leadT1ad

ভূমিকম্পে মৃত বেড়ে ৯, আহাজারিতে বাতাস ভারী

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

নরসিংদীতে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। স্ট্রিম ছবি

ভয়াবহ ভূমিকম্পে সারাদেশে তিন শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকশ’ মানুষ। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদীতে। গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।

মৃতদের মধ্যে পুরোনো ঢাকায় বাবা-ছেলেসহ তিন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে শিশুসহ পাঁচ ও নারায়ণগঞ্জে এক শিশু রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন।

পুরোনো ঢাকার বংশালে সাত তলা ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ে মারা যান আবদুর রহিম (৪৮), তাঁর ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২) এবং রাফিউল ইসলাম রাফি (২০) নামে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় রাফির মা নূসরাত বেগম গুরুতর আহত হয়েছেন।

ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। অনেক স্থানে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্রে আহত দুই শতাধিক।

