আওয়ামী লীগের তরুণ এক সাবেক সাংসদ বলেন ‘ঢাকা থেকে যখন পালিয়ে আসি, তখনই চুল উঠে যাচ্ছিল। কয়েক বছর ধরে স্ত্রী বলছিলেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করতে। কিন্তু নির্বাচনি এলাকায় এত ব্যস্ত ছিলাম, প্রথমবারের এমপি হিসেবে সময়ই পাইনি। এমন কঠিন সময়ে মাথায় নতুন চুল পাওয়া— আনন্দের ব্যাপার।’
স্ট্রিম ডেস্ক
শেখ হাসিনার সরকার পতন ও তাঁর ভারতে নির্বাসনের পর থেকে গত এক বছরে মো. এ এ আরাফাতের জীবন একঘেয়েভাবে কাটছে। না নতুন কোনো শখ, না পুরোনো আগ্রহের চর্চা। কেবল দলীয় রাজনীতি নিয়েই তিনি ব্যস্ত আছেন। তাঁর স্বপ্ন এখন একটাই—ক্ষমতা থেকে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সরিয়ে শেখ হাসিনা আবার বাংলাদেশে ফিরবেন। বর্তমান সরকারকে তিনি বলেন ‘অবৈধ’।
‘হাসিনা যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ অন্ধকার গহ্বরের দিকে এগোচ্ছে’, টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন।
‘আমার একটাই লক্ষ্য—বাংলাদেশকে আবার সঠিক পথে ফেরানো। এখন আমার কোনো শখ নেই, বিনোদনেরও সুযোগ নেই,’ তিনি জানান।
৫১ বছরের এই সাবেক শিক্ষক এখন দিন-রাত শুধু কাজ নিয়েই ব্যস্ত। ‘আমার ঘুমের নির্দিষ্ট সময় নেই। কখনো কখনো ভোর আর সন্ধ্যা গুলিয়ে ফেলি। প্রতিদিনের জীবন মানে শুধু কাজ, কাজ আর কাজ,’ বলেন আরাফাত।
তাঁর কাছে ‘কাজ’ মানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি সাজানো এবং নির্বাসনে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মী-নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
আরাফাত শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত গিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একজন হিসেবে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রদের কোটা-বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে। শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে। এর পরের এক বছরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রায় ১,৩০০ নেতা-কর্মী নির্বাসনে রয়েছেন ভারত ও বিশ্বের নানা প্রান্তে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জানান—শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সাংবাদিক, সিভিল সোসাইটির কর্মী, সেনা কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, এমনকি কূটনীতিকেরাও পালাতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁর মতে ‘মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের নিপীড়নের কারণে’।
‘সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ২,০০০ ছাড়িয়েছে,’ দাবি করেন ওই নেতা।
ভারতে যাঁরা আছেন, তাঁদের বেশিরভাগই এখন কলকাতার উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা নতুন উপশহর নিউ টাউনে স্থায়ী হয়েছেন। এখানে আছে প্রশস্ত রাস্তা, ভাড়ায় সহজলভ্য ফ্ল্যাট, শপিং মল, জিম এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও এখান থেকে কাছে। সব মিলিয়ে নিউ টাউন হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের নির্বাসিত নেতাদের আবাস।
পরিবার-পরিজন এখনো বাংলাদেশে। তাই এই নির্বাসিতদের জীবন এক নিয়মে চলছে। ভোরে ফজরের নামাজ, তারপর জিমে যাওয়া বা সকালের হাঁটা। সন্ধ্যায় অনলাইন বৈঠক হয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। কখনো দেশের ভেতরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে, আবার কখনো সারা দুনিয়ার নানা প্রান্তে। আর প্রতিদিন ভেসে ওঠে দেশে ফেরার আশা।
ওদেরই মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গত অক্টোবরে তাঁকে নিউ টাউনের আশেপাশে দেখা গিয়েছিল।
‘আরাম করার জন্য আসিনি’
২০২৪ সালের ২ অক্টোবর হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে কলকাতার বিখ্যাত বিনোদনকেন্দ্র নিক্কো পার্কে দেখা গেছে।
কেউ জানত না, তিনি কীভাবে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। ঢাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন হিমশিম খাচ্ছিল জনগণকে বোঝাতে। সবার এক প্রশ্ন—কীভাবে ঢাকায় থাকা কামালকে হঠাৎ কলকাতায় দেখা গেল? তত দিনে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-অধিকার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তাঁর নামে একাধিক মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আরও যেসব মন্ত্রী-সাংসদের খোঁজ মিলছিল না, তাঁদের একজন ছিলেন কামাল।
‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। যদি তাঁরা নিয়মমাফিক ইমিগ্রেশন পার হয়ে যেতেন, আমাদের কাছে প্রমাণ থাকত। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ নেই… অনেকে বেআইনিভাবে দেশ ছেড়েছেন। কেউ এখনো দেশে আছেন, আবার অনেককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে,’ স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শকের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহ আলম।
নিউ টাউনে থাকা এক সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-কে জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিতই কামালের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর ভাষ্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখন সেখানে একটি বড় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। সহকর্মীরা নিয়মিত আসেন। আশপাশের প্রতিবেশীরাও আসেন। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি কলকাতায় থাকেন। তবে প্রতি সপ্তাহেই দিল্লি যান দলীয় বৈঠকে অংশ নিতে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে। এদিকে গত সেপ্টেম্বর ঢাকায় তাঁর ছেলে সাফি মুদ্দাসসির খান জ্যোতি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সাবেক সেই সাংসদের কথায়, দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার দায়িত্ব এখন কামালের কাঁধে। প্রতিদিনই তিনি সহকর্মীদের বলেন, ‘আমরা এখানে আরাম করার জন্য আসিনি, চিরদিন থেকে যাওয়ার জন্যও আসিনি। প্রাণ বাঁচানোর জন্য এসেছি, আগামী দিনের লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকতে এসেছি।’
কামালের মতো নিয়মিত দিল্লি যাওয়া কিংবা প্রতিদিন বৈঠকে ব্যস্ত থাকার সুযোগ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা পাননি। তবে গত আগস্ট থেকে অনেকেই একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছেন।
আড়াল করা অফিস?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজারের এক সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ বলেন, এখন জীবনটা একটা নিয়মে বেঁধে গেছে।
‘ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমি ফজরের নামাজ পড়ি। এরপর আমি আরেকজন সাবেক সাংসদের সঙ্গে পাশের জিমে যাই। তিনি আর আমি ৩ বিডিএইচকে অ্যাপার্টমেন্ট ভাগাভাগি করে থাকি। জিমটা বেশ ভালো। আমি ওয়েট লিফটিং করি। আমার ফ্ল্যাটমেটও ব্যায়াম করেন’ বললেন ওই সাংসদ।
প্রায় ১,৫০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টটির ভাড়া মাসে ৩০ হাজার ভারতীয় রুপি। সাংসদ মনে করেন ভাড়াটা খুব বেশি নয়। তবে ঝামেলা হচ্ছে গৃহকর্মী ও বাবুর্চি—অকারণে বারবার ছুটি নেয়।
‘আমি রান্না করতে অভ্যস্ত নই, আমার ফ্ল্যাটমেটও না। কিন্তু কখনো কখনো রান্না করতে হয়। তখন ঢাকায় থাকা আমার স্ত্রী ভিডিও কলে ধাপে ধাপে শিখিয়ে দেন। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। কে জানে, দেশে ফেরার পর হয়তো নতুন পেশা হিসেবে বাবুর্চিগিরি শুরু করব’ হাসতে হাসতে বললেন ওই সাবেক সাংসদ।
