রাফিউল ইসলাম রাফি। স্বপ্ন দেখতেন চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করবেন। স্বপ্নপূরণের পথেই ছিলেন রাফি। ভর্তি হন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। কিন্তু শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে তাঁর সে স্বপ্ন থেমে গেছে ভয়াবহ ভূমিকম্পে।
রাজধানীর পুরোনো ঢাকার কসাইটুলীতে সাত তলা ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়লে রাফিসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাফির মা নুসরাত বেগম গুরুতর আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের অবস্থাও সংকটাপন্ন। এখন পর্যন্ত তাঁকে ছেলের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়নি।
রাফি (২০) স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্বজনরা জানান, সকালে মায়ের সঙ্গে রাফি কসাইটুলীতে গিয়েছিলেন মহিষের মাংস কিনতে।
রাফির বন্ধুরা জানান, বগুড়া ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি শেষে রাফি ভর্তি হন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। তাঁর গ্রামের বাড়ি বগুড়া। বাবা দিনাজপুরে চাকরি করেন। মা ও একমাত্র বোনের সঙ্গে বংশালের বাসায় থাকতেন রাফি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের অবস্থাও সংকটাপন্ন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। স্ট্রিম ছবিবগুড়া ক্যান্টনমেন্টে রাফির সঙ্গে পড়তেন মোহাম্মদ হাসিব। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন তিনি। হাসিব স্ট্রিমকে বলেন, ‘রাফির বড়বোন মেডিকেলে ভর্তি হতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেননি। এ জন্য রাফির জেদ ছিল, সে চিকিৎসক হবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে সারাদিন পড়াশোনা করত সে। বন্ধুর এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাফিকে কলেজে যখনই দেখতাম, হাতে একটি বই থাকত। সারাদিন পড়াশোনায় ডুবে থাকত। সবার কাছে শুধু চিকিৎস হওয়ার গল্প বলত।’
রাফির আরেক বন্ধু বুটেক্সের শিক্ষার্থী তানভীর সুলতান জয় স্ট্রিমকে বলেন, ‘রাফির মতো ভদ্র, শান্ত, ধার্মিক ছেলে আমাদের কলেজে দ্বিতীয়টি ছিল না। ওকে দেখতাম, সারাদিন পড়াশোনা করেছে। বই নিয়ে ঘুরছে। সলিমুল্লাতে ভর্তি হওয়ার পর খুব আনন্দিত ছিল। দুই বছর বাদেই শেষ হতো এমবিবিএস। ভূমিকম্প সে স্বপ্ন থামিয়ে দিল।’
রাফির মা নুসরাত মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। নুসরাত বেগমের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।