এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সাজাতে পারে। এই চুক্তি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, উপসাগরীয় দেশগুলো এখন স্বনির্ভর আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে। ফলে উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমতে পারে।
স্ট্রিম ডেস্ক
সৌদি আরব ও পাকিস্তান এক ঐতিহাসিক ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষর করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রিয়াদ সফরের সময় গতকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) এ চুক্তি সম্পন্ন হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিতে ঘোষণা করা হয়, ‘দুই দেশের যে কোনো এক দেশের ওপর আক্রমণকে উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে।’ এটি মূলত পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মতো পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ধারা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দেয়। অর্থাৎ, কোনো বহিঃশত্রুর হুমকির মুখে দুই দেশ যৌথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সম্পর্ক প্রায় আট দশক ধরে চলে আসছে। এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ইসলামী ঐতিহ্য, অর্থনৈতিকভাবে পারস্পরিক নির্ভরতা (যেমন সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তা ও পাকিস্তানে তেলের সরবরাহ) এবং সামরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে। তবে এবার প্রথমবারের মতো একটি বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা জোটকে আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করা হলো।
চুক্তিতে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার, যৌথ প্রতিরোধ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে ‘কৌশলগত অভিন্ন স্বার্থ’ তুলে ধরা হয়। যদিও বাস্তবায়নের বিস্তারিত এখনো স্পষ্ট নয়। তবে একজন সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা এটিকে ‘একটি সর্বাঙ্গীণ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ বলে বর্ণনা করেন। এতে সব ধরনের সামরিক সক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। এ কারণে অনুমান করা হচ্ছে, সৌদি আরব পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারে—যা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র—প্রবেশাধিকার পেতে পারে।
চুক্তিটি এমন সময়ে স্বাক্ষরিত হলো যখন সম্প্রতি উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো নতুনভাবে তাদের প্রতিরক্ষা জোটগুলো পর্যালোচনা করে দেখছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, যেমন গাজা সংকটে মধ্যস্থতাকারী কাতারের ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলা—যা ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বানুমোদনে হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়—সেই নির্ভরতার পুনর্মূল্যায়নের পথ খুলে দিয়েছে।
এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সাজাতে পারে। এতে প্রতিরোধ শক্তির নতুন মাত্রা যোগ হবে, তবে বিদ্যমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জোটগুলো আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের পুনর্গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা
সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ক্রমশ সতর্ক হয়ে উঠছে। গাজা, লেবানন, সিরিয়া এবং সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলের আক্রমণের পর ওয়াশিংটনের অবস্থানকে অনেকেই অনিশ্চিত বলে মনে করছে। এই চুক্তি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, উপসাগরীয় দেশগুলো এখন স্বনির্ভর আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে। ফলে উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমতে পারে।
এটি অন্য সুন্নি রাষ্ট্রগুলোকেও অনুরূপ চুক্তিতে উৎসাহিত করতে পারে। সম্প্রতি দোহায় অনুষ্ঠিত ৪০টি ইসলামী দেশের সম্মেলনে ন্যাটোর মতো জোট গঠনের যে আহ্বান উঠেছিল, তা এখানেও প্রতিফলিত হতে পারে। তবে এতে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে ইসরায়েলের তেহরানে হামলার সমালোচনা করেছে। সেই প্রেক্ষিতে সৌদি আরব ইয়েমেনের মতো প্রক্সি সংঘাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে দেশটির গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু ঘটনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলি বিমান হামলা। ওই হামলায় হামাস নেতাদের টার্গেট করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনেই ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়। কারণ তখন গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়েই সেখানে আলোচনা চলছিল। এর আগে সিরিয়া, লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের নীরব সমর্থনও রিয়াদকে বিকল্প জোট খুঁজতে উৎসাহিত করেছে।
মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি সরাসরি অস্বীকৃতি। কারণ, ওয়াশিংটন সৌদি আরবকে উন্নত প্রতিরক্ষা চুক্তি ও বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি দিতে চেয়েছিল, তবে শর্ত ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ছাড়া রিয়াদ তা প্রত্যাখ্যান করে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০২৫ সালের মে মাসের উপসাগর সফরের আগে থেকেই সৌদি আরব এই অবস্থান নেয়।
এক সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, চুক্তিটি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয় বরং দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে অনেকেই একে আমেরিকান সুরক্ষা থেকে সরে এসে সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতি আরও বিস্তৃত প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই দুর্বল। এখন নতুন চুক্তি সেই সম্পর্ককে আরও চাপের মুখে ফেলতে পারে। একই সঙ্গে, পাকিস্তান-চীন অক্ষের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ওই অঞ্চলে চীনা প্রভাব মোকাবিলা করাও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