দুপুরের খাবারের পর একটু ঘুমিয়ে নিয়ে সন্ধ্যায় তারা অনলাইনে বৈঠকে বসেন—বাংলাদেশ, ভারত এবং বিভিন্ন দেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। সেসব বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক খবরাখবর নিয়ে আলোচনা হয়, পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হয়।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘আমরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ও একাকী। কিন্তু তাদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব, যেখানেই থাকি না কেন। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষের আরও ভালো কিছু প্রাপ্য। আমাদের দেশকে আবারও এই অঞ্চলের রত্ন হিসেবে পরিণত করতেই হবে। দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, গর্ব আর দেশপ্রেমই আমাদের একসূত্রে বাঁধে। আমরা সবসময়ই বাংলাদেশকে আমাদের হৃদয়ে বয়ে নিয়ে চলব।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে, কলকাতায় নাকি আওয়ামী লীগের একটি ‘গোপন কার্যালয়’ আছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তা জানে। তবে কক্সবাজারের ওই সাবেক সাংসদ এ দাবি নাকচ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, সবাই একসঙ্গে বসব বলে নিউটাউনে আমরা একটা জায়গা ভাড়া নিয়েছি। কলকাতায় প্রায় ১,৩০০ জন আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছেন। আমরা কি সবাই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বসার ঘরে গিয়ে মিটিং করব? তবে এটাকে অফিস বলা বাড়াবাড়ি হবে।’
উপন্যাস আর হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট
কলকাতার নিউটাউন থেকে বহু দূরে, কানাডার অটোয়ার এক শান্ত পাড়ায় নতুন জীবন শুরু করেছেন বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক হারুন আল রশীদ। আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক সদস্য না হলেও তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের একজন সোচ্চার সমর্থক এবং ড. ইউনুস সরকারের কড়া সমালোচক।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাকা অবস্থায় রশীদকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি ফেরেননি। বরং ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন।
‘আমি পোস্টটির শিরোনাম দিয়েছিলাম, “বাংলাদেশ আর আমার নিজের জন্য একটি আহ্বান।” তার জবাবে অন্তর্বর্তী সরকার আমার এবং আমার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়,’ বলেন রশীদ।
অটোয়ায় এখন তিনি লেখালিখিতেই সময় কাটান। ‘যতটা পড়তে চাই, ততটা পড়া হয় না। তবে ঘরের কোথাও না কোথাও একটা পেপারব্যাক বই খোলা থাকে—সকালের চায়ে চুমুক দিতে দিতে পাঁচ পৃষ্ঠা, শোবার আগে এক অধ্যায়,’ তিনি বললেন।
বর্তমানে তিনি সেলফ এমপ্লয়েড। তবে মাঝে মাঝে অস্থির লাগে। সীমিত বাজেটে চলেন। বাড়ি থেকে বেশি দূরে যেতে হয় এমন কাজ এড়িয়ে যান।
গত এক বছরে তিনি অনলাইনে বেশ সক্রিয়। তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভর্তি বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক পথচলার নানা বিশ্লেষণে। রশীদের ভাষায়, ‘ড. ইউনুস বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন। এমন ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন যা একবিংশ শতাব্দীতে খুব কমই দেখা গেছে। আমি এ কথা বিশ্বকে জানাতে বাধ্য। কাউকে ক্ষেপানো আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি চাই বরং প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করতে, তাদের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে ক্ষতিগ্রস্তদের দিকে সবার নজর ফেরাতে।’
ইউনুস-বিরোধী এসব লেখার ফাঁকেই যখনই একটি সুন্দর অনুচ্ছেদ লিখে ফেলতে পারেন, তখনই তাঁর দিনটি ভালো কেটে যায়। সেইসব দিনেই তৈরি হয়েছে তাঁর প্রথম উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি—বাংলাদেশ নিয়ে লেখা একটি ডিস্টোপিয়ান কাহিনি।
উপন্যাসটির নাম দা ম্যাপমেকারস প্রেয়ারস। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওয়াদুদ। এই চরিত্রকে দেখা যায় ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জন্ম পর্যন্ত সময়ের ভেতর দিয়ে। রশীদ বললেন, ‘ছোটবেলায় আমার নায়ক ওয়াদুদ তার হিন্দু প্রতিবেশীদের আগুনে পুড়ে মরতে দেখে। তার বন্ধু বাবুলের পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। বন্ধুটি রেখাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জোর করে এক কট্টরপন্থি মৌলভীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ওয়াদুদ আর বাংলাদেশকে ঘিরেই আমার উপন্যাস।’
অন্যদিকে, ওয়াদুদের কল্পিত ডিস্টোপিয়ান দুনিয়ার বাইরে, ঢাকার এক তরুণ আওয়ামী লীগ সাংসদ কিন্তু খুঁজে পেয়েছেন মন ভাল হওয়ার কারণ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকছেন। এই অবসরে নিজের টাকমাথা ঢাকতে গিয়ে করিয়েছেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট।
‘ঢাকা থেকে যখন পালিয়ে আসি, তখনই চুল উঠে যাচ্ছিল। কয়েক বছর ধরে স্ত্রী বলছিলেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করতে। কিন্তু নির্বাচনি এলাকায় এত ব্যস্ত ছিলাম, প্রথমবারের এমপি হিসেবে সময়ই পাইনি,’ বললেন তিনি।
অবশেষে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি দিল্লি গিয়ে দক্ষিণ দিল্লির একটি সেন্টারে নতুন চেহারা নিয়ে ফেরেন। ‘এমন কঠিন সময়ে মাথায় নতুন চুল পাওয়া— আনন্দের ব্যাপার।’
শেখ হাসিনার সরকার পতন ও তাঁর ভারতে নির্বাসনের পর থেকে গত এক বছরে মো. এ এ আরাফাতের জীবন একঘেয়েভাবে কাটছে। না নতুন কোনো শখ, না পুরোনো আগ্রহের চর্চা। কেবল দলীয় রাজনীতি নিয়েই তিনি ব্যস্ত আছেন। তাঁর স্বপ্ন এখন একটাই—ক্ষমতা থেকে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সরিয়ে শেখ হাসিনা আবার বাংলাদেশে ফিরবেন। বর্তমান সরকারকে তিনি বলেন ‘অবৈধ’।
‘হাসিনা যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ অন্ধকার গহ্বরের দিকে এগোচ্ছে’, টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন।
‘আমার একটাই লক্ষ্য—বাংলাদেশকে আবার সঠিক পথে ফেরানো। এখন আমার কোনো শখ নেই, বিনোদনেরও সুযোগ নেই,’ তিনি জানান।
৫১ বছরের এই সাবেক শিক্ষক এখন দিন-রাত শুধু কাজ নিয়েই ব্যস্ত। ‘আমার ঘুমের নির্দিষ্ট সময় নেই। কখনো কখনো ভোর আর সন্ধ্যা গুলিয়ে ফেলি। প্রতিদিনের জীবন মানে শুধু কাজ, কাজ আর কাজ,’ বলেন আরাফাত।
তাঁর কাছে ‘কাজ’ মানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি সাজানো এবং নির্বাসনে থাকা আওয়ামী লীগের কর্মী-নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
আরাফাত শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত গিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একজন হিসেবে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রদের কোটা-বিরোধী আন্দোলন রূপ নেয় হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে। শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে। এর পরের এক বছরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রায় ১,৩০০ নেতা-কর্মী নির্বাসনে রয়েছেন ভারত ও বিশ্বের নানা প্রান্তে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জানান—শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সাংবাদিক, সিভিল সোসাইটির কর্মী, সেনা কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, এমনকি কূটনীতিকেরাও পালাতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁর মতে ‘মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের নিপীড়নের কারণে’।
‘সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ২,০০০ ছাড়িয়েছে,’ দাবি করেন ওই নেতা।
ভারতে যাঁরা আছেন, তাঁদের বেশিরভাগই এখন কলকাতার উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা নতুন উপশহর নিউ টাউনে স্থায়ী হয়েছেন। এখানে আছে প্রশস্ত রাস্তা, ভাড়ায় সহজলভ্য ফ্ল্যাট, শপিং মল, জিম এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও এখান থেকে কাছে। সব মিলিয়ে নিউ টাউন হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের নির্বাসিত নেতাদের আবাস।
পরিবার-পরিজন এখনো বাংলাদেশে। তাই এই নির্বাসিতদের জীবন এক নিয়মে চলছে। ভোরে ফজরের নামাজ, তারপর জিমে যাওয়া বা সকালের হাঁটা। সন্ধ্যায় অনলাইন বৈঠক হয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। কখনো দেশের ভেতরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে, আবার কখনো সারা দুনিয়ার নানা প্রান্তে। আর প্রতিদিন ভেসে ওঠে দেশে ফেরার আশা।
ওদেরই মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গত অক্টোবরে তাঁকে নিউ টাউনের আশেপাশে দেখা গিয়েছিল।
‘আরাম করার জন্য আসিনি’
২০২৪ সালের ২ অক্টোবর হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে কলকাতার বিখ্যাত বিনোদনকেন্দ্র নিক্কো পার্কে দেখা গেছে।
কেউ জানত না, তিনি কীভাবে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। ঢাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন হিমশিম খাচ্ছিল জনগণকে বোঝাতে। সবার এক প্রশ্ন—কীভাবে ঢাকায় থাকা কামালকে হঠাৎ কলকাতায় দেখা গেল? তত দিনে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-অধিকার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তাঁর নামে একাধিক মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আরও যেসব মন্ত্রী-সাংসদের খোঁজ মিলছিল না, তাঁদের একজন ছিলেন কামাল।
‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। যদি তাঁরা নিয়মমাফিক ইমিগ্রেশন পার হয়ে যেতেন, আমাদের কাছে প্রমাণ থাকত। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ নেই… অনেকে বেআইনিভাবে দেশ ছেড়েছেন। কেউ এখনো দেশে আছেন, আবার অনেককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে,’ স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শকের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহ আলম।
নিউ টাউনে থাকা এক সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট-কে জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিতই কামালের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর ভাষ্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখন সেখানে একটি বড় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। সহকর্মীরা নিয়মিত আসেন। আশপাশের প্রতিবেশীরাও আসেন। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি কলকাতায় থাকেন। তবে প্রতি সপ্তাহেই দিল্লি যান দলীয় বৈঠকে অংশ নিতে এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে। এদিকে গত সেপ্টেম্বর ঢাকায় তাঁর ছেলে সাফি মুদ্দাসসির খান জ্যোতি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সাবেক সেই সাংসদের কথায়, দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার দায়িত্ব এখন কামালের কাঁধে। প্রতিদিনই তিনি সহকর্মীদের বলেন, ‘আমরা এখানে আরাম করার জন্য আসিনি, চিরদিন থেকে যাওয়ার জন্যও আসিনি। প্রাণ বাঁচানোর জন্য এসেছি, আগামী দিনের লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকতে এসেছি।’
কামালের মতো নিয়মিত দিল্লি যাওয়া কিংবা প্রতিদিন বৈঠকে ব্যস্ত থাকার সুযোগ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা পাননি। তবে গত আগস্ট থেকে অনেকেই একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছেন।
আড়াল করা অফিস?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজারের এক সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ বলেন, এখন জীবনটা একটা নিয়মে বেঁধে গেছে।
‘ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমি ফজরের নামাজ পড়ি। এরপর আমি আরেকজন সাবেক সাংসদের সঙ্গে পাশের জিমে যাই। তিনি আর আমি ৩ বিডিএইচকে অ্যাপার্টমেন্ট ভাগাভাগি করে থাকি। জিমটা বেশ ভালো। আমি ওয়েট লিফটিং করি। আমার ফ্ল্যাটমেটও ব্যায়াম করেন’ বললেন ওই সাংসদ।
প্রায় ১,৫০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্টটির ভাড়া মাসে ৩০ হাজার ভারতীয় রুপি। সাংসদ মনে করেন ভাড়াটা খুব বেশি নয়। তবে ঝামেলা হচ্ছে গৃহকর্মী ও বাবুর্চি—অকারণে বারবার ছুটি নেয়।
‘আমি রান্না করতে অভ্যস্ত নই, আমার ফ্ল্যাটমেটও না। কিন্তু কখনো কখনো রান্না করতে হয়। তখন ঢাকায় থাকা আমার স্ত্রী ভিডিও কলে ধাপে ধাপে শিখিয়ে দেন। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। কে জানে, দেশে ফেরার পর হয়তো নতুন পেশা হিসেবে বাবুর্চিগিরি শুরু করব’ হাসতে হাসতে বললেন ওই সাবেক সাংসদ।
দুপুরের খাবারের পর একটু ঘুমিয়ে নিয়ে সন্ধ্যায় তারা অনলাইনে বৈঠকে বসেন—বাংলাদেশ, ভারত এবং বিভিন্ন দেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। সেসব বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক খবরাখবর নিয়ে আলোচনা হয়, পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হয়।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘আমরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ও একাকী। কিন্তু তাদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব, যেখানেই থাকি না কেন। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষের আরও ভালো কিছু প্রাপ্য। আমাদের দেশকে আবারও এই অঞ্চলের রত্ন হিসেবে পরিণত করতেই হবে। দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, গর্ব আর দেশপ্রেমই আমাদের একসূত্রে বাঁধে। আমরা সবসময়ই বাংলাদেশকে আমাদের হৃদয়ে বয়ে নিয়ে চলব।’
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছে, কলকাতায় নাকি আওয়ামী লীগের একটি ‘গোপন কার্যালয়’ আছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তা জানে। তবে কক্সবাজারের ওই সাবেক সাংসদ এ দাবি নাকচ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, সবাই একসঙ্গে বসব বলে নিউটাউনে আমরা একটা জায়গা ভাড়া নিয়েছি। কলকাতায় প্রায় ১,৩০০ জন আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছেন। আমরা কি সবাই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বসার ঘরে গিয়ে মিটিং করব? তবে এটাকে অফিস বলা বাড়াবাড়ি হবে।’
উপন্যাস আর হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট
কলকাতার নিউটাউন থেকে বহু দূরে, কানাডার অটোয়ার এক শান্ত পাড়ায় নতুন জীবন শুরু করেছেন বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক হারুন আল রশীদ। আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক সদস্য না হলেও তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের একজন সোচ্চার সমর্থক এবং ড. ইউনুস সরকারের কড়া সমালোচক।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাকা অবস্থায় রশীদকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি ফেরেননি। বরং ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন।
‘আমি পোস্টটির শিরোনাম দিয়েছিলাম, “বাংলাদেশ আর আমার নিজের জন্য একটি আহ্বান।” তার জবাবে অন্তর্বর্তী সরকার আমার এবং আমার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়,’ বলেন রশীদ।
অটোয়ায় এখন তিনি লেখালিখিতেই সময় কাটান। ‘যতটা পড়তে চাই, ততটা পড়া হয় না। তবে ঘরের কোথাও না কোথাও একটা পেপারব্যাক বই খোলা থাকে—সকালের চায়ে চুমুক দিতে দিতে পাঁচ পৃষ্ঠা, শোবার আগে এক অধ্যায়,’ তিনি বললেন।
বর্তমানে তিনি সেলফ এমপ্লয়েড। তবে মাঝে মাঝে অস্থির লাগে। সীমিত বাজেটে চলেন। বাড়ি থেকে বেশি দূরে যেতে হয় এমন কাজ এড়িয়ে যান।
গত এক বছরে তিনি অনলাইনে বেশ সক্রিয়। তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভর্তি বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক পথচলার নানা বিশ্লেষণে। রশীদের ভাষায়, ‘ড. ইউনুস বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন। এমন ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন যা একবিংশ শতাব্দীতে খুব কমই দেখা গেছে। আমি এ কথা বিশ্বকে জানাতে বাধ্য। কাউকে ক্ষেপানো আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি চাই বরং প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করতে, তাদের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে ক্ষতিগ্রস্তদের দিকে সবার নজর ফেরাতে।’
ইউনুস-বিরোধী এসব লেখার ফাঁকেই যখনই একটি সুন্দর অনুচ্ছেদ লিখে ফেলতে পারেন, তখনই তাঁর দিনটি ভালো কেটে যায়। সেইসব দিনেই তৈরি হয়েছে তাঁর প্রথম উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি—বাংলাদেশ নিয়ে লেখা একটি ডিস্টোপিয়ান কাহিনি।
উপন্যাসটির নাম দা ম্যাপমেকারস প্রেয়ারস। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওয়াদুদ। এই চরিত্রকে দেখা যায় ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জন্ম পর্যন্ত সময়ের ভেতর দিয়ে। রশীদ বললেন, ‘ছোটবেলায় আমার নায়ক ওয়াদুদ তার হিন্দু প্রতিবেশীদের আগুনে পুড়ে মরতে দেখে। তার বন্ধু বাবুলের পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। বন্ধুটি রেখাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জোর করে এক কট্টরপন্থি মৌলভীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ওয়াদুদ আর বাংলাদেশকে ঘিরেই আমার উপন্যাস।’
অন্যদিকে, ওয়াদুদের কল্পিত ডিস্টোপিয়ান দুনিয়ার বাইরে, ঢাকার এক তরুণ আওয়ামী লীগ সাংসদ কিন্তু খুঁজে পেয়েছেন মন ভাল হওয়ার কারণ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকছেন। এই অবসরে নিজের টাকমাথা ঢাকতে গিয়ে করিয়েছেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট।
‘ঢাকা থেকে যখন পালিয়ে আসি, তখনই চুল উঠে যাচ্ছিল। কয়েক বছর ধরে স্ত্রী বলছিলেন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করতে। কিন্তু নির্বাচনি এলাকায় এত ব্যস্ত ছিলাম, প্রথমবারের এমপি হিসেবে সময়ই পাইনি,’ বললেন তিনি।
অবশেষে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি দিল্লি গিয়ে দক্ষিণ দিল্লির একটি সেন্টারে নতুন চেহারা নিয়ে ফেরেন। ‘এমন কঠিন সময়ে মাথায় নতুন চুল পাওয়া— আনন্দের ব্যাপার।’
জুলাই সনদের ভিত্তিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে এবি পার্টি। সনদের সাংবিধানিক মর্যাদা, আইনগত ভিত্তি ও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দ্রুত বৈঠক শুরুর তাগিদ দিয়েছে তারা।
৩৭ মিনিট আগেআজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ প্যানেল ঘোষণা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
৫ ঘণ্টা আগেতারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশ এবং জনগণের কল্যাণে বিএনপির নেওয়া পরিকল্পনাগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আপনারা দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে বিএনপির যে কল্পনাগুলো সেই পরিকল্পনাগুলো আপনারা জনগণের সামনে তুলে ধর
৭ ঘণ্টা আগেজুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন নানা কর্মসূচি দিয়ে যাবে, কোনোভাবেই মাঠ ছাড়বে না বলে জানিয়েছেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে, নির্বাচনের আগেই এটা হতে হবে। আ
১ দিন আগে