রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করতে ‘পতিত ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের ‘দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে স্বায়ত্ত্বশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র ছাত্র সংসদ। এছাড়া ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘কঠোর ব্যবস্থা’ চায় সংসদগুলো।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের চার সহ-সভাপতির (ভিপি) সই করা একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে আসে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশ যখন ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী ও সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ তাদের দোসররা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। লগি-বৈঠার তাণ্ডব থেকে শুরু করে গত দেড় দশকে গুম-খুন, গণহত্যা ও প্রাতিষ্ঠানিক দলীয়করণের মাধ্যমে দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব। ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী-গোষ্ঠী কর্তৃক দেশজুড়ে নাশকতা, চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিকাণ্ড, ককটেল বিস্ফোরণ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান। অথচ সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটনে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা সন্তোষজনক নয়।
চলমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে আহ্বান জানায় নেতারা।
জুলাই সনদ, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপতৎপরতা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে ‘পতিত’ স্বৈরাচার। জনগণের জান-মালের হেফাজত এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেকড় উৎপাটনে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণহত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীরা এখনো নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এসব আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের অনতি বিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অবিলম্বে এই দেশদ্রোহী গণহত্যাকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত টহল জোরদার করতে হবে এবং দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে জাতিকে নিরাপদ করতে হবে।’
এছাড়া জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান উন্নতি জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) আব্দুর রশিদ জিতু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) ভিপি মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি।
.png)
.png)
