leadT1ad

নরসিংদীতে ভূমিকম্প আতঙ্ক, খোলা মাঠে রাত কাটালেন হাজারো মানুষ

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
নরসিংদী

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৯
নরসিংদীতে শতশত মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে খোলা মাঠ, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঈদগাহে আশ্রয় নিয়ে কাটান। স্ট্রিম ছবি

নরসিংদীর পলাশে ভূমিকম্পের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। রোববার রাতজুড়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শতশত মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে খোলা মাঠ, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঈদগাহে আশ্রয় নিয়ে কাটান। ভূমিকম্প আবার হতে পারে—এমন গুজবে শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।

রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১২টা থেকে ভোরের মধ্যে বড় আরেকটি ভূমিকম্প হবে—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। ফলে অনেকেই ঘর ফেলে রাস্তায় নেমে যান এবং পরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।

রাত ১টার দিকে পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ ও শিশুরা কম্বল, পাটি ও বালিশ নিয়ে রাত যাপন করছেন। আমেনা বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘মানুষ বলতাছে আবার নাকি বড় ভূমিকম্প হবে। তাই ছেলেমেয়ে নিয়ে এখানে চলে আসছি।’ রিকশাচালক সিদ্দিক বলেন, ‘সবার মনে ডর। তাই চলে আইছি, যদি আবার হয়।’ দিনমজুর রহমত জানান, ‘আমাদের দেয়ালে ফাটল ধরছে। আরেকটা হলে বাঁচতাম না, তাই রাতে এখানে থাকতেছি।’

এর আগে শুক্রবার ও শনিবার টানা দুই দিন ভূমিকম্পের ধাক্কায় পলাশে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিশেষ করে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঢাকা–চট্টগ্রাম রেললাইনের ঘোড়াশাল রেলসেতুর দুই নম্বর ও তিন নম্বর পিলারে বড় ফাটল ধরে। ওই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন বহু ট্রেন চলাচল করে। এতে ট্রেনযাত্রী ও স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পিলার পরিদর্শন করেছে এবং রেল চলাচল আপাতত সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে সীমিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, পূর্বাঞ্চলীয় রেল বিভাগকে জানানো হয়েছে এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে এসে ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আবাসিক এলাকার ১১টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেগুলোতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

রবিবার গভীর রাতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিদ্যুৎ কেন্দ্রসংলগ্ন মাঠে এসে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘একটি মহল গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে অযথা আতঙ্ক তৈরি করেছে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে গুজব প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।’

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত