leadT1ad

ফরিদপুরে সংসদীয় সীমানা ইস্যু: ‘জনগণের আন্দোলন’ উল্লেখ করে ইসিতে ডিসির চিঠি

আজও অবরোধের চেষ্টা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
ফরিদপুর
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
স্ট্রিম গ্রাফিক

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় যুক্ত করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনকারীদের তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় দিন আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপড়তায় আজ সড়ক অবরোধ করতে পারেননি আন্দোলনকারীরা। সকাল থেকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান মোল্লা বিষয়টিকে ‘জনগণের আন্দোলন’ হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে আবেদন জানিয়েছেন।

জানা গেছে, আজ সকাল ৯টার দিকে পুখুরিয়া এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে আসেন আন্দোলনকারী। এসময় পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশি বাধায় তাঁরা সড়ক অবরোধ করতে পারেনি। সকাল থেকে রেলপথেও কোনো প্রতিবন্ধকতার খবর পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন প্রস্তাবিত ভাঙ্গা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাফুর আহমেদ।

জেলা প্রশাসকের আবেদনে যা বলা হয়েছে

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান মোল্লা ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ২১৪ ফরিদপুর-৪ আসনে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টি ‘পুনর্বিবেচনার’ আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটের সূত্র উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ফরিদপুর-২ এবং ফরিদপুর-৪ এর সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। ওই তালিকায় ফরিদপুর-৪ এর অন্তর্গত ভাঙ্গার দুটি ইউনিয়ন, আলগী ও হামিরদী জাতীয় সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তালিকা প্রকাশিত হওয়ার ফলে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নসহ ভাঙ্গা উপজেলার সাধারণ জনগণ উক্ত আসন বিন্যাস বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে।

সবশেষ গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়, ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে পুলিশের কার্যালয় ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখে। এ বিষয়েও অবগত করে জেলা প্রশাসক জানান, এর পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। এরফলে সাধারণ জনগণকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসনের ভাঙ্গা হতে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে সংসদীয় আসন পুনঃনির্ধারণের বিষয়টি দুইটি সংসদীয় আসনের জনগণ মেনে নিতে পারেননি বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, এই দুইটি আসনের সর্বস্তরের জনগণ এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে জানা যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা না হলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

এমন অবস্থায় জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক।

এলাকাবাসীর পক্ষে চেয়ারম্যানের পাঁচ দাবি

সীমানা পুনর্নির্ধারণে যে দুটি ইউনিয়নকে অন্য আসনে যুক্ত করা হয়েছে, এরমধ্যে আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিঞাকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বলা হচ্ছে, মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার ‘প্রধান সমন্বয়ক’ ছিলেন তিনি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় অপর ইউনিয়ন হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা ‘জনগণের পক্ষে’ পাঁচটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি পাঁচটি দাবিকে ‘ভাঙ্গাবাসীর প্রাণের দাবি’ হিসেবে উল্লেখ করে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই দাবিগুলো মেনে নেওয়া হলে তারা ঘরে ফিরে যাবেন।

পাঁচটি দাবি হলো, আলগী এবং হামিরদী ইউনিয়নকে আবারও ভাঙ্গা উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে; চেয়ারম্যানসহ সবাইকে মুক্তি দিতে হবে; নিরীহ নিরপরাধ জনগণের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; নতুন কোনো মামলা দেওয়া যাবে না এবং রাতের বেলায় প্রশাসন দিয়ে সাধারণ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত