সিলেটে গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াইয়ে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানির কাছে অস্বচ্ছ উপায়ে ইজারা দেওয়ার ‘অপতৎপরতা এখনও অব্যাহত’ থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি।
এছাড়া আটক সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি এবং বন্দর নিয়ে সরকারি তৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পাঠানো বিবৃতিতে এসব উদ্বেগ ও দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়ছে, গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভা থেকে সরকারের ভূমিকাকে ‘স্বৈরাচারী’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানানোর কারণে সিপিবি সিলেট জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া বাসদের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে আরও ২২ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। বক্তারা এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে আটক প্রত্যেকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ন্যায্য দাবীগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে উদ্বেগ
চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার ‘অপতৎপরতা অব্যাহত’ রাখায় সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, বিশেষজ্ঞ মত ও জনমত উপেক্ষা করে অযৌক্তিক উপায়ে বন্দরটি বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অবিলম্বে এই তৎপরতা বন্ধ এবং জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করে মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানানো হয় সভা থেকে।
এছাড়া সভায় চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে সেখানকার হরিজন কলোনীতে হরিজন সম্প্রদায়কে গণগ্রেপ্তার ও হুমকি প্রদান বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা ও মাশুল বৃদ্ধি নিয়ে সরকারি ‘মিথ্যাচার ও অপতৎপরতার’ প্রতিবাদে আগামী ১৫ নভেম্বর ঢাকায় একটি কর্মসূচী পালন করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনের পাশাপাশি চলতি নভেম্বর মাসে কমিটির সদস্যরা বিভাগীয় সফর ও সাংগঠনিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন চিকিৎসক সংগঠক ডা. হারুন উর রশীদ, চলচ্চিত্রনির্মাতা আকরাম খান, সংস্কৃতি কর্মী সজীব তানভীর, রাফসান আহমেদ, গবেষক মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, ডা. নাজমুস শাকিব, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতিনিধি রাফিকুজ্জামান ফরিদ, রাজনৈতিক কর্মী ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, সিরাজুমমনীর, সীমা দত্ত, শ্রমিক নেতা সত্যজিত বিশ্বাস, একটিভিস্ট সুজিত চৌধুরী, আফজাল হোসেন প্রমুখ।