ইয়াশাব ওসামা রহমান
বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। তবে অনেক নাগরিক মনে করছেন, হিমালয় উপত্যকা থেকে বাইরে যে তথ্য যাচ্ছে, তার অনেকটাই বিকৃত বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে এখনো প্রবল আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। এর আগে সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত হয়। তারপরই রাজনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে।
স্ট্রিমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক নেপালি সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন— এ ধরনের সংকট অভূতপূর্ব। তার ভাষায়, ‘সবকিছু আগুনে পুড়ছে—সংসদ, আদালত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, এমনকি প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্রও।’
তিনি জানান, এখন কোনো মন্ত্রিসভা নেই। প্রধানমন্ত্রী নেই, এমনকি রাষ্ট্রপতিও নেই। পুরো অবস্থা এক ধরনের নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
বিক্ষোভে কে নেতৃত্ব দিচ্ছে—এ প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বলেন, বর্তমানে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। প্রথমদিকে এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল জেন জি তরুণদের মাধ্যমে। তবে ধীরে ধীরে এতে যুক্ত হয়েছে নানা পক্ষ— রাজতন্ত্রপন্থী, ফেডারেল ব্যবস্থার বিরোধী, হতাশাগ্রস্ত মাওবাদী কর্মী, মূলধারার দল থেকে বিচ্ছিন্নরা এবং আরও অনেকে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে কেউই জানে না, এরা কারা।’
তবে নিশ্চিতভাবে জানা গেছে— হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বিক্ষোভ মূলত নেপালের প্রধান রিং রোডকে ঘিরে হলেও দূর থেকেও এর প্রভাব টের পাওয়া যাচ্ছিল। কাঠমান্ডু ও ললিতপুর শহরকে ঘিরে থাকা আট লেনের এই মহাসড়ক থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করেও কৃষি ও বন বিশ্ববিদ্যালয়ের (চিতওন) স্নাতক রাশমি সিং ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছিলেন।
তিনি স্ট্রিমকে টেলিফোনে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। এই বিক্ষোভ শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু হয়নি। খারাপ শাসন ও দুর্নীতি ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। নিষেধাজ্ঞা মানে ছিল আমাদের মৌলিক অধিকার— মতপ্রকাশ ও তথ্যের স্বাধীনতা— কেড়ে নেওয়া।’
রাশমি মনে করেন, সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তার ভাষায়, ‘তারা জনগণের করের টাকা অপব্যবহার করে। সেই টাকায় তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে। এটাই আসল বিষয়।’
রাশমির অনুভূতির সঙ্গে আরও অনেকেই একমত।
অধিকারকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নেপালি জনগণের মধ্যে এই ধারণা বাড়ছে যে, শাসক শ্রেণির পরিবারগুলো তুলনামূলক বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। অথচ গোটা দেশ ভুগছে বৈষম্য ও দারিদ্র্যে।
এমনকি নেপালি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিক্ষোভের আগের কয়েক সপ্তাহ ধরে ‘নেপো কিডস’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছিল। এই ট্যাগে অনেকেই বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত এসব পরিবারের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করছিলেন।
স্ট্রিমকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে রাশমি বলেন, ‘আমি যদি এখন বাইরে যাই এবং কেউ দাবি করে আমি কোনো রাজনৈতিক দলে আছি, তাহলে আমাকেও হত্যা করা হতে পারে।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, নেপালে সর্বশেষ বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল প্রায় ২০ বছর আগে। যার জেরে তখন রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়।
তার ভাষায়, ‘এখন খবর আসছে বন্দিরা জেল থেকে পালিয়েছে। পরের মুহূর্তে কী ঘটবে, কেউই বলতে পারছে না।’
রাশমি জানান, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গতিকে তিনি ‘অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, প্রতিশোধের সংস্কৃতি ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে গেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, শীর্ষ এক ব্যবসায়ীর গুদামঘর ও দুটি গণমাধ্যম কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ এগুলো শীর্ষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যুক্ত বলে ধরা হয়েছিল।
রাশমির ভাষায়, ‘এটা অনেকটা বাংলাদেশের আন্দোলনের প্রথম দিককার ঘটনার মতো। তবে আমার মনে হচ্ছে, এখানে সহিংসতা আরও ভয়াবহ।’
তিনি বলেন, ‘সবকিছু জ্বলছে। যদি কারও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক পাওয়া যায়, কিংবা তারা কোনো রাজনীতিবিদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হয়, বা দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলেই তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার মতে, শুধু পদত্যাগ যথেষ্ট নয়।
তিনি বলেন, ‘তারা মাত্র দুই-তিন ঘণ্টায় অতি ছোট শিশুদেরও হত্যা করেছে। আমি কীভাবে এটা বলব বুঝতে পারছি না। সরকারের দায়িত্ব জনগণকে রক্ষা করা। প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি একজন খুনি। পদত্যাগ সমাধান নয়। তাকে জবাবদিহি করতে হবে।’
চলতি বছরের ১০ মার্চ কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরে হাজারো সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে অভ্যর্থনা জানাতে। ২০০৬ সালে তীব্র গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া এক নেতাকে এভাবে বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়া অনেকের কাছেই বিস্ময়কর ছিল।
রাজধানীজুড়ে তখন ধ্বনিত হচ্ছিল এই স্লোগান— ‘আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোন’ এবং ‘রাজ সিংহাসন খালি করে রাজাকে দিন।’ অনেকেই দাবি করেন, এটি আসলে বিদেশে পরিকল্পিত এক ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য নেপালকে অস্থিতিশীল করা।
স্ট্রিমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন— এ ধরনের ঘটনায় সবসময় ভূরাজনীতি প্রভাব ফেলে। তার ভাষায়, ‘নেপাল দুই বৃহৎ দেশ— চীন ও ভারতের মাঝে অবস্থিত। তাই ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকবেই। এ ঘটনা তার বড় প্রমাণ।’
বিক্ষোভের ধরন দেখে বিদেশি হস্তক্ষেপের সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে।
অন্য এক সাংবাদিক স্ট্রিমকে জানান, তিনি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে মন্তব্য করবেন না। তবে বলেন, ‘এই বিক্ষোভ একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে শুরু হয়েছে। শুরুতে এটি জেন জি-র নেতৃত্বে ছিল। তবে নেপালে যেমন, পৃথিবীর অন্য দেশেও অনেক ভিন্নমতাবলম্বী দল রয়েছে। কিন্তু ভূরাজনৈতিক স্বার্থ এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তা স্পষ্ট।’
এদিকে নেপাল নতুন নেতৃত্বের সন্ধান করছে। এই মুহূর্তে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ, যিনি ‘বালেন’ নামে জনপ্রিয়, সামনে এগিয়ে আসছেন। তাকে আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অনলাইনে অনেক প্রচারণা চলছে।
তবে এখন পর্যন্ত তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। তবুও বহু নেপালি বিশ্বাস করেন, তিনিই আন্দোলন থামাতে পারবেন। কারণ জেন জি প্রজন্ম তার ওপর আস্থা রাখে।
র্যাপার থেকে রাজনীতিক হওয়া বালেন আগেই ফেসবুকে এক পোস্টে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এই সমাবেশ স্পষ্টভাবে জেন-জির স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, যাদের কাছে আমিও হয়তো পুরোনো প্রজন্মের মনে হতে পারি। আমি তাদের আকাঙ্ক্ষা, লক্ষ্য ও চিন্তাভাবনা বুঝতে চাই। রাজনৈতিক দল, নেতা, কর্মী, আইনপ্রণেতা ও প্রচারকরা যেন এই আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার না করেন।’
অন্যদিকে রাশমি বলেন, এখন কিছুই পূর্বানুমান করা যাচ্ছে না। তার ভাষায়, ‘আমরা জানি না পরের মুহূর্তে কী ঘটতে পারে।’
বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। তবে অনেক নাগরিক মনে করছেন, হিমালয় উপত্যকা থেকে বাইরে যে তথ্য যাচ্ছে, তার অনেকটাই বিকৃত বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে এখনো প্রবল আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। এর আগে সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভে ১৯ জন নিহত হয়। তারপরই রাজনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে।
স্ট্রিমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক নেপালি সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন— এ ধরনের সংকট অভূতপূর্ব। তার ভাষায়, ‘সবকিছু আগুনে পুড়ছে—সংসদ, আদালত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, এমনকি প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্রও।’
তিনি জানান, এখন কোনো মন্ত্রিসভা নেই। প্রধানমন্ত্রী নেই, এমনকি রাষ্ট্রপতিও নেই। পুরো অবস্থা এক ধরনের নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
বিক্ষোভে কে নেতৃত্ব দিচ্ছে—এ প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বলেন, বর্তমানে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। প্রথমদিকে এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল জেন জি তরুণদের মাধ্যমে। তবে ধীরে ধীরে এতে যুক্ত হয়েছে নানা পক্ষ— রাজতন্ত্রপন্থী, ফেডারেল ব্যবস্থার বিরোধী, হতাশাগ্রস্ত মাওবাদী কর্মী, মূলধারার দল থেকে বিচ্ছিন্নরা এবং আরও অনেকে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে কেউই জানে না, এরা কারা।’
তবে নিশ্চিতভাবে জানা গেছে— হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বিক্ষোভ মূলত নেপালের প্রধান রিং রোডকে ঘিরে হলেও দূর থেকেও এর প্রভাব টের পাওয়া যাচ্ছিল। কাঠমান্ডু ও ললিতপুর শহরকে ঘিরে থাকা আট লেনের এই মহাসড়ক থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করেও কৃষি ও বন বিশ্ববিদ্যালয়ের (চিতওন) স্নাতক রাশমি সিং ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছিলেন।
তিনি স্ট্রিমকে টেলিফোনে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। এই বিক্ষোভ শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু হয়নি। খারাপ শাসন ও দুর্নীতি ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে। নিষেধাজ্ঞা মানে ছিল আমাদের মৌলিক অধিকার— মতপ্রকাশ ও তথ্যের স্বাধীনতা— কেড়ে নেওয়া।’
রাশমি মনে করেন, সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তার ভাষায়, ‘তারা জনগণের করের টাকা অপব্যবহার করে। সেই টাকায় তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে। এটাই আসল বিষয়।’
রাশমির অনুভূতির সঙ্গে আরও অনেকেই একমত।
অধিকারকর্মী ও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নেপালি জনগণের মধ্যে এই ধারণা বাড়ছে যে, শাসক শ্রেণির পরিবারগুলো তুলনামূলক বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। অথচ গোটা দেশ ভুগছে বৈষম্য ও দারিদ্র্যে।
এমনকি নেপালি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিক্ষোভের আগের কয়েক সপ্তাহ ধরে ‘নেপো কিডস’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছিল। এই ট্যাগে অনেকেই বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত এসব পরিবারের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করছিলেন।
স্ট্রিমকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে রাশমি বলেন, ‘আমি যদি এখন বাইরে যাই এবং কেউ দাবি করে আমি কোনো রাজনৈতিক দলে আছি, তাহলে আমাকেও হত্যা করা হতে পারে।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, নেপালে সর্বশেষ বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল প্রায় ২০ বছর আগে। যার জেরে তখন রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়।
তার ভাষায়, ‘এখন খবর আসছে বন্দিরা জেল থেকে পালিয়েছে। পরের মুহূর্তে কী ঘটবে, কেউই বলতে পারছে না।’
রাশমি জানান, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গতিকে তিনি ‘অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, প্রতিশোধের সংস্কৃতি ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে গেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, শীর্ষ এক ব্যবসায়ীর গুদামঘর ও দুটি গণমাধ্যম কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ এগুলো শীর্ষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যুক্ত বলে ধরা হয়েছিল।
রাশমির ভাষায়, ‘এটা অনেকটা বাংলাদেশের আন্দোলনের প্রথম দিককার ঘটনার মতো। তবে আমার মনে হচ্ছে, এখানে সহিংসতা আরও ভয়াবহ।’
তিনি বলেন, ‘সবকিছু জ্বলছে। যদি কারও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক পাওয়া যায়, কিংবা তারা কোনো রাজনীতিবিদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হয়, বা দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলেই তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার মতে, শুধু পদত্যাগ যথেষ্ট নয়।
তিনি বলেন, ‘তারা মাত্র দুই-তিন ঘণ্টায় অতি ছোট শিশুদেরও হত্যা করেছে। আমি কীভাবে এটা বলব বুঝতে পারছি না। সরকারের দায়িত্ব জনগণকে রক্ষা করা। প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি একজন খুনি। পদত্যাগ সমাধান নয়। তাকে জবাবদিহি করতে হবে।’
চলতি বছরের ১০ মার্চ কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরে হাজারো সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে অভ্যর্থনা জানাতে। ২০০৬ সালে তীব্র গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া এক নেতাকে এভাবে বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়া অনেকের কাছেই বিস্ময়কর ছিল।
রাজধানীজুড়ে তখন ধ্বনিত হচ্ছিল এই স্লোগান— ‘আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোন’ এবং ‘রাজ সিংহাসন খালি করে রাজাকে দিন।’ অনেকেই দাবি করেন, এটি আসলে বিদেশে পরিকল্পিত এক ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য নেপালকে অস্থিতিশীল করা।
স্ট্রিমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন— এ ধরনের ঘটনায় সবসময় ভূরাজনীতি প্রভাব ফেলে। তার ভাষায়, ‘নেপাল দুই বৃহৎ দেশ— চীন ও ভারতের মাঝে অবস্থিত। তাই ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকবেই। এ ঘটনা তার বড় প্রমাণ।’
বিক্ষোভের ধরন দেখে বিদেশি হস্তক্ষেপের সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে।
অন্য এক সাংবাদিক স্ট্রিমকে জানান, তিনি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে মন্তব্য করবেন না। তবে বলেন, ‘এই বিক্ষোভ একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে শুরু হয়েছে। শুরুতে এটি জেন জি-র নেতৃত্বে ছিল। তবে নেপালে যেমন, পৃথিবীর অন্য দেশেও অনেক ভিন্নমতাবলম্বী দল রয়েছে। কিন্তু ভূরাজনৈতিক স্বার্থ এখানে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তা স্পষ্ট।’
এদিকে নেপাল নতুন নেতৃত্বের সন্ধান করছে। এই মুহূর্তে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ, যিনি ‘বালেন’ নামে জনপ্রিয়, সামনে এগিয়ে আসছেন। তাকে আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অনলাইনে অনেক প্রচারণা চলছে।
তবে এখন পর্যন্ত তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। তবুও বহু নেপালি বিশ্বাস করেন, তিনিই আন্দোলন থামাতে পারবেন। কারণ জেন জি প্রজন্ম তার ওপর আস্থা রাখে।
র্যাপার থেকে রাজনীতিক হওয়া বালেন আগেই ফেসবুকে এক পোস্টে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এই সমাবেশ স্পষ্টভাবে জেন-জির স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, যাদের কাছে আমিও হয়তো পুরোনো প্রজন্মের মনে হতে পারি। আমি তাদের আকাঙ্ক্ষা, লক্ষ্য ও চিন্তাভাবনা বুঝতে চাই। রাজনৈতিক দল, নেতা, কর্মী, আইনপ্রণেতা ও প্রচারকরা যেন এই আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার না করেন।’
অন্যদিকে রাশমি বলেন, এখন কিছুই পূর্বানুমান করা যাচ্ছে না। তার ভাষায়, ‘আমরা জানি না পরের মুহূর্তে কী ঘটতে পারে।’
নেপালে সহিংস বিক্ষোভের পর কে পি শর্মার অলির সরকারের পতন হয়েছে। তাঁর পদত্যাগপত্র দেশটির প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওডেল। নেপালে সেনাবাহিনী সম্ভত প্রেসিডেন্ট সুরক্ষা দিচ্ছে। তবে নেপালের সামনের দিনগুলো কিভাবে এগোবে তা অনিশ্চিত।
২ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি হামলার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে—আমেরিকার সর্বশেষ প্রস্তাব আসলে হামাস নেতাদের এক জায়গায় জড়ো করার একটি কৌশল ছিল। যাতে তাদের সহজে টার্গেট করা যায়।
৪ ঘণ্টা আগেজেন-জি বিক্ষোভের জেরে গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। পরে গতকালই তিনি হেলিকপ্টারে করে রাজধানী ছাড়েন। কিন্তু নেপালিদের কাছে এখন বড় প্রশ্ন হলো কে পি শর্মা কোথায় আছেন?
৫ ঘণ্টা আগেনেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘ভারতের হস্তক্ষেপ’ সংক্রান্ত বিতর্ক পুরোনো। ২০০৬ সালের গণআন্দোলন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সীমান্ত বিরোধ পর্যন্ত বহু ইস্যুতে ভারতের প্রভাব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
৬ ঘণ্টা আগে