ভারতের ওপর প্রভাব
চুক্তি নিয়ে ভারতও উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানের এই পরমাণু-সক্ষম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গেও সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ বিনিয়োগ ও শ্রম অভিবাসনের বিষয়ও। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা এই চুক্তিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে এর প্রভাব বিশ্লেষণ করবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার প্রভাব জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক শান্তির ওপর কীভাবে পড়তে পারে তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করব। সরকার ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সব ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন বলছে, ভারত এটিকে পাকিস্তানের দিকে কৌশলগত ঝোঁক হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মারাত্মক বিমানযুদ্ধের পর এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। এতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের কৌশল জটিল হতে পারে। কারণ, দেশটিকে একই সঙ্গে জ্বালানি আমদানি, প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থ ও পাকিস্তানের প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে।
হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সৌদি আরবের কাছে সম্প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। এতে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য ইসলামাবাদের পক্ষে ঝুঁকে যেতে পারে। ভারতের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ বিনিয়োগ, জ্বালানি আমদানি এবং প্রবাসী ভারতীয়দের উপস্থিতি। রিয়াদও আশ্বস্ত করেছে যে, এই চুক্তি দিল্লি-রিয়াদ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আনবে না। চুক্তিটি মূলত ওআইসি-পরিসরে ন্যাটোর মতো জোট গঠনের আলোচনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কাতার হামলার পর যে উদ্যোগগুলো জোরালো হয়েছে, সেটির অংশ হিসেবেই এটি দেখা হচ্ছে। তবে ভারতের জোটনিরপেক্ষ থাকার নীতি বিবেচনায় দিল্লি এসব পদক্ষেপকে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছে।
বৈশ্বিক প্রভাব
চুক্তিটি আরও বৃহত্তর প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা এই সমীকরণে চীন-পাকিস্তান অক্ষকে শক্তিশালী করবে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত জোট গড়ে উঠতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় দেশগুলোর আস্থা হারাচ্ছে। বিশেষ করে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না হলে উন্নত অস্ত্র সরবরাহের সৌদি দাবিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।
সামগ্রিকভাবে এই চুক্তি প্রতিরক্ষায় ‘ইসলামী সংহতি’কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিল। এটি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) পর্যায়ে বৃহত্তর সহযোগিতার অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে। তবে এর ফলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বা পারমাণবিক হুমকির মধ্যে ভুল পদক্ষেপের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
মোটকথা, চুক্তির লক্ষ্য হলো প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা। এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করতে পারে। তবে বৃহত্তর অঞ্চলে এটি শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
চুক্তিটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সম্পর্ক সীমিত। কোনো সরকারি নথি বা সাম্প্রতিক বিশ্লেষণেই ঢাকা বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের বহুমুখী সম্পর্কের কারণে কিছু পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে।
সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা প্রতিবছর চার বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠায়। তা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুক্তি থেকে যদি উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে শ্রমবাজার ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য হিসেবে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বিষয়ে আগ্রহী। দোহা সম্মেলনে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল, যেখানে সমষ্টিগত ইসলামী প্রতিরক্ষার ধারণা গুরুত্ব পেয়েছিল।
ভারতের মতো বাংলাদেশের পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। ১৯৭১ সালের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে উভয়ের সম্পর্ক স্বাভাবিক। অন্যদিকে রিয়াদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ। তাই তাৎক্ষণিক কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই।
তবে দীর্ঘমেয়াদে এই চুক্তি বাংলাদেশকে এশিয়ার বহুমেরুকেন্দ্রিক প্রেক্ষাপটে কৌশলগতভাবে অবস্থান নির্ধারণে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বা উপসাগরীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ বা চাপ তৈরি হতে পারে।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন, রয়টার্স, মিডল ইস্ট আই
সৌদি আরব ও পাকিস্তান এক ঐতিহাসিক ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষর করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রিয়াদ সফরের সময় গতকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) এ চুক্তি সম্পন্ন হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিতে ঘোষণা করা হয়, ‘দুই দেশের যে কোনো এক দেশের ওপর আক্রমণকে উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে।’ এটি মূলত পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মতো পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ধারা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দেয়। অর্থাৎ, কোনো বহিঃশত্রুর হুমকির মুখে দুই দেশ যৌথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।
সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সম্পর্ক প্রায় আট দশক ধরে চলে আসছে। এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ইসলামী ঐতিহ্য, অর্থনৈতিকভাবে পারস্পরিক নির্ভরতা (যেমন সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তা ও পাকিস্তানে তেলের সরবরাহ) এবং সামরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে। তবে এবার প্রথমবারের মতো একটি বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা জোটকে আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করা হলো।
চুক্তিতে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার, যৌথ প্রতিরোধ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে ‘কৌশলগত অভিন্ন স্বার্থ’ তুলে ধরা হয়। যদিও বাস্তবায়নের বিস্তারিত এখনো স্পষ্ট নয়। তবে একজন সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা এটিকে ‘একটি সর্বাঙ্গীণ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ বলে বর্ণনা করেন। এতে সব ধরনের সামরিক সক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। এ কারণে অনুমান করা হচ্ছে, সৌদি আরব পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারে—যা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র—প্রবেশাধিকার পেতে পারে।
চুক্তিটি এমন সময়ে স্বাক্ষরিত হলো যখন সম্প্রতি উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো নতুনভাবে তাদের প্রতিরক্ষা জোটগুলো পর্যালোচনা করে দেখছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, যেমন গাজা সংকটে মধ্যস্থতাকারী কাতারের ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলা—যা ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বানুমোদনে হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়—সেই নির্ভরতার পুনর্মূল্যায়নের পথ খুলে দিয়েছে।
এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত বাস্তবতাকে নতুনভাবে সাজাতে পারে। এতে প্রতিরোধ শক্তির নতুন মাত্রা যোগ হবে, তবে বিদ্যমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জোটগুলো আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের পুনর্গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা
সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ক্রমশ সতর্ক হয়ে উঠছে। গাজা, লেবানন, সিরিয়া এবং সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলের আক্রমণের পর ওয়াশিংটনের অবস্থানকে অনেকেই অনিশ্চিত বলে মনে করছে। এই চুক্তি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, উপসাগরীয় দেশগুলো এখন স্বনির্ভর আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলতে চাইছে। ফলে উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমতে পারে।
এটি অন্য সুন্নি রাষ্ট্রগুলোকেও অনুরূপ চুক্তিতে উৎসাহিত করতে পারে। সম্প্রতি দোহায় অনুষ্ঠিত ৪০টি ইসলামী দেশের সম্মেলনে ন্যাটোর মতো জোট গঠনের যে আহ্বান উঠেছিল, তা এখানেও প্রতিফলিত হতে পারে। তবে এতে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। পাকিস্তান ইতিমধ্যে ইসরায়েলের তেহরানে হামলার সমালোচনা করেছে। সেই প্রেক্ষিতে সৌদি আরব ইয়েমেনের মতো প্রক্সি সংঘাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে দেশটির গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু ঘটনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কাতারে ইসরায়েলি বিমান হামলা। ওই হামলায় হামাস নেতাদের টার্গেট করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনেই ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়। কারণ তখন গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়েই সেখানে আলোচনা চলছিল। এর আগে সিরিয়া, লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের নীরব সমর্থনও রিয়াদকে বিকল্প জোট খুঁজতে উৎসাহিত করেছে।
মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি সরাসরি অস্বীকৃতি। কারণ, ওয়াশিংটন সৌদি আরবকে উন্নত প্রতিরক্ষা চুক্তি ও বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি দিতে চেয়েছিল, তবে শর্ত ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ছাড়া রিয়াদ তা প্রত্যাখ্যান করে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০২৫ সালের মে মাসের উপসাগর সফরের আগে থেকেই সৌদি আরব এই অবস্থান নেয়।
এক সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, চুক্তিটি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয় বরং দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে অনেকেই একে আমেরিকান সুরক্ষা থেকে সরে এসে সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতি আরও বিস্তৃত প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই দুর্বল। এখন নতুন চুক্তি সেই সম্পর্ককে আরও চাপের মুখে ফেলতে পারে। একই সঙ্গে, পাকিস্তান-চীন অক্ষের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ওই অঞ্চলে চীনা প্রভাব মোকাবিলা করাও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
ভারতের ওপর প্রভাব
চুক্তি নিয়ে ভারতও উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানের এই পরমাণু-সক্ষম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গেও সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ বিনিয়োগ ও শ্রম অভিবাসনের বিষয়ও। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা এই চুক্তিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে এর প্রভাব বিশ্লেষণ করবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার প্রভাব জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক শান্তির ওপর কীভাবে পড়তে পারে তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করব। সরকার ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সব ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন বলছে, ভারত এটিকে পাকিস্তানের দিকে কৌশলগত ঝোঁক হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মারাত্মক বিমানযুদ্ধের পর এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। এতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের কৌশল জটিল হতে পারে। কারণ, দেশটিকে একই সঙ্গে জ্বালানি আমদানি, প্রবাসী ভারতীয়দের স্বার্থ ও পাকিস্তানের প্রভাব মোকাবিলা করতে হবে।
হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সৌদি আরবের কাছে সম্প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। এতে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য ইসলামাবাদের পক্ষে ঝুঁকে যেতে পারে। ভারতের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ বিনিয়োগ, জ্বালানি আমদানি এবং প্রবাসী ভারতীয়দের উপস্থিতি। রিয়াদও আশ্বস্ত করেছে যে, এই চুক্তি দিল্লি-রিয়াদ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আনবে না। চুক্তিটি মূলত ওআইসি-পরিসরে ন্যাটোর মতো জোট গঠনের আলোচনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কাতার হামলার পর যে উদ্যোগগুলো জোরালো হয়েছে, সেটির অংশ হিসেবেই এটি দেখা হচ্ছে। তবে ভারতের জোটনিরপেক্ষ থাকার নীতি বিবেচনায় দিল্লি এসব পদক্ষেপকে সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছে।
বৈশ্বিক প্রভাব
চুক্তিটি আরও বৃহত্তর প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা এই সমীকরণে চীন-পাকিস্তান অক্ষকে শক্তিশালী করবে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত জোট গড়ে উঠতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় দেশগুলোর আস্থা হারাচ্ছে। বিশেষ করে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না হলে উন্নত অস্ত্র সরবরাহের সৌদি দাবিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।
সামগ্রিকভাবে এই চুক্তি প্রতিরক্ষায় ‘ইসলামী সংহতি’কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিল। এটি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) পর্যায়ে বৃহত্তর সহযোগিতার অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে। তবে এর ফলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বা পারমাণবিক হুমকির মধ্যে ভুল পদক্ষেপের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
মোটকথা, চুক্তির লক্ষ্য হলো প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা। এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করতে পারে। তবে বৃহত্তর অঞ্চলে এটি শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।
চুক্তিটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সম্পর্ক সীমিত। কোনো সরকারি নথি বা সাম্প্রতিক বিশ্লেষণেই ঢাকা বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের বহুমুখী সম্পর্কের কারণে কিছু পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে।
সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা প্রতিবছর চার বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠায়। তা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুক্তি থেকে যদি উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে শ্রমবাজার ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য হিসেবে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বিষয়ে আগ্রহী। দোহা সম্মেলনে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছিল, যেখানে সমষ্টিগত ইসলামী প্রতিরক্ষার ধারণা গুরুত্ব পেয়েছিল।
ভারতের মতো বাংলাদেশের পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। ১৯৭১ সালের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে উভয়ের সম্পর্ক স্বাভাবিক। অন্যদিকে রিয়াদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ। তাই তাৎক্ষণিক কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই।
তবে দীর্ঘমেয়াদে এই চুক্তি বাংলাদেশকে এশিয়ার বহুমেরুকেন্দ্রিক প্রেক্ষাপটে কৌশলগতভাবে অবস্থান নির্ধারণে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বা উপসাগরীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ বা চাপ তৈরি হতে পারে।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন, রয়টার্স, মিডল ইস্ট আই
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দুটি হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই হামলার ঘটনা ঘটে।
৩৪ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুকধারীর গুলিতে তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে পুলিশের পাল্টা গুলিতে ওই বন্দুকধারীও নিহত হয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগেভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম আদানি গ্রুপকে ঘিরে ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত সমালোচনামূলক ‘লেখা ও কনটেন্ট’ সরানোর জন্য চিঠি দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইউটিউবের মূল প্রতিষ্ঠান গুগল ইনকরপোরেশন ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা প্
১ দিন আগেফিলিস্তিন ভূখণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২১ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ কমিশনটি গঠন করে।
২ দিন আগে