.png)
ডাকসু নির্বাচন
প্রার্থীরা বলছেন, ডাকসুর যে সব প্যানেলের প্রার্থীদের অর্থের যোগান ভালো তাঁরা ভোটের বিনিময়ে এই খাবার খাওয়াচ্ছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কৌরিত্র পোদ্দার তীর্থ

শুক্রবার, দিবাগত রাত ১টা। রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারের বিরিয়ানি ও কাবাবের দোকানগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে ভিড় যেন একটু বেশি। আর যারা খাবার খাচ্ছেন, তাঁদের প্রায় সবাই বয়সে তরুণ। ১৮-২২ বছর বয়সী কয়েকজন তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একসঙ্গে এত শিক্ষার্থী কেন খেতে এসেছেন, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চান অনেকে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বললেন, ‘ভোটের খাওয়া’ খেতে এসেছেন তাঁরা।
নাজিরাবাজারের হোটেলমালিকেরা বলছেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় গত পাঁচ-সাত দিনে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ক্রেতা বেড়েছে। ভোটের খাওয়ার জন্যই এমন কি না সে বিষয়ে অনেক দোকানি মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্ট্রিম নাজিরাবাজারে যাওয়া বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, তাঁরা নিজ খরচে নয়, নির্বাচন উপলক্ষ্যেই নাজিরাবাজারে খেতে গিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা অভিযোগও জানিয়েছেন। প্রার্থীরা বলছেন, ডাকসুর যে সব প্যানেলের প্রার্থীদের অর্থের যোগান ভালো তাঁরা ভোটের বিনিময়ে এই খাবার খাওয়াচ্ছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

খাদ্যরসিকদের কাছে এমনিতেই রাতের নাজিরাবাজার বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয়রা জানান, বিকেল থেকে শুরু করে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত এ এলাকায় ভিড় লেগে থাকে। একই কথা জানান সেখানকার দোকানিরাও। বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের ক্যাশিয়ার মো. সেন্টু স্ট্রিমকে জানান, বিকেল পাঁচটায় শুরু হয়ে রাত তিনটা পর্যন্ত তাঁদের দোকানে বেচাকেনা চলে।
নাজিরাবাজারের আল কারীম জুসবারের কর্ণধার স্ট্রিমকে জানান, আশপাশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় রাতে আগতদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
ডাকসু নির্বাচনের বিষয়টি উল্লেখ করলে দোকানিরা জানিয়েছেন, ভোট উপলক্ষেই শিক্ষার্থীদের আনাগোণার হার বেড়ে থাকতে পারে।
রাত ১২টার পর সরেজমিনে নাজিরাবাজার গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন দল করে তরুণেরা খেতে এসেছেন। ৩-৪ জনের দল থেকে শুরু করে ২০-২৫ জনের দলও এ সময় চোখে পড়ে। কথা বলে জানা যায়, এদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।
বোখারী রেস্তোরাঁ ও বিসমিল্লাহ কাবাব ঘর—এ দুটি দোকানে শিক্ষার্থীদের আধিক্য বেশি চোখে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে বোখারী রেস্তোরাঁর দোতলায় আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এদের প্রায় সকলেই শিক্ষার্থী।
বোখারী রেস্তোরাঁর ক্যাশিয়ার মো. জালাল গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে স্ট্রিমকে বলেন, ‘ডাকসুর জন্য গত পাঁচ-সাতদিন ধরে শিক্ষার্থীদের ভিড় বেশি।’
একই তথ্য দেন বোখারী রেস্তোরাঁর আরেক শাখার ক্যাশিয়ার মো. সোহেলও। তিনি বলেন, খেতে এসে বিভিন্ন সময় ডাকসু প্রার্থীদের নামে দোয়া চান অনেকে।
তবে প্রার্থীদের জন্য দোয়া চাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের ক্যাশিয়ার মো. সেন্টু। তবে ডাকসু উপলক্ষে ক্রেতা যে বেড়েছে, সেটি স্বীকার করেন তিনি।
ডাকসুর কোন প্রার্থী খাওয়াতে নিয়ে এসেছেন বা অর্থ দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে শিক্ষার্থীরা কোনো উত্তর দেননি। অনেকে অবশ্য বলেছেন, তাঁরা নিজ খরচে খেতে গিয়েছেন সেখানে।
ফার্স্ট ইয়ারের শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিরিয়ানি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টা করছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে। মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সদস্য পদপ্রার্থী, ডাকসু
ডাকসুভিত্তিক খাওয়াদাওয়া কেবল নাজিরাবাজারে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন প্রার্থী অভিযোগ করছেন, ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকাতেও বড় ফান্ডিং পাওয়া প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের খাওয়াচ্ছেন।
উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের এক প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয় স্ট্রিমের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ প্যানেলের প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের খাওয়াচ্ছেন। তিনি চানখাঁরপুলে এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন যেখানে খাওয়াদাওয়া শেষে এই জোটের এক প্রার্থীর নামে দোয়া চাওয়া হয়েছে।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, মুড়ি পার্টির নামে একটি প্যানেলের প্রার্থীদের নাম মুখস্ত করানো হচ্ছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুতে সদস্য পদপ্রার্থী।
ভোটারদের খাওয়ানোর সুযোগ প্রার্থীর নেই। কিন্তু কারা গিয়ে খাচ্ছে, এখন তো ওই ভাবে ধরারও সুযোগ নাই। সে যদি বলে আমি নিজের টাকায় খাচ্ছি, তাঁকে আপনি কীভাবে ধরবেন? আবিদুল ইসলাম খান, ভিপি পদপ্রার্থী, ছাত্রদলের প্যানেল, ডাকসু
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে বিরিয়ানির প্যাকেট। মাহবুবুর অভিযোগ করেন, ফার্স্ট ইয়ারের শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিরিয়ানি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টা করছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
স্ট্রিমকে মাহবুবুর বলেন গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) মুহসীন হলের বর্ধিত অংশে প্রচারণা চালাতে গিয়ে তেমন কোনো শিক্ষার্থী পাননি তিনি। যারা হলে ছিলেন, তাঁরা মাহবুবুরকে জানান, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নাজিরাবাজার খাওয়াতে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনকে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি করেন মাহবুবুর।
এতে লেভেল প্লেয়িং নষ্ট হচ্ছে দাবি করে মাহবুবুর বলেন, ‘প্রশাসন যদি নাজিরাবাজার গিয়ে কয়েকজনকে শোকজ না করতে পারে বা নাজিরাবাজারে গিয়ে যদি একটা টহল দিতে না পারে, কখনোই এই নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে হবে না। আমরা যারা স্বতন্ত্র বা ছোট পার্টি, মাদার পার্টি সংগঠন ছোট—আমরা সর্বোচ্চ বাজেট রাখতেছি ৩০, ৪০, ৫০ হাজার টাকা। মানে প্রচার-প্রচারণা, লিফলেট ছাপানো থেকে শুরু করে সব। আর অনেক পার্টির ডেইলি খরচ হচ্ছে প্রতি হলের, প্রতি গ্রুপে ৫০ হাজার। তো কীভাবে হবে?’
ভোটারদের খাওয়ানোর সুযোগ প্রার্থীর রয়েছে কি না—গতকাল এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই সুযোগটা আসলেই নাই। কিন্তু কারা গিয়ে খাচ্ছে, এখন তো ওই ভাবে ধরারও সুযোগ নাই। সে যদি বলে আমি নিজের টাকায় খাচ্ছি, তাঁকে আপনি কীভাবে ধরবেন?'
এ বিষয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ও জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কিছু জানাননি।
ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন জানান এ বিষয়ে কেউ তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। স্ট্রিমকে তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ না দিলে আমাদের তো সেই লেভেলের জনবল নাই যে নাজিরাবাজার গিয়ে কারা খেল, কী করল—এটা তো আমরা ধরতে পারব না। এটা তো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে হবে যে এতজন লোক অমুক জায়গায় অমুকরে খাওয়াইছে। আমাদের কাছে তো কোনো তথ্য-প্রমাণ পাচ্ছি না আমরা।’

শুক্রবার, দিবাগত রাত ১টা। রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারের বিরিয়ানি ও কাবাবের দোকানগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে ভিড় যেন একটু বেশি। আর যারা খাবার খাচ্ছেন, তাঁদের প্রায় সবাই বয়সে তরুণ। ১৮-২২ বছর বয়সী কয়েকজন তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একসঙ্গে এত শিক্ষার্থী কেন খেতে এসেছেন, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চান অনেকে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বললেন, ‘ভোটের খাওয়া’ খেতে এসেছেন তাঁরা।
নাজিরাবাজারের হোটেলমালিকেরা বলছেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় গত পাঁচ-সাত দিনে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ক্রেতা বেড়েছে। ভোটের খাওয়ার জন্যই এমন কি না সে বিষয়ে অনেক দোকানি মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্ট্রিম নাজিরাবাজারে যাওয়া বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, তাঁরা নিজ খরচে নয়, নির্বাচন উপলক্ষ্যেই নাজিরাবাজারে খেতে গিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা অভিযোগও জানিয়েছেন। প্রার্থীরা বলছেন, ডাকসুর যে সব প্যানেলের প্রার্থীদের অর্থের যোগান ভালো তাঁরা ভোটের বিনিময়ে এই খাবার খাওয়াচ্ছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। তবে এ নিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

খাদ্যরসিকদের কাছে এমনিতেই রাতের নাজিরাবাজার বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয়রা জানান, বিকেল থেকে শুরু করে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত এ এলাকায় ভিড় লেগে থাকে। একই কথা জানান সেখানকার দোকানিরাও। বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের ক্যাশিয়ার মো. সেন্টু স্ট্রিমকে জানান, বিকেল পাঁচটায় শুরু হয়ে রাত তিনটা পর্যন্ত তাঁদের দোকানে বেচাকেনা চলে।
নাজিরাবাজারের আল কারীম জুসবারের কর্ণধার স্ট্রিমকে জানান, আশপাশে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় রাতে আগতদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
ডাকসু নির্বাচনের বিষয়টি উল্লেখ করলে দোকানিরা জানিয়েছেন, ভোট উপলক্ষেই শিক্ষার্থীদের আনাগোণার হার বেড়ে থাকতে পারে।
রাত ১২টার পর সরেজমিনে নাজিরাবাজার গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন দল করে তরুণেরা খেতে এসেছেন। ৩-৪ জনের দল থেকে শুরু করে ২০-২৫ জনের দলও এ সময় চোখে পড়ে। কথা বলে জানা যায়, এদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।
বোখারী রেস্তোরাঁ ও বিসমিল্লাহ কাবাব ঘর—এ দুটি দোকানে শিক্ষার্থীদের আধিক্য বেশি চোখে পড়ে। রাত দেড়টার দিকে বোখারী রেস্তোরাঁর দোতলায় আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এদের প্রায় সকলেই শিক্ষার্থী।
বোখারী রেস্তোরাঁর ক্যাশিয়ার মো. জালাল গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে স্ট্রিমকে বলেন, ‘ডাকসুর জন্য গত পাঁচ-সাতদিন ধরে শিক্ষার্থীদের ভিড় বেশি।’
একই তথ্য দেন বোখারী রেস্তোরাঁর আরেক শাখার ক্যাশিয়ার মো. সোহেলও। তিনি বলেন, খেতে এসে বিভিন্ন সময় ডাকসু প্রার্থীদের নামে দোয়া চান অনেকে।
তবে প্রার্থীদের জন্য দোয়া চাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের ক্যাশিয়ার মো. সেন্টু। তবে ডাকসু উপলক্ষে ক্রেতা যে বেড়েছে, সেটি স্বীকার করেন তিনি।
ডাকসুর কোন প্রার্থী খাওয়াতে নিয়ে এসেছেন বা অর্থ দিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে শিক্ষার্থীরা কোনো উত্তর দেননি। অনেকে অবশ্য বলেছেন, তাঁরা নিজ খরচে খেতে গিয়েছেন সেখানে।
ফার্স্ট ইয়ারের শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিরিয়ানি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টা করছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে। মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সদস্য পদপ্রার্থী, ডাকসু
ডাকসুভিত্তিক খাওয়াদাওয়া কেবল নাজিরাবাজারে সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন প্রার্থী অভিযোগ করছেন, ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকাতেও বড় ফান্ডিং পাওয়া প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের খাওয়াচ্ছেন।
উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের এক প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয় স্ট্রিমের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ প্যানেলের প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের খাওয়াচ্ছেন। তিনি চানখাঁরপুলে এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন যেখানে খাওয়াদাওয়া শেষে এই জোটের এক প্রার্থীর নামে দোয়া চাওয়া হয়েছে।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, মুড়ি পার্টির নামে একটি প্যানেলের প্রার্থীদের নাম মুখস্ত করানো হচ্ছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুতে সদস্য পদপ্রার্থী।
ভোটারদের খাওয়ানোর সুযোগ প্রার্থীর নেই। কিন্তু কারা গিয়ে খাচ্ছে, এখন তো ওই ভাবে ধরারও সুযোগ নাই। সে যদি বলে আমি নিজের টাকায় খাচ্ছি, তাঁকে আপনি কীভাবে ধরবেন? আবিদুল ইসলাম খান, ভিপি পদপ্রার্থী, ছাত্রদলের প্যানেল, ডাকসু
সেই ভিডিওতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে বিরিয়ানির প্যাকেট। মাহবুবুর অভিযোগ করেন, ফার্স্ট ইয়ারের শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিরিয়ানি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টা করছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। এতে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
স্ট্রিমকে মাহবুবুর বলেন গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) মুহসীন হলের বর্ধিত অংশে প্রচারণা চালাতে গিয়ে তেমন কোনো শিক্ষার্থী পাননি তিনি। যারা হলে ছিলেন, তাঁরা মাহবুবুরকে জানান, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নাজিরাবাজার খাওয়াতে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনকে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি করেন মাহবুবুর।
এতে লেভেল প্লেয়িং নষ্ট হচ্ছে দাবি করে মাহবুবুর বলেন, ‘প্রশাসন যদি নাজিরাবাজার গিয়ে কয়েকজনকে শোকজ না করতে পারে বা নাজিরাবাজারে গিয়ে যদি একটা টহল দিতে না পারে, কখনোই এই নির্বাচন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে হবে না। আমরা যারা স্বতন্ত্র বা ছোট পার্টি, মাদার পার্টি সংগঠন ছোট—আমরা সর্বোচ্চ বাজেট রাখতেছি ৩০, ৪০, ৫০ হাজার টাকা। মানে প্রচার-প্রচারণা, লিফলেট ছাপানো থেকে শুরু করে সব। আর অনেক পার্টির ডেইলি খরচ হচ্ছে প্রতি হলের, প্রতি গ্রুপে ৫০ হাজার। তো কীভাবে হবে?’
ভোটারদের খাওয়ানোর সুযোগ প্রার্থীর রয়েছে কি না—গতকাল এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই সুযোগটা আসলেই নাই। কিন্তু কারা গিয়ে খাচ্ছে, এখন তো ওই ভাবে ধরারও সুযোগ নাই। সে যদি বলে আমি নিজের টাকায় খাচ্ছি, তাঁকে আপনি কীভাবে ধরবেন?'
এ বিষয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ও জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কিছু জানাননি।
ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন জানান এ বিষয়ে কেউ তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। স্ট্রিমকে তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ না দিলে আমাদের তো সেই লেভেলের জনবল নাই যে নাজিরাবাজার গিয়ে কারা খেল, কী করল—এটা তো আমরা ধরতে পারব না। এটা তো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে হবে যে এতজন লোক অমুক জায়গায় অমুকরে খাওয়াইছে। আমাদের কাছে তো কোনো তথ্য-প্রমাণ পাচ্ছি না আমরা।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. আনু মাহমুদ। এখন পর্যন্ত লিখেছেন শতাধিক বই। এর মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ পরিবারকে নিয়েই ত্রিশের বেশি বই আছে তাঁর।
৪ দিন আগে
১০ তলা ভবন। ৩৪ হাজার বর্গফুটের সুবিশাল অফিস। কিন্তু এসবের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর পর জনতার ক্ষোভের আগুনে পুড়ে এই রাজনৈতিক কার্যালয় এখন ধ্বংসপ্রায়।
৭ দিন আগে
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জর্জরিত জাতীয় পার্টিতে (জাপা) এবার দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘লাঙ্গল’ নিয়ে শুরু হয়েছে টানাটানি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারও (সিইসি) নিশ্চিত নন লাঙলের আসল মালিক ভেঙে যাওয়া জাপার তিন উপদলের মধ্যে কোন পক্ষ।
১০ দিন আগে
সড়কে চলাচলকারীদের রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে যানবাহন থামার স্থানগুলোতে নির্মাণ করা হয় যাত্রীছাউনি। তবে রাজধানীর বনানী থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এমন কিছু যাত্রীছাউনি চোখে পড়বে যেগুলো রোদ দূরে থাক বৃষ্টি থেকেও যাত্রীদের বাঁচাতে পারে না।
১১ দিন আগে