ইসরায়েল ও আরব বিশ্বের সঙ্গে ট্রাম্পের বিশেষ সম্পর্ক এবং তাঁর স্বতন্ত্র কূটনৈতিক ধরন এই অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
স্ট্রিম ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ১০ অক্টোবর প্রথম ধাপের শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদন করে। এতে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই সাফল্য গাজা যুদ্ধের প্রথম বড় ধরনের উত্তেজনা প্রশমনের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
১৮ মাসের ব্যর্থ মার্কিন প্রচেষ্টার পর ট্রাম্পের এই সাফল্য এসেছে তাঁর কৌশলগত চাপ প্রয়োগ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগানোর ফলস্বরূপ। তবে চুক্তিটি তাৎক্ষণিক মানবিক স্বস্তি আনলেও হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন প্রশ্নে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে।
এটি কেবল দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার শাসনব্যবস্থা এবং ইসরায়েলের পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার—এসব বিষয়ে এখনো আলোচনা বাকি। তবে এই চুক্তি টিকে থাকলে, এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে গণ্য হতে পারে—যা আগের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর কূটনৈতিক দল অর্জন করতে পারেননি।
ইসরায়েল ও আরব বিশ্বের সঙ্গে ট্রাম্পের বিশেষ সম্পর্ক এবং তাঁর স্বতন্ত্র কূটনৈতিক ধরন এই অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবুও, অন্যান্য বহু কূটনৈতিক সাফল্যের মতো, এখানে এমন কিছু উপাদানও ছিল যা ট্রাম্প বা বাইডেন—কোনো পক্ষেরই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
পটভূমি: যুদ্ধ ও অচলাবস্থা
যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার মাধ্যমে। এতে ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে হামাসকে দমন করার লক্ষ্যে। ফলস্বরূপ গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০২৪ সালের মে মাসে একাধিক যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও হামাসের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। কারণ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামরিক লক্ষ্যকেই আলোচনার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন।
বাইডেন বনাম ট্রাম্প: ‘সংযমের কূটনীতি’ বনাম ‘শক্তির কূটনীতি’
৫০ বছর ধরে ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের সমর্থন সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক সবসময়ই ছিল দুর্বল ও অনিশ্চিত। বাইডেনের নীতি ছিল ‘বিয়ার হাগ’ কৌশল—অর্থাৎ প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়ে গোপনে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা। কিন্তু এই কৌশল ভেঙে পড়ে ডেমোক্রেটদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন, নেতানিয়াহুর অনমনীয়তা এবং ইসরায়েলের যুদ্ধলক্ষ্য—ইরান ও হিজবুল্লাহকে দুর্বল করা—অগ্রাধিকার পাওয়ার কারণে।
বাইডেন কেবল একবার অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করেন, কিন্তু বড় কোনো পদক্ষেপ নেননি। ফলে নেতানিয়াহু তাঁর নির্দেশ উপেক্ষা করলেও তাতে কোনো বাস্তব পরিণতি হয়নি। অন্যদিকে, ট্রাম্প রিপাবলিকান সমর্থন এবং ‘শক্তির মাধ্যমে শান্তি’ নীতির কারণে অনেক বেশি দৃঢ় অবস্থান নিতে পেরেছিলেন।
দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাস পর, যখন ইসরায়েল ইতিমধ্যে প্রধান সামরিক লক্ষ্য অর্জন করেছে—ইরান দুর্বল, হিজবুল্লাহ নিষ্ক্রিয়, গাজা ধ্বংসস্তূপ—তখন ট্রাম্প আলোচনায় চাপ প্রয়োগের উপযুক্ত সময়টি কাজে লাগান।
কার্নেগি এনডাওমেন্টের অ্যারন ডেভিড মিলারের ভাষায়, ‘কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এর আগে এমন দৃঢ় ভাষায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়নি—‘মানতে হবে, নইলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
সিএসআইএস-এর জন আলটারম্যানও মন্তব্য করেন, ‘ট্রাম্প ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছেন নিজের সময়সূচি অনুযায়ী, যেটি বাইডেনসহ আগের প্রেসিডেন্টদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও ট্রাম্পের পক্ষে ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলো—যেমন ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য—ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল থেকে দূরে সরে যায়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েল-সমর্থনের জনপ্রিয়তা কমে যায়। আর ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর আরব দেশগুলোর ঐক্য দৃঢ় হয়।
সব মিলিয়ে, বাইডেনের সময় থেকে সংঘাত-উত্তেজনা কমে এসে ট্রাম্পের জন্য এক নতুন কূটনৈতিক সুযোগ তৈরি হয়।
ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও এক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখে। ট্রাম্প প্রায়ই বলেন, ইসরায়েলের এর চেয়ে ভালো বন্ধু আর কেউ নেই। অন্যদিকে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অভিহিত করেছেন ‘হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের সর্বকালের সেরা মিত্র’ হিসেবে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ কথাবার্তা শুধু কথায় নয়, কাজেও প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রথম মেয়াদে (২০১৬-২০২০) ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন। পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থান—পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ—তা পরিবর্তন করে বসতিগুলোর বৈধতা স্বীকার করেন।
তবে শেষ পর্যন্ত দেশীয় রাজনীতি বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে বড় বিষয় ছিল একটি সরল সত্য—বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইসরায়েল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু এবার ইসরায়েলকে প্রস্তুত মনে হচ্ছে।
কূটনৈতিক পদক্ষেপ: আলটিমেটাম, ক্ষমা ও আরব জোট
ট্রাম্পের অপ্রচলিত কূটনৈতিক ধরন—আক্রমণাত্মক ভঙ্গি থেকে চুক্তির পথে যাত্রা—এই সাফল্যের মূল চালিকা শক্তি। এর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা। এতে এক কাতারি নাগরিক নিহত হন এবং পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হয়নি। ফলে ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে আলটিমেটাম দেন—যুদ্ধ থামাতে হবে, নইলে পরিণতি ভোগ করতে হবে। ওভাল অফিস থেকে সরাসরি এক ফোনালাপে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।
এরপর ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সম্পর্ক কাতারের সঙ্গে আরও মজবুত করার নির্দেশ দেন। কাতারই মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটির স্থান, যা ট্রাম্পের উপসাগরকেন্দ্রিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের শেষ দিকে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ট্রাম্প গত সপ্তাহে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এতে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার, বন্দি বিনিময়, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং অস্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে আরব দেশগুলো হামাসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।
চুক্তিটি হয় মিসরের শার্ম আল-শেখে তিন দিনব্যাপী পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে। এতে কাতার, মিসর ও তুরস্ক মধ্যস্থতা করে। উপস্থিত ছিলেন কুশনার ও উইটকফ। আলোচনার মাঝেই ট্রাম্প হঠাৎ বৈঠক ছেড়ে ঘোষণা দেন, ‘ওদের এখন আমার প্রয়োজন, আমাকে যেতে হবে, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সমস্যা সমাধান করতে।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতার সফরের সময় ট্রাম্প আরব দেশগুলোর যুদ্ধবিরতির অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন। অপরদিকে ইউরোপীয় চাপ, বিশেষ করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর নেতৃত্বে, নেতানিয়াহুকে ক্রমে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের এড হুসেইন মন্তব্য করেন, ‘ট্রাম্পের উপসাগরীয় অভিজ্ঞতাই তাঁকে এই সক্ষমতা দিয়েছে—যা পূর্ববর্তী অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’
উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সুপ্রমাণিত। তিনি কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কও রেখেছেন। তিনি দুবারই তার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণের সময় সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফর দিয়ে শুরু করেছেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে (২০১৬-২০২০) আব্রাহাম অ্যাকর্ডসকে তার সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে ধরা হয়। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের সামাজিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।
এই বছরও তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতারে গিয়েছিলেন, যেখানে বারবার যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান শোনা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের এই সফরে তিনি ইসরায়েল সফর করেননি।
ট্রাম্পের উত্তরাধিকার
বাইডেনের ব্যর্থ পরিকল্পনা যেখানে থেমে গিয়েছিল, সেখানে ট্রাম্প সফল হয়েছেন। সময়, প্রভাব ও মিত্রতার সঠিক প্রয়োগ তাঁকে অচলাবস্থা ভাঙতে সাহায্য করেছে। এটি সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ ও ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’-র পথ খুলে দিতে পারে।
ট্রাম্প একে ঘোষণা করেন ‘গত ৩ হাজার বছরে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় অর্জন’ হিসেবে। যদিও তা অতিরঞ্জিত। ইসরায়েলে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে তা উদ্যাপন করে। জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ নাগরিক যুদ্ধের অবসান চান যদি সব জিম্মি ফিরে আসে। গাজার ফিলিস্তিনিরাও স্বস্তি প্রকাশ করেন, যদিও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আনন্দ সীমিত।
যুদ্ধ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। প্রথম ধাপের মেয়াদ ছয় সপ্তাহ, যার সাফল্য নির্ভর করবে মূল্যায়নের ওপর। হামাস এখনো হাতে অস্ত্র রাখছে, কারণ তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছাড়া পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়। অপরদিকে নেতানিয়াহু চান হামাসের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি, যাতে পুনরুত্থানের আশঙ্কা না থাকে।
বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বাওয়েনের ভাষায়, ট্রাম্পের ‘অতি আত্মবিশ্বাসী ও চাপসৃষ্টিকারী’ কূটনীতি স্বল্পমেয়াদে ফল দেয়, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
গাজায় সরকার শূন্যতা, নেতানিয়াহুর চরম-ডান মিত্রদের চাপ এবং ইরানের সম্ভাব্য বাধা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। জেরেমি বাওয়েন সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই প্রক্রিয়া সফল করতে যে ধারাবাহিকতা ও মনোযোগ দরকার, তা ট্রাম্প এখনো প্রদর্শন করেননি।’
দ্বিতীয় ধাপ ব্যর্থ হলে সংঘাত আবারও জ্বলে উঠতে পারে। এই চুক্তি এখনো ভঙ্গুর। আলোচনা ব্যর্থ হলে এটি মার্কিন মধ্যস্থতার সীমাবদ্ধতাও উন্মোচিত করতে পারে। তবু ধ্বংসের ভেতরেও এটি এক আশার আলো—যা মনে করিয়ে দেয়, বড় অর্জন আসে কুটনীতির মাধ্যমে, গায়ের জোরে নয়।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ১০ অক্টোবর প্রথম ধাপের শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদন করে। এতে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই সাফল্য গাজা যুদ্ধের প্রথম বড় ধরনের উত্তেজনা প্রশমনের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
১৮ মাসের ব্যর্থ মার্কিন প্রচেষ্টার পর ট্রাম্পের এই সাফল্য এসেছে তাঁর কৌশলগত চাপ প্রয়োগ, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগানোর ফলস্বরূপ। তবে চুক্তিটি তাৎক্ষণিক মানবিক স্বস্তি আনলেও হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন প্রশ্নে অনিশ্চয়তা থেকে গেছে।
এটি কেবল দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার শাসনব্যবস্থা এবং ইসরায়েলের পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার—এসব বিষয়ে এখনো আলোচনা বাকি। তবে এই চুক্তি টিকে থাকলে, এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে গণ্য হতে পারে—যা আগের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর কূটনৈতিক দল অর্জন করতে পারেননি।
ইসরায়েল ও আরব বিশ্বের সঙ্গে ট্রাম্পের বিশেষ সম্পর্ক এবং তাঁর স্বতন্ত্র কূটনৈতিক ধরন এই অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবুও, অন্যান্য বহু কূটনৈতিক সাফল্যের মতো, এখানে এমন কিছু উপাদানও ছিল যা ট্রাম্প বা বাইডেন—কোনো পক্ষেরই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
পটভূমি: যুদ্ধ ও অচলাবস্থা
যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার মাধ্যমে। এতে ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে হামাসকে দমন করার লক্ষ্যে। ফলস্বরূপ গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০২৪ সালের মে মাসে একাধিক যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও হামাসের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। কারণ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামরিক লক্ষ্যকেই আলোচনার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন।
বাইডেন বনাম ট্রাম্প: ‘সংযমের কূটনীতি’ বনাম ‘শক্তির কূটনীতি’
৫০ বছর ধরে ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের সমর্থন সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক সবসময়ই ছিল দুর্বল ও অনিশ্চিত। বাইডেনের নীতি ছিল ‘বিয়ার হাগ’ কৌশল—অর্থাৎ প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়ে গোপনে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা। কিন্তু এই কৌশল ভেঙে পড়ে ডেমোক্রেটদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন, নেতানিয়াহুর অনমনীয়তা এবং ইসরায়েলের যুদ্ধলক্ষ্য—ইরান ও হিজবুল্লাহকে দুর্বল করা—অগ্রাধিকার পাওয়ার কারণে।
বাইডেন কেবল একবার অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করেন, কিন্তু বড় কোনো পদক্ষেপ নেননি। ফলে নেতানিয়াহু তাঁর নির্দেশ উপেক্ষা করলেও তাতে কোনো বাস্তব পরিণতি হয়নি। অন্যদিকে, ট্রাম্প রিপাবলিকান সমর্থন এবং ‘শক্তির মাধ্যমে শান্তি’ নীতির কারণে অনেক বেশি দৃঢ় অবস্থান নিতে পেরেছিলেন।
দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাস পর, যখন ইসরায়েল ইতিমধ্যে প্রধান সামরিক লক্ষ্য অর্জন করেছে—ইরান দুর্বল, হিজবুল্লাহ নিষ্ক্রিয়, গাজা ধ্বংসস্তূপ—তখন ট্রাম্প আলোচনায় চাপ প্রয়োগের উপযুক্ত সময়টি কাজে লাগান।
কার্নেগি এনডাওমেন্টের অ্যারন ডেভিড মিলারের ভাষায়, ‘কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এর আগে এমন দৃঢ় ভাষায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়নি—‘মানতে হবে, নইলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
সিএসআইএস-এর জন আলটারম্যানও মন্তব্য করেন, ‘ট্রাম্প ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছেন নিজের সময়সূচি অনুযায়ী, যেটি বাইডেনসহ আগের প্রেসিডেন্টদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও ট্রাম্পের পক্ষে ছিল। ইউরোপীয় দেশগুলো—যেমন ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য—ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল থেকে দূরে সরে যায়। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েল-সমর্থনের জনপ্রিয়তা কমে যায়। আর ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর আরব দেশগুলোর ঐক্য দৃঢ় হয়।
সব মিলিয়ে, বাইডেনের সময় থেকে সংঘাত-উত্তেজনা কমে এসে ট্রাম্পের জন্য এক নতুন কূটনৈতিক সুযোগ তৈরি হয়।
ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও এক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখে। ট্রাম্প প্রায়ই বলেন, ইসরায়েলের এর চেয়ে ভালো বন্ধু আর কেউ নেই। অন্যদিকে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অভিহিত করেছেন ‘হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের সর্বকালের সেরা মিত্র’ হিসেবে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ কথাবার্তা শুধু কথায় নয়, কাজেও প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রথম মেয়াদে (২০১৬-২০২০) ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করেন। পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থান—পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বসতি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ—তা পরিবর্তন করে বসতিগুলোর বৈধতা স্বীকার করেন।
তবে শেষ পর্যন্ত দেশীয় রাজনীতি বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে বড় বিষয় ছিল একটি সরল সত্য—বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইসরায়েল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু এবার ইসরায়েলকে প্রস্তুত মনে হচ্ছে।
কূটনৈতিক পদক্ষেপ: আলটিমেটাম, ক্ষমা ও আরব জোট
ট্রাম্পের অপ্রচলিত কূটনৈতিক ধরন—আক্রমণাত্মক ভঙ্গি থেকে চুক্তির পথে যাত্রা—এই সাফল্যের মূল চালিকা শক্তি। এর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা। এতে এক কাতারি নাগরিক নিহত হন এবং পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হয়নি। ফলে ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে আলটিমেটাম দেন—যুদ্ধ থামাতে হবে, নইলে পরিণতি ভোগ করতে হবে। ওভাল অফিস থেকে সরাসরি এক ফোনালাপে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন।
এরপর ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সম্পর্ক কাতারের সঙ্গে আরও মজবুত করার নির্দেশ দেন। কাতারই মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটির স্থান, যা ট্রাম্পের উপসাগরকেন্দ্রিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের শেষ দিকে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ট্রাম্প গত সপ্তাহে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এতে ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার, বন্দি বিনিময়, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং অস্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে আরব দেশগুলো হামাসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।
চুক্তিটি হয় মিসরের শার্ম আল-শেখে তিন দিনব্যাপী পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে। এতে কাতার, মিসর ও তুরস্ক মধ্যস্থতা করে। উপস্থিত ছিলেন কুশনার ও উইটকফ। আলোচনার মাঝেই ট্রাম্প হঠাৎ বৈঠক ছেড়ে ঘোষণা দেন, ‘ওদের এখন আমার প্রয়োজন, আমাকে যেতে হবে, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সমস্যা সমাধান করতে।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতার সফরের সময় ট্রাম্প আরব দেশগুলোর যুদ্ধবিরতির অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন। অপরদিকে ইউরোপীয় চাপ, বিশেষ করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর নেতৃত্বে, নেতানিয়াহুকে ক্রমে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের এড হুসেইন মন্তব্য করেন, ‘ট্রাম্পের উপসাগরীয় অভিজ্ঞতাই তাঁকে এই সক্ষমতা দিয়েছে—যা পূর্ববর্তী অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’
উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সুপ্রমাণিত। তিনি কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কও রেখেছেন। তিনি দুবারই তার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণের সময় সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফর দিয়ে শুরু করেছেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে (২০১৬-২০২০) আব্রাহাম অ্যাকর্ডসকে তার সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে ধরা হয়। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের সামাজিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।
এই বছরও তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতারে গিয়েছিলেন, যেখানে বারবার যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান শোনা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের এই সফরে তিনি ইসরায়েল সফর করেননি।
ট্রাম্পের উত্তরাধিকার
বাইডেনের ব্যর্থ পরিকল্পনা যেখানে থেমে গিয়েছিল, সেখানে ট্রাম্প সফল হয়েছেন। সময়, প্রভাব ও মিত্রতার সঠিক প্রয়োগ তাঁকে অচলাবস্থা ভাঙতে সাহায্য করেছে। এটি সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ ও ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’-র পথ খুলে দিতে পারে।
ট্রাম্প একে ঘোষণা করেন ‘গত ৩ হাজার বছরে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় অর্জন’ হিসেবে। যদিও তা অতিরঞ্জিত। ইসরায়েলে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে তা উদ্যাপন করে। জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ নাগরিক যুদ্ধের অবসান চান যদি সব জিম্মি ফিরে আসে। গাজার ফিলিস্তিনিরাও স্বস্তি প্রকাশ করেন, যদিও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আনন্দ সীমিত।
যুদ্ধ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। প্রথম ধাপের মেয়াদ ছয় সপ্তাহ, যার সাফল্য নির্ভর করবে মূল্যায়নের ওপর। হামাস এখনো হাতে অস্ত্র রাখছে, কারণ তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছাড়া পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণে রাজি নয়। অপরদিকে নেতানিয়াহু চান হামাসের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি, যাতে পুনরুত্থানের আশঙ্কা না থাকে।
বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বাওয়েনের ভাষায়, ট্রাম্পের ‘অতি আত্মবিশ্বাসী ও চাপসৃষ্টিকারী’ কূটনীতি স্বল্পমেয়াদে ফল দেয়, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।
গাজায় সরকার শূন্যতা, নেতানিয়াহুর চরম-ডান মিত্রদের চাপ এবং ইরানের সম্ভাব্য বাধা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। জেরেমি বাওয়েন সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই প্রক্রিয়া সফল করতে যে ধারাবাহিকতা ও মনোযোগ দরকার, তা ট্রাম্প এখনো প্রদর্শন করেননি।’
দ্বিতীয় ধাপ ব্যর্থ হলে সংঘাত আবারও জ্বলে উঠতে পারে। এই চুক্তি এখনো ভঙ্গুর। আলোচনা ব্যর্থ হলে এটি মার্কিন মধ্যস্থতার সীমাবদ্ধতাও উন্মোচিত করতে পারে। তবু ধ্বংসের ভেতরেও এটি এক আশার আলো—যা মনে করিয়ে দেয়, বড় অর্জন আসে কুটনীতির মাধ্যমে, গায়ের জোরে নয়।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান
ড্রোন বা মানববিহীন আকাশযান (ইউএভি) এখন আধুনিক যুদ্ধের অপরিহার্য অস্ত্র। একসময় এগুলো সীমিত পর্যবেক্ষণযন্ত্র ছিল, এখন তা নির্ভুল আঘাত, কম খরচ এবং নিরাপদ পরিচালনার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ক্ষুদ্রাকৃতির প্রযুক্তি ও সমন্বিত আক্রমণ ক্ষমতার অগ্রগতির ফলে ড্রোন এখন গুপ্তহত্য
৪ ঘণ্টা আগেজুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটের বিষয়ে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। শিগগিরই হয়তো ভোটের আয়োজনও করা হবে। গণভোট হলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট, যা কোনো নির্দিষ্ট প্রস্তাব, আইন বা রাজনৈতিক বিষয়ে নেওয়া হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে গঠিত হয় জাতিসংঘ। আজকে তা এক মৌলিক প্রশ্নের মুখোমুখি—যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে সংস্থাটির কী হবে? সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনামূলক বক্তব্য এই বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে।
২ দিন আগে‘রাজমহলে বহু বাঙালি পরিবার রয়েছে, যাঁদের পূর্বপুরুষ আফগানিস্তানের বলখসহ নানা অঞ্চল থেকে এসেছিলেন।’ ১৬২৬ সালে মন্তব্য করেছিলেন আফগান পর্যটক মাহমুদ বালখি। এমনকি ঔপনিবেশিক যুগে বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী শিক্ষক হিসেবে স্থায়ী হয়েছিলেন আফগানিস্তানে। কাবুল কৃষি কলেজে অধ্যাপনার অভিজ্ঞতার
২ দিন আগে