leadT1ad

রংপুরে সিইসি

‘আগের নির্বাচনের কর্মকর্তাদের ছাড়া সম্ভব না, তাদের নিয়েই সুষ্ঠু ভোট করব’

স্ট্রিম প্রতিবেদকরংপুর
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ০০
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ১০
রংপুরে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন। স্ট্রিম ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ‘বিতর্কিত নির্বাচন’-গুলোতে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের একেবারে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা সম্ভব না বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তাদের সঙ্গে নিয়েই কমিশন ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ করতে চায় বলেও জানান তিনি।

শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে নির্বাচন কমিশনের রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় করেন সিইসি। মতবিনিময়ের আগে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে বিগত নির্বাচনের কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে কথা বলেন সিইসি।

এসময় সিইসি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এখনই নয়। তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে তারিখ জানানো হবে। তবে স্বল্প সময়ে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।’ নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের রদবদলের কথাও জানান সিইসি।

বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেমনই হোক, নির্বাচনের সময় এর উন্নতি করা হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ফেরানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অভ্যাসই নষ্ট হয়ে গেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহারও বেড়েছে। সবকিছু মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।’ নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে আইন-কানুন মেনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কমিশন অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন সিইসি।

নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরিতেও নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান এ এম এম নাসির উদ্দীন।

দেশে বর্তমানে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পর থেকে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। সেদিক থেকে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আছে। তারপরও আমি বলব, জুলাই আন্দোলনের পরে সবাই শান্তিতে ঘুমাইতে পারছেন।’

সাধারণ মানুষ শান্তিতে ঘুমালেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ‘পুলিশ ভাইয়েরা কখনো রাতে ঘুমায় না’ বলেও মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করছেন তারা (পুলিশ সদস্য)।’

সিইসি আরো বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরাও ঢাকায় ঘুমাতে পারিনি। থানাগুলোর কোনো কার্যক্রম ছিল না। আর্মি ক্যাম্পগুলো বসানোর পরও আমাদের বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। পৃথিবীর যেসব দেশে এ ধরনের বিপ্লব হয়েছে, এই ধরনের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে; সেসব দেশের চেয়ে বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো আছে। নির্বাচন আসার আগ মুহূর্তে বাংলাদেশের অবস্থা আরো উন্নতির দিকে যাবে।’

‘ড. ইউনুস দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক’, জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোটের সময় অবাধে সাংবাদিকরা যাতে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হবে।’

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রংপুর বিভাগের আটটি জেলার জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দিনব্যাপী এই আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন সিইসি। তিন দিনের সফর শেষে রবিবার (১০ আগস্ট) ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের।

Ad 300x250

সম্পর্কিত