নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের সনিক বিডি লিমিটেড নামে একটি কারখানায় শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সমানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধরা। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের কাছে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধিদল। তবে আন্দোলন চলাকালেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে সনিক কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শুরু করে বেলা তিনটা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় শ্রমিক ছাটাই বন্ধ ও চাকরিচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকেরা।
এর আগে ২৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য তিন দিন ধরে ইপিজেডে সনিক কারখানার গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন শ্রমিকরা। এসব কর্মসূচিতে শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে বাধাসৃষ্টিকারী কারখানা কর্মকর্তাদের অপসারণ, নিয়মিত ওভারটাইমের পাওনা পরিশোধ ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়।
এদিকে আজ সকালে উত্তরা ইপিজেডের ভেতর অবস্থান নেন সনিক বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। পরে ইপিজেড থেকে একটি মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। সেখানে দাবির পক্ষে বক্তব্য দেন সনিক কারখানার শ্রমিক মোহাইমিনুল ইসলাম, রশিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, শিমু আক্তার, নাছরিন বেগম, নূর জাহানসহ কয়েকজন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, এর আগে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২৬ দফা দাবি দেওয়া হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। শ্রমিকদের সেই দাবি যৌক্তিক মনে করে মেনেও নিয়েছিল মালিকপক্ষ। কিন্তু তা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছেন কারখানার কিছু কর্মকর্তা। অকারণে শ্রমিক ছাটাই করছেন তাঁরা। ২৬ দফার মধ্যে অসুস্থতজনিত ছুটি ও ওভারটাইমের কথা উল্লেখ থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে আজ দুপুর দুইটার দিকে সনিক বিডি কোম্পানির গেটে কারখানা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে তাদের ফেসবুক পেজেও এটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, গত রোববার (১৬ নভেম্বর) থেকে আন্দোলন শুরু করে শ্রমিকরা। তাঁদের দাবি বিষয়ে সোমবার মালিক পক্ষের সিদ্ধান্ত জানিয়ে কাজ যোগ দিতে বলা হয়। তারপরও শ্রমিকরা কাজে যোগ না দেওয়ায় কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ -এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার থেকে কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, ‘সনিক বিডি কোম্পানির সিদ্ধান্তে শ্রমিক ছাঁটাই করা হলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি। তাদের ৯ দফা দাবিগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আলোচনা চলছে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’