leadT1ad

সংবিধান অনুযায়ী এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন সম্ভব নয়: শিশির মনির

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ৪৮
শিশির মনির। ছবি: সংগৃহীত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে আদালতের রায় এলেও আগামী (ত্রয়োদশ) জাতীয় সংসদ নির্বাচন সেই সরকারের অধীনে আয়োজন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা আছে। এখন তো কোনো সংসদ নেই। সংসদ ভেঙে গেছে এক বছরের বেশি সময় আগে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ চালাচ্ছে। এ ছাড়া আরও কিছু বিষয় রয়েছে। তাই সর্বোচ্চ আপিল বিভাগের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন নির্বাচনে এটি সম্ভব নয়।’

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে সকালে আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন শিশির মনির। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে করা আপিলের শুনানি শুরু হয় গত ২১ অক্টোবর। ২২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে অন্যতম রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। ২৩ অক্টোবর তৃতীয় দিনের শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী।

গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনগুলোর শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে এসব আবেদন একসঙ্গে শুনানির জন্য যুক্ত হয়। আদালতের আদেশে বলা হয়, ২১ অক্টোবর থেকে আপিল শুনানি কার্যতালিকায় আসবে।

২০১১ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়। এরপর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্বাচনকালীন এই সরকারব্যবস্থা বাদ দেওয়া হয়।

গত বছর জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি ২৭ আগস্ট ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। ১৭ অক্টোবর আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৩ অক্টোবর আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রিট খারিজ করে ব্যবস্থা বৈধ ঘোষণা করে।

এর বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়ে ২০০৫ সালে আপিল করা হয়। পরে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। ওই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যা ৩ জুলাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত