leadT1ad

বাংলাদেশের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান নারায়ে তাকবির: আবদুল্লাহ তাহের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫২
বক্তৃতা করছেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান হলো “নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবার”, জয় বাংলা নয়। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের সিপাহী বিপ্লব শুরু হয়েছিল নারায়ে তাকবির স্লোগান দিয়ে। সেদিন ঢাকার রাজপথ নারায়ে তাকবির স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছিল সিপাহি-জনতা।’

আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি করেন ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।

সভায় ডা. তাহের বলেন, ‘৬ তারিখ দিবাগত রাতে, ক্যালেন্ডার হিসেবে ৭ তারিখে সিপাহিরা খালেদ মোশাররফের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলো। ক্যান্টনমেন্টে সকলে নারায়ে তাকবিরের স্লোগান দিয়ে বিপ্লবের যাত্রা শুরু করেছিল। খালেদ মোশাররফ পালিয়ে গিয়েছিলেন, সাভার পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন, তারপর ধরা পড়েন।’

এরপর ডা. তাহের বলেন, ‘সিপাহীদের বিপ্লবের খবর যখন ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লো, সমস্ত মানুষ ঘুম থেকে জেগে ওঠে রাস্তায় নেমে আবার সেই নারায়ে তকবির স্লোগান দিলো। তাহলে এই বাংলাদেশের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান ‘নারায়ে তাকবির-আল্লাহু আকবার’, জয় বাংলা নহে। এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে, মানুষ লাফায়া লাফায় ট্যাঙ্কের ‍ওপর ওঠার চেষ্টা করেছে। সেনাবাহিনী হাত দিয়া টাইনা তোলার চেষ্টা করেছে। অর্ধেক ছিল সেনাবাহিনী, অর্ধেক ছিল জনতা, বাহন ছিল ট্যাঙ্ক। এই ছিল ঢাকার দৃশ্য। জনতা, সিপাহি, আর্মি, মানুষ, ট্যাঙ্কের পদচারণা আর রাস্তায় রাস্তায় নারায়ে তাকবিরের স্লোগান। এ এক নতুন বাংলাদেশ।’

জামায়াতের এই নায়েবে আমির তাঁর বক্তব্যে জানান, এরপর আবার নতুন করে দেশ শাসন শুরু হয়। বাকশালের মৃত্যু ঘটে এবং সামনে আসে জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণা।

ডা. তাহের বলেন, ‘পলিটিক্যাল পার্টি রেগুলেশন বা পিপিআর এর নামে এক নতুন ধারণা দিয়ে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে রেজিস্ট্রেশন আহ্বান করেন। জিয়াউর রহমান যে দলের অনুমতি দিয়েছেন এর মধ্যে অন্যতম দল ছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ তো বাকশাল করেই শেষ, শেখ সাহেবই আওয়ামী লীগের এই হত্যার জন্য দায়ী। তিনি এই নাম মুছে দিয়েছিলেন। আবার নতুন করে জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে রেজিস্ট্রেশন দিয়েছেন।’

ডা. তাহের বলেন, ‘পলিটিক্যাল পার্টি রেগুলেশন বা পিপিআর এর নামে এক নতুন ধারণা দিয়ে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে রেজিস্ট্রেশন আহ্বান করেন। জিয়াউর রহমান যে দলের অনুমতি দিয়েছেন এর মধ্যে অন্যতম দল ছিল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ তো বাকশাল করেই শেষ, শেখ সাহেবই আওয়ামী লীগের এই হত্যার জন্য দায়ী। তিনি এই নাম মুছে দিয়েছিলেন। আবার নতুন করে জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে রেজিস্ট্রেশন দিয়েছেন।’

ওই সময়ে জামায়াতের নিবন্ধন পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরপরে যারা সেদিন রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে তার মাঝে একটি নাম জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে বহুমাত্রিক, বহুদলীয় রাজনীতির প্রবক্তা বা নায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। একাত্তর সালে যুদ্ধের পরে বাংলাদেশে যে ডিভিশন হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সাহেব এসে দেশে একটি ঐক্যের আবহ তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। এখানে তাঁর নিজের রাজনৈতিক স্বার্থও ছিল। আওয়ামী লীগবিরোধী যে সেন্টিমেন্ট ছিল সেটাকে তিনি উনার পক্ষে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। তিনি বিচক্ষণ ছিলেন।’

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। সভা পরিচলনা করেন দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে ঘটনা ঘটেছিল এর ধারাবাহিক সমাপ্তি হয় ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। তখন থেকেই দিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তিনি বলেন, ‘এর দ্বারা বোঝা যায়, যখন যেখানে যে ভূমিকা রাখা দরকার বাংলাদেশের মানুষ সেই ভূমিকাই রেখেছে। ১৫ আগস্ট থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অনেক কিছুই ঘটেছে। কিন্তু মানুষ শেষমেশ সঠিক ভূমিকাটাই রেখেছে।’

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এবারের জুলাই বিপ্লবেও এই দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রাম করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। এরপরে মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কালো মেঘের ঘনঘটা লক্ষ করা যাচ্ছে। এসময় উপদেষ্টাসহ অনেকে সরকারকে ‘মিসগাইড’ করছেন বলেও জানান তিনি।

আগামী ১১ নভেম্বর রাজধানী ঢাকাকে লোকারণ্য করে সরকারকে গণভোট দিতে বাধ্য করা হবে বলে জানান শফিকুল ইসলাম মাসুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত দিনেও যেমন শিশাঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটানো এবং দেশত্যাগে জনগণকে সাথে নিয়ে বাধ্য করেছি, ঠিক একইভাবে আগামী দিনে গণভোট আদায়ে প্রয়োজনে আগামী ১১ তারিখ গোটা ঢাকা মহানগরীকে লোকে লোকারণ্য করে এই সরকারকে গণভোটে বাধ্য করা হবে। গণভোট ছাড়া এদেশের জনগণ জাতীয় নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত নয়।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত