সকালে ঘুম থেকে উঠেই সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করার অভ্যাস থাকলে এরই মধ্যে নিশ্চয়ই আপনার চোখে পড়েছে। অনেকেই ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’ লিখে পোস্ট করেছেন, আবার অনেকেই এই ধরনের পোস্ট শেয়ার করেছেন। এমন পোস্টে সয়লাব নিউজফিড। হঠাৎ এমন পোস্টের কারণ আসলে কী? চলুন, খোঁজা যাক।
এই প্রচারণার বড় ‘স্টেক হোল্ডার’ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ছাত্র সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মধ্যরাতে পোস্ট করা হয়েছে ‘না’ লেখা ফটোকার্ড। সকালে এই প্রতিবেদন লেখা (সোয়া ৮টা) পর্যন্ত পোস্টটিতে রিঅ্যাকশন পড়েছে ২৭ হাজার। আর এই পোস্টে মন্তব্য করেছেন ৯ হাজারেরও বেশি নেটিজেন। কমেন্টে কেউ ‘হ্যাঁ’, কেউ ‘না’ লিখেছেন। একই ফটোকার্ড পোস্ট করেছেন ছাত্রদলের ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
পরে ভোরের দিকে আরেকটি পোস্ট করা হয় ছাত্রদলের ভেরিফায়েড পেজে। সেখানে চারটি পয়েন্টে লেখা হয়, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে- ‘‘না’’; স্বাক্ষরের পর জুলাই সনদ পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রকে- ‘‘না’’; জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটকে- ‘‘না’’ এবং শত শহীদের রক্তে কেনা জুলাই কারো বাপের ‘‘না’’।
এর ঘণ্টাখানেক পরে শুধু ‘হ্যাঁ’ লিখে পোস্ট করা হয়েছে চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মধ্যরাতে পোস্ট করা হয়েছে ‘হ্যাঁ’ লিখে। সেখানেও রি-অ্যাকশন পড়েছে ৩৮ হাজারেরও বেশি। আবার কমেন্টও করেছে ১০ হাজারের বেশি নেটিজেন।
মধ্যরাতে ‘হ্যাঁ’-‘না’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমের এমন পাল্টাপাল্টি প্রচারণা কারণ খুঁজতে জানা যায়, মূলত গণভোটের বিপক্ষে অবস্থান জানান দিতেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এমন ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন। এর বিপরীতে অংশ নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশমালা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে।
যে আদেশের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়ন করা হবে তার নাম হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’। এ আদেশে সনদ বাস্তবায়নের পুরো রূপরেখা আছে। এই আদেশের ভিত্তি হবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান।
পরে ওইদিন দুপুরেই এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্য আলী রীয়াজ বলেন, আজই সব রাজনৈতিক দলকে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হবে। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়- এমন বিষয়গুলো সরকারি অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।