.png)

অর্ণব সিদ্দিকী




অন্যদিকে, তিনারিওয়েন লাইভ পারফর্মেন্সে ট্র্যাডিশনাল গয়না, ড্রেস তাগেলমাস্ত ও তাসুওয়ার্ত
গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট আব্দাল্লাহ আগ আলহুসেইনী ব্যান্ডওয়াগনে এক ইন্টারভিউয়ে বলে, ‘আমরা যে ধরনের পরিবেশে বাইচা থাকি সেইটাই আমাদের মিউজিকের সরাসরি ইন্সপিরেশন। আমাদের যাযাবর গোষ্ঠিগুলার ঐতিহ্যবাহী মিউজিক থিকা আমরা হেভিলি ইনফ্লুয়েন্সড। উটের বিভিন্ন চলনের ঢঙ আমাদের গানের তাল ঠিক কইরা দেয়। এই কাব্য মূলত আমাদের পূর্বসূরীদের পুরানা প্র্যাক্টিস, যেটা আমরা কিছু আধুনিক অনুপ্রেরণা আর গিটার, ড্রামসের টিউন মিশাইয়া গত ৪০ বছর ধইরা চর্চা কইরা আসতেসি।’
এরা জিমি হেন্ড্রিক্স, বব ডিলান, জেমস ব্রাউন, বনি এমসহ আফ্রিকা, আরবের অনেক শিল্পীদের মিউজিক শুনে। ভারতের কিরণ আহলুওয়ালিয়ার সাথে সাবকন্টিনেন্টের কাওয়ালি আর নিজেদের মিউজিকের কোলাবোরেশনও আছে। ইন্টারেস্টিংলি এদের মিউজিকে হিপহপের অনুপ্রেরণাও লক্ষ্য করা যায়। এদের আরাওয়ান আর তেনহেরত গানগুলা র্যাপ এর ঢঙে গাওয়া। তাই তিনারিওয়েনরে এক্সোটিক কইরা দেখার কিছু নাই। এরা শুধুমাত্র ‘মরুভূমির ব্লুজ ব্যান্ড না’—এরা দুনিয়ার তাবত মিউজিকের সমুদ্রে ডুব দেয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সমসাময়িক মিউজিক থিকাও এরা ইন্সপিরেশন নেয়, তবে গায় নিজেদের মতো কইরা।
তিনারিওয়েন ফর্ম হওয়ার পর থিকাই তাদের যাত্রা ছিলো গ্যাঞ্জামে ভরা। তুয়ারেগ বিদ্রোহে জড়িত থাকার কারণে ১৯৮৯ সালে মালি সরকার তাদের ক্যাসেট নিষিদ্ধ কইরা দেয়। সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলমান থাকে অনেকদিন। পরে নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে তুয়ারেগ আর মালি সরকারের মধ্যে একটা শান্তিচুক্তি হয়। তিনারিওয়েন সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগ্রাম থিকা বাইর হইয়া শান্তি ছড়াইয়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসাবে এরা ফরাসি মিউজিক কালেকটিভ Lo'Jo এর সাথে মিল্যা আয়োজন করে Festival au Désert অর্থাৎ মরুভূমির উৎসব। এইটা মার্কেটিং গিমিকের জমিন উৎরাইয়া মরুভূমির বিচিত্র যাযাবর জনগোষ্ঠীগুলার মিউজিক ও ব্যবসায়িক লেনাদেনার জায়গা তৈরী কইরা দিসিলো। এতে আফ্রিকান লেজেন্ড আলী ফারকা তুরে, উমু সাঙ্গারে, বাসুকু কুয়াতে থিকা লেড জেপেলিন এর ভোকালিস্ট রবার্ট প্ল্যান্ট, U2-র ভোকালিস্ট বনো, পাংক ব্যান্ড ব্ল্যাক ফায়ারসহ আরো অনেকেই অংশ নিসিলো। ২০০১ থিকা টানা ১২ বছর এই ফ্যাস্টিভাল নামাইতে পারলেও এক পর্যায়ে ঝামেলা বাধায় আল কায়েদা। ইউরোপ, আম্রিকা থিকা আসা ট্যুরিস্টদের অপহরণ কইরা মুক্তিপণ আদায় করতে থাকে এরা। পরে নিরাপত্তার অজুহাতে এই আয়োজন বন্ধ করে মালি সরকার। ফেস্টিভ্যাল এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গেলে এখনো ‘Still in exile’ অর্থাৎ ‘এখনো নির্বাসনে’ লেখাটা চোখে পড়ে।
‘’তেনেরের পায়ের ছাপ মুইছা গেছে ,
খালি বাতাস জানে - আমরা কোন পথে হাটসিলাম’’
নিজেদের জমিনে পরবাসী হওয়া সত্ত্বেও, গত ৪৬ বছরে তিনারিওয়েন মোট নয়টা ষ্টুডিও এলবাম রিলিজ করসে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য লাইভ কনসার্ট তো আছেই। আফ্রিকা, ইন্ডিয়া ,আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন শিল্পীর সাথে আছে কোলাবোরেশন। ২০১৭ সালের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে লাইভ পারফরম্যান্স করে এরা। দুই বছর আগে রিলিজ হওয়া এলবাম Amatssou শুনলে মনে হয় এইটা তো সেই চিরপরিচিত তিনারিওয়েনই - ফ্রেশ, অথেন্টিক আর মেলানকলিক।
তাদের মিউজিক শুইনা তৈরী হইসে বহু তুয়ারেগ ও অন্যান্য কালচারের মিউজিক কালেকটিভ যারা আফ্রিকান বা ওয়ার্ল্ড মিউজিকের বিশাল ভান্ডাররে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ কইরা তুলতেসে। সকল হেডম আর কর্তৃত্বরে মিডল ফিঙ্গার দেখাইয়া মরুভুমির বালু আর বাতাসের গন্ধ শরীরে মাইখা আজো হাইটা যাইতেসে তিনারিওয়েন।




অন্যদিকে, তিনারিওয়েন লাইভ পারফর্মেন্সে ট্র্যাডিশনাল গয়না, ড্রেস তাগেলমাস্ত ও তাসুওয়ার্ত
গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট আব্দাল্লাহ আগ আলহুসেইনী ব্যান্ডওয়াগনে এক ইন্টারভিউয়ে বলে, ‘আমরা যে ধরনের পরিবেশে বাইচা থাকি সেইটাই আমাদের মিউজিকের সরাসরি ইন্সপিরেশন। আমাদের যাযাবর গোষ্ঠিগুলার ঐতিহ্যবাহী মিউজিক থিকা আমরা হেভিলি ইনফ্লুয়েন্সড। উটের বিভিন্ন চলনের ঢঙ আমাদের গানের তাল ঠিক কইরা দেয়। এই কাব্য মূলত আমাদের পূর্বসূরীদের পুরানা প্র্যাক্টিস, যেটা আমরা কিছু আধুনিক অনুপ্রেরণা আর গিটার, ড্রামসের টিউন মিশাইয়া গত ৪০ বছর ধইরা চর্চা কইরা আসতেসি।’
এরা জিমি হেন্ড্রিক্স, বব ডিলান, জেমস ব্রাউন, বনি এমসহ আফ্রিকা, আরবের অনেক শিল্পীদের মিউজিক শুনে। ভারতের কিরণ আহলুওয়ালিয়ার সাথে সাবকন্টিনেন্টের কাওয়ালি আর নিজেদের মিউজিকের কোলাবোরেশনও আছে। ইন্টারেস্টিংলি এদের মিউজিকে হিপহপের অনুপ্রেরণাও লক্ষ্য করা যায়। এদের আরাওয়ান আর তেনহেরত গানগুলা র্যাপ এর ঢঙে গাওয়া। তাই তিনারিওয়েনরে এক্সোটিক কইরা দেখার কিছু নাই। এরা শুধুমাত্র ‘মরুভূমির ব্লুজ ব্যান্ড না’—এরা দুনিয়ার তাবত মিউজিকের সমুদ্রে ডুব দেয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সমসাময়িক মিউজিক থিকাও এরা ইন্সপিরেশন নেয়, তবে গায় নিজেদের মতো কইরা।
তিনারিওয়েন ফর্ম হওয়ার পর থিকাই তাদের যাত্রা ছিলো গ্যাঞ্জামে ভরা। তুয়ারেগ বিদ্রোহে জড়িত থাকার কারণে ১৯৮৯ সালে মালি সরকার তাদের ক্যাসেট নিষিদ্ধ কইরা দেয়। সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলমান থাকে অনেকদিন। পরে নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে তুয়ারেগ আর মালি সরকারের মধ্যে একটা শান্তিচুক্তি হয়। তিনারিওয়েন সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগ্রাম থিকা বাইর হইয়া শান্তি ছড়াইয়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসাবে এরা ফরাসি মিউজিক কালেকটিভ Lo'Jo এর সাথে মিল্যা আয়োজন করে Festival au Désert অর্থাৎ মরুভূমির উৎসব। এইটা মার্কেটিং গিমিকের জমিন উৎরাইয়া মরুভূমির বিচিত্র যাযাবর জনগোষ্ঠীগুলার মিউজিক ও ব্যবসায়িক লেনাদেনার জায়গা তৈরী কইরা দিসিলো। এতে আফ্রিকান লেজেন্ড আলী ফারকা তুরে, উমু সাঙ্গারে, বাসুকু কুয়াতে থিকা লেড জেপেলিন এর ভোকালিস্ট রবার্ট প্ল্যান্ট, U2-র ভোকালিস্ট বনো, পাংক ব্যান্ড ব্ল্যাক ফায়ারসহ আরো অনেকেই অংশ নিসিলো। ২০০১ থিকা টানা ১২ বছর এই ফ্যাস্টিভাল নামাইতে পারলেও এক পর্যায়ে ঝামেলা বাধায় আল কায়েদা। ইউরোপ, আম্রিকা থিকা আসা ট্যুরিস্টদের অপহরণ কইরা মুক্তিপণ আদায় করতে থাকে এরা। পরে নিরাপত্তার অজুহাতে এই আয়োজন বন্ধ করে মালি সরকার। ফেস্টিভ্যাল এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গেলে এখনো ‘Still in exile’ অর্থাৎ ‘এখনো নির্বাসনে’ লেখাটা চোখে পড়ে।
‘’তেনেরের পায়ের ছাপ মুইছা গেছে ,
খালি বাতাস জানে - আমরা কোন পথে হাটসিলাম’’
নিজেদের জমিনে পরবাসী হওয়া সত্ত্বেও, গত ৪৬ বছরে তিনারিওয়েন মোট নয়টা ষ্টুডিও এলবাম রিলিজ করসে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অসংখ্য লাইভ কনসার্ট তো আছেই। আফ্রিকা, ইন্ডিয়া ,আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন শিল্পীর সাথে আছে কোলাবোরেশন। ২০১৭ সালের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে লাইভ পারফরম্যান্স করে এরা। দুই বছর আগে রিলিজ হওয়া এলবাম Amatssou শুনলে মনে হয় এইটা তো সেই চিরপরিচিত তিনারিওয়েনই - ফ্রেশ, অথেন্টিক আর মেলানকলিক।
তাদের মিউজিক শুইনা তৈরী হইসে বহু তুয়ারেগ ও অন্যান্য কালচারের মিউজিক কালেকটিভ যারা আফ্রিকান বা ওয়ার্ল্ড মিউজিকের বিশাল ভান্ডাররে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ কইরা তুলতেসে। সকল হেডম আর কর্তৃত্বরে মিডল ফিঙ্গার দেখাইয়া মরুভুমির বালু আর বাতাসের গন্ধ শরীরে মাইখা আজো হাইটা যাইতেসে তিনারিওয়েন।
.png)

এই যে ‘কচ্ছপ টচ্ছপ আবার ভোট দেয় নাকি?’ — এই ডায়লগটা শুইনা আপনি যদি হাসেন, তাইলে কংগ্রাচুলেশন্স! আপনি সেই দেশের নাগরিক, যাদের নৈতিক দেউলিয়াত্ব এখন সরকারি গেজেটে ছাপা বাকি।
১ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদের সিনেমায় অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ ‘হুজুর’ বা মাওলানা। কীভাবে হুমায়ূনের সিনেমায় হুজুর বা মাওলানারা চিত্রিত হয়েছেন? কীভাবে ভাল-মন্দের বাইনারিরে বাইরে হাজির করেছেন রক্তমাংসের মানুষ? এইসব জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা এই লেখা।
২ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ চাইলেই কখনো কাশেম বিন আবু বকরকে অনুসরণ করতে পারতেন না। বিসমিল্লাহ বলে প্রেম করলেই সেটা কাশেম বিন আবু বকর হবে না। আমার অনুমান, বাংলা সিনেমা বা উপমহাদেশের সাবেকী ধারার গল্পে মানুষজন হারিয়ে যাওয়া আর ফিরে আসা, সমাজ যে পরিবারিক মূল্যবোধের ওপর গড়ে উঠে তার দিক থেকে দেখার ঘটনা।
৩ দিন আগে
হুমায়ূনরে একজন হিউমারিস্ট প্রমাণ করলে ফায়দাটা কী? ফায়দাটা এই যে, হুমায়ূন-সাহিত্যের প্রতি করা অভিযোগের অনেকগুলো হুমায়ূনরে হিউমারিস্ট হিসেবে দেখতে পারলে আর থাকে না। কারণ একজন হিউমারিস্টের কাছে পাঠকের প্রত্যাশা আলাদা।
৩ দিন আগে