ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি ও আচরণবিধি পরিপালনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। আজ বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে দলগুলোর সঙ্গে ধরাবাহিক সংলাপের চতুর্থ দিনে স্বাগত বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
সংলাপে সকালের পর্বে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত রয়েছেন।
সিইসি বলেন, ‘আমাদের সংলাপের মূল উদ্দেশ্য দুটো। আচরণবিধি জারি হয়েছে। আচরণবিধি পরিপাল ও সহযোগিতা চাওয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেয়েও ভোটে বড় ভূমিকা রাজনৈতিক দলগুলোর। দলগুলো আন্তরিকভাবে কাজ করলে নির্বাচন কমিশনকে বাড়তি চাপ নিতে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, সব রাজনৈতিক দলই জাতির কাছে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ওয়াদাবদ্ধ।’
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থার লিখিত মতামত পর্যালোচনা করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আচরণবিধি প্রস্তুত করাটা বড় কাজ নয়। আচরণবিধি প্রতিপালনই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘গত ১০-১৫ বছরে ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচন বিমুখতা তৈরি হয়েছে। এজন্য আপনারা যারা রাজনৈতিক নেতা, সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক, তারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে ভূমিকা রাখবেন। আমরা আশা করি, এটি করা গেলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসবেন এবং ব্যাপক সংখ্যায় আসবেন।’
সংলাপের সকালের পর্বে জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতারা অংশ নিয়েছেন।
সংলাপে সংসদ নির্বাচনের প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন সেনাসদস্য মোতায়েনের দাবি জানায় জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ভোটকেন্দ্রে সেনা সদস্য বেশি আছে– এমন তথ্য অনেককে ভোটদানে আগ্রহী করে তুলবে। কারণ ভোটাররা মনে করেন, সেনা সদস্য বেশি থাকলে কেউ দখল করতে পারবে না, নির্বিঘ্নে সবাই ভোট দিতে পারবেন। এ জন্য আমরা মনে করি, কেন্দ্রে একজন সেনা সদস্য নয় বরং তিন, চার বা পাঁচজন মোতায়েন করলে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি অর্থবহ হবে।
কেন্দ্রে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি জামায়াত আচরণবিধির ভাষাগত দিক, কারিগরি অস্পষ্টতা ও নির্বাচনে প্রশাসনের স্বচ্ছ ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে।
গোলাম পরওয়ার পোস্টাল ব্যালট নিয়ে কমিশনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও, এর বিভিন্ন কারিগরি দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, প্রবাসীরা কীভাবে গণভোটে অংশ নেবেন, তা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া এনআইডি না থাকলে বিকল্প কী হতে পারে, তা বলা হয়নি।
এ সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনেরেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, পলিসি লেভেল স্বচ্ছতা আছে। এক্সিকিউটিভ লেভেলেও স্বচ্ছতা দেখানো জরুরি। নির্বাচন কমিশনকেই স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
ইসি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১০ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে, যাদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এক লাখ।