হাজি আবদুর রহিম (৪৭)। রাজধানীর পুরোনো ঢাকার কাপড়ের ব্যবসায়ী। পরিবার নিয়ে বসবাস পুরোনো ঢাকার সুরিটোলায়।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ছেলে মেহরাব হোসেন রিমনকে (১২) নিয়ে বাজার করতে বের হন। অন্যান্য কেনাকাটা সেরে বাবা-ছেলে মাংস কিনতে যান বংশালের কসাইটুলীতে। মাংস কিনে ফিরছিলেন বাসায়। পথে সাত তলা ভবনের রেলিং ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান আবদুর রহিম ও রিমন।
সকালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রভাবে রেলিং ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় তাদের সঙ্গে মারা গেছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম (২০)।
তিনজনের মরদেহ বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। সেখানে নিহত আবদুর রহিমের ছোট ভাই মোহাম্মদ নাসির ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তরের আবেদন করেছেন।
কাঁদতে কাঁদতে নাসির স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমার ভাই হজ করেছেন। কাপড়ের ব্যবসা করতেন। সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। সকালে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাজার করতে বের হয়েছিলেন। কসাইটুলী থেকে মাংস কিনে ফেরার পথে তাদের ওপর রেলিং ভেঙে পড়ে।’
তিনি জানান, তার ভাইয়ের চার ছেলে; এক মেয়ে। বড় ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকে। একমাত্র মেয়ে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। রিমন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আরেক ছেলে মাদ্রাসা পড়ুয়া।
ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারাদেশে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদী বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মৃত অন্য দুজনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভবনের দেয়াল ধসে মারা গেছে ১০ মাসের এক শিশু। আর নরসিংদীর পলাশে মাটির ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছেন কাজম আলী (৭৫)। কাজম আলী পলাশের চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন তাঁর চাচাতো ভাই আউয়াল মিয়া।