leadT1ad

প্রখ্যাত চিন্তক, লেখক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের মহাপ্রয়াণ

মৃত্যুর সময় বদরুদ্দীন উমরের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর ৭ মাস। গত প্রায় এক মাস যাবত উনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজকে সকালে খারাপ অবস্থা হলে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৬
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৯
লেখক, গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিন্তক, লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তাঁর প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলো।

আর রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম স্ট্রিমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধকব্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত বদরুদ্দীন উমরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে তাঁকে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

আজ রোববার সকাল সাড়ে দশটায় অধ্যাপক আজফার হোসেন মৃত্যুর খবর জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের কমরেড উমর ভাই… বদরুদ্দীন উমর… মারা গেছেন! আমার এই মুহূর্তে আর কিছু বলার মত মনের অবস্থাও নেই!’

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে সভাপতির দায়িত্ব নেন।

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম স্ট্রিমকে বলেন, মৃত্যুর সময় বদরুদ্দীন উমরের বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর ৭ মাস। গত প্রায় এক মাস যাবত উনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজকে সকালে খারাপ অবস্থা হলে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসকরা সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

তাঁকে কোথায় কখন সমাহিত করা হবে জানতে চাইলে ফয়জুল হাকিম জানান, এ নিয়ে আলাপ হচ্ছে। পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হলে জানিয়ে দেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার এক উচ্চবিত্ত পরিবারে ১৯২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জন্ম। বাবা বিখ্যাত রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম, অবিভক্ত বাংলায় মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। বদরুদ্দীন উমর কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে শিক্ষকতা ত্যাগ করে সার্বক্ষণিক রাজনীতি এবং লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন।

বদরুদ্দীন উমরের লেখা পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।

এ বছর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য তাঁকে মনোনীত করেছিল সরকার। তবে বদরুদ্দীন উমর এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন না জানিয়ে বিবৃতি দেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, এর আগেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে তাঁকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল, তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি।

Ad 300x250

শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ শহীদ মিনারে রাখা হবে বদরুদ্দীন উমরের মরদেহ

ভোলায় পরকীয়ার অভিযোগে নারীকে গাছে বেঁধে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা, গ্রেপ্তার ৪

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ: আমাদের প্যানেল গঠিত হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের নেতাদের নিয়ে

ডাকসু নির্বাচন: শিক্ষার্থীদের ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ বেহাত হলো কীভাবে

শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কাল শহীদ মিনারে নেওয়া হবে বদরুদ্দীন উমরের মরদেহ

সম্পর্কিত