leadT1ad

৩০০ আসনের ফল বাতিলের ক্ষমতা ও না ভোটসহ একগুচ্ছ সংশোধনী এনে আরপিও চূড়ান্ত করলো ইসি

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৫২
সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। স্ট্রিম ছবি

নির্বাচন চলাকালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলে ৩০০ আসনের ফলাফলই বাতিল করতে পারবে। সেইসঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্রবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা, তফসিল ঘোষণার পরে পুলিশের ডিআইজি পদের কর্মকর্তাদের ইসি অধীনে দেওয়া এবং একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনে ‘না ভোট’সহ একগুচ্ছ সংশোধন এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও) অধ্যাদেশ-২০২৫ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সন্ধ্যায় মুলতবি থাকা কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আবুল ফজল মো সানাউল্লাহ। এই সপ্তাহের মধ্যেই খসড়া লেখা শেষে ভেটিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

আরপিওতে ঠিক কতগুলো ধারা উপধারা সংশোধিত হয়েছে, তা নিশ্চিত করেননি ইসি সানাউল্লাহ। আবার এখন আরপিও চূড়ান্ত হলেও ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে যেমন একজন প্রার্থী কতগুলো আসনে দাঁড়াতে পারবেন বা প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী— এমন কিছু পরিবর্তন আসবে বলেও জানান এই ইসি।

সানাউল্লাহ বলেন, কমিশন সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীসহ কোস্টগার্ডকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা পরে পুলিশের ডিআইজিকে কমিশনের অধীনে নিয়ে আসার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে।

এছাড়াও ‘না ভোট’ আবারও চালু করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানান সানাউল্লাহ। তবে এই ‘না ভোট’ শুধু একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ পাস করতে পারবেন না। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যদি ‘না ভোট’ জেতে, তবে পুনর্নির্বাচন হবে। আর যদি আবারও একক প্রার্থী হয় এবং ‘না ভোট’ জেতে তবে প্রার্থী নির্বাচিত হবে বলে জানান তিনি।

‘জোটগঠনকে রাজনৈতিক অধিকার’ উল্লেখ করে সানাউল্লাহ বলেন, ‘যে কোনও দল জোট গঠন করতেই পারেন। তবে জোট থেকে নির্বাচন করতে হলে নিজের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু ইভিএম ব্যবহারের কোনও পরিকল্পনা নেই। তাই ইভিএম সংক্রান্ত সব ধারা উপধারা বাতিল করা হয়েছে।’

অনিয়ম পেলে শুধু একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ নয়, বরং একাধিক কেন্দ্রে বা প্রয়োজনে সম্পূর্ণ আসনের ভোট স্থগিত এবং ফলাফল বাতিলে ইসিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই চূড়ান্ত খসড়ায়।

রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধের ফলে কী হবে, তা বলা হলেও কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলে কী করতে হবে তার ‘অস্পষ্টতা আছে’ বলে উল্লেখ করে তিনি। এ ক্ষেত্রে স্পষ্টতা আনা হয়েছে— কার্যক্রম স্থগিত হলে প্রতীকও স্থগিত থাকবে বলে জানান তিনি।

নির্বাচনে ব্যক্তি অনুদান আগে ১০ লাখ এবং প্রতিষ্ঠানগত অনুদান ৫০ লাখ টাকা ছিল। বর্তমানে দুটিই ৫০ লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যে বা যারা এই টাকা অনুদান দেবেন, অনুদানকৃত টাকা ট্যাক্স রিটার্নে দেখাতে হবে।

আগে দুজন প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পেলে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হতো। ইসি একে ‘অমানবিক’ মনে করে এবং এ ক্ষেত্রে আবারও নির্বাচন হবে বলে জানান ইসি।

হলফনামা জমা দেওয়া থেকে নির্বাচিত হওয়ার ৫ বছর অর্থাৎ সংসদীয় মেয়াদ পর্যন্ত মিথ্যা হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করতে পারবে ইসি। প্রমাণিত হলে সদস্যপদ বাতিলও করতে পারবে ইসি। তবে ৫ বছর পূর্ণ হলে অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ইসির আওতাভুক্ত থাকবে না।

এছাড়াও কমিশনের অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক এবং সংবাদকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের বিধানও যুক্ত করা হয়েছে আরপিওতে। এমনকি ভোট গণনায়ও থাকতে পারবেন গণমাধ্যমকর্মীরা জানিয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, 'গণমাধ্যমকর্মীরা ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন। তবে শর্ত একই বলবৎ থাকবে সবার জন্য, যে গণনা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যারা থাকতে চাইবেন তাদের পুরো সময় থাকতে হবে। মাঝপথে বের হয়ে যাওয়া যাবে না।'

নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক ১৪৩ দলের মধ্যে টিকলো ২২

গত মার্চে নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে বলা হলে মোট ১৪৩টি দল আবেদন দেয় যাদের কারোরই তথ্য ঠিক ছিল না।

ঘটতি পূরণের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হলে ৮৯টি দল কাগজপত্র জমা দেয়। তাদের মধ্যে ২২টি দল উত্তীর্ণ হয়। এখন তাদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে বলেও জানান ইসি সানাউল্লাহ।

দল ২২টি হলো - আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি,বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি ও নতুন বাংলাদেশ পার্টি।

বিষয়:

নির্বাচন
Ad 300x250

সিলেটে অবাধে সাদাপাথর লুট: নেপথ্যে কারা

থানা হেফাজতে ইশতিয়াকের মৃত্যু: ২ পুলিশের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল

মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ

জুলাই ঘোষণাপত্রকে ‘প্রতারণা’ আখ্যা দিয়ে ৬০ ছাত্রনেতার প্রত্যাখ্যান

মৃত্যুর আগে শেষ বার্তায় যা লিখেছিলেন আল-জাজিরার সাংবাদিক আনাস

সম্পর্কিত