leadT1ad

ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন আছে, তবে ‘বাস্তবতা’ মেনে নেওয়াই ভালো: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যে টানাপোড়েন চলছে, সেটিকে ‘বাস্তবতা’ হিসেবে মেনে নেওয়াই ভালো—এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা একটি ভালো কার্যকর সম্পর্ক চাই। তবে আমরা চাইলেই সেটা হবে, এমন কোনো কথা নেই।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাদের হাইকমিশনারকে ডেকেছি। সেখানে আমরা যা বলেছি, সবকিছু তারা গ্রহণ করেনি; তাদের কিছু দ্বিমত আছে। একইভাবে আমাদের হাইকমিশনারকেও তারা ডেকেছে। এমনটা সাধারণত ঘটে।’

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশ নতুন একটি ধাপে পৌঁছেছে কি না—জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা বলা কঠিন—নতুন একটি ধাপ শুরু হয়েছে কি না। বাস্তবতাকে মেনে নেওয়াই ভালো যে, সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত টানাপোড়েন আছে।’

তিনি যোগ করেন, ‘ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন ছিল—এটা মেনে নিয়েই আমরা সবসময় বলে এসেছি—আমরা একটি ভালো কার্যকর সম্পর্ক চাই। আমরা চাইলেই সেটা হবে, এমন কোনো কথা নেই।’

দুপক্ষ থেকেই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমরা দুপক্ষ মিলেই হয়তো অতটা এগোতে পারিনি, টানাপোড়েনটা রয়েই গেছে। ইদানীং কিছু কিছু বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে, তাদেরও নিজস্ব অবস্থান আছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতে বসে শেখ হাসিনা আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য দিতেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেখলাম, মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও তাঁর বক্তব্য এসেছে। সেই বক্তব্যের মধ্যে প্রচুর উসকানি রয়েছে, যা আমরা দেখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সাজা পেয়েছেন। আমাদের পাশের দেশে বসে তিনি এখানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন—এতে আমরা আপত্তি করব কিংবা তাঁকে ফেরত পাঠাতে সহায়তা চাইব, এটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু তারা (ভারত) সেদিকে যায়নি।’

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভারত নসিহত দিচ্ছে উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সর্বশেষ বক্তব্যে তারা আমাদের নসিহত করেছেন। সেই নসিহতের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে—সেটা নিয়ে প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। প্রথম দিন থেকেই আমরা স্পষ্টভাবে বলে আসছি, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যা গত ১৫ বছর ছিল না। আমরা জানি, আমরা কী করব।’

তিনি বলেন, ‘এখন ভারত যে উপদেশ দিচ্ছে, সেটিকে আমরা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি এই কারণে যে, গত ১৫ বছর যে সরকার ছিল, তাদের সঙ্গে ভারতের মধুর সম্পর্ক ছিল। তখনকার নির্বাচনগুলো প্রহসনমূলক হলেও তারা একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি।’

ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ যেহেতু একটি কর্মসূচি ছিল, সেহেতু তারা তাদের ভিসা সেন্টার বন্ধ রাখতে পারে। কারণ তাদের তো নিরাপত্তার বিষয়টি আছে। তারা যাতে নিরাপত্তার অভাবে ভীত না হয়, আমরা সেই চেষ্টা করেছি এবং তাতে আমরা সফল হয়েছি। ভিসার বিষয়ে যেকোনো দেশ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ছোট করা হবে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যখন আমরা মনে করব আমাদের কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত কাজ নেই, তখন আমরা সেই চেষ্টা করব। কিন্তু এই মুহূর্তে মনে করি না সেই প্রয়োজন আছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত যদি শেখ হাসিনাকে থামাতে না চায়, তাহলে আমরা সেটা থামাতে পারব না। আমরা চাই, শেখ হাসিনাকে ভারত থামাক, যাতে তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য আমাদের নির্বাচনী পরিবেশকে উত্তপ্ত করতে না পারে। তারা এটা করলে সেটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে নেব।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত