.png)
বৃষ্টি কি সত্যিই শুধু আবহাওয়া-বিষয়ক কিছু, নাকি আমাদের সেই সব অনুচ্চারিত অভিমান, যেগুলো বের হতে না পেরে জমে আছে মেঘ হয়ে?

ঊর্মি শর্মা

বৃষ্টি নামে। ধীরে ধীরে, কিংবা হঠাৎ। জানালার কাচ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে একেকটি ফোঁটা, যেন বিষণ্ন কোনো চিঠির অক্ষর। শহরের ব্যস্ত সড়কও থেমে যায় একমুহূর্ত, ট্রাফিকের কোলাহলে ছাপ পড়ে টুপটাপ শব্দের। এই শব্দের মধ্যে কোথা থেকে যেন হঠাৎ এক ধরনের নিঃসঙ্গতা এসে ভিড় করে।
কিন্তু ‘এই দেশে বৃষ্টি হয়, এসব বৃষ্টির কার্য ও কারণ নেই’— কবিতায় এভাবে লিখে আমাদের চিরাচরিত বৃষ্টির ধারণাকে সেই কবেই উল্টে দিয়েছিলেন নব্বই দশকের অন্যতম আলোচিত কবি ব্রাত্য রাইসু। ‘এই দেশে বৃষ্টি হয়’ নামে ব্রাত্য রাইসুর এই কবিতার সঙ্গে ফেসবুকবাসীদের অনেকেরই হয়তো পরিচয় আছে। কবিতায় নাগরিক-বৃষ্টিকে তিনি দেখেছেন এভাবে:
‘এই দেশে বৃষ্টি হয়, এসব বৃষ্টির
কার্য ও কারণ নেই; আমরা অক্লান্ত জনগণ
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই বৃষ্টি দেখি, যারপরনাই
কৌতূহলহীনভরে
আমাদের নাগরিক রুচির দরজায়
বৃষ্টির পানির কোনো আবেদন, ইসথেটিক্স নেই
ব্যক্তিগতভাবে আমরা বর্ষার বিরুদ্ধে
বৃষ্টির আহলাদে মন নাচে না…’
এই দেশে বৃষ্টি নামে আকাশ ফেটে নয়, যেন মন ভেঙে। বিস্তৃত জনজীবনে এর কোনো দৈব মহিমা নেই, নেই কোনো কবিতার উন্মাদনা, শুধু নামে। একটা চুপচাপ বৃষ্টির মতো যেটা জানালার বাইরে পড়ে থাকে, আর ঘরের ভেতর জেগে থাকে দীর্ঘশ্বাস। অক্লান্ত জনগণ নাগরিক ঘামে ভেজা, নিষ্পৃহ চেয়ে থাকা সেই একঘেঁয়ে বৃষ্টির দিকে।
বৃষ্টির রোমান্টিকতা কোথাও কোথাও বাধা পেয়ে বসে। এ যেন যান্ত্রিক দিনগুলোর একটা পিচ্ছিল ফাঁদ। পলিব্যাগে জমা জল, ড্রেন উপচানো গন্ধ, অফিসফেরত ভিজে জুতায় ছড়িয়ে থাকা অসহ্য ক্লান্তি।
এখন বৃষ্টি মানেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে নিজেকে গোপন রাখার শেষ চেষ্টা। কারণ, এই পানি আমাদের আড়াল খুলে দেয়, নাগরিক পর্দা সরিয়ে ফেলে। আমরা যাঁরা নিজস্বতা আঁকড়ে বাঁচি, তাঁদের জন্য বৃষ্টি কি এক নির্মম খোলসভাঙা অনুশোচনা?
কবিতা যখন শ্রাবণের প্রশস্তি করে, সেই প্রশস্তি এখন বাংলাদেশের নগর কিংবা গ্রামে খুঁজে পাওয়া কঠিন। এখানে শ্রাবণ মানে অফিস কামাই, গাড়ির স্টার্ট না ধরা, খবরের শিরোনামে ডুবে যাওয়া পাড়া। আমরা নির্ভেজাল শুষ্কতা চাই। কারণ, আমাদের ব্যক্তিগত জীবন জটিল, সেখানে কোনো জল ঢুকলে সবকিছু কাদায় গড়িয়ে পড়ে।
এই বৃষ্টির শহরে যখন অফিস-টেবিলে থাকে ফাইলের পাহাড়, কম্পিউটার থেকে মাথা তোলার অবসর থাকে না যখন, তখন কীভাবে বলব, ‘অন্ধকার মধ্যদিনে বৃষ্টি ঝরে মনের মাটিতে’। কারণ, মনের মাটি হয়তো কোনোদিনই সত্যি করে বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিল না।
তবু একেকটা দিনে, জানালার ধারে দাঁড়িয়ে হঠাৎ মনে হয়, বৃষ্টি কি সত্যিই শুধু আবহাওয়া-বিষয়ক কিছু, নাকি আমাদের সেই সব অনুচ্চারিত অভিমান, যেগুলো বের হতে না পেরে জমে আছে মেঘ হয়ে?

বৃষ্টি নামে। ধীরে ধীরে, কিংবা হঠাৎ। জানালার কাচ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে একেকটি ফোঁটা, যেন বিষণ্ন কোনো চিঠির অক্ষর। শহরের ব্যস্ত সড়কও থেমে যায় একমুহূর্ত, ট্রাফিকের কোলাহলে ছাপ পড়ে টুপটাপ শব্দের। এই শব্দের মধ্যে কোথা থেকে যেন হঠাৎ এক ধরনের নিঃসঙ্গতা এসে ভিড় করে।
কিন্তু ‘এই দেশে বৃষ্টি হয়, এসব বৃষ্টির কার্য ও কারণ নেই’— কবিতায় এভাবে লিখে আমাদের চিরাচরিত বৃষ্টির ধারণাকে সেই কবেই উল্টে দিয়েছিলেন নব্বই দশকের অন্যতম আলোচিত কবি ব্রাত্য রাইসু। ‘এই দেশে বৃষ্টি হয়’ নামে ব্রাত্য রাইসুর এই কবিতার সঙ্গে ফেসবুকবাসীদের অনেকেরই হয়তো পরিচয় আছে। কবিতায় নাগরিক-বৃষ্টিকে তিনি দেখেছেন এভাবে:
‘এই দেশে বৃষ্টি হয়, এসব বৃষ্টির
কার্য ও কারণ নেই; আমরা অক্লান্ত জনগণ
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই বৃষ্টি দেখি, যারপরনাই
কৌতূহলহীনভরে
আমাদের নাগরিক রুচির দরজায়
বৃষ্টির পানির কোনো আবেদন, ইসথেটিক্স নেই
ব্যক্তিগতভাবে আমরা বর্ষার বিরুদ্ধে
বৃষ্টির আহলাদে মন নাচে না…’
এই দেশে বৃষ্টি নামে আকাশ ফেটে নয়, যেন মন ভেঙে। বিস্তৃত জনজীবনে এর কোনো দৈব মহিমা নেই, নেই কোনো কবিতার উন্মাদনা, শুধু নামে। একটা চুপচাপ বৃষ্টির মতো যেটা জানালার বাইরে পড়ে থাকে, আর ঘরের ভেতর জেগে থাকে দীর্ঘশ্বাস। অক্লান্ত জনগণ নাগরিক ঘামে ভেজা, নিষ্পৃহ চেয়ে থাকা সেই একঘেঁয়ে বৃষ্টির দিকে।
বৃষ্টির রোমান্টিকতা কোথাও কোথাও বাধা পেয়ে বসে। এ যেন যান্ত্রিক দিনগুলোর একটা পিচ্ছিল ফাঁদ। পলিব্যাগে জমা জল, ড্রেন উপচানো গন্ধ, অফিসফেরত ভিজে জুতায় ছড়িয়ে থাকা অসহ্য ক্লান্তি।
এখন বৃষ্টি মানেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে নিজেকে গোপন রাখার শেষ চেষ্টা। কারণ, এই পানি আমাদের আড়াল খুলে দেয়, নাগরিক পর্দা সরিয়ে ফেলে। আমরা যাঁরা নিজস্বতা আঁকড়ে বাঁচি, তাঁদের জন্য বৃষ্টি কি এক নির্মম খোলসভাঙা অনুশোচনা?
কবিতা যখন শ্রাবণের প্রশস্তি করে, সেই প্রশস্তি এখন বাংলাদেশের নগর কিংবা গ্রামে খুঁজে পাওয়া কঠিন। এখানে শ্রাবণ মানে অফিস কামাই, গাড়ির স্টার্ট না ধরা, খবরের শিরোনামে ডুবে যাওয়া পাড়া। আমরা নির্ভেজাল শুষ্কতা চাই। কারণ, আমাদের ব্যক্তিগত জীবন জটিল, সেখানে কোনো জল ঢুকলে সবকিছু কাদায় গড়িয়ে পড়ে।
এই বৃষ্টির শহরে যখন অফিস-টেবিলে থাকে ফাইলের পাহাড়, কম্পিউটার থেকে মাথা তোলার অবসর থাকে না যখন, তখন কীভাবে বলব, ‘অন্ধকার মধ্যদিনে বৃষ্টি ঝরে মনের মাটিতে’। কারণ, মনের মাটি হয়তো কোনোদিনই সত্যি করে বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিল না।
তবু একেকটা দিনে, জানালার ধারে দাঁড়িয়ে হঠাৎ মনে হয়, বৃষ্টি কি সত্যিই শুধু আবহাওয়া-বিষয়ক কিছু, নাকি আমাদের সেই সব অনুচ্চারিত অভিমান, যেগুলো বের হতে না পেরে জমে আছে মেঘ হয়ে?
.png)

বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ঋত্বিককুমার ঘটক একটা নাম বটে! তাঁকে যারা পছন্দ করেন কিংবা অপছন্দ করেন উভয় দলই স্বীকার করে নেবেন, ঋত্বিক এক বিশিষ্ট নাম।
১১ ঘণ্টা আগে
আজ চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের শততম জন্মদিন। তাঁর লেন্সে দেশভাগের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ছাপিয়ে দাগ কেটেছিল এর গভীর মানবিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব। দেশভাগের ফলে তিনি নিজেই পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে অভিবাসী হয়েছিলেন।
১২ ঘণ্টা আগে
আজ বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের শততম জন্মবার্ষিকী। এই বিশেষ দিনে আমরা শুধু তাঁর শিল্পের বিশালতা নয়, তাঁর অস্থির জীবন, সংবেদনশীল সম্পর্ক এবং সমসাময়িকদের চোখে দেখা তাঁর বিদ্রোহী মনকেও নতুন করে পড়ার চেষ্টা করতে পারি।
১৩ ঘণ্টা আগে
আজ বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের শততম জন্মবার্ষিকী। নাট্য ব্যক্তিত্ব ও অভিনেতা বিজন ভট্টাচার্য বলেছিলেন, ‘ঋত্বিককে খুন করা হয়েছে।’ কিন্তু এই খুনের প্রক্রিয়া কেমন?
১৩ ঘণ্টা আগে