রায়হান রাহিম
চুল নিয়ে যে চুলোচুলি কিন্তু একদম নতুন নয়। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালে এক কিশোরের চুলের ছাট দেখে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহির অপছন্দ হয়। তবে এতেই ঘটনা শেষ হয় না, সেলুনে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরের চুল জোর করে কেটে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেন পুলিশের উপ পরিদর্শক। আবার ওই বছরই নাটোরের বরাইগ্রাম উপজেলার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায় ৫০ জন ছাত্রের চুল জোর করে কেটে দেন।
জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু শিশু-কিশোরদের ওপর চাপিয়ে দেওয়াতেই সীমাবদ্ধ নেই। ২০২১ সালে গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এতে অপমানিত হয়ে তুহিন নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। একই বছরের অক্টোবরে লক্ষ্মীপুরের একটি মাদ্রাসায় সাতজন ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুর কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এসবের মধ্যেই বাংলাদেশে সম্প্রতি আবারও জোরপূর্বক চুল কেটে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘মানবসেবার’ নামে ক্ষমতাকাঠামোর বাইরে থাকা মানুষদের চুল জোর করে কেটে দিচ্ছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও গণমাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই যে সম্মতি না নিয়ে ‘পরিচ্ছন্নতার’ অযুহাত বা ‘মানবসেবার’ নামে কাউকে জোর করে চুল কেটে দেওয়ার পেছনের মনস্তত্ত্ব কী?
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, মানবসভ্যতায় চুল বরাবরই ছিল পরিচয়, মর্যাদা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতীক। প্রাচীন মিশরের শাসক ফারাও ও অভিজাতরা পরচুলা ব্যবহার করতেন। মেসোপটেমীয় ও আসিরীয় সভ্যতায় রাজা ও যোদ্ধারা শক্তি প্রদর্শন ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে রাখতেন দাড়ি আর লম্বা চুল। জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে গ্রিক দার্শনিকদেরও ছিল দাড়ি।
আবার রোমান সাম্রাজ্যে চুল কাটা ও দাড়ি কামানোকে সভ্যতা ও শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো। প্রাচীন ভারতেও অভিজাত পুরুষদের লম্বা চুলের বর্ণনা পাওয়া যায়। ভরতের নাট্যশাস্ত্রতে এর প্রমাণ মেলে। তা ছাড়া, বাৎস্যায়নের কামশাস্ত্রে পুরুষের লম্বা চুলকে পৌরুষত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়েছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বড় চুলের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রমাণ মেলে। নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) যে শুধু বাবরি চুল রাখতেন তাই নয়, চুল বেশি বড় হয়ে গেলে তিনি তাঁর চুলকে চারটি বেণীতেও বেঁধে রাখতেন। অন্যদিকে ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, কৃষ্ণ দীর্ঘকেশী। বিষ্ণুর আরেক অবতার রামেরও দীর্ঘকেশের বর্ণনা পাওয়া যায়।
তবে সময়ের সঙ্গে চুল নিয়ে বোঝাপড়া বদলে গেল কীভাবে? আভিজাত্যের প্রতীক থেকে কীভাবে উশৃঙ্খলতার প্রতীক হয়ে উঠল চুল?
ইউরোপের মধ্যযুগে রাজদরবারের অভিজাতরা যে পরচুলা পরতেন, তাকে দেখা হতো ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে। অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্সের ফরাসি বিপ্লবের পর এ চিত্র পাল্টে যেতে থাকে এবং অভিজাতবিরোধী আন্দোলনের ফলে লম্বা চুলকে নেতিবাচক ও দমনের প্রতীক হিসেবে দেখার চল শুরু হয়।
আর চুল নিয়ে এই বাংলা অঞ্চলে কী ঘটেছিল?
গবেষক কে এম রাকিব বাংলা অঞ্চলে এই লম্বা চুল নিয়ে যে চুলোচুলি চলে, তার দায় হিসেবে ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তিনি এ বিষয়ে তাঁর ‘পুরুষের বড় চুল : একটা এস্থেটিক রহস্যকাহিনী’ লেখায় উল্লেখ করছেন, বিশ্বের যেখানেই ব্রিটিশরা উপনিবেশ তৈরি করেছে, সেখানে তারা যেসব স্থানীয় গোষ্ঠীকে হুমকি হিসেবে মনে করেছে, তাদেরকে বর্বর,ঊনমানুষ এমনকি ‘শয়তান’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চালিয়েছে।
পলাশীর যুদ্ধ ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকদের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলে প্রথম দিকে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ফকির-সন্ন্যাসীরা। ১৭৬০ থেকে প্রায় ১৮০০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ও সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে গেছেন তাঁরা। মজনু শাহসহ এই ফকিরেরা ছিলেন মূলত মাদারিয়া তরিকার ফকির।
ইতিহাস বলছে, কোম্পানি শাসকদের ফকির-সন্ন্যাসীরা পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল। তাই তাঁদের ওপরে নেমে এসেছিল ব্যাপক মাত্রায় নির্যাতন আর দমন-পীড়ন। ওয়ারেন হেস্টিংস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর জেনারেল থাকার সময় ‘ডাকাতি’ মোকাবিলার নামে ফকিরদের ওপর শুরু হয় দমন-পীড়ন। এ সময় হেস্টিংস ফকির-সন্ন্যাসীদের ‘এনিমি অব দ্য স্টেট’ বা রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেন। আঠারো শতকের শেষ থেকে উনিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত ফকির-সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংসতা ও ঔপনিবেশিক ঘৃণার বেসাতি চলে।
তবে সবচে কুখ্যাত প্রচারণা হয় ১৮৩০-এর দশকে, প্রশাসক উইলিয়াম স্লিম্যানের নেতৃত্বে। এ সময় প্রচারণাটি মূলত ঠগী ও ডাকাত দমনের নামে চললেও ফকির-সন্ন্যাসীরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। উপনিবেশিক শাসকেরা আঠারো শতকের শেষে এবং উনিশ শতকের প্রথম দিকে বিভিন্ন ভবঘুরে দল—যেমন বানজারা, গোঁসাই, ফকির ও সন্ন্যাসীদের ‘অপরাধী’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়। আর এসব তথাকথিত ‘অপরাধী'দের সম্পর্কে ব্যাপক মাত্রায় সরকারি সহিংসতা ও প্রোপাগান্ডাও চালানো হয়। বলা ভালো, কুখ্যাত এই প্রচারণা চালানোর সময় উপনিবেশিক আমলের অপরাধী আইনেরও সংশোধন করা হয়, যাতে বিচার-বহির্ভূত নানান অত্যাচার চালানো যায়! এসব ফকিরদের সম্পর্কে এ শাসকদের মনোভাব ছিল, এঁরা ‘উন্মাদ’, ‘মাদকাসক্ত’, ‘অসুস্থ’ এবং শেষ পর্যন্ত ‘অপরাধী’। ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এঁদের ওপর নানান প্রকারে নির্যাতন চালাত। এ সময় ফকির সন্ন্যাসী নন, এমন লোকেরাও লম্বা চুল-দাড়ি রাখার কারণে কোম্পানির সেপাইদের হাতে দীর্ঘদিন হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আমরা গবেষক আনন্দ ভট্টাচার্যের শরণ নিতে পারি। ইতিহাস ঘেঁটে তিনি এমন নমুনাও পেয়েছেন, যেখানে বগুড়ার এক দারোগা বড় চুলের কারণে কিছু লোককে হেনস্তা করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ কর্মকর্তা খুশি হয়ে তাঁকে প্রমোশন দিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করেছে। কে এম রাকিবের মতে, ‘ব্রিটিশ উপনিবেশ আমাদের অনেকের মধ্যে এই ধারণা ঢুকায়ে দিছে যে বড় চুল মানে বেয়াদবি, উশৃঙ্খলতা, অবাধ্যতা। ‘সভ্য’ হওয়ার ট্রেনিংও দিছে, যেমন কোম্পানির চাকরির জন্যেও সুবেশিত ও ‘সুকেশিত’ হওয়ার দরকার পড়ছে। ক্লিন শেভড ও ক্লিন ড্রেসড হওয়া ছিল চাকরির অন্যতম শর্ত।’
তবে লম্বা চুলের নেতিবাচকতার সঙ্গে যে সেনা-ক্ষমতার সূক্ষ্ম সম্পর্ক আছে, সেটিও এড়িয়ে যাওয়ার জো নেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেরে মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা প্রায় ১৮ বছর সরাসরি সেনাশাসনের অধীনে ছিলাম। অন্যদিকে, পাকিস্তানের অধীনস্থ থাকার পর্বেও একটা লম্বা সময় দেশ ছিল সেনাশাসনে।
সেনা-নন্দনতত্ত্বে বড় চুলকে শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের চিহ্ন হিসেবে দেখার রীতি রয়েছে। সেনাবাহিনী বাংলাদেশে হেজেমনিকভাবে সমীহ জাগানিয়া। যা জনমনেও প্রভাববিস্তারী হতে পারে। পরবর্তীকালে দেশের কর্পোরেট সংস্কৃতি বড় চুলের নেতিবাচকতায় ভূমিকা রাখতে পারে।
এভাবেই নানা পরিক্রমার মধ্য দিয়ে চুল কেমন বা কতটুকু রাখা হবে, তা দিয়ে এখানে পুরুষদেরকে মাপার এক অলিখিত মানদণ্ড তৈরি হয়েছে সমাজে। বলা ভালো, এই মানদণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল ওপনিবেশিক আমলের ব্রিটিশ-ব্যবস্থায়। সাদা সাহেবরা যে ভারতবর্ষের পুরুষদের লম্বা চুলকে ‘সন্দেহের’ চোখে দেখতেন, সেই একই সন্দেহ এখনো আমাদের সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে। এখনো লম্বা চুল-দাড়ি বা অপ্রথাগত পোশাক আক্রমণের শিকার হয়। আর এমন যাঁরা থাকেন, তাঁরা কিছু মানুষের কাছে চিহ্নিত হন ‘পাগল’ বা ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইত্যাদি অভিধায়, ঠিক যেমন ব্রিটিশরাও ফকির-সন্নাসীদের ‘পাগল’ বলে চিত্রিত করেছিল।
সেই ব্রিটিশ আমলের মতোই এখনকার বাংলাদেশেও পুরুষের লম্বা চুল বা দাড়ি কেটে দেওয়াটা আসলে ক্ষমতা-সম্পর্কের বিষয়। অনেকে এমন বলতে পারেন যে অনুমতি ছাড়া কারও চুল কেটে দেওয়া আসলে নিছক একটি শারীরিক কাজ। কিন্তু ইতিহাস ও নৃবিজ্ঞান ঘেঁটে দেখলে বোঝা যাবে, এর সঙ্গে সম্পর্ক বরং ক্ষমতারই বেশি।
দার্শনিক জন লকের কথার প্রতিধ্বনি করে বলা যায়, প্রতিটি মানুষই নিজের দেহ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে। আর চুল মানুষের শরীরের দৃশ্যমান অংশ। তাই এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও পরিচয়েরও প্রতীক। ফলে যখন অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া কোনো মানুষের দেহের কোনো অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন সেটা ব্যক্তি মালিকানার অধিকার ধারণাকে আঘাত করার শামিল।
আবার দার্শনিক মিশেল ফুকোর মতে, আধুনিক ক্ষমতা শুধু আইন বা শাস্তির মাধ্যমে নয়, বরং মানুষের শরীরকে শৃঙ্খলিত ও নিয়ন্ত্রিত করার মাধ্যমে কাজ করে। এজন্যই কারাগার, সেনাবাহিনী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেহের আচরণ, চলাফেরা, পোশাক, চুলের ধরণ ইত্যাদির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা হয়। অনেক সমাজেই চুল সৌন্দর্য্য, মর্যাদা, আধ্যাত্মিকতা ও পরিচয়ের স্মারক। তাই জোর করে চুল কেটে দেওয়ার অর্থ সে মর্যাদার হানি ঘটানো।
বর্তমান সময়ে কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘মানবসেবার’ নামে ক্ষমতাকাঠামোর বাইরে থাকা মানুষদের জোরপূর্বক চুল কেটে দিচ্ছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তাঁরা শুধু জবরদস্তি করেই ক্ষান্ত হননি, সেসবের ভিডিও অনলাইনেও প্রকাশ করছেন। সেই ভিডিওর আবার লাখো-কোটি ভিউ হচ্ছে। ভিউ থেকে তাঁরা যে অর্থকড়ি কামাচ্ছেন, তা সারাদেশে এই জোরাজুরিকে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশের সংবিধানও ব্যক্তির স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা ও দেহের ওপরে আত্মঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এর পরের অনুচ্ছেদে ‘জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার-রক্ষণ’ শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।’
তা ছাড়া, বাংলাদেশের দণ্ডবিধি ১৮৬০ অনুযায়ী, কাউকে সম্মতি ছাড়া শারীরিকভাবে আঘাত করা বা তার দেহের কোনো অংশ পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ফলে এটি বলতেই হচ্ছে, আজকের বাংলাদেশে ‘মানবতা’ বা ‘পরিচ্ছন্নতা’ কার্যক্রমের নামে মানুষের চুল-দাড়ি যে কেটে দেওয়া হচ্ছে, তা আসলে ফৌজদারি অপরাধ। আর বাংলাদেশের সমাজ চিরকালই অনেক বেশি ভিন্নমত ও বৈচিত্র্য ধারন করে এসেছে। জোর করে চুল-দাড়ি কাটার নামে অন্যের জীবন ও বিশ্বাসের ওপর হস্তক্ষেপ, সে-ও আসলে প্রত্যক্ষ ফ্যাসিবাদেরই অংশ। আগেই বলেছি, যার শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশকারীদের হাতে। সাদা সাহেবদের অসংখ্য কালো প্রথার মতো এখনো আমরা একে আমাদের মনস্তত্ত্বে ধারন করে রেখেছি।
চুল নিয়ে যে চুলোচুলি কিন্তু একদম নতুন নয়। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালে এক কিশোরের চুলের ছাট দেখে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহির অপছন্দ হয়। তবে এতেই ঘটনা শেষ হয় না, সেলুনে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরের চুল জোর করে কেটে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেন পুলিশের উপ পরিদর্শক। আবার ওই বছরই নাটোরের বরাইগ্রাম উপজেলার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রায় ৫০ জন ছাত্রের চুল জোর করে কেটে দেন।
জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু শিশু-কিশোরদের ওপর চাপিয়ে দেওয়াতেই সীমাবদ্ধ নেই। ২০২১ সালে গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেন তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এতে অপমানিত হয়ে তুহিন নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। একই বছরের অক্টোবরে লক্ষ্মীপুরের একটি মাদ্রাসায় সাতজন ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মঞ্জুর কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এসবের মধ্যেই বাংলাদেশে সম্প্রতি আবারও জোরপূর্বক চুল কেটে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘মানবসেবার’ নামে ক্ষমতাকাঠামোর বাইরে থাকা মানুষদের চুল জোর করে কেটে দিচ্ছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও গণমাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই যে সম্মতি না নিয়ে ‘পরিচ্ছন্নতার’ অযুহাত বা ‘মানবসেবার’ নামে কাউকে জোর করে চুল কেটে দেওয়ার পেছনের মনস্তত্ত্ব কী?
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, মানবসভ্যতায় চুল বরাবরই ছিল পরিচয়, মর্যাদা, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতীক। প্রাচীন মিশরের শাসক ফারাও ও অভিজাতরা পরচুলা ব্যবহার করতেন। মেসোপটেমীয় ও আসিরীয় সভ্যতায় রাজা ও যোদ্ধারা শক্তি প্রদর্শন ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে রাখতেন দাড়ি আর লম্বা চুল। জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে গ্রিক দার্শনিকদেরও ছিল দাড়ি।
আবার রোমান সাম্রাজ্যে চুল কাটা ও দাড়ি কামানোকে সভ্যতা ও শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হতো। প্রাচীন ভারতেও অভিজাত পুরুষদের লম্বা চুলের বর্ণনা পাওয়া যায়। ভরতের নাট্যশাস্ত্রতে এর প্রমাণ মেলে। তা ছাড়া, বাৎস্যায়নের কামশাস্ত্রে পুরুষের লম্বা চুলকে পৌরুষত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়েছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বড় চুলের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রমাণ মেলে। নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) যে শুধু বাবরি চুল রাখতেন তাই নয়, চুল বেশি বড় হয়ে গেলে তিনি তাঁর চুলকে চারটি বেণীতেও বেঁধে রাখতেন। অন্যদিকে ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, কৃষ্ণ দীর্ঘকেশী। বিষ্ণুর আরেক অবতার রামেরও দীর্ঘকেশের বর্ণনা পাওয়া যায়।
তবে সময়ের সঙ্গে চুল নিয়ে বোঝাপড়া বদলে গেল কীভাবে? আভিজাত্যের প্রতীক থেকে কীভাবে উশৃঙ্খলতার প্রতীক হয়ে উঠল চুল?
ইউরোপের মধ্যযুগে রাজদরবারের অভিজাতরা যে পরচুলা পরতেন, তাকে দেখা হতো ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে। অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্সের ফরাসি বিপ্লবের পর এ চিত্র পাল্টে যেতে থাকে এবং অভিজাতবিরোধী আন্দোলনের ফলে লম্বা চুলকে নেতিবাচক ও দমনের প্রতীক হিসেবে দেখার চল শুরু হয়।
আর চুল নিয়ে এই বাংলা অঞ্চলে কী ঘটেছিল?
গবেষক কে এম রাকিব বাংলা অঞ্চলে এই লম্বা চুল নিয়ে যে চুলোচুলি চলে, তার দায় হিসেবে ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। তিনি এ বিষয়ে তাঁর ‘পুরুষের বড় চুল : একটা এস্থেটিক রহস্যকাহিনী’ লেখায় উল্লেখ করছেন, বিশ্বের যেখানেই ব্রিটিশরা উপনিবেশ তৈরি করেছে, সেখানে তারা যেসব স্থানীয় গোষ্ঠীকে হুমকি হিসেবে মনে করেছে, তাদেরকে বর্বর,ঊনমানুষ এমনকি ‘শয়তান’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চালিয়েছে।
পলাশীর যুদ্ধ ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকদের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলে প্রথম দিকে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ফকির-সন্ন্যাসীরা। ১৭৬০ থেকে প্রায় ১৮০০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ও সশস্ত্র বিদ্রোহ চালিয়ে গেছেন তাঁরা। মজনু শাহসহ এই ফকিরেরা ছিলেন মূলত মাদারিয়া তরিকার ফকির।
ইতিহাস বলছে, কোম্পানি শাসকদের ফকির-সন্ন্যাসীরা পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল। তাই তাঁদের ওপরে নেমে এসেছিল ব্যাপক মাত্রায় নির্যাতন আর দমন-পীড়ন। ওয়ারেন হেস্টিংস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর জেনারেল থাকার সময় ‘ডাকাতি’ মোকাবিলার নামে ফকিরদের ওপর শুরু হয় দমন-পীড়ন। এ সময় হেস্টিংস ফকির-সন্ন্যাসীদের ‘এনিমি অব দ্য স্টেট’ বা রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেন। আঠারো শতকের শেষ থেকে উনিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত ফকির-সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংসতা ও ঔপনিবেশিক ঘৃণার বেসাতি চলে।
তবে সবচে কুখ্যাত প্রচারণা হয় ১৮৩০-এর দশকে, প্রশাসক উইলিয়াম স্লিম্যানের নেতৃত্বে। এ সময় প্রচারণাটি মূলত ঠগী ও ডাকাত দমনের নামে চললেও ফকির-সন্ন্যাসীরাও নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। উপনিবেশিক শাসকেরা আঠারো শতকের শেষে এবং উনিশ শতকের প্রথম দিকে বিভিন্ন ভবঘুরে দল—যেমন বানজারা, গোঁসাই, ফকির ও সন্ন্যাসীদের ‘অপরাধী’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়। আর এসব তথাকথিত ‘অপরাধী'দের সম্পর্কে ব্যাপক মাত্রায় সরকারি সহিংসতা ও প্রোপাগান্ডাও চালানো হয়। বলা ভালো, কুখ্যাত এই প্রচারণা চালানোর সময় উপনিবেশিক আমলের অপরাধী আইনেরও সংশোধন করা হয়, যাতে বিচার-বহির্ভূত নানান অত্যাচার চালানো যায়! এসব ফকিরদের সম্পর্কে এ শাসকদের মনোভাব ছিল, এঁরা ‘উন্মাদ’, ‘মাদকাসক্ত’, ‘অসুস্থ’ এবং শেষ পর্যন্ত ‘অপরাধী’। ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এঁদের ওপর নানান প্রকারে নির্যাতন চালাত। এ সময় ফকির সন্ন্যাসী নন, এমন লোকেরাও লম্বা চুল-দাড়ি রাখার কারণে কোম্পানির সেপাইদের হাতে দীর্ঘদিন হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আমরা গবেষক আনন্দ ভট্টাচার্যের শরণ নিতে পারি। ইতিহাস ঘেঁটে তিনি এমন নমুনাও পেয়েছেন, যেখানে বগুড়ার এক দারোগা বড় চুলের কারণে কিছু লোককে হেনস্তা করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ কর্মকর্তা খুশি হয়ে তাঁকে প্রমোশন দিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করেছে। কে এম রাকিবের মতে, ‘ব্রিটিশ উপনিবেশ আমাদের অনেকের মধ্যে এই ধারণা ঢুকায়ে দিছে যে বড় চুল মানে বেয়াদবি, উশৃঙ্খলতা, অবাধ্যতা। ‘সভ্য’ হওয়ার ট্রেনিংও দিছে, যেমন কোম্পানির চাকরির জন্যেও সুবেশিত ও ‘সুকেশিত’ হওয়ার দরকার পড়ছে। ক্লিন শেভড ও ক্লিন ড্রেসড হওয়া ছিল চাকরির অন্যতম শর্ত।’
তবে লম্বা চুলের নেতিবাচকতার সঙ্গে যে সেনা-ক্ষমতার সূক্ষ্ম সম্পর্ক আছে, সেটিও এড়িয়ে যাওয়ার জো নেই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেরে মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা প্রায় ১৮ বছর সরাসরি সেনাশাসনের অধীনে ছিলাম। অন্যদিকে, পাকিস্তানের অধীনস্থ থাকার পর্বেও একটা লম্বা সময় দেশ ছিল সেনাশাসনে।
সেনা-নন্দনতত্ত্বে বড় চুলকে শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের চিহ্ন হিসেবে দেখার রীতি রয়েছে। সেনাবাহিনী বাংলাদেশে হেজেমনিকভাবে সমীহ জাগানিয়া। যা জনমনেও প্রভাববিস্তারী হতে পারে। পরবর্তীকালে দেশের কর্পোরেট সংস্কৃতি বড় চুলের নেতিবাচকতায় ভূমিকা রাখতে পারে।
এভাবেই নানা পরিক্রমার মধ্য দিয়ে চুল কেমন বা কতটুকু রাখা হবে, তা দিয়ে এখানে পুরুষদেরকে মাপার এক অলিখিত মানদণ্ড তৈরি হয়েছে সমাজে। বলা ভালো, এই মানদণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল ওপনিবেশিক আমলের ব্রিটিশ-ব্যবস্থায়। সাদা সাহেবরা যে ভারতবর্ষের পুরুষদের লম্বা চুলকে ‘সন্দেহের’ চোখে দেখতেন, সেই একই সন্দেহ এখনো আমাদের সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে। এখনো লম্বা চুল-দাড়ি বা অপ্রথাগত পোশাক আক্রমণের শিকার হয়। আর এমন যাঁরা থাকেন, তাঁরা কিছু মানুষের কাছে চিহ্নিত হন ‘পাগল’ বা ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইত্যাদি অভিধায়, ঠিক যেমন ব্রিটিশরাও ফকির-সন্নাসীদের ‘পাগল’ বলে চিত্রিত করেছিল।
সেই ব্রিটিশ আমলের মতোই এখনকার বাংলাদেশেও পুরুষের লম্বা চুল বা দাড়ি কেটে দেওয়াটা আসলে ক্ষমতা-সম্পর্কের বিষয়। অনেকে এমন বলতে পারেন যে অনুমতি ছাড়া কারও চুল কেটে দেওয়া আসলে নিছক একটি শারীরিক কাজ। কিন্তু ইতিহাস ও নৃবিজ্ঞান ঘেঁটে দেখলে বোঝা যাবে, এর সঙ্গে সম্পর্ক বরং ক্ষমতারই বেশি।
দার্শনিক জন লকের কথার প্রতিধ্বনি করে বলা যায়, প্রতিটি মানুষই নিজের দেহ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে। আর চুল মানুষের শরীরের দৃশ্যমান অংশ। তাই এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও পরিচয়েরও প্রতীক। ফলে যখন অন্য কেউ অনুমতি ছাড়া কোনো মানুষের দেহের কোনো অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন সেটা ব্যক্তি মালিকানার অধিকার ধারণাকে আঘাত করার শামিল।
আবার দার্শনিক মিশেল ফুকোর মতে, আধুনিক ক্ষমতা শুধু আইন বা শাস্তির মাধ্যমে নয়, বরং মানুষের শরীরকে শৃঙ্খলিত ও নিয়ন্ত্রিত করার মাধ্যমে কাজ করে। এজন্যই কারাগার, সেনাবাহিনী বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেহের আচরণ, চলাফেরা, পোশাক, চুলের ধরণ ইত্যাদির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা হয়। অনেক সমাজেই চুল সৌন্দর্য্য, মর্যাদা, আধ্যাত্মিকতা ও পরিচয়ের স্মারক। তাই জোর করে চুল কেটে দেওয়ার অর্থ সে মর্যাদার হানি ঘটানো।
বর্তমান সময়ে কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ‘মানবসেবার’ নামে ক্ষমতাকাঠামোর বাইরে থাকা মানুষদের জোরপূর্বক চুল কেটে দিচ্ছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তাঁরা শুধু জবরদস্তি করেই ক্ষান্ত হননি, সেসবের ভিডিও অনলাইনেও প্রকাশ করছেন। সেই ভিডিওর আবার লাখো-কোটি ভিউ হচ্ছে। ভিউ থেকে তাঁরা যে অর্থকড়ি কামাচ্ছেন, তা সারাদেশে এই জোরাজুরিকে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশের সংবিধানও ব্যক্তির স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা ও দেহের ওপরে আত্মঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এর পরের অনুচ্ছেদে ‘জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার-রক্ষণ’ শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।’
তা ছাড়া, বাংলাদেশের দণ্ডবিধি ১৮৬০ অনুযায়ী, কাউকে সম্মতি ছাড়া শারীরিকভাবে আঘাত করা বা তার দেহের কোনো অংশ পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ফলে এটি বলতেই হচ্ছে, আজকের বাংলাদেশে ‘মানবতা’ বা ‘পরিচ্ছন্নতা’ কার্যক্রমের নামে মানুষের চুল-দাড়ি যে কেটে দেওয়া হচ্ছে, তা আসলে ফৌজদারি অপরাধ। আর বাংলাদেশের সমাজ চিরকালই অনেক বেশি ভিন্নমত ও বৈচিত্র্য ধারন করে এসেছে। জোর করে চুল-দাড়ি কাটার নামে অন্যের জীবন ও বিশ্বাসের ওপর হস্তক্ষেপ, সে-ও আসলে প্রত্যক্ষ ফ্যাসিবাদেরই অংশ। আগেই বলেছি, যার শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশকারীদের হাতে। সাদা সাহেবদের অসংখ্য কালো প্রথার মতো এখনো আমরা একে আমাদের মনস্তত্ত্বে ধারন করে রেখেছি।
নাটকীয়ভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এতে ন্যাটোর ভূমিকা নিয়ে নিজের অবস্থান বদলে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
৪ ঘণ্টা আগেইসরায়েলের ‘ইউনিট ৮২০০’ গোয়েন্দা সংস্থাটি মাইক্রোসফটের অ্যাজুর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী গণনজরদারি ব্যবস্থা তৈরি করেছিল। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা পশ্চিম তীর ও গাজার লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের ফোনকল রেকর্ড করত।
১ দিন আগেচলতি বছরের আগস্টে ভারত সফলভাবে তার অগ্নি-৫ মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইআরবিএম) পরীক্ষা চালায়। নিখাদ জ্বালানি (সলিড ফুয়েল) চালিত তিন স্তরের এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি।
২ দিন আগেনির্বাচনের তারিখ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের অবস্থানের ভিন্নতা দেখা দিয়েছিল। জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সময় নিয়ে বিভেদ থাকলেও সব রাজনৈতিক দলের কণ্ঠেই ছিল এই উদ্বেগ — ‘আগামী নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জিং’।
২ দিন আগে