leadT1ad

সব অপরাধীকে গালি দেন, সেনাবাহিনীকে গালি দেবেন না: আমান আযমী

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, সংহতি ও ঐক্যের প্রতীক উল্লেখ করে গুমের শিকার সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, ‘এটাকে বিতর্কিত করা মানে আমরা আমাদের নিজেকে ক্ষতি করছি। ভারতের এজেন্ডা দ্বারা আমাদের সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করতে চায়। জনগণ যদি সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়, তাহলে এই অসাধু ও দুর্নীতি পরায়ণ কিছু কর্মকর্তার জন্য দেশের ক্ষতি হবে, আমার-আপনার ক্ষতি হবে। সব অপরাধীকে গালি দেন, দয়া করে সেনাবাহিনীকে গালি দেবেন না।

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন। এই দিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে কিছু প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ইউনাইটেড ফর দ্য ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেসের (ইউভিইডি)। সংগঠনটির সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন গুমের শিকার সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীও।

আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ‘১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের অনেক বড় এচিভমেন্ট। আমি চিফ প্রসিকিউটর মহোদয়কে আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে আমরা সবাই ধন্যবাদ জানাই। আমরা যারা গুম হয়েছিলাম, তাদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন চলে গেছে। আজ আমরা কিছুটা হলেও তার তৃপ্তি পাচ্ছি। আমাদের ওপর ঝড়টা গেছে, এর কিছুটা সান্ত্বনা আমরা দিতে পারছি।’

এসময় তিনি গ্রেপ্তার সেনা সদস্যদেরও সুবিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত সমস্ত বক্তব্য শুনে যেন তাদের সুবিচার করেন, সেটাই আমি চাইব। আমি চাই না তাদের অবিচার হোক। যে যতটুকু করেছে, তাঁর ততটুকু পাওনা সে যেন পেয়ে যায়। বাকি আখেরাতের কথা পরে থাকবে।’

এসময় আজ সকালে নিজের দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টের কথা তুলে ধরেন আবদুল্লাহিল আমান আযমী, যেখানে সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আজ সকালে স্ট্যাটাস দিয়েছি, এজন্য আমি হাজার হাজার মানুষের কাছে গালি খাচ্ছি ফেসবুকে। আমি সেনাবাহিনীকে কেন ডিফেন্ড করতে চাই? এই যে ২৫ জন অপরাধীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে এরা একজনও কিন্তু সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে থেকে কোনো অপরাধ করার কারণে ওয়ারেন্ট বের হয়নি। তারা সেনাবাহিনীর বাইরে এসে, সেনাপ্রধানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এসে তারা এগুলো করেছে। এই সংখ্যাটা কিন্তু সেনাবাহিনীর হাজার ভাগের এক ভাগে নয়। একটা প্রতিষ্ঠানের ৯৯৯ জন ভালো আর একজন খারাপ, তার জন্য পুরা বাহিনীকে বদনাম উচ্চারণ কিন্তু কোন দেশ প্রেমিকের কাজ নয়।’

সবার উদ্দেশে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এই সেনাবাহিনী জাতির সঙ্গে সবসময় ছিল, জাতির পাশে ছিল। ৫ আগস্ট বিপ্লবে যদি সেনাবাহিনী পাশে না থাকতো, তাহলে কতটা কি হতো... ভয়াবহ, চিন্তা করা যায় না।’

গুমের শিকার হয়ে নিজেও মামলা করেছেন সাবেক এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। সেই তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি সেনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আইনি প্রক্রিয়া সহজ ও সুন্দরভাবে চলতে সহায়তা করছে। জেনারেল ওয়াকার উজ জামানসহ সেনা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আর এখনো যাদের ধরা যায়নি, তাদের আনার ব্যাপারে বলা হয়েছে। আমিও আবার বলছি, সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা উচিত। যারা পলাতক আছে তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’

দেশবাসী যেন ভবিষ্যতে আর কোনো স্বৈরাচার না দেখেন, সেই প্রত্যাশা তুলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত