হত্যা, দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির পাঁচ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন এবং বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এ রুল জারি করে।
গত ১৯ অক্টোবর বিচারপতি খায়রুল হক জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। আজ শুনানিতে আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসরুল হক চৌধুরী ও কামরুল হক সিদ্দিকী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
গত ২৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা গেছে, বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা; শাহবাগ, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও ফতুল্লা থানায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক রায় জালিয়াতি এবং রাজউকের প্লট কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে আসেন বিচারপতি খায়রুল হক।
হত্যা মামলায় জামিনের আবেদনে বলা হয়, যে তারিখে হত্যার ঘটনা দেখানো হয়েছে, সেদিন পর্যন্ত খায়রুল হক আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পুলিশ প্রোটোকল ছাড়া তিনি কোথাও যাননি। পুলিশের মুভমেন্ট ডায়েরি অনুযায়ী তিনি সেদিন বাড়িতে ছিলেন।
শাহবাগ, নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও ফতুল্লা থানায় রায় জালিয়াতির মামলায় জামিনের আবেদনে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক মামলার রায়ের সময় আপিল বিভাগে ৭ জন বিচারক ছিলেন। তারা সবাই মিলে এ রায় দিয়েছেন। একজন বিচারকের পক্ষে রায় দেওয়া সম্ভব না। রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিচারককে জোর করা হয়নি। ওই সব বিচারপতি এত দিনেও এ বিষয়ে আপত্তি করেননি।
দুদকের মামলায় জামিনের আবেদনে বলা হয়, এই মামলায় রাজউকের পূর্বাচল প্লটের জন্য সময় মত কিস্তি না দিয়ে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ২৩০ টাকা সুদ মওকুফের অভিযোগ আনা হয়েছে খায়রুল হকের বিরুদ্ধে। তবে খায়রুল হক সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করেননি। আর সুদ মওকুফ আইনগত বিষয়, ফৌজদারি অপরাধ নয়।
এর আগে ৭ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে হাইকোর্টে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক আবেদন করেন। যেটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান খায়রুল হক। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তার নিয়োগ কার্যকর হয়। ২০১১ সালের ১৭ মে তিনি অবসরে যান। এরপর তিনবার তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হন।