গাজা শহরের প্রতিটি দগদগে ক্ষতের ভেতর থেকে, প্রতিটি ধ্বংস হওয়া বাড়ির ভাঙা দেয়ালের ফাঁক থেকে, প্রতিটি শিশুর কাঁপা চোখের ভেতর থেকেও যাঁর কণ্ঠ ভেসে আসত, তিনি রেফাত আলারির। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হলেও তরুণ এই ফিলিস্তিনি কবি গাজায় চলমান হামলায় যেন আজও প্রাসঙ্গিক।
গৌতম কে শুভ
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেমে নেই। গত শুক্রবারও (২০ জুন) হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৮২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪ জন সরাসরি ত্রাণ নেওয়ার সময় হামলায় নিহত হন। হামলাগুলো হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত ‘বিতর্কিত’ গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩১ হাজার ১৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ধ্বংসস্তুপ, ধোঁয়া, আর্তনাদ আর আতঙ্ক মিলিয়ে গাজা এখন আর কোনো শহর নয়, হয়ে উঠেছে মাটির ওপরে দীর্ঘস্থায়ী এক ক্ষত। সেই শহরের প্রতিটি দগদগে ক্ষতের ভেতর থেকে, প্রতিটি ধ্বংস হওয়া বাড়ির ভাঙা দেয়ালের ফাঁক থেকে, প্রতিটি শিশুর কাঁপা চোখের ভেতর থেকেও যাঁর কণ্ঠ ভেসে আসত, তিনি রেফাত আলারির। বিশ্ববাসীর কাছে তরুণ এই ফিলিস্তিনি কবি ‘গাজার কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পরিচিত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি নিহত হন।
রেফাতের ভালোবাসার শহর ছিল গাজা। তিনি হয়ে উঠেছিলেন সেই শহরেরই কণ্ঠস্বর, যে কণ্ঠ মৃত্যুর আগ পর্যন্তও থামেনি। একের পর এক বোমা যখন তাঁর শহরটাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল, তখনও তিনি লিখে যাচ্ছিলেন, ‘যদি আমাকে মরতেই হয়, তবে যেন সেই মৃত্যু আশার জন্ম দেয়।’
রেফাত আলারির ছিলেন লেখক, শিক্ষাবিদ ও অ্যাক্টিভিস্ট। তাঁর অস্ত্র ছিল কলম আর দৃঢ় মানবিক সাহস। গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। আর নিজের হৃদয় উজাড় করে লিখতেন ফিলিস্তিনের গল্প। তাঁর কবিতার প্রতিটি শব্দ গাজার কান্না হয়ে উঠেছিল। আবার একই সঙ্গে সেই কবিতায় থাকত বেঁচে থাকার জেদ ও আশার আলো।
রেফাত শুধু সাহিত্যের ভাষায় প্রতিরোধই করেননি, তিনি নিজের অস্তিত্ব দিয়েও সেই প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ যখন উত্তর গাজায় তীব্রতর হচ্ছিল, তখন অনেকেই দক্ষিণে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আলারির স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘আমি গাজা ছেড়ে যাব না।’
নিজের শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে ধ্বংসের মধ্যেও তিনি সোচ্চার ছিলেন। আশাবাদী হয়ে লড়াই করছিলেন নিজের কবিতা আর কণ্ঠ দিয়ে।
‘আমরা নিছক সংখ্যা নই’
রেফাত আলারির জানতেন, গাজার হত্যাকে সারা বিশ্ব দেখে শুধুই ‘অংক’ হিসেবে। সেখানে আছে কেবল মৃত্যুর সংখ্যা আর ধ্বংসের পরিসংখ্যান। তাই তাঁরা গড়েছিলেন সাহসী একটি প্রকল্প, ‘উই আর নট নাম্বারস’।
এই প্রকল্পে তরুণ লেখকদের শেখানো হতো, কীভাবে তাঁদের বেঁচে থাকার গল্পকে ইংরেজিতে বলতে ও লিখতে পারা যায়। রেফাতের ভাষায়, ‘সংখ্যা মানে মানুষের মৃত্যুকে অচেনা করে ফেলা। আমরা শুধু সংখ্যা নই, আমরা গল্প, আমরা হাসি-কান্না, আমরা স্বপ্ন।’
তাদের এই প্রকল্পের আওতায় ‘গাজা রাইটস ব্যাক’ আর ‘গাজা আনসাইলেন্সড’ নামে দুটি বইয়ের সম্পাদনার কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন। যার প্রতিটি পৃষ্ঠায় রয়েছে গাজার প্রতি মুহুর্তে বেঁচে থাকার একেকটি সাক্ষ্য।
যুদ্ধের সময় যখন সবাই পালানোর পথ খোঁজে, তখন রেফাত লিখছিলেন, ‘আমরা বাঁচতে চাই, আর বাঁচার অর্থই হলো আমাদের গল্প বলা। যতক্ষণ পারি, যতক্ষণ রক্ত আছে শরীরে, যতক্ষণ শব্দ আসে জিভে।’
রেফাতের কবিতা ‘ইফ আই মাস্ট ডাই’ আজ ইতিহাসের এক স্থায়ী দলিল। সেখানে তিনি লিখেছিলেন,
এই কবিতা শুধু কাগজে লেখা শব্দই নয়। তাঁর মৃত্যুর পরে আজও কবিতাগুলো রয়ে গেছে জীবন্ত। ফিলিস্তিনের তরুণ লেখকেরা তাঁর শব্দগুলো মনে রেখে লড়াই করছেন তাঁদের মতো করে। কারণ তাঁরা জানেন, রেফাত ছিলেন প্রজন্মের প্রতিধ্বনি। মৃত্যুর ভেতর দিয়েই তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন জীবনের বার্তা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী জিনিস হলো একটা এক্সপো মার্কার। যদি একদিন ইসরায়েলি সৈন্যরা আমার ঘরে ঢুকে পড়ে, আমি অন্তত সেটা ছুড়ে মারব।’
রেফাত শিখিয়ে গেছেন, আশারা কখনও মরে না। আর একজন কবির মৃত্যু মানেই তাঁর কণ্ঠস্বর থেমে যাওয়া নয়। বরং তা ছড়িয়ে পড়ে হাজারো হৃদয়ে। আর আবারো নতুন করে জন্ম নেয়, অন্য কারও কলমে।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেমে নেই। গত শুক্রবারও (২০ জুন) হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে অন্তত ৮২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪ জন সরাসরি ত্রাণ নেওয়ার সময় হামলায় নিহত হন। হামলাগুলো হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত ‘বিতর্কিত’ গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজার ৯০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩১ হাজার ১৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ধ্বংসস্তুপ, ধোঁয়া, আর্তনাদ আর আতঙ্ক মিলিয়ে গাজা এখন আর কোনো শহর নয়, হয়ে উঠেছে মাটির ওপরে দীর্ঘস্থায়ী এক ক্ষত। সেই শহরের প্রতিটি দগদগে ক্ষতের ভেতর থেকে, প্রতিটি ধ্বংস হওয়া বাড়ির ভাঙা দেয়ালের ফাঁক থেকে, প্রতিটি শিশুর কাঁপা চোখের ভেতর থেকেও যাঁর কণ্ঠ ভেসে আসত, তিনি রেফাত আলারির। বিশ্ববাসীর কাছে তরুণ এই ফিলিস্তিনি কবি ‘গাজার কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পরিচিত। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি নিহত হন।
রেফাতের ভালোবাসার শহর ছিল গাজা। তিনি হয়ে উঠেছিলেন সেই শহরেরই কণ্ঠস্বর, যে কণ্ঠ মৃত্যুর আগ পর্যন্তও থামেনি। একের পর এক বোমা যখন তাঁর শহরটাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল, তখনও তিনি লিখে যাচ্ছিলেন, ‘যদি আমাকে মরতেই হয়, তবে যেন সেই মৃত্যু আশার জন্ম দেয়।’
রেফাত আলারির ছিলেন লেখক, শিক্ষাবিদ ও অ্যাক্টিভিস্ট। তাঁর অস্ত্র ছিল কলম আর দৃঢ় মানবিক সাহস। গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। আর নিজের হৃদয় উজাড় করে লিখতেন ফিলিস্তিনের গল্প। তাঁর কবিতার প্রতিটি শব্দ গাজার কান্না হয়ে উঠেছিল। আবার একই সঙ্গে সেই কবিতায় থাকত বেঁচে থাকার জেদ ও আশার আলো।
রেফাত শুধু সাহিত্যের ভাষায় প্রতিরোধই করেননি, তিনি নিজের অস্তিত্ব দিয়েও সেই প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ যখন উত্তর গাজায় তীব্রতর হচ্ছিল, তখন অনেকেই দক্ষিণে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আলারির স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘আমি গাজা ছেড়ে যাব না।’
নিজের শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে ধ্বংসের মধ্যেও তিনি সোচ্চার ছিলেন। আশাবাদী হয়ে লড়াই করছিলেন নিজের কবিতা আর কণ্ঠ দিয়ে।
‘আমরা নিছক সংখ্যা নই’
রেফাত আলারির জানতেন, গাজার হত্যাকে সারা বিশ্ব দেখে শুধুই ‘অংক’ হিসেবে। সেখানে আছে কেবল মৃত্যুর সংখ্যা আর ধ্বংসের পরিসংখ্যান। তাই তাঁরা গড়েছিলেন সাহসী একটি প্রকল্প, ‘উই আর নট নাম্বারস’।
এই প্রকল্পে তরুণ লেখকদের শেখানো হতো, কীভাবে তাঁদের বেঁচে থাকার গল্পকে ইংরেজিতে বলতে ও লিখতে পারা যায়। রেফাতের ভাষায়, ‘সংখ্যা মানে মানুষের মৃত্যুকে অচেনা করে ফেলা। আমরা শুধু সংখ্যা নই, আমরা গল্প, আমরা হাসি-কান্না, আমরা স্বপ্ন।’
তাদের এই প্রকল্পের আওতায় ‘গাজা রাইটস ব্যাক’ আর ‘গাজা আনসাইলেন্সড’ নামে দুটি বইয়ের সম্পাদনার কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন। যার প্রতিটি পৃষ্ঠায় রয়েছে গাজার প্রতি মুহুর্তে বেঁচে থাকার একেকটি সাক্ষ্য।
যুদ্ধের সময় যখন সবাই পালানোর পথ খোঁজে, তখন রেফাত লিখছিলেন, ‘আমরা বাঁচতে চাই, আর বাঁচার অর্থই হলো আমাদের গল্প বলা। যতক্ষণ পারি, যতক্ষণ রক্ত আছে শরীরে, যতক্ষণ শব্দ আসে জিভে।’
রেফাতের কবিতা ‘ইফ আই মাস্ট ডাই’ আজ ইতিহাসের এক স্থায়ী দলিল। সেখানে তিনি লিখেছিলেন,
এই কবিতা শুধু কাগজে লেখা শব্দই নয়। তাঁর মৃত্যুর পরে আজও কবিতাগুলো রয়ে গেছে জীবন্ত। ফিলিস্তিনের তরুণ লেখকেরা তাঁর শব্দগুলো মনে রেখে লড়াই করছেন তাঁদের মতো করে। কারণ তাঁরা জানেন, রেফাত ছিলেন প্রজন্মের প্রতিধ্বনি। মৃত্যুর ভেতর দিয়েই তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন জীবনের বার্তা। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী জিনিস হলো একটা এক্সপো মার্কার। যদি একদিন ইসরায়েলি সৈন্যরা আমার ঘরে ঢুকে পড়ে, আমি অন্তত সেটা ছুড়ে মারব।’
রেফাত শিখিয়ে গেছেন, আশারা কখনও মরে না। আর একজন কবির মৃত্যু মানেই তাঁর কণ্ঠস্বর থেমে যাওয়া নয়। বরং তা ছড়িয়ে পড়ে হাজারো হৃদয়ে। আর আবারো নতুন করে জন্ম নেয়, অন্য কারও কলমে।
সমাজে কি সুপারম্যানের থাকা স্বাস্থ্যকর, সুপারম্যান কি আমরা চাই, কেন জনপ্রিয় সুপারম্যান আর কীভাবেই সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে সুপারম্যান।
৪ দিন আগেপ্রভাব বিস্তারের জন্য ক্যাম্পে বিশেষ কয়েকটি দল আছে। তাদের কাছে নানা ধরনের অস্ত্র থাকে সবসময়। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যাও কম নয়। এই সশস্ত্র দলগুলো রাতের বেলা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাদের কথা না শুনলে নানা ধরনের হুমকি ধামকির ব্যবস্থা আছে। তাদের উদ্দেশ্য শুধুই আধিপত্য বিস্তার।
১১ দিন আগেশুরু থেকেই থার্টি-ফাস্ট নাইট, থার্টি-ফাস্ট নাইট ই আছে। চাইনিজ নববর্ষ সহ অনন্য নববর্ষ তাদের পূর্বের নামেই আছে। শুধু ১৯৯৬ সালে বিতর্কটা শুরু করেছেন আপনারাই।
১৪ দিন আগে