leadT1ad

পিয়নের মতো নিজে গিয়ে ফাইল সাইন করিয়েছি: আসিফ নজরুল

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা সিভিল আদালত, ক্রিমিনাল আদালতকে পৃথক করেছি যাতে সিভিল আদালতে নিষ্পত্তি বাড়ে, মামলার নিষ্পত্তি দ্রুতগামী হয়। এটা কোনোদিন বাংলাদেশে আগে করা হয়নি।’

স্ট্রিম সংবাদদাতা
সিলেট
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০: ১৮
বক্তৃতা করছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অনেক কাজ করেছেন জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আগে বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষমতা পলিটিক্যাল মন্ত্রীদের হাতে ছিল। এটা আমরা চিফ জাস্টিস অফিসের হাতে দিয়ে গেছি। সেই ফাইল আমরা নিজ হাতে গিয়ে সাইন করে নিয়ে এসেছি। পিয়নের মতো করে নিজে ফাইল নিয়ে গিয়ে সাইন করে নিয়ে এসেছি।’

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫: মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান’ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা সিভিল আদালত, ক্রিমিনাল আদালতকে পৃথক করেছি যাতে সিভিল আদালতে নিষ্পত্তি বাড়ে, মামলার নিষ্পত্তি দ্রুতগামী হয়। এটা কোনোদিন বাংলাদেশে আগে করা হয়নি।’

আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে গতিশীল ও সহজলভ্য করতে গত ১ জুলাই আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই অধ্যাদেশের তফসিলভুক্ত বিষয়গুলো (যেমন, পারিবারিক বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া, যৌতুক ইত্যাদি) ১২টি জেলায় মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনসাধারণের সমালোচনার জবাবে আসিফ নজরুল বলেন ‘সবার তো সোশ্যাল মিডিয়া আছে, যে যেরকম চায় বলে দেয়। আপনারা প্রায়ই দেখবেন বলে, ‘‘আপনারা কি করছেন? মানুষের রক্তের উপর আপনাদের বসাইছে। আপনারা কি করছেন?”— আমি বুঝতে পারি না এর আনসারটা কী? আমি তো ফুটবল প্লেয়ার না বা কোনো মঞ্চ নাটকের অভিনেতা না—আমি যেটা করবো, সেটা আপনারা দেখতে পারবেন। এই যে লিগ্যাল এইডের কাজ করলাম। এর বাইরে আমরা অনেক কাজ করেছি, যেটা বাংলাদেশে ইতিহাসে কোনদিন হয়নি।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন যে সল্যুশন পায়, সেটার জন্য ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জন আর কোর্টে যায় না। সেখানে মামলা নিষ্পত্তি হয়। অথচ প্রচলিত আদালতে যখন মামলা হয়, বিচারিক আদালতে মামলা হওয়ার পরও কেউ উচ্চ আদালতে যায় আপিল করার জন্য। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন কম সময়ে কম খরচে বিচার পায়, অনেক কম ভোগান্তি হয়, অনেক বেশি মানুষ বিচার পায়।’

ড. আসিফ নজরুল জানান, ‘লিগ্যাল এইড আগে বাধ্যতামূলক ছিল না, এবার আমরা মামলার জট কমানোর জন্য বাধ্যতামূলক করেছি। আপনাকে লিগ্যাল এইডে যেতে হবে। সেখানে যাওয়ার পর যদি আপনি অসন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে তখন আপনি বিচারিক আদালতে যাবেন।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধানের ফলে মানুষের অধিকার সুরক্ষার পথ আরও সুগম হবে। একদিকে যেমন মামলা নিষ্পত্তির সময় কমবে, তেমনি খরচও বাঁচবে। মামলার জট হ্রাস পেয়ে জনগণের হয়রানি দূর হবে। এ পরিবর্তনের ফলে জনগণ দ্রুত আইনি প্রতিকার পাবে, এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইনত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শেখ আশফাকুর রহমান, সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী। এছাড়া বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষে বক্তব্য দেন দুজন প্রতিনিধি। এর আগে মঞ্চনাটক ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধানের প্রয়োজনীয়তা ও সুফল তুলে ধরা হয়।

এদিকে সকালে সিলেটে পৌঁছে আলমপুরে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিটিসি) প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন আইন উপদেষ্টা। পরে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র রাতারগুল পরিদর্শনে যান তিনি।

বিষয়:

Ad 300x250

সম্পর্কিত