leadT1ad

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কী, কীভাবে কী ঘটে

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংকে বলা হয় ‘রিগিং বাই ডিজাইন’ বা ‘পরিকল্পিত কারচুপি’। বাংলাদেশে বিশেষ করে গত তিনটি নির্বাচনে যা করেছিল আওয়ামী লীগ। স্ট্রিম গ্রাফিক

সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ আমলের মতো কারচুপির ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, আবারও একটা ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে যাচ্ছি আমরা। ২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪ সালের যেরকম বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে, আমরা চাই না সেরকম বিতর্কিত নির্বাচনের আর পুনরাবৃত্তি ঘটুক। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেভাবে নির্বাচনপ্রক্রিয়া চলছে, সেই প্রক্রিয়ায় আরেকটি প্রি-ইঞ্জিনিয়ার্ড একটি নির্বাচন আবার জাতি উপহার পাবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং আসলে কী? কীভাবে ঘটে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিপা নরিস তাঁর ২০০৪ সালের বই ‘ইলেকটোরাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে বোঝায় এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে নির্বাচনী ব্যবস্থা, নিয়ম বা পদ্ধতিগুলো কৌশলগতভাবে ডিজাইন করা হয়, সংশোধন করা হয় বা এমনভাবে ব্যবহার করা হয় যাতে রাজনৈতিক ফলাফল বিশেষ ও নির্দিষ্ট একটি দিকেই গড়ায়।

এটি সরাসরি জালিয়াতির মতো (যেমন—ভোটে কারচুপি) নয়। বরং এটি বৈধ, প্রাতিষ্ঠানিক বা আধা-বৈধ উপায়ে পরিচালিত হয়। যেমন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতি চালু করা হলে তা হবে বৈধ ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে এমনভাবে প্রভাবিত করা হয় যাতে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ হয়—যেমন কোনো দল বা সরকারের ক্ষমতা সুসংহত করা, জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষা করা বা সরকারের জবাবদিহিতা বাড়ানো।

এই প্রক্রিয়া নতুন গণতন্ত্র, সংঘাত-পরবর্তী রাষ্ট্র এবং এমনকি প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও দেখা যায়। সংস্কারক কিংবা ক্ষমতাসীন উভয় পক্ষই কখনো কখনো নির্বাচনী কাঠামো ‘ডিজাইন’ করে নিজেদের দলীয় বা সামাজিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা করে।

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কখনো কখনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পারে, তবে প্রায়ই এটি গণতন্ত্রের ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রে একে বলা হয় ‘রিগিং বাই ডিজাইন’ বা ‘পরিকল্পিত কারচুপি’। বাংলাদেশে বিশেষ করে গত তিনটি নির্বাচনে যা করেছিল আওয়ামী লীগ।

কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নয়। প্রতিটি ব্যবস্থাই কিছু পক্ষকে সুবিধা দেয় এবং অন্যদের বঞ্চিত করে—এটাই নির্বাচনী ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মূল বাস্তবতা।

কী কারণে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উদ্দেশ্য প্রেক্ষাপটভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তত্ত্বগতভাবে নতুন গণতন্ত্রে সংঘাত বা বিভাজন ঠেকাতে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্য থাকে। উদাহরণস্বরূপ, বৈচিত্রময় দল গঠনে উৎসাহ দেওয়া হয় যাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রে ক্ষমতাসীনদের সুবিধা ধরে রাখার জন্য নানা কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়। যেমন, নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণ করে বিরোধী দলের প্রভাব কমানো। স্বৈরাচারী শাসনে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা হয় গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে ভোট কারচুপিতে। শাসকগোষ্ঠী বিরোধী দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ‘বহুদলীয়তা’র আড়ালে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখে। বাংলাদেশে যেটা আমরা আওয়ামী লীগকে করতে দেখি।

এই সব উদ্দেশ্য অনেক সময় একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। যেমন, জাতিগত বৈচিত্র্য রক্ষার জন্য অনুপাতভিত্তিক ব্যবস্থা (প্রপোরশনাল সিস্টেম) ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতাভিত্তিক ব্যবস্থা (মেজোরিটারিয়ান সিস্টেম) একসঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

তবে কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নয়। প্রতিটি ব্যবস্থাই কিছু পক্ষকে সুবিধা দেয় এবং অন্যদের বঞ্চিত করে—এটাই নির্বাচনী ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মূল বাস্তবতা।

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কীভাবে করা হয়

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং সাধারণত দুটি ধাপে ঘটে—শুরুতে নির্বাচনী কাঠামো ও নিয়ম ডিজাইন করার সময় এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক পরিবর্তন বা সূক্ষ্ম সংশোধনের মাধ্যমে। নির্বাচনী ব্যবস্থার জটিলতাকে কাজে লাগিয়েই এটি পরিচালিত হয়। অনেক সময় সামান্য পরিবর্তনও রাজনৈতিক ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলে।

নির্বাচনী কাঠামো নির্ধারণ:

এই পর্যায়ে ভোট থেকে আসন নির্ধারণের পদ্ধতি দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়। ভোট থেকে আসন নির্ধারণে সাধারণত দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি পদ্ধতির নাম ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ (এফপিটিপি) পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে যে প্রার্থী বেশি ভোট পায়, সে এবং তার দল জয়ী হয়। বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতেই নির্বাচন হয়। আর ‘প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ (পিআর) ব্যবস্থায় দলীয় ভোটের অনুপাতে সংসদে আসন বণ্টন হয়।

এফপিটিপি পদ্ধতিতে সাধারণত বড় দুটি দল প্রাধান্য পায়, কিন্তু ছোটরা উপেক্ষিত হয়। অন্যদিকে, পিআর পদ্ধতি বৈচিত্র্য বাড়ায়, তবে তা জোট সরকারকে অস্থিতিশীল করতে পারে।

কোনো কোনো দেশে নির্বাচনের কাঠামো মিশ্র বা সংকর। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ও অনুপাতভিত্তিক—উভয় ধরণের উপাদান একত্র করা হয়। যেমন জার্মানির ‘মিক্সড মেম্বার প্রোপোরশনাল’ (এমএমপি) পদ্ধতি। এতে ভোটার সরাসরি প্রতিনিধির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, আবার আসন বণ্টনও তুলনামূলক ন্যায্য হয়। তবে ভোটারদের মধ্যে বিভক্ত সমর্থন (টিকেট-স্লিটিং) দেখা দিতে পারে।

বিশেষকরে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে, ইলিকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে ক্ষমতাসীন দলগুলোই সবসময় সুবিধা নেয়। গত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের তিনটি নির্বাচনেই (২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪) ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে কারচুপি করা হয়।

সীমানা ও ভোটাধিকার নিয়ন্ত্রণ:

নির্বাচনী এলাকার সীমানা এমনভাবে পরিবর্তন করা হয় যাতে বিরোধী ভোটারদের একত্র করে রাখা হয় বা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে শাসক দল বাড়তি সুবিধা পায়। আওয়ামী লীগ আমলে এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়।

এ ছাড়া কঠোর নিয়ম, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া, ভোটকেন্দ্র কমানো বা সময় সীমিত করা হয়। এসব পদক্ষেপ নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে (যেমন সংখ্যালঘু বা নিম্নআয়ের মানুষকে) প্রভাবিত করে। এতে টার্গেট জনগোষ্ঠীর ভোটদান ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে, যা ঘনিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফল উল্টে দিতে পারে।

তথ্য ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ:

ভূয়া তথ্য ও গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করা হয়। রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে জনমত প্রভাবিত করা হয়। অনেক সময় সরকারপন্থী প্রচারণা বাড়ানো ও বিরোধীদের সংবাদ কমানো হয়। আধা-গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই কৌশলে বিরোধী ভোট ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

প্রশাসনিকভাবেও হস্তক্ষেপ করা হয়। যেমন, ভোট গণনায় বিলম্ব করা, ফলাফল পরিবর্তন, বা নির্বাচন কমিশনে অনুগত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হয়। মরক্কোতে ২০২১ সালের নির্বাচনী সংস্কারে তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে রাজতন্ত্রপন্থী দলগুলো বাড়তি সুবিধা পায়।

সমন্বিত প্রয়োগ ও প্রভাব

এসব কৌশল প্রায়ই একসঙ্গেও ব্যবহৃত হয়। তখন কার্যত একটি একক দলের আধিপত্য নিশ্চিত করা যায়।

বাস্তবায়নের জন্য প্রায়ই রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও নির্বাচন কমিশনের অংশগ্রহণের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে ক্ষমতাবান গোষ্ঠীগুলো প্রক্রিয়াটিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, ফলে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের ধারণা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশেষকরে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে, ইলিকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে ক্ষমতাসীন দলগুলোই সবসময় সুবিধা নেয়। গত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের তিনটি নির্বাচনেই (২০২৪, ২০১৮ ও ২০১৪) ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে কারচুপি করা হয়।

পাকিস্তানে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) বহুবার নির্বাচনী ফলাফল ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ করেছে। আইনি কৌশলে বেনজির ভুট্টো ও ইমরান খানের মতো নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর অনুগত সরকার গঠনের পথ সুগম করা হয়।

আরও কিছু উদাহরণ

ফিজিতে (১৯৯৭-২০০৬) সেনা অভ্যুত্থানের পর জাতিগত পুনর্মিলনের উদ্দেশ্যে ‘অল্টারনেটিভ ভোট’ (এভি) পদ্ধতি চালু করা হয়। লক্ষ্য ছিল দেশীয় ফিজিয়ান ও ইন্দো-ফিজিয়ানদের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ফল হয় উল্টো। ১৯৯৯ সালে ইন্দো-ফিজিয়ানদের নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে জয়ী হলে আবারও সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে।

ইসরায়েলে (১৯৯৬) ছোট দলের প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন ও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) একসঙ্গে চালু করা হয়। কিন্তু এর ফল হয় বিপরীত। ভোট ছড়িয়ে পড়ে ছোট দলগুলোর মধ্যে, ফলে সংসদে টুকরো টুকরো জোট ও অস্থিতিশীল সরকার গঠিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের জনগণনা শেষে উত্তর ক্যারোলাইনার মতো রাজ্যগুলো নতুন করে নির্বাচনী আসনের মানচিত্র আঁকে (জেরিম্যান্ডারিং)। এতে রিপাবলিকান দল ভোটের সমান ভাগ থাকা সত্ত্বেও ১০টি অতিরিক্ত আসনে সুবিধা পায়।

পাকিস্তানে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) বহুবার নির্বাচনী ফলাফল ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ করেছে। আইনি কৌশলে বেনজির ভুট্টো ও ইমরান খানের মতো নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর অনুগত সরকার গঠনের পথ সুগম করা হয়।

গুরুত্ব ও প্রভাব

তাত্ত্বিকভাবে বলা হয়, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং স্বচ্ছভাবে ও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে করা হলে এটি ভঙ্গুর গণতন্ত্রে স্থিতিশীলতা আনতে পারে। যেমন—মধ্যপন্থী দলগুলোকে উৎসাহ দেওয়া বা সংঘাত রোধ করা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর ফল উল্টো হয়। বাংলাদেশে সবসময় একতরফা কারচুপির জন্যই এর ব্যবহার হয়েছে।

অস্বচ্ছতা বা পক্ষপাতিত্বের ধারণা তৈরি হলে জনগণের আস্থা কমে যায়। ভোটার বিভ্রান্তি, অপ্রত্যাশিত ফলাফল, কম ভোটার উপস্থিতি, প্রতিবাদ বা কখনো অভ্যুত্থান পর্যন্ত ঘটে।

শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও সতর্ক নাগরিক সমাজই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সর্বোত্তম প্রতিরোধ। তখন এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার না হয়ে ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হয়ে উঠবে।

স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় এর মাধ্যমে একদলীয় শাসনের বৈধতা নিশ্চিত করা হয়, আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটি মেরুকরণ বা রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং সচরাচর কাঙ্ক্ষিত ফল দেয় না, কারণ রাজনৈতিক দলগুলো সময়ের সঙ্গে নিজেদের কৌশল বদলে নেয়।

ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিরোধের উপায়

নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ ও নিয়ম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বাধীন কমিশন গঠন করা উচিত, যেখানে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।

নির্ভরযোগ্য ভোটগণনা প্রযুক্তি, উন্মুক্ত তথ্যভিত্তিক পুনর্নির্ধারণ ও তথ্য যাচাইকরণমূলক সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করতে হবে।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সীমানা নির্ধারণ নিষিদ্ধ করতে সাংবিধানিক সংশোধনী আনা যেতে পারে। বিশেষ করে রূপান্তরকালীন রাষ্ট্রগুলোতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ কার্যকর হতে পারে।

নির্বাচনী পদ্ধতি ও ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা চালাতে হবে। সচেতন ভোটাররা প্রতারণা ও কারচুপির সুযোগ কমিয়ে আনতে পারে।

সবশেষে বলা যায়, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও সতর্ক নাগরিক সমাজই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সর্বোত্তম প্রতিরোধ। তখন এই প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার না হয়ে ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হয়ে উঠবে।

তথ্যসূত্র: রিসার্চ গেট ডটনেট, সায়েন্টিফিক আমেরিকান, পিরিওডিকালস ডট কারাজিন ডট ইউএ, ক্যামব্রিজ ডট ওআরজি

Ad 300x250

সম্পর্কিত