স্ট্রিম প্রতিবেদক
ভারতের লাদাখে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে সুরক্ষা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) অভিযোগ এনেছে লেহ পুলিশ। তাঁর স্ত্রীর দাবি, তাঁকে যোধপুরের একটি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গান্ধীবাদী অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী সোনম ওয়াংচুক লাদাখবাসীর চার দফা দাবি নিয়ে গত ছয় বছর ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো: লাদাখের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তি, লেহ ও কারগিলের জন্য পৃথক লোকসভা আসন এবং স্থানীয়দের জন্য পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন। এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি অনশন শুরু করেছিলেন।
গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) লাদাখের লেহতে পূর্ণ রাজ্যের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত ও অন্তত ৮০ জন আহত হন। এই সহিংসতার জন্য সোনম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোনমের সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করে এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
যদিও সোনম ওয়াংচুক নিজে এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বুধবারের ঘটনার পর তিনি আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং বলেন, আন্দোলনকারীরা ভুল পথে চালিত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘এটি লাদাখের জন্য এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্যও সবচেয়ে দুঃখের দিন! কারণ, আমরা এতদিন শান্তিপূর্ণ পথে হেঁটেছি। কিন্তু আজ এই হিংসা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমাদের শান্তির বার্তা ব্যর্থ হতে দেখলাম।’
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে মুক্তি পায় রাজকুমার হিরানী পরিচালিত ও আমির খান অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’। এই সিনেমায় আমির খান অভিনীত ‘র্যাঞ্চো’ বা ‘ফুংসুখ ওয়াংড়ু’ চরিত্রটি তৈরি হয়েছিল সোনম ওয়াংচুকের জীবন ও কাজের অনুপ্রেরণায়।
এনএসএ ভারতের সবচেয়ে কঠোর আইনগুলোর একটা। অতীতে বিচ্ছিন্নতাবাদী, দুর্বৃত্ত, উগ্র মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত এই আইন সরকার রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করেছে। শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভারতে এই আইনপ্রয়োগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ঔপনিবেশিক সময় থেকে শুরু হয়েছে ‘প্রতিরক্ষামূলক গ্রেপ্তারি আইন’-এর ব্যবহার। স্বাধীনতার পর ১৯৫০ সালে সংসদে এই আইন পাস করা হয়। তারপর ১৯৭১ সালে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণ আইন (মিসা) আনা হয়, যা জরুরি অবস্থায় অপব্যবহারের জন্য কুখ্যাত। মিসা ১৯৭৮ সালে বাতিল হয়, এবং দুবছর পর জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) চালু হয়।
১৯৮০ সালের এনএসএ ভারতের কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলোকে এই আইনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করার ক্ষমতা দেয়; যাতে তারা দেশটির প্রতিরক্ষা, বিদেশি সম্পর্ক, নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, অত্যাবশ্যক সরবরাহের ক্ষতি করতে না পারে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ কমিশনাররাও এই ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।
ফৌজদারি আইনের তুলনায় এনএসএ কিছুটা আলাদা। এই আইন আগাম প্রতিরক্ষামূলক, শাস্তিমূলক নয়—এটি ক্ষতিকর কাজ প্রতিহত করার জন্য কবচ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এনএসএ-র উদ্দেশ্য নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অত্যাবশ্যক সরবরাহ বন্ধ হওয়া আটকাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। এই আইনের অধীনে সন্দেভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা যায়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করা এবং সরকারি শর্তাবলি মেনে চলতে বাধ্য করা যায়।
আইন অনুসারে, কাউকে গ্রেপ্তারের ৫ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এর কারণ জানাতে হবে। উচ্চ আদালতের বিচারকদের উপদেষ্টা বোর্ড তিন সপ্তাহের মধ্যে মামলা পর্যালোচনা করে, ‘পর্যাপ্ত কারণ’ না পেলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে হবে। এই গ্রেপ্তারির মেয়াদ সাধারণত ১২ মাসের বেশি হতে পারে না। অবশ্য এই আইনে সরকার ‘জনস্বার্থে’ তথ্য গোপনও করতে পারে।
সোনম ওয়াংচুকের গ্রেপ্তারের ঠিক একদিন আগেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ’ (সেকমল)-এর বিদেশি অনুদান গ্রহণের নিবন্ধন (এফসিআরএ) বাতিল করে। সরকারের অভিযোগ, সোনম নিয়ম ভেঙে বিদেশি অনুদান নিচ্ছেন। এ বিষয়ে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
তবে সোনম ওয়াংচুক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিদেশি অনুদান প্রসঙ্গে তিনি বৃহস্পতিবার এনডিটিভিকে বলেন, তাঁর সংস্থা সরাসরি কোনো বিদেশি অনুদান নেয়নি। জাতিসংঘ, সুইজারল্যান্ড ও ইতালির বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছে এবং তার জন্য যথাযথ করও পরিশোধ করেছে। তাঁর মতে, সরকার এই লেনদেনকে ভুলবশত বিদেশি অনুদান হিসেবে দেখছে।
এখন সোনম চাইলে এই ওয়ারেন্ট চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, অথবা তিন সপ্তাহের মধ্যে উপদেষ্টা বোর্ডের পর্যালোচনার অপেক্ষা করতে পারেন। আর বোর্ড যদি ‘পর্যাপ্ত কারণ’ না পায়, তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
বিকল্প রাস্তাও আছে, সোনম সংবিধানের ২২৬/৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে গ্রেপ্তারির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। সরকার নিজেও তাকে মুক্তি দিতে পারে।
তবে এই আইন আদালতে প্রমাণ দাখিল ব্যতীতই একজন ব্যক্তিকে আটক করার ক্ষমতা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
বহু সামাজিক সংগঠন এনএসএ-র অপব্যবহারের কথা বারবার উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন সময়ে এই আইনে বিভিন্ন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২৩ সালে ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’র নেতা, ‘উগ্র’ শিখ ধর্ম প্রচারক অমৃতপাল সিং এনএসএ-র অধীনে আটক হয়ে আসামের ডিব্রুগড় জেলে স্থানান্তরিত হন। এরও আগে ২০১৭ সালে ‘ভিম আর্মি’ প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ ‘রাভান’ উত্তরপ্রদেশে এনএসএ-তে অভিযুক্ত হন। সুপ্রিম কোর্টে মামলা পৌঁছানোর পর আদেশ বাতিল হয় এবং ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। আবার ২০২০ সালের সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারী এনএসএ-তে অভিযুক্ত হন।
২০২০ সালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাফিল খান উত্তরপ্রদেশ সরকারের দ্বারা উসকানিমূলক ভাষণের অভিযোগে এই আইনে গ্রেপ্তার হন। পরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর মুক্তির নির্দেশ দেয়। এ ছাড়া মধ্যপ্রদেশে ‘লাভ জিহাদ’ মামলায় এবং উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় বারবার এনএসএ ব্যবহার হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভারতের লাদাখে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে সুরক্ষা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) অভিযোগ এনেছে লেহ পুলিশ। তাঁর স্ত্রীর দাবি, তাঁকে যোধপুরের একটি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গান্ধীবাদী অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী সোনম ওয়াংচুক লাদাখবাসীর চার দফা দাবি নিয়ে গত ছয় বছর ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো: লাদাখের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তি, লেহ ও কারগিলের জন্য পৃথক লোকসভা আসন এবং স্থানীয়দের জন্য পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন। এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি অনশন শুরু করেছিলেন।
গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) লাদাখের লেহতে পূর্ণ রাজ্যের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত ও অন্তত ৮০ জন আহত হন। এই সহিংসতার জন্য সোনম ওয়াংচুকের উসকানিমূলক বক্তব্যকে দায়ী করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোনমের সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করে এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
যদিও সোনম ওয়াংচুক নিজে এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বুধবারের ঘটনার পর তিনি আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং বলেন, আন্দোলনকারীরা ভুল পথে চালিত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘এটি লাদাখের জন্য এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্যও সবচেয়ে দুঃখের দিন! কারণ, আমরা এতদিন শান্তিপূর্ণ পথে হেঁটেছি। কিন্তু আজ এই হিংসা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমাদের শান্তির বার্তা ব্যর্থ হতে দেখলাম।’
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে মুক্তি পায় রাজকুমার হিরানী পরিচালিত ও আমির খান অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’। এই সিনেমায় আমির খান অভিনীত ‘র্যাঞ্চো’ বা ‘ফুংসুখ ওয়াংড়ু’ চরিত্রটি তৈরি হয়েছিল সোনম ওয়াংচুকের জীবন ও কাজের অনুপ্রেরণায়।
এনএসএ ভারতের সবচেয়ে কঠোর আইনগুলোর একটা। অতীতে বিচ্ছিন্নতাবাদী, দুর্বৃত্ত, উগ্র মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত এই আইন সরকার রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করেছে। শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ভারতে এই আইনপ্রয়োগের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ঔপনিবেশিক সময় থেকে শুরু হয়েছে ‘প্রতিরক্ষামূলক গ্রেপ্তারি আইন’-এর ব্যবহার। স্বাধীনতার পর ১৯৫০ সালে সংসদে এই আইন পাস করা হয়। তারপর ১৯৭১ সালে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণ আইন (মিসা) আনা হয়, যা জরুরি অবস্থায় অপব্যবহারের জন্য কুখ্যাত। মিসা ১৯৭৮ সালে বাতিল হয়, এবং দুবছর পর জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ) চালু হয়।
১৯৮০ সালের এনএসএ ভারতের কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলোকে এই আইনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক করার ক্ষমতা দেয়; যাতে তারা দেশটির প্রতিরক্ষা, বিদেশি সম্পর্ক, নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, অত্যাবশ্যক সরবরাহের ক্ষতি করতে না পারে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ কমিশনাররাও এই ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।
ফৌজদারি আইনের তুলনায় এনএসএ কিছুটা আলাদা। এই আইন আগাম প্রতিরক্ষামূলক, শাস্তিমূলক নয়—এটি ক্ষতিকর কাজ প্রতিহত করার জন্য কবচ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এনএসএ-র উদ্দেশ্য নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অত্যাবশ্যক সরবরাহ বন্ধ হওয়া আটকাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। এই আইনের অধীনে সন্দেভাজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা যায়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করা এবং সরকারি শর্তাবলি মেনে চলতে বাধ্য করা যায়।
আইন অনুসারে, কাউকে গ্রেপ্তারের ৫ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এর কারণ জানাতে হবে। উচ্চ আদালতের বিচারকদের উপদেষ্টা বোর্ড তিন সপ্তাহের মধ্যে মামলা পর্যালোচনা করে, ‘পর্যাপ্ত কারণ’ না পেলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে হবে। এই গ্রেপ্তারির মেয়াদ সাধারণত ১২ মাসের বেশি হতে পারে না। অবশ্য এই আইনে সরকার ‘জনস্বার্থে’ তথ্য গোপনও করতে পারে।
সোনম ওয়াংচুকের গ্রেপ্তারের ঠিক একদিন আগেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ’ (সেকমল)-এর বিদেশি অনুদান গ্রহণের নিবন্ধন (এফসিআরএ) বাতিল করে। সরকারের অভিযোগ, সোনম নিয়ম ভেঙে বিদেশি অনুদান নিচ্ছেন। এ বিষয়ে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
তবে সোনম ওয়াংচুক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিদেশি অনুদান প্রসঙ্গে তিনি বৃহস্পতিবার এনডিটিভিকে বলেন, তাঁর সংস্থা সরাসরি কোনো বিদেশি অনুদান নেয়নি। জাতিসংঘ, সুইজারল্যান্ড ও ইতালির বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছে এবং তার জন্য যথাযথ করও পরিশোধ করেছে। তাঁর মতে, সরকার এই লেনদেনকে ভুলবশত বিদেশি অনুদান হিসেবে দেখছে।
এখন সোনম চাইলে এই ওয়ারেন্ট চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, অথবা তিন সপ্তাহের মধ্যে উপদেষ্টা বোর্ডের পর্যালোচনার অপেক্ষা করতে পারেন। আর বোর্ড যদি ‘পর্যাপ্ত কারণ’ না পায়, তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
বিকল্প রাস্তাও আছে, সোনম সংবিধানের ২২৬/৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে গ্রেপ্তারির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। সরকার নিজেও তাকে মুক্তি দিতে পারে।
তবে এই আইন আদালতে প্রমাণ দাখিল ব্যতীতই একজন ব্যক্তিকে আটক করার ক্ষমতা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
বহু সামাজিক সংগঠন এনএসএ-র অপব্যবহারের কথা বারবার উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন সময়ে এই আইনে বিভিন্ন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২৩ সালে ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’র নেতা, ‘উগ্র’ শিখ ধর্ম প্রচারক অমৃতপাল সিং এনএসএ-র অধীনে আটক হয়ে আসামের ডিব্রুগড় জেলে স্থানান্তরিত হন। এরও আগে ২০১৭ সালে ‘ভিম আর্মি’ প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ ‘রাভান’ উত্তরপ্রদেশে এনএসএ-তে অভিযুক্ত হন। সুপ্রিম কোর্টে মামলা পৌঁছানোর পর আদেশ বাতিল হয় এবং ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। আবার ২০২০ সালের সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারী এনএসএ-তে অভিযুক্ত হন।
২০২০ সালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাফিল খান উত্তরপ্রদেশ সরকারের দ্বারা উসকানিমূলক ভাষণের অভিযোগে এই আইনে গ্রেপ্তার হন। পরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর মুক্তির নির্দেশ দেয়। এ ছাড়া মধ্যপ্রদেশে ‘লাভ জিহাদ’ মামলায় এবং উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় বারবার এনএসএ ব্যবহার হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ফিলিস্তিন প্রশ্ন আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে দীর্ঘদিনের এক অমীমাংসিত ইস্যু। একদিকে রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষার জবাবে গণহত্যা, অন্যদিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি।
১ ঘণ্টা আগেগাজায় চলমান গণহত্যা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের বারবার হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণ চলাকালে বহু কূটনীতিক ওয়াকআউট (সভা ত্যাগ) করেন।
২ ঘণ্টা আগেলাদাখে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেতা এবং ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
১ দিন আগেএই মুহূর্তে পুরো লেহ শহর কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। কারফিউ চলছে। বড় জমায়েত বা মিছিল নিষিদ্ধ। সরকার মনে করছে, পরিস্থিতি সামলাতে সময় লাগবে। তবে প্রশ্ন উঠছে—যে লাদাখ এতদিন শান্তি ও পর্যটনের প্রতীক ছিল, সেখানে শান্তি ফিরবে কবে?
১ দিন আগে