রাজধানী ঢাকার অন্যতম অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানে মাত্র আড়াই মাসে একটি সিগন্যালে ৪৮ লাখ বার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে সপ্তাহের শনি ও রোববার।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
রাজধানী ঢাকার অন্যতম অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানে মাত্র আড়াই মাসে একটি সিগন্যালে ৪৮ লাখ বার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে সপ্তাহের শনি ও রোববার। আইন ভঙ্গের শীর্ষে রয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। তাছাড়া, এসময়ে একেকটি যাত্রীবাহী বাসের বিরুদ্ধে গড়ে ৩শ’ বারের বেশি আইন ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা নিয়ম অমান্যের অভ্যাসকে নির্দেশ করে।
সম্প্রতি গুলশান-১ নম্বর সিগন্যালে বসানো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সিসি ক্যামেরার রেকর্ড বিশ্লেষণে এ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। ট্রাফিক্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করছে।
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে কী উঠে এসেছে
গণপরিবহনের বাস ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়িগুলোর মধ্যে অনেকেই ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছে। গুলশান-১ সিগন্যালে আইন ভঙ্গের মোট সংখ্যা সপ্তাহে দুই লাখ বার ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে রোববারে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৪০ হাজার বার আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৯ হাজার বার) এবং বৃহস্পতিবারে (১৬ হাজার বার) তুলনামূলকভাবে আইন ভঙ্গের ঘটনা কম হলেও, আইন অমান্যকারী যানবাহনের সংখ্যা এখনো যথেষ্ট বেশি জানিয়েছে ট্রাফিক্স। এছাড়াও শনিবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৩৯ হাজার বার) আইন ভঙ্গ করা হয়।
এছাড়া, এসব ঘটনায় সিগন্যাল অমান্য করা (৬৪%) এবং উল্টোপথে চলাচল (১৫%) অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিগন্যাল মানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিমাণ আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে, বিশেষত ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকরা নিয়ম মানছেন না।
কারা বেশি আইন ভাঙছে
গুলশান-১ সিগন্যালে ট্রাফিক্সের এআই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আইন ভঙ্গের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে কার ও এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল)। মোট লঙ্ঘনের প্রায় ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশই ঘটছে এই দুই ধরনের গাড়ির মাধ্যমে, যা নগর ট্রাফিক শৃঙ্খলার জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ। এর বাইরে বাস, মোটরসাইকেল, জিপ ও পিকআপ, মাইক্রোবাস এবং সিএনজিও আইন ভঙ্গের তালিকায় রয়েছে।
বিশেষত বাসের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভয়াবহ। একেকটি বাসের বিরুদ্ধে ৩শ’ বারেরও বেশি আইন ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা নিয়ম অমান্যের স্থায়ী অভ্যাসকে নির্দেশ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস চালকেরা যাত্রী ওঠানো-নামানোর প্রতিযোগিতা এবং নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চাপে অনেক সময় সিগন্যাল উপেক্ষা করেন। এছাড়া মোটরসাইকেল চালকেরাও দ্রুত চলাচলের জন্য নিয়ম ভাঙায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন।
পরিসংখ্যান আরও বলছে, গুলশান-১ চত্বরে পশ্চিম দিক থেকে আসা গাড়িগুলো সিগন্যালে সবচেয়ে বেশি আইন ভঙ্গ করছে, যা ওই রুটের যানবাহনের চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহকে নির্দেশ করে। সব মিলিয়ে বলা যায়, ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে গণপরিবহন প্রায় সব শ্রেণির যানবাহনই নিয়ম ভঙ্গ করছে। তবে কার, এসইউভি এবং বাসই এই বিশৃঙ্খলার জন্য বেশি দায়ী।
কখন বেশি আইন ভাঙা হয়
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে গুলশান-১ সিগন্যালে আইন ভঙ্গের সময় ও ধরণ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা, দুপুর ১১টা এবং রাত ১১টা—এই তিন সময়কে আইন ভঙ্গের শীর্ষ সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশেষ করে দুপুর ১১টার দিকে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করে। তখন প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজারবার ট্রাফিক আইন ভাঙা হয়। শুধু তাই নয়, সপ্তাহজুড়ে আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা সমানভাবে থাকে না। রোববার, অর্থাৎ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আইন ভঙ্গের হার সবচেয়ে বেশি, দিনে প্রায় ৪০ হাজারবার। বিপরীতে, সপ্তাহের মাঝামাঝি বুধবার ও বৃহস্পতিবার তুলনামূলকভাবে কম থাকে, তবে তখনও দিনে প্রায় ১৫ হাজারবার আইন ভাঙা হয়। সামগ্রিকভাবে গড়ে প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই লাখবার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হয়, যা রাজধানীর ট্রাফিক শৃঙ্খলার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।
আইন ভাঙার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঘটে সিগন্যাল অমান্যের (৬৪ শতাংশ) ঘটনা। এর পাশাপাশি, উল্টোপথে চলাচল (১৫ শতাংশ) এবং রাস্তায় অযথা থেমে থাকা বা যান চলাচলে বাধা সৃষ্টিও (৯ শতাংশ) উল্লেখযোগ্য হারে ঘটছে। অর্থাৎ, নিয়ম ভঙ্গের ধরণগুলো একদিকে সরাসরি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে যানজটকে দীর্ঘস্থায়ী করছে।
যানজট ও গতিবিধির কারণ
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুলশান-১ সিগন্যালে যানজট সৃষ্টি ও যানবাহনের গতিবিধির মধ্যে স্পষ্ট বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। দিনের সবচেয়ে বেশি চাপ তৈরি হয় বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে, যখন প্রতি মিনিটে প্রায় ৪৫টি গাড়ি মোড় অতিক্রম করে। এই সময়টিকে যান চলাচলের ‘পিক আওয়ার’ বলা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী সড়কটি সবচেয়ে বড় বটলনেক বা যানজটের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
রুটভেদে যান চলাচলের গতির মধ্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্যও ধরা পড়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী রুটে একটি গাড়ি গড়ে ৩ দশমিক ২২ সেকেন্ডে সিগন্যাল পার হয়। পূর্ব থেকে উত্তরমুখী রুটে একই কাজ করতে লাগে প্রায় ৯ দশমিক ২২ সেকেন্ড। অর্থাৎ, একই মোড়ে রুটভেদে পারাপারের সময়ের মধ্যে ৬ সেকেন্ডের পার্থক্য রয়েছে। এটি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অসমতা ও অদক্ষতার প্রমাণ বহন করে বলে জানায় ট্রাফিক্স।
অন্যদিকে, যানবাহনের প্রকারভেদেও সময়ের তারতম্য দেখা গেছে। সিএনজি ও পিকআপ ভ্যান গড়ে সবচেয়ে কম সময়ে (প্রায় ২ দশমিক ৩৮ সেকেন্ডে) সিগন্যাল অতিক্রম করতে পারে। বড় আকারের গাড়ি বা ব্যস্ত রুটের যানবাহন সিগন্যাল পার হতে অনেক বেশি সময় নিচ্ছে। এছাড়া, সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে যান চলাচলের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তখন প্রতি মিনিটে প্রায় ১২টি গাড়ি সিগন্যাল অতিক্রম করে। অথচ দিনের গড় হিসেবে এই সংখ্যা প্রতি মিনিটে ৮টি।
সিগন্যাল ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুলশান-১ সিগন্যালে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার একাধিক দুর্বলতা রয়েছে। সিগন্যালের মোট সময়ের মধ্যে মাত্র ২২ দশমিক ১ শতাংশ সময় সবুজ বাতি জ্বলে থাকে, যা যানবাহনের চাপের তুলনায় একেবারেই অপর্যাপ্ত। ফলে সিগন্যালে জমে থাকা গাড়িগুলো দ্রুত পার হতে পারে না এবং অল্প সময়ের মধ্যে আবার দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
এছাড়া প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ হাজার ৯৩৮ বার সিগন্যাল পরিবর্তন হয়, যা যান চলাচলের স্বাভাবিক প্রবাহকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। ঘন ঘন সিগন্যাল পরিবর্তন শুধু চালকদের বিভ্রান্তই করে না, অনেক সময় অকারণে গতি কমিয়ে দিয়ে নতুন করে যানজট সৃষ্টি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে বর্তমান সিগন্যাল ব্যবস্থায় সময় ও প্রবাহের মধ্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য রয়েছে। সঠিকভাবে সিগন্যাল টাইমিং নির্ধারণ করা না গেলে যানজট কমানো সম্ভব নয়।
ট্রাফিক আইন ভঙ্গের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে রোববার। এদিন সপ্তাহে প্রায় ৪০ হাজার বার সিগন্যাল অমান্য করা হচ্ছে।
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে আইনের প্রয়োগ
ট্রাফিক্সের উদ্যোগটি একেবারে আধুনিক এবং প্রযুক্তিনির্ভর। সংস্থাটি গুলশান-১ সিগন্যালে ১০টি ক্যামেরা স্থাপন করেছে, যা সিগন্যালের অমান্যকারী যানবাহন এবং পথচারীদের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে। এই ক্যামেরাগুলো এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পর পর আইনের লঙ্ঘন চিহ্নিত করে এবং তার ওপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মাধ্যমে ট্রাফিক পুলিশ সহজেই আইনের প্রয়োগ করতে পারবে। তাদের কাছে প্রমাণ হিসেবে ছবি ও ভিডিও থাকবে, যা আইনি ব্যবস্থায় যথেষ্ট শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
ট্রাফিক্সের চিফ অপারেটিং অফিসার আবু আনাস বলেন, ‘আমরা প্রতিটি যানবাহনের আইন ভঙ্গের ছবি সংগ্রহ করছি, যাতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে। এই প্রযুক্তি সিগন্যাল মানার ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করবে এবং শহরের যানবাহন চলাচল আরও সুশৃঙ্খল করতে সাহায্য করবে।’
সম্প্রসারণে আশাবাদী ট্রাফিক্স
গুলশান-১ সিগন্যালে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এআই-ভিত্তিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ইতিমধ্যে ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে—বলছে গুলশান ট্রাফিক বিভাগ। তবে দেশের অন্যান্য সড়কে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে গিয়ে নানা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হচ্ছে ট্রাফিক্স। সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা নতুন সিগন্যালে প্রযুক্তি স্থাপন করতে পারছেন না।
আশরাফুল আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা যদি আরেকটি সড়কে এই প্রযুক্তি চালু করতে পারি, তবে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠা আসলে খুবই সহজ—মানুষ কেবল সঠিকভাবে গাইডলাইন পেলে তারা নিয়ম মেনে চলতে শুরু করবে।’
আশরাফুল আলম আরও জানান, এই প্রকল্প তাদের আট বছরের গবেষণার ফল। গুলশান-১-এ সফল প্রয়োগের পর তারা পুরো গুলশানে, বনানী, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর অন্যান্য ব্যস্ত সড়কে এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করতে চান। তবে সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এটি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যা বলছে পুলিশ
গুলশান ট্রাফিক জোনের পুলিশ ইন্সপেক্টর কে এম মেহেদী হাসান স্ট্রিমকে বলেন, ‘সিগন্যালে আইন ভঙ্গের ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত থাকছে। ভবিষ্যতে ডিজিটাল কোর্ট বা ই-মামলার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।’
তিনি আরও জানান, আগে যেখানে সিগন্যালের সময় ছিল ৭ মিনিট, এখন প্রযুক্তির সহায়তায় তা কমে ৩ মিনিটে নামানো সম্ভব হয়েছে। এতে যানজট অনেকাংশে কমেছে।
নগর পরিকল্পনাবিদদের সমর্থন
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এটি শুধু ট্রাফিক পুলিশ বা প্রশাসনের জন্য একটি সহায়ক উদ্যোগ নয়, বরং শহরের উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকা শহরের মত জনবহুল শহরে ট্রাফিক আইনের বাস্তবায়নে প্রযুক্তি একটি অপরিহার্য হাতিয়ার হয়ে উঠছে। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ সহজতর হবে এবং এতে ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
এই নগর পরিকল্পনাবিদ আরও যোগ করেন, ‘যদি এই প্রযুক্তি ঢাকা শহরের অন্যান্য এলাকায় ব্যবহার করা হয়, তবে পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত হতে পারে এবং যানজট কমানো সম্ভব হবে। এটি শহরের মোট পরিবহন ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন আনবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর), ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের দায়িত্বে থাকা খন্দকার মাহবুব আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘ট্রাফিক্সের এই উদ্যোগ আমার নিজের খুব ভালো লেগেছে, ওরা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রাফিক সিস্টেমকে উন্নয়নের চেষ্টা করছে—এটা প্রশংসনীয়।’
ট্রাফিক্সের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করা হবে কি না প্রশ্নে খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ‘ওরা ত শুরুতে ভলেন্টিয়ারিভাবে কাজ শুরু করেছে। যেহেতু এখন পর্যন্ত ওদের কাজের অগ্রগতি ভালো, ওদের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমাদের পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা হবে।’
রাজধানী ঢাকার অন্যতম অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানে মাত্র আড়াই মাসে একটি সিগন্যালে ৪৮ লাখ বার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে সপ্তাহের শনি ও রোববার। আইন ভঙ্গের শীর্ষে রয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। তাছাড়া, এসময়ে একেকটি যাত্রীবাহী বাসের বিরুদ্ধে গড়ে ৩শ’ বারের বেশি আইন ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা নিয়ম অমান্যের অভ্যাসকে নির্দেশ করে।
সম্প্রতি গুলশান-১ নম্বর সিগন্যালে বসানো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সিসি ক্যামেরার রেকর্ড বিশ্লেষণে এ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। ট্রাফিক্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করছে।
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে কী উঠে এসেছে
গণপরিবহনের বাস ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়িগুলোর মধ্যে অনেকেই ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছে। গুলশান-১ সিগন্যালে আইন ভঙ্গের মোট সংখ্যা সপ্তাহে দুই লাখ বার ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এর মধ্যে রোববারে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৪০ হাজার বার আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৯ হাজার বার) এবং বৃহস্পতিবারে (১৬ হাজার বার) তুলনামূলকভাবে আইন ভঙ্গের ঘটনা কম হলেও, আইন অমান্যকারী যানবাহনের সংখ্যা এখনো যথেষ্ট বেশি জানিয়েছে ট্রাফিক্স। এছাড়াও শনিবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৩৯ হাজার বার) আইন ভঙ্গ করা হয়।
এছাড়া, এসব ঘটনায় সিগন্যাল অমান্য করা (৬৪%) এবং উল্টোপথে চলাচল (১৫%) অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিগন্যাল মানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিমাণ আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে, বিশেষত ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকরা নিয়ম মানছেন না।
কারা বেশি আইন ভাঙছে
গুলশান-১ সিগন্যালে ট্রাফিক্সের এআই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আইন ভঙ্গের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে কার ও এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল)। মোট লঙ্ঘনের প্রায় ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশই ঘটছে এই দুই ধরনের গাড়ির মাধ্যমে, যা নগর ট্রাফিক শৃঙ্খলার জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ। এর বাইরে বাস, মোটরসাইকেল, জিপ ও পিকআপ, মাইক্রোবাস এবং সিএনজিও আইন ভঙ্গের তালিকায় রয়েছে।
বিশেষত বাসের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভয়াবহ। একেকটি বাসের বিরুদ্ধে ৩শ’ বারেরও বেশি আইন ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা নিয়ম অমান্যের স্থায়ী অভ্যাসকে নির্দেশ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস চালকেরা যাত্রী ওঠানো-নামানোর প্রতিযোগিতা এবং নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চাপে অনেক সময় সিগন্যাল উপেক্ষা করেন। এছাড়া মোটরসাইকেল চালকেরাও দ্রুত চলাচলের জন্য নিয়ম ভাঙায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন।
পরিসংখ্যান আরও বলছে, গুলশান-১ চত্বরে পশ্চিম দিক থেকে আসা গাড়িগুলো সিগন্যালে সবচেয়ে বেশি আইন ভঙ্গ করছে, যা ওই রুটের যানবাহনের চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহকে নির্দেশ করে। সব মিলিয়ে বলা যায়, ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে গণপরিবহন প্রায় সব শ্রেণির যানবাহনই নিয়ম ভঙ্গ করছে। তবে কার, এসইউভি এবং বাসই এই বিশৃঙ্খলার জন্য বেশি দায়ী।
কখন বেশি আইন ভাঙা হয়
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে গুলশান-১ সিগন্যালে আইন ভঙ্গের সময় ও ধরণ নিয়ে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা, দুপুর ১১টা এবং রাত ১১টা—এই তিন সময়কে আইন ভঙ্গের শীর্ষ সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশেষ করে দুপুর ১১টার দিকে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করে। তখন প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজারবার ট্রাফিক আইন ভাঙা হয়। শুধু তাই নয়, সপ্তাহজুড়ে আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা সমানভাবে থাকে না। রোববার, অর্থাৎ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আইন ভঙ্গের হার সবচেয়ে বেশি, দিনে প্রায় ৪০ হাজারবার। বিপরীতে, সপ্তাহের মাঝামাঝি বুধবার ও বৃহস্পতিবার তুলনামূলকভাবে কম থাকে, তবে তখনও দিনে প্রায় ১৫ হাজারবার আইন ভাঙা হয়। সামগ্রিকভাবে গড়ে প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই লাখবার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন হয়, যা রাজধানীর ট্রাফিক শৃঙ্খলার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।
আইন ভাঙার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঘটে সিগন্যাল অমান্যের (৬৪ শতাংশ) ঘটনা। এর পাশাপাশি, উল্টোপথে চলাচল (১৫ শতাংশ) এবং রাস্তায় অযথা থেমে থাকা বা যান চলাচলে বাধা সৃষ্টিও (৯ শতাংশ) উল্লেখযোগ্য হারে ঘটছে। অর্থাৎ, নিয়ম ভঙ্গের ধরণগুলো একদিকে সরাসরি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে যানজটকে দীর্ঘস্থায়ী করছে।
যানজট ও গতিবিধির কারণ
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুলশান-১ সিগন্যালে যানজট সৃষ্টি ও যানবাহনের গতিবিধির মধ্যে স্পষ্ট বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। দিনের সবচেয়ে বেশি চাপ তৈরি হয় বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে, যখন প্রতি মিনিটে প্রায় ৪৫টি গাড়ি মোড় অতিক্রম করে। এই সময়টিকে যান চলাচলের ‘পিক আওয়ার’ বলা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী সড়কটি সবচেয়ে বড় বটলনেক বা যানজটের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
রুটভেদে যান চলাচলের গতির মধ্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্যও ধরা পড়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী রুটে একটি গাড়ি গড়ে ৩ দশমিক ২২ সেকেন্ডে সিগন্যাল পার হয়। পূর্ব থেকে উত্তরমুখী রুটে একই কাজ করতে লাগে প্রায় ৯ দশমিক ২২ সেকেন্ড। অর্থাৎ, একই মোড়ে রুটভেদে পারাপারের সময়ের মধ্যে ৬ সেকেন্ডের পার্থক্য রয়েছে। এটি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অসমতা ও অদক্ষতার প্রমাণ বহন করে বলে জানায় ট্রাফিক্স।
অন্যদিকে, যানবাহনের প্রকারভেদেও সময়ের তারতম্য দেখা গেছে। সিএনজি ও পিকআপ ভ্যান গড়ে সবচেয়ে কম সময়ে (প্রায় ২ দশমিক ৩৮ সেকেন্ডে) সিগন্যাল অতিক্রম করতে পারে। বড় আকারের গাড়ি বা ব্যস্ত রুটের যানবাহন সিগন্যাল পার হতে অনেক বেশি সময় নিচ্ছে। এছাড়া, সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে যান চলাচলের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তখন প্রতি মিনিটে প্রায় ১২টি গাড়ি সিগন্যাল অতিক্রম করে। অথচ দিনের গড় হিসেবে এই সংখ্যা প্রতি মিনিটে ৮টি।
সিগন্যাল ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা
ট্রাফিক্সের বিশ্লেষণে দেখা যায়, গুলশান-১ সিগন্যালে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার একাধিক দুর্বলতা রয়েছে। সিগন্যালের মোট সময়ের মধ্যে মাত্র ২২ দশমিক ১ শতাংশ সময় সবুজ বাতি জ্বলে থাকে, যা যানবাহনের চাপের তুলনায় একেবারেই অপর্যাপ্ত। ফলে সিগন্যালে জমে থাকা গাড়িগুলো দ্রুত পার হতে পারে না এবং অল্প সময়ের মধ্যে আবার দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
এছাড়া প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ হাজার ৯৩৮ বার সিগন্যাল পরিবর্তন হয়, যা যান চলাচলের স্বাভাবিক প্রবাহকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। ঘন ঘন সিগন্যাল পরিবর্তন শুধু চালকদের বিভ্রান্তই করে না, অনেক সময় অকারণে গতি কমিয়ে দিয়ে নতুন করে যানজট সৃষ্টি করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে যে বর্তমান সিগন্যাল ব্যবস্থায় সময় ও প্রবাহের মধ্যে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য রয়েছে। সঠিকভাবে সিগন্যাল টাইমিং নির্ধারণ করা না গেলে যানজট কমানো সম্ভব নয়।
ট্রাফিক আইন ভঙ্গের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে রোববার। এদিন সপ্তাহে প্রায় ৪০ হাজার বার সিগন্যাল অমান্য করা হচ্ছে।
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে আইনের প্রয়োগ
ট্রাফিক্সের উদ্যোগটি একেবারে আধুনিক এবং প্রযুক্তিনির্ভর। সংস্থাটি গুলশান-১ সিগন্যালে ১০টি ক্যামেরা স্থাপন করেছে, যা সিগন্যালের অমান্যকারী যানবাহন এবং পথচারীদের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে। এই ক্যামেরাগুলো এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পর পর আইনের লঙ্ঘন চিহ্নিত করে এবং তার ওপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মাধ্যমে ট্রাফিক পুলিশ সহজেই আইনের প্রয়োগ করতে পারবে। তাদের কাছে প্রমাণ হিসেবে ছবি ও ভিডিও থাকবে, যা আইনি ব্যবস্থায় যথেষ্ট শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
ট্রাফিক্সের চিফ অপারেটিং অফিসার আবু আনাস বলেন, ‘আমরা প্রতিটি যানবাহনের আইন ভঙ্গের ছবি সংগ্রহ করছি, যাতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে। এই প্রযুক্তি সিগন্যাল মানার ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করবে এবং শহরের যানবাহন চলাচল আরও সুশৃঙ্খল করতে সাহায্য করবে।’
সম্প্রসারণে আশাবাদী ট্রাফিক্স
গুলশান-১ সিগন্যালে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এআই-ভিত্তিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ইতিমধ্যে ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে—বলছে গুলশান ট্রাফিক বিভাগ। তবে দেশের অন্যান্য সড়কে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে গিয়ে নানা সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হচ্ছে ট্রাফিক্স। সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা নতুন সিগন্যালে প্রযুক্তি স্থাপন করতে পারছেন না।
আশরাফুল আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা যদি আরেকটি সড়কে এই প্রযুক্তি চালু করতে পারি, তবে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠা আসলে খুবই সহজ—মানুষ কেবল সঠিকভাবে গাইডলাইন পেলে তারা নিয়ম মেনে চলতে শুরু করবে।’
আশরাফুল আলম আরও জানান, এই প্রকল্প তাদের আট বছরের গবেষণার ফল। গুলশান-১-এ সফল প্রয়োগের পর তারা পুরো গুলশানে, বনানী, মহাখালী ও কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর অন্যান্য ব্যস্ত সড়কে এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করতে চান। তবে সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এটি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যা বলছে পুলিশ
গুলশান ট্রাফিক জোনের পুলিশ ইন্সপেক্টর কে এম মেহেদী হাসান স্ট্রিমকে বলেন, ‘সিগন্যালে আইন ভঙ্গের ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত থাকছে। ভবিষ্যতে ডিজিটাল কোর্ট বা ই-মামলার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।’
তিনি আরও জানান, আগে যেখানে সিগন্যালের সময় ছিল ৭ মিনিট, এখন প্রযুক্তির সহায়তায় তা কমে ৩ মিনিটে নামানো সম্ভব হয়েছে। এতে যানজট অনেকাংশে কমেছে।
নগর পরিকল্পনাবিদদের সমর্থন
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এটি শুধু ট্রাফিক পুলিশ বা প্রশাসনের জন্য একটি সহায়ক উদ্যোগ নয়, বরং শহরের উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকা শহরের মত জনবহুল শহরে ট্রাফিক আইনের বাস্তবায়নে প্রযুক্তি একটি অপরিহার্য হাতিয়ার হয়ে উঠছে। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ সহজতর হবে এবং এতে ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
এই নগর পরিকল্পনাবিদ আরও যোগ করেন, ‘যদি এই প্রযুক্তি ঢাকা শহরের অন্যান্য এলাকায় ব্যবহার করা হয়, তবে পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত হতে পারে এবং যানজট কমানো সম্ভব হবে। এটি শহরের মোট পরিবহন ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন আনবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর), ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের দায়িত্বে থাকা খন্দকার মাহবুব আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘ট্রাফিক্সের এই উদ্যোগ আমার নিজের খুব ভালো লেগেছে, ওরা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রাফিক সিস্টেমকে উন্নয়নের চেষ্টা করছে—এটা প্রশংসনীয়।’
ট্রাফিক্সের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করা হবে কি না প্রশ্নে খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ‘ওরা ত শুরুতে ভলেন্টিয়ারিভাবে কাজ শুরু করেছে। যেহেতু এখন পর্যন্ত ওদের কাজের অগ্রগতি ভালো, ওদের সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমাদের পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পর্যটন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নেও এই শিল্পের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩৩ মিনিট আগেএ ঘটনায় মাহবুবুল আলম তারেক তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
৪১ মিনিট আগেসম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন লোক একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং জোরপূর্বক তাঁর চুল ও দাড়ি কেটে দিচ্ছে। সেই ঘটনাসহ প্রকাশ্যে জোর করে বিভিন্ন ব্যক্তির চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা।
১ ঘণ্টা আগেঅনাবাসী বাংলাদেশিদের অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে হবে। বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশির জন্য বাংলাদেশি হজযাত্রী হিসেবে সরাসরি অন্য দেশ থেকে সৌদি আরবে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
২ ঘণ্টা আগে