এহ্সান মাহমুদ
১৯৭৫ সালের ১১ নভেম্বর বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘আমি একজন সৈনিক।’ ১৯৭৬ সালের মে মাসে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একজন শ্রমিক।’ ১৯৭৭ সালের ২২ মে ‘আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’ জিয়া ঘোষণা করেন ১৯ দফা কর্মসূচি। একজন সৈনিকের দক্ষতা ও বিজয়ী হওয়ার জন্য লক্ষ্যে অবিচল থাকা; শ্রমিকের সততা ও পরিশ্রমে সোনালি ফসলের সম্মিলিত ধারণা দেখা গিয়েছিল ১৯ দফা কর্মসূচিতে।
এরপর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। সেই দলটি আজ ৪৭ বছর অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রহরী হিসেবে।
নিজেকে প্রথমে সৈনিক ও পরে শ্রমিক হিসেবে অভিহিত করা জিয়াউর রহমান এরপর যে দার্শনিক চিন্তা সামনে নিয়ে এলেন, সেটি হল- বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশে বহু জাতি, ধর্ম, বর্ণ, মত ও পথের মানুষ রয়েছে। সবাইকে এক ও অভিন্ন সুতোয় বেঁধে রাখতে পারে যেটি, সেটি হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্র। একক বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের ধারণার বিপরীতে আমরা পাই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখি তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বহুদলীয় গণতন্ত্র।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন তাঁরই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া।
চব্বিশের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রায় ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া মামলা, কারাভোগ ও পরে অসুস্থতার কারণে বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় নেই।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। তিনি ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।
টানা ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। এই দীর্ঘ সময়েও দলটি যেভাবে তার লাখো-কোটি সমর্থকদের আস্থায় থাকতে পেরেছে, দলের ভাঙন রোধ করতে সক্ষম হয়েছে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পেরেছে এটাও বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল নয় কেবল, একমাত্র দৃষ্টান্ত।
খালি চোখে দেখলে মনে হতে পারে দীর্ঘ দেড় যুগ পর অনুকূল পরিবেশ অতিক্রম করছে বিএনপি। আসলেও কি তাই? গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটি হয়তো স্বস্তি ফিরেছে।
সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক পথচলায় বিএনপি কখনো ক্ষমতায় থেকেছে, কখনো আন্দোলনে। বিগত দেড়যুগ রাজপথেই কেটেছে বিএনপি’র। দলটি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে অবিচল ছিল। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট সরকার’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ফ্যাসিস্ট’।
গণ-অভ্যুত্থানের পর স্বাভাবিকভাবেই দেশ নতুন এক রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ প্রকাশ্য রাজনীতির বাইরে চলে যাওয়ায় বিএনপির সামনে সুযোগ এসেছে নিজেদের উপস্থাপনের।
দীর্ঘ দেড় যুগের অমানিশা কাটিয়ে রাষ্ট্র-ক্ষমতা হাতছানি দিচ্ছে দলটির সামনে। তবে এটাও মনে রাখা জরুরি, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। যেমনটি নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বিএনপিকে মোকাবিলা করতে হয়নি।
বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রেখে একটি নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায় করাটাই দলটির প্রধান চ্যালেঞ্জ। তরুণ ভোটারদের আস্থায় আনা এবং ‘জুলাই সনদ’র ঘোষণা ও কার্যকরের বিষয়টি দলটিকে মাথায় রেখেই নতুন দিনের রাজনীতি করতে হবে।
প্রতিষ্ঠার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সইতে হয়েছে বিএনপিকে। জিয়াউর রহমানের পরে বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ়চেতা, আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়েছে দুর্দান্ত গতিতে। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এক দশকের মাথায় ১৯৯১ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল বিএনপি।
এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বিএনপি। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আরও সুসংগঠিত। দলটি একাধিকবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। দলটির যে বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয় তা হলো, কখনোই এই দলের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করা যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের আমলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও কোনো মামলায় তাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করা যায়নি।
সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, সেটি হলো, দল হিসেবে বিএনপি সময়ই গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল। জনগণের পক্ষে অবস্থান ছিল দলটির। নব্বইয়ে স্বৈরাচারের অধীনে আওয়ামী লীগ, জামায়াত সবাই নির্বাচনে সম্মত হলেও বিএনপি ছিল জনগণের কাতারে। তার ফলও দলটি পেয়েছিল একানব্বইয়ে।
আবার ছিয়ানব্বইয়ে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রণয়নেও দলটি রেখেছিল ঐতিহাসিক ভূমিকা। এখন চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণের সহজ ও চটুল রাজনীতিতে না গিয়ে জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। এটাই বিএনপির বহুদলীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য।
দলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একসময়ে নিজেকে সৈনিক ও শ্রমিক দাবি করেছিলেন; পচাঁত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে বাকশালের জমানা পেরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রও তিনি চালু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরি খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন।
সবশেষ তারেক রহমান বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে দলটির সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই যে ধারবাহিকতা, এটিই বিএনপিকে অনন্য করে তুলেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশপন্থী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিপূরক। বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজের গণতান্ত্রিক চরিত্র বজায় রাখবে এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক
১৯৭৫ সালের ১১ নভেম্বর বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ‘আমি একজন সৈনিক।’ ১৯৭৬ সালের মে মাসে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একজন শ্রমিক।’ ১৯৭৭ সালের ২২ মে ‘আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’ জিয়া ঘোষণা করেন ১৯ দফা কর্মসূচি। একজন সৈনিকের দক্ষতা ও বিজয়ী হওয়ার জন্য লক্ষ্যে অবিচল থাকা; শ্রমিকের সততা ও পরিশ্রমে সোনালি ফসলের সম্মিলিত ধারণা দেখা গিয়েছিল ১৯ দফা কর্মসূচিতে।
এরপর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। সেই দলটি আজ ৪৭ বছর অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রহরী হিসেবে।
নিজেকে প্রথমে সৈনিক ও পরে শ্রমিক হিসেবে অভিহিত করা জিয়াউর রহমান এরপর যে দার্শনিক চিন্তা সামনে নিয়ে এলেন, সেটি হল- বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশে বহু জাতি, ধর্ম, বর্ণ, মত ও পথের মানুষ রয়েছে। সবাইকে এক ও অভিন্ন সুতোয় বেঁধে রাখতে পারে যেটি, সেটি হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্র। একক বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের ধারণার বিপরীতে আমরা পাই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেখি তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বহুদলীয় গণতন্ত্র।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির হাল ধরেন তাঁরই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া।
চব্বিশের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রায় ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া মামলা, কারাভোগ ও পরে অসুস্থতার কারণে বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় নেই।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। তিনি ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।
টানা ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। এই দীর্ঘ সময়েও দলটি যেভাবে তার লাখো-কোটি সমর্থকদের আস্থায় থাকতে পেরেছে, দলের ভাঙন রোধ করতে সক্ষম হয়েছে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে পেরেছে এটাও বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল নয় কেবল, একমাত্র দৃষ্টান্ত।
খালি চোখে দেখলে মনে হতে পারে দীর্ঘ দেড় যুগ পর অনুকূল পরিবেশ অতিক্রম করছে বিএনপি। আসলেও কি তাই? গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটি হয়তো স্বস্তি ফিরেছে।
সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক পথচলায় বিএনপি কখনো ক্ষমতায় থেকেছে, কখনো আন্দোলনে। বিগত দেড়যুগ রাজপথেই কেটেছে বিএনপি’র। দলটি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে অবিচল ছিল। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট সরকার’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ফ্যাসিস্ট’।
গণ-অভ্যুত্থানের পর স্বাভাবিকভাবেই দেশ নতুন এক রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আওয়ামী লীগ প্রকাশ্য রাজনীতির বাইরে চলে যাওয়ায় বিএনপির সামনে সুযোগ এসেছে নিজেদের উপস্থাপনের।
দীর্ঘ দেড় যুগের অমানিশা কাটিয়ে রাষ্ট্র-ক্ষমতা হাতছানি দিচ্ছে দলটির সামনে। তবে এটাও মনে রাখা জরুরি, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানোত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপির সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। যেমনটি নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বিএনপিকে মোকাবিলা করতে হয়নি।
বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রেখে একটি নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায় করাটাই দলটির প্রধান চ্যালেঞ্জ। তরুণ ভোটারদের আস্থায় আনা এবং ‘জুলাই সনদ’র ঘোষণা ও কার্যকরের বিষয়টি দলটিকে মাথায় রেখেই নতুন দিনের রাজনীতি করতে হবে।
প্রতিষ্ঠার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সইতে হয়েছে বিএনপিকে। জিয়াউর রহমানের পরে বেগম খালেদা জিয়ার দৃঢ়চেতা, আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি এগিয়েছে দুর্দান্ত গতিতে। দোর্দণ্ড প্রতাপশালী স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এক দশকের মাথায় ১৯৯১ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিল বিএনপি।
এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বিএনপি। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আরও সুসংগঠিত। দলটি একাধিকবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। দলটির যে বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয় তা হলো, কখনোই এই দলের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করা যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের আমলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও কোনো মামলায় তাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণ করা যায়নি।
সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, সেটি হলো, দল হিসেবে বিএনপি সময়ই গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল। জনগণের পক্ষে অবস্থান ছিল দলটির। নব্বইয়ে স্বৈরাচারের অধীনে আওয়ামী লীগ, জামায়াত সবাই নির্বাচনে সম্মত হলেও বিএনপি ছিল জনগণের কাতারে। তার ফলও দলটি পেয়েছিল একানব্বইয়ে।
আবার ছিয়ানব্বইয়ে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা প্রণয়নেও দলটি রেখেছিল ঐতিহাসিক ভূমিকা। এখন চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পরে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণের সহজ ও চটুল রাজনীতিতে না গিয়ে জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। এটাই বিএনপির বহুদলীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য।
দলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একসময়ে নিজেকে সৈনিক ও শ্রমিক দাবি করেছিলেন; পচাঁত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে বাকশালের জমানা পেরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রও তিনি চালু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরি খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন।
সবশেষ তারেক রহমান বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে দলটির সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই যে ধারবাহিকতা, এটিই বিএনপিকে অনন্য করে তুলেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশপন্থী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিপূরক। বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজের গণতান্ত্রিক চরিত্র বজায় রাখবে এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক
‘মুসলমান’ ও ‘বাংলা’ ভাষা বিষয়ে হাল আমলের বাইনারি ছাপিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক চেতনাপরিস্থিতির কথা বলে তমদ্দুন মজলিস। ইতিহাসে ব্যক্তি বা সংগঠনের ভূমিকা একমাত্রিক থাকে না। তমদ্দুন মজলিসও তার সময় ও পরিস্থিতির বহুমাত্রিক বাস্তবতার মধ্যে তার ক্রিয়াশীলতাকে জারি রেখেছিল; হয়ে ওঠে বাংলাদেশের ইতিহাসের জরুরি অ
৭ ঘণ্টা আগে১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে দলটিকে। জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত দলটি অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনে মধ্যপন্থার রাজনীতি থেকে কখনো সরে আসেনি। তিনবার ক্ষমতায় আসা দলটি এরশাদের স্বৈরশাসন আর হাসিনার ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা করেছে জনগণকে পাশে নিয়ে।
১ দিন আগেআমরা যেসব তথ্য পাচ্ছি, জরিপের ফলাফল পাচ্ছি তাতে দেখা যাচ্ছে— জাতীয় পার্টির ঘাঁটি রংপুর, দিনাজপুর এলাকাতেও বিএনপি এখন তাদের জায়গাগুলো নিয়ে নিচ্ছে এবং কিছুটা জামায়াতও নিচ্ছে। সেই অর্থে জাতীয় পার্টি একটা সেপন্ট ফোর্স বা ক্ষয়ে যাওয়া শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
৩ দিন আগেকাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পশ্চিম বাংলায়। মাঝেমধ্যে তিনি পূর্ব বাংলায় অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু ১৯৭২ সালের আগে সেই আসা স্থায়ীভাবে তো ছিলেনই না, এমনকি রবীন্দ্রনাথের মতো দীর্ঘ দিনের জন্যও কখনো বাংলাদেশে থাকেননি।
৬ দিন আগে