়েছে। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন দেশটির সরকার নারীদের পোশাকবিধি নিয়ে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে। সাধারণ ইরানিদের দারিদ্র্যপীড়িত বাস্তবতার সঙ্গেও এক তীব্র বৈপরীত্য তৈরি করে এই দৃশ্য।
গত ১৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য শামখানি তাঁর মেয়ে ফাতেমেহকে নিয়ে তেহরানের বিলাসবহুল এসপিনাস প্যালেস হোটেলে প্রবেশ করছেন। অনুষ্ঠানটি পশ্চিমা ধাঁচে সাজানো ছিল। কনে ও তাঁর মায়ের পোশাককে অনেকেই দেশের প্রচলিত হিজাব ও শালীনতা আইনবিরোধী বলে সমালোচনা করেছেন।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, শামখানির মেয়ে হিজাব ছাড়া স্ট্র্যাপলেস গাউন পরে বিয়েতে অংশ নিচ্ছেন। কনে একটি খোলা গলার সাদা স্ট্র্যাপলেস পোশাক ও হালকা স্বচ্ছ ঘোমটা পরেছিলেন, যা তাঁর চুল প্রায় ঢাকতেই পারেনি। শামখানির স্ত্রীকে দেখা গেছে নীল লেসের পোশাকে, যার পেছন খোলা ও মাথায় কোনো ওড়না নেই। উপস্থিত আরও কয়েকজন নারীও ছিলেন বিনা হিজাবে।
বিয়েটি অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের এপ্রিলে। ইরানি গণমাধ্যম তখন অনুমান করেছিল, এর ব্যয় প্রায় ১৪ বিলিয়ন রিয়াল বা ২১ হাজার ডলার। পরিবারটি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সাধারণত এমন আয়োজন গোপনে হয়। এক ব্যবহারকারী এক্সে লিখেছেন, ‘ভণ্ডামি না থাকলে এত গোপনীয়তার দরকার হতো না।’
প্রভাবশালীদের বিলাসিতা
এক্সের কিছু ব্যবহারকারী বলেছেন, এই বিয়েটি খুব আলাদা নয়; অনেক ইরানির বিয়েও ব্যয়বহুল হয়। তবে অনেকের কাছে এটি ক্ষমতাবানদের পরিচিত ভণ্ডামির আরেক উদাহরণ। নেতারা প্রকাশ্যে সাদাসিধে জীবনযাপনের প্রচার করেন, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বিলাসিতা উপভোগ করেন।
২০২২ সালে সংসদ স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফও একই রকম বিতর্কে জড়ান। তাঁর স্ত্রী ও সন্তান তুরস্ক থেকে বিলাসবহুল শিশুপণ্য এনে দেশে ফিরেছিলেন। ঘটনাটি ‘লেইয়েত-গেট’ নামে পরিচিত হয় এবং তাঁর ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার সময় আবার আলোচনায় আসে।
ইরানের দীর্ঘ অর্থনৈতিক সংকট এখন জনঅসন্তোষ আরও বাড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি ও ৪০ শতাংশেরও বেশি মুদ্রাস্ফীতির ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি প্রায় বিলুপ্ত। লাখো মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। তরুণরা ক্রমবর্ধমান খরচের কারণে বিয়ে করতে পারছে না।
নির্বাসিত ইরানি কর্মী ও সাংবাদিক মসিহ আলিনেজাদ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ইরানের লিঙ্গবৈষম্য নীতির সমালোচক, ‘এক্সে’ লিখেছেন, ‘আলি শামখানির মেয়ে—যিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের অন্যতম কট্টর কর্মকর্তা—স্ট্র্যাপলেস পোশাকে বিলাসবহুল বিয়ে করেছেন। অথচ ইরানে নারীরা চুল দেখা যাওয়ার জন্য মারধরের শিকার হন, আর তরুণরা বিয়ে করার সামর্থ্য হারিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা ভণ্ডামি নয়, এটা পুরো ব্যবস্থার প্রতিফলন। তারা জনগণকে শালীনতার শিক্ষা দেয়, অথচ নিজেদের মেয়েরা ডিজাইনার পোশাকে প্যারেড করে। বার্তাটি স্পষ্ট—আইন শুধু তোমাদের জন্য, তাদের জন্য নয়।’ আলিনেজাদের এই পোস্ট কোটি মানুষ দেখেছেন, যা সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও হতাশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
অন্য প্রতিক্রিয়াগুলোও ছিল তীব্র। নারী অধিকারকর্মী এলি ওমিদভারি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘তাদের কনে প্রাসাদে, আর আমাদের কনে মাটির নিচে। তিনি ইঙ্গিত করেন মাহসা আমিনি ও ২০২২ সালের আন্দোলনে নিহত তরুণীদের প্রতি, যাদের কেউ কেউ ছিলেন সদ্যবিবাহিতা।
ইরানি সাংবাদিক আমির হোসেইন মুসাল্লা মন্তব্য করেন, ‘এই শাসকগোষ্ঠীর নিজেরাই তাদের ঘোষিত আইনে বিশ্বাস করে না; তারা কেবল মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে চায়।’
মসজিদে বিয়ে থেকে বিলাসবহুল হোটেলে বিয়ে
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র। অনেকে বলেছেন, সাধারণ মানুষ যখন নিত্যপ্রয়োজনে হিমশিম খায়, তখন শাসকশ্রেণি তাদের বিলাসিতা দেখাচ্ছে। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের নেতারা যে সরল জীবন ও পুঁজিবাদবিরোধী স্লোগান দেন, তা ‘মিথ্যা ও প্রতারণা’।
আরেকজন লিখেছেন, ‘যখন লাখো তরুণ সাধারণ বিয়ের খরচও বহন করতে পারে না, তখন এসব কর্মকর্তার যে কোনো বিলাসী অনুষ্ঠানই অনৈতিক ও হারাম।’
অন্য একজন ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘আপনারা যত খুশি বিলাসবহুল পার্টি দিন, আপত্তি নেই। কিন্তু বলবেন না, নিষেধাজ্ঞা জনগণের জন্য আশীর্বাদ। মানুষ যখন দারিদ্র্যে বাঁচে, তখন বিয়ে করুন মসজিদে, এসপিনাস প্যালেসে নয়।’
এই কেলেঙ্কারি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন ইরানে আবার হিজাব আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। নৈতিক পুলিশ রাস্তায় ফিরেছে। এই পরিস্থিতিতে উন্মুক্ত পোশাক ও বিলাসী সাজসজ্জার বিয়ের ছবি জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
‘সন অব নিটশে’ নামের এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘এই ভিডিওটাই ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি—শাসকেরা জনগণের ওপর হিজাব চাপিয়ে দেন, তাদের দরিদ্র রাখেন, আর নিজেদের সন্তানদের জন্য আয়োজন করেন হিজাববিহীন বিলাসবহুল বিয়ে।’
রক্ষণশীলদের মধ্যেও ক্ষোভ
এই বিতর্কে ইরানের কট্টর রক্ষণশীল মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অতিরক্ষণশীল রাজনীতিক আলি আকবর রায়েফিপুর ‘এক্সে’ লিখেছেন, ‘আমরা জনগণকে নিষেধাজ্ঞার কষ্ট সহ্য করতে বলি, অথচ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক মহাসচিব নিজের মেয়ের বিয়ে করান দেশের সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেলে—এটা কি গ্রহণযোগ্য?”
তিনি ব্যঙ্গ করে আরও প্রশ্ন করেন, ‘এমন অনুষ্ঠানের বাইরে কি হিজাব টহল ভ্যানও থাকবে?’
আরেক রক্ষণশীল ব্যবহারকারী সাইয়্যেদ আলি মুসাভি মন্তব্য করেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় প্রকাশ পাওয়া শামখানির প্রাসাদ থেকে শুরু করে তাঁর সন্তানদের তেল ব্যবসা ও এখন এই ব্যয়বহুল বিয়ে—সব মিলিয়ে তাঁর জীবনযাপন সাধারণ মানুষের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এই বিলাসিতা ও তাঁর কথাবার্তা জনগণের বিশ্বাস ধ্বংস করছে।’
অডিও অ্যাপ ক্লাবহাউসে একদল রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ইরান-ইরাক যুদ্ধের সাবেক যোদ্ধা শামখানির পদত্যাগ ও প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান। তাঁদের মতে, এই আয়োজন ছিল বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে এক স্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা।
সংস্কারপন্থি দৈনিক শার্ঘ প্রথম পাতায় আলি শামখানির বড় ছবি ছেপে শিরোনাম দেয়— ‘কেলেঙ্কারিতে ডুবে গেলেন’।
অন্যদিকে, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড (আইআরজিসি)-ঘনিষ্ঠ তাসনিম নিউজ এজেন্সি ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে ‘নৈতিকতার পরিপন্থী’বলে সমালোচনা করলেও স্বীকার করেছে, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের জীবনযাপন অবশ্যই জনগণের কাছে যুক্তিসঙ্গত ও রক্ষাযোগ্য হতে হবে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ডন—এর ইরান বিশেষজ্ঞ ওমিদ মেমারিয়ান দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস–কে বলেন, ‘এটাই ভণ্ডামির সবচেয়ে খাঁটি রূপ।’
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার সাবেক প্রধান এজতোল্লাহ জারঘামি শামখানির পক্ষসমর্থন করে বলেন, ভিডিওতে দেখা দৃশ্য ছিল নারীদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান। তিনি দাবি করেন, ‘শামখানি মাথা নিচু করে মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন; উপস্থিতদের কেউ কেউ পর্দানশীন ছিলেন, বাকিরা ছিলেন নিকটাত্মীয়।’
জারঘামি আরও অভিযোগ করেন, ভিডিওটি ইসরায়েল ফাঁস করেছে। তাঁর ভাষায়, ‘মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হ্যাক করে ভিডিও ছড়ানোই এখন ইসরায়েলের নতুন হত্যার কৌশল।’
শামখানিও নিজের প্রতিক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জমূলক সুর নেন। তিনি ইসরায়েলকে ভিডিও ফাঁসের জন্য দায়ী করে বলেন, এটি ‘মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হ্যাক করে হত্যার নতুন কৌশল।’
নিজের সরকারি ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে তিনি ১৯৭৩ সালের চলচ্চিত্র পাপিয়োঁ থেকে একটি সংলাপ উদ্ধৃত করেন— ‘এই বদমাশরা, আমি এখনো বেঁচে আছি।’ তিনি এটি প্রথমে ফারসি, পরে হিব্রু ভাষায় পোস্ট করেন— যা তেল আবিবের উদ্দেশে এক স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার সময়টিও তাৎপর্যপূর্ণ। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা তুঙ্গে থাকা অবস্থায়, গত জুনে তেহরানে শামখানির বাসভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছিল, যেখান থেকে তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান।
শামখানিকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়
৭০ বছর বয়সী শামখানিকে বিতর্ক নতুর নয়। একসময় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) নৌবাহিনীর কমান্ডারও ছিলেন। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ অবস্থায় তিনি ধর্মীয় শালীনতার কঠোর আইন বলবৎ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
২০২২ সালের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের সময়—যা ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে শুরু হয়েছিল—শামখানি ওই কঠোর দমননীতি তদারকি করেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ওই সময় ৫০০-এ বেশি মানুষ নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৬৮ জন ছিল শিশু এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই সময় শামখানি এক সাংসদকে বলেন, ‘আমরা তাদের আক্রমণ করব যতক্ষণ না তারা বাড়ি ফিরে যায়।’ তার এই বক্তব্য ছিল হিজাব নীতিভঙ্গকারী প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে।
এ ছাড়া শামখানির ব্যক্তিগত বিলাসিতার অভিযোগের ক্ষেত্রেও এটি প্রথম নয়। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ও তাঁর দুই ছেলেকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে। অভিযোগ ছিল, তারা এক গোপন শিপিং নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছিল, যা তেলের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চীন ও রাশিয়ায় তেল সরবরাহ করত এবং সেখান থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করত।
সমালোচকদের মতে, শামখানি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনে অনাগ্রহী ছিলেন, কারণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তাঁর পরিবারের আর্থিক স্বার্থ ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। ফলে তাঁর প্রকাশ্য ধর্মভীরুতা ও ব্যক্তিগত বিলাসিতা—দুইয়ের বৈপরীত্য আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এখন এই বিয়ের ভিডিও আবারও ছড়িয়ে পড়ায় ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বৈধতা নিয়ে বিতর্ক নতুন করে উত্থাপিত হয়েছে। অনেক ইরানির কাছে এই বিয়ে শুধু ব্যক্তিগত অনিয়ম নয়, বরং গোটা ব্যবস্থার নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি।
যে শাসনব্যবস্থা জনগণের ওপর লাঠি চালায় হিজাব রক্ষার নামে, তারই অভিভাবকেরা প্রাসাদে বসে হিজাবহীন বিলাসে মেতে ওঠে—এই বৈপরীত্য ইরানে তীব্র জনরোষ তৈরি করেছে।
অর্থনৈতিক সংকট ও ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যে এই কেলেঙ্কারি হয়তো দেশটিতে আরও বড় অস্থিরতার সূচনা করতে পারে, যা ইরানের শাসক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর বিভাজনকে নগ্নভাবে প্রকাশ করেছে।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আলি শামখানির মেয়ের পশ্চিমা ধাঁচের বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সেদেশে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ইরানজুড়ে ক্ষমতাবান শ্রেণির দ্বিচারিতা ও বিশেষ সুবিধাভোগের অভিযোগকে আরও উসকে দিয়েছে। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন দেশটির সরকার নারীদের পোশাকবিধি নিয়ে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে। সাধারণ ইরানিদের দারিদ্র্যপীড়িত বাস্তবতার সঙ্গেও এক তীব্র বৈপরীত্য তৈরি করে এই দৃশ্য।
গত ১৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য শামখানি তাঁর মেয়ে ফাতেমেহকে নিয়ে তেহরানের বিলাসবহুল এসপিনাস প্যালেস হোটেলে প্রবেশ করছেন। অনুষ্ঠানটি পশ্চিমা ধাঁচে সাজানো ছিল। কনে ও তাঁর মায়ের পোশাককে অনেকেই দেশের প্রচলিত হিজাব ও শালীনতা আইনবিরোধী বলে সমালোচনা করেছেন।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, শামখানির মেয়ে হিজাব ছাড়া স্ট্র্যাপলেস গাউন পরে বিয়েতে অংশ নিচ্ছেন। কনে একটি খোলা গলার সাদা স্ট্র্যাপলেস পোশাক ও হালকা স্বচ্ছ ঘোমটা পরেছিলেন, যা তাঁর চুল প্রায় ঢাকতেই পারেনি। শামখানির স্ত্রীকে দেখা গেছে নীল লেসের পোশাকে, যার পেছন খোলা ও মাথায় কোনো ওড়না নেই। উপস্থিত আরও কয়েকজন নারীও ছিলেন বিনা হিজাবে।
বিয়েটি অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের এপ্রিলে। ইরানি গণমাধ্যম তখন অনুমান করেছিল, এর ব্যয় প্রায় ১৪ বিলিয়ন রিয়াল বা ২১ হাজার ডলার। পরিবারটি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সাধারণত এমন আয়োজন গোপনে হয়। এক ব্যবহারকারী এক্সে লিখেছেন, ‘ভণ্ডামি না থাকলে এত গোপনীয়তার দরকার হতো না।’
প্রভাবশালীদের বিলাসিতা
এক্সের কিছু ব্যবহারকারী বলেছেন, এই বিয়েটি খুব আলাদা নয়; অনেক ইরানির বিয়েও ব্যয়বহুল হয়। তবে অনেকের কাছে এটি ক্ষমতাবানদের পরিচিত ভণ্ডামির আরেক উদাহরণ। নেতারা প্রকাশ্যে সাদাসিধে জীবনযাপনের প্রচার করেন, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বিলাসিতা উপভোগ করেন।
২০২২ সালে সংসদ স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফও একই রকম বিতর্কে জড়ান। তাঁর স্ত্রী ও সন্তান তুরস্ক থেকে বিলাসবহুল শিশুপণ্য এনে দেশে ফিরেছিলেন। ঘটনাটি ‘লেইয়েত-গেট’ নামে পরিচিত হয় এবং তাঁর ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার সময় আবার আলোচনায় আসে।
ইরানের দীর্ঘ অর্থনৈতিক সংকট এখন জনঅসন্তোষ আরও বাড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি ও ৪০ শতাংশেরও বেশি মুদ্রাস্ফীতির ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি প্রায় বিলুপ্ত। লাখো মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। তরুণরা ক্রমবর্ধমান খরচের কারণে বিয়ে করতে পারছে না।
নির্বাসিত ইরানি কর্মী ও সাংবাদিক মসিহ আলিনেজাদ, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ইরানের লিঙ্গবৈষম্য নীতির সমালোচক, ‘এক্সে’ লিখেছেন, ‘আলি শামখানির মেয়ে—যিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের অন্যতম কট্টর কর্মকর্তা—স্ট্র্যাপলেস পোশাকে বিলাসবহুল বিয়ে করেছেন। অথচ ইরানে নারীরা চুল দেখা যাওয়ার জন্য মারধরের শিকার হন, আর তরুণরা বিয়ে করার সামর্থ্য হারিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা ভণ্ডামি নয়, এটা পুরো ব্যবস্থার প্রতিফলন। তারা জনগণকে শালীনতার শিক্ষা দেয়, অথচ নিজেদের মেয়েরা ডিজাইনার পোশাকে প্যারেড করে। বার্তাটি স্পষ্ট—আইন শুধু তোমাদের জন্য, তাদের জন্য নয়।’ আলিনেজাদের এই পোস্ট কোটি মানুষ দেখেছেন, যা সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও হতাশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
অন্য প্রতিক্রিয়াগুলোও ছিল তীব্র। নারী অধিকারকর্মী এলি ওমিদভারি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘তাদের কনে প্রাসাদে, আর আমাদের কনে মাটির নিচে। তিনি ইঙ্গিত করেন মাহসা আমিনি ও ২০২২ সালের আন্দোলনে নিহত তরুণীদের প্রতি, যাদের কেউ কেউ ছিলেন সদ্যবিবাহিতা।
ইরানি সাংবাদিক আমির হোসেইন মুসাল্লা মন্তব্য করেন, ‘এই শাসকগোষ্ঠীর নিজেরাই তাদের ঘোষিত আইনে বিশ্বাস করে না; তারা কেবল মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে চায়।’
মসজিদে বিয়ে থেকে বিলাসবহুল হোটেলে বিয়ে
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র। অনেকে বলেছেন, সাধারণ মানুষ যখন নিত্যপ্রয়োজনে হিমশিম খায়, তখন শাসকশ্রেণি তাদের বিলাসিতা দেখাচ্ছে। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের নেতারা যে সরল জীবন ও পুঁজিবাদবিরোধী স্লোগান দেন, তা ‘মিথ্যা ও প্রতারণা’।
আরেকজন লিখেছেন, ‘যখন লাখো তরুণ সাধারণ বিয়ের খরচও বহন করতে পারে না, তখন এসব কর্মকর্তার যে কোনো বিলাসী অনুষ্ঠানই অনৈতিক ও হারাম।’
অন্য একজন ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘আপনারা যত খুশি বিলাসবহুল পার্টি দিন, আপত্তি নেই। কিন্তু বলবেন না, নিষেধাজ্ঞা জনগণের জন্য আশীর্বাদ। মানুষ যখন দারিদ্র্যে বাঁচে, তখন বিয়ে করুন মসজিদে, এসপিনাস প্যালেসে নয়।’
এই কেলেঙ্কারি ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন ইরানে আবার হিজাব আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। নৈতিক পুলিশ রাস্তায় ফিরেছে। এই পরিস্থিতিতে উন্মুক্ত পোশাক ও বিলাসী সাজসজ্জার বিয়ের ছবি জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
‘সন অব নিটশে’ নামের এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘এই ভিডিওটাই ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি—শাসকেরা জনগণের ওপর হিজাব চাপিয়ে দেন, তাদের দরিদ্র রাখেন, আর নিজেদের সন্তানদের জন্য আয়োজন করেন হিজাববিহীন বিলাসবহুল বিয়ে।’
রক্ষণশীলদের মধ্যেও ক্ষোভ
এই বিতর্কে ইরানের কট্টর রক্ষণশীল মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অতিরক্ষণশীল রাজনীতিক আলি আকবর রায়েফিপুর ‘এক্সে’ লিখেছেন, ‘আমরা জনগণকে নিষেধাজ্ঞার কষ্ট সহ্য করতে বলি, অথচ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক মহাসচিব নিজের মেয়ের বিয়ে করান দেশের সবচেয়ে বিলাসবহুল হোটেলে—এটা কি গ্রহণযোগ্য?”
তিনি ব্যঙ্গ করে আরও প্রশ্ন করেন, ‘এমন অনুষ্ঠানের বাইরে কি হিজাব টহল ভ্যানও থাকবে?’
আরেক রক্ষণশীল ব্যবহারকারী সাইয়্যেদ আলি মুসাভি মন্তব্য করেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় প্রকাশ পাওয়া শামখানির প্রাসাদ থেকে শুরু করে তাঁর সন্তানদের তেল ব্যবসা ও এখন এই ব্যয়বহুল বিয়ে—সব মিলিয়ে তাঁর জীবনযাপন সাধারণ মানুষের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। এই বিলাসিতা ও তাঁর কথাবার্তা জনগণের বিশ্বাস ধ্বংস করছে।’
অডিও অ্যাপ ক্লাবহাউসে একদল রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ইরান-ইরাক যুদ্ধের সাবেক যোদ্ধা শামখানির পদত্যাগ ও প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান। তাঁদের মতে, এই আয়োজন ছিল বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে এক স্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা।
সংস্কারপন্থি দৈনিক শার্ঘ প্রথম পাতায় আলি শামখানির বড় ছবি ছেপে শিরোনাম দেয়— ‘কেলেঙ্কারিতে ডুবে গেলেন’।
অন্যদিকে, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড (আইআরজিসি)-ঘনিষ্ঠ তাসনিম নিউজ এজেন্সি ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে ‘নৈতিকতার পরিপন্থী’বলে সমালোচনা করলেও স্বীকার করেছে, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের জীবনযাপন অবশ্যই জনগণের কাছে যুক্তিসঙ্গত ও রক্ষাযোগ্য হতে হবে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ডন—এর ইরান বিশেষজ্ঞ ওমিদ মেমারিয়ান দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস–কে বলেন, ‘এটাই ভণ্ডামির সবচেয়ে খাঁটি রূপ।’
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার সাবেক প্রধান এজতোল্লাহ জারঘামি শামখানির পক্ষসমর্থন করে বলেন, ভিডিওতে দেখা দৃশ্য ছিল নারীদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান। তিনি দাবি করেন, ‘শামখানি মাথা নিচু করে মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন; উপস্থিতদের কেউ কেউ পর্দানশীন ছিলেন, বাকিরা ছিলেন নিকটাত্মীয়।’
জারঘামি আরও অভিযোগ করেন, ভিডিওটি ইসরায়েল ফাঁস করেছে। তাঁর ভাষায়, ‘মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হ্যাক করে ভিডিও ছড়ানোই এখন ইসরায়েলের নতুন হত্যার কৌশল।’
শামখানিও নিজের প্রতিক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জমূলক সুর নেন। তিনি ইসরায়েলকে ভিডিও ফাঁসের জন্য দায়ী করে বলেন, এটি ‘মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হ্যাক করে হত্যার নতুন কৌশল।’
নিজের সরকারি ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে তিনি ১৯৭৩ সালের চলচ্চিত্র পাপিয়োঁ থেকে একটি সংলাপ উদ্ধৃত করেন— ‘এই বদমাশরা, আমি এখনো বেঁচে আছি।’ তিনি এটি প্রথমে ফারসি, পরে হিব্রু ভাষায় পোস্ট করেন— যা তেল আবিবের উদ্দেশে এক স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার সময়টিও তাৎপর্যপূর্ণ। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা তুঙ্গে থাকা অবস্থায়, গত জুনে তেহরানে শামখানির বাসভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছিল, যেখান থেকে তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান।
শামখানিকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়
৭০ বছর বয়সী শামখানিকে বিতর্ক নতুর নয়। একসময় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) নৌবাহিনীর কমান্ডারও ছিলেন। ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ অবস্থায় তিনি ধর্মীয় শালীনতার কঠোর আইন বলবৎ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
২০২২ সালের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের সময়—যা ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে শুরু হয়েছিল—শামখানি ওই কঠোর দমননীতি তদারকি করেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ওই সময় ৫০০-এ বেশি মানুষ নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ৬৮ জন ছিল শিশু এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই সময় শামখানি এক সাংসদকে বলেন, ‘আমরা তাদের আক্রমণ করব যতক্ষণ না তারা বাড়ি ফিরে যায়।’ তার এই বক্তব্য ছিল হিজাব নীতিভঙ্গকারী প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে।
এ ছাড়া শামখানির ব্যক্তিগত বিলাসিতার অভিযোগের ক্ষেত্রেও এটি প্রথম নয়। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ও তাঁর দুই ছেলেকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে। অভিযোগ ছিল, তারা এক গোপন শিপিং নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছিল, যা তেলের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চীন ও রাশিয়ায় তেল সরবরাহ করত এবং সেখান থেকে বিপুল অর্থ উপার্জন করত।
সমালোচকদের মতে, শামখানি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবনে অনাগ্রহী ছিলেন, কারণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই তাঁর পরিবারের আর্থিক স্বার্থ ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। ফলে তাঁর প্রকাশ্য ধর্মভীরুতা ও ব্যক্তিগত বিলাসিতা—দুইয়ের বৈপরীত্য আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এখন এই বিয়ের ভিডিও আবারও ছড়িয়ে পড়ায় ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বৈধতা নিয়ে বিতর্ক নতুন করে উত্থাপিত হয়েছে। অনেক ইরানির কাছে এই বিয়ে শুধু ব্যক্তিগত অনিয়ম নয়, বরং গোটা ব্যবস্থার নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি।
যে শাসনব্যবস্থা জনগণের ওপর লাঠি চালায় হিজাব রক্ষার নামে, তারই অভিভাবকেরা প্রাসাদে বসে হিজাবহীন বিলাসে মেতে ওঠে—এই বৈপরীত্য ইরানে তীব্র জনরোষ তৈরি করেছে।
অর্থনৈতিক সংকট ও ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যে এই কেলেঙ্কারি হয়তো দেশটিতে আরও বড় অস্থিরতার সূচনা করতে পারে, যা ইরানের শাসক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর বিভাজনকে নগ্নভাবে প্রকাশ করেছে।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় একাধিক গাড়ির সংঘর্ষে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানী কাম্পালা ও গুলু শহরের মধ্যকার মহাসড়কে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি বাসের বেপরোয়া ওভারটেকের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ৬৩ জন নিহত হওয়ার কথা জানালেও পরে
৬ ঘণ্টা আগেশ্রীলঙ্কায় নিজ কার্যালয়ে এক বিরোধীদলীয় নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দেশটিতে বাড়তে থাকা ধারাবাহিক গুপ্তহত্যার মধ্যে এটিই প্রথম কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে লক্ষ্য করে চালানো হামলা।
৬ ঘণ্টা আগেগাজায় ‘অমানবিক ও গণহত্যার মতো’ কর্মকাণ্ডের দায়ে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী ইহুদি ব্যক্তিত্ব। এক খোলা চিঠিতে ইসরায়েলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি করে কারা এই আহ্বান জানান।
৭ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী সপ্তাহে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন। সেখানে তাঁকে কোয়াড ও ব্রিকস—এই দুই জোটের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে বলে ভারতের দ্য হিন্দু সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে