leadT1ad

ছাত্র আন্দোলনে হামলা

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৩১
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৩৪
বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সংগৃহীত ছবি

৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। গতবছর ৪ আগস্ট ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ শীর্ষক শান্তি মিছিলে যোগদান এবং গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের অভিযোগে তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া স্ট্রিমকে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮ তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ১৪ জুলাই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।

এর আগে সিন্ডিকেট সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে যারা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও হয়রানি করেছে এবং যারা শেখ হাসিনার সমর্থনে গত বছরের ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ এবং ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’ স্লোগান দিয়ে মিছিলের মাধ্যমে জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার উসকানি ও সমর্থন দিয়ে নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের উপর হামলা, শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট, শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নষ্ট, প্রশাসন তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বৈরাচার সরকারের বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘঠিত সকল প্রকার দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এবং আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম তদন্তে কমিটি করা হয়। পরে আবার সেই কমিটি পুনর্গঠনও করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় শাস্তিমূলক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮ তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ১৪ জুলাই এ সিদ্ধান্তে বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।

শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, ৮ জনকে নিম্ন পদে অবনমন এবং ৩১ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জনকে বহিষ্কার, ৮ জনকে অপসারণ, ৭ জনকে তিরস্কার এবং ১ জনকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। কর্মচারীদের মধ্যে ২ জনকে বরখাস্ত এবং ১৯ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমানেরও সনদ বাতিল করা হয়েছে।

বরখাস্ত ৬ শিক্ষক হলেন—সাবেক প্রক্টর ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ অধ্যাপক ড. মোঃ আজহারুল ইসলাম, ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম, ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি, ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার হোসেন চৌধুরী, এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ নাজমুল হাসান সিদ্দিকী।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমানেরও সনদ বাতিল করা হয়েছে।

অপসারিত ১২ শিক্ষক হলেন—একোয়াকালচার বিভাগ প্রফেসর মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, প্যাথলজি বিভাগ প্রফেসর ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান, সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগ প্রফেসর ড. নাছরীন সুলতানা জুয়েনা, এনিমেল নিউট্রিশন বিভাগ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ প্রফেসর ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, একোয়াকালচার বিভাগ লেকচারার মো. হামিদুর রহমান, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম, এনিমেল ব্রিডিং এন্ড জেনেটিক্স বিভাগ লেকচারার মো. আবুল বাশার, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ প্রফেসর ড. উজ্জল কুমার নাথ, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ প্রফেসর ড. সুবাস চন্দ্র দাস, এনিমেল সায়েন্স বিভাগ ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, এনিমেল ব্রিডিং এন্ড জেনেটিক্স বিভাগ প্রফেসর ড. এম. এ. এম. ইয়াহিয়া খন্দকার।

যাঁদের নিম্নপদে অবনমন করা হয়েছে তাঁরা হলেন—প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. চয়ন গোস্বামী, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রিজওয়ানুল হক, আইআইএফএস সহযোগী প্রফেসর ড. রাখী চক্রবর্ত্তী, এনিমেল নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-মামুন, এনিমেল নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম, কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তার, কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বৈরাচার সরকারের বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘঠিত সকল প্রকার দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এবং আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম তদন্তে কমিটি করা হয়। পরে আবার সেই কমিটি পুনর্গঠনও করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় শাস্তিমূলক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত