leadT1ad

বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম, এক সপ্তাহে পেঁয়াজ-ডিমে উল্লম্ফন

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১: ২৭
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৫১
স্ট্রিম গ্রাফিক

চালের বাজার আগেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল, এখন তাতে যুক্ত হয়েছে পেঁয়াজ, ডিম, সবজি, মসলা ও কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব পণ্য। নিত্যপণ্যের দামের এই উল্লম্ফনে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। টানা বৃষ্টি, সরবরাহ সংকট ও অযৌক্তিক মজুদ—এই তিন কারণ মিলিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে চলছে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ধারা।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর শাহজাদপুর, বাড্ডা, হাতিরপুল ও কারওয়ানবাজারসহ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের কেজি এখন ৮০-৮৫ টাকা। অর্থাৎ, মাত্র সাত দিনে দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-২০ টাকা।

কারওয়ানবাজারের পাইকারি বিক্রেতা বাবুল মিয়া বলেন, ‘সংকট তেমন নেই, কিন্তু মজুদ কমে গেছে। প্রতিবছরই এ সময়ে দাম কিছুটা বাড়ে, তবে এবার হঠাৎ পাইকারিতে দাম লাফিয়ে উঠেছে। যাদের মজুদ শেষ, তারা নতুন দরে কিনে বিক্রি করছেন; আর যাদের মজুদ আছে, তারা সুযোগ নিচ্ছেন।’

এদিকে, ডিমের বাজারেও লাগাম নেই। রাজধানীর খুচরা বাজারে ফার্মের বাদামি ডিমের এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২৫-১৩০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০-১৮০ টাকা, আর সোনালি মুরগি ৩০০-৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সবজির চাহিদা কমে ডিমের দিকে ঝুঁকছেন অনেক ক্রেতা, ফলে ডিমের দামও বেড়েছে।

সবজির বাজারও ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে জুলাই থেকে দাম বেশি থাকলেও এখন প্রায় সবগুলোর কেজি ৮০ টাকার ওপরে। বেগুনের দাম ২০-৩০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। করলা, কাঁকরোল, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০-২০০ টাকা, আমদানি করা টমেটো ১৪০-১৫০ টাকা কেজি। শাকের আঁটি যেখানে আগে ১৫-২০ টাকায় মিলত, এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।

মসলার বাজারেও ঊর্ধ্বগতি। প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ আগে বিক্রি হতো ৪০০ টাকায়, এখন ৫৫০-৬০০ টাকায়। আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা কেজিতে।

চালের বাজারও কোনো স্বস্তি দিচ্ছে না। টিসিবির তথ্যমতে, রাজধানীতে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫৫-৬০ টাকা, মাঝারি ব্রি-২৮ ও পাইজাম ৬০-৭৫ টাকা, আর সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৭৫-৮৫ টাকা দরে। প্রায় দেড় মাস ধরে এই দাম অপরিবর্তিত রয়েছে, কিন্তু নিম্নমুখী কোনো প্রবণতা নেই।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘আগস্ট-অক্টোবর মাসে সাধারণত খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু এবার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি। উৎপাদন বেশি হলেও একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে কেন এভাবে দাম বাড়ছে।’

ভোক্তা অধিকার সংস্থাগুলোর মতে, কার্যকর বাজার মনিটরিং, সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং পরিবহন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়া নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল হবে না। নতুবা দাম আরও বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও সংকটে ফেলবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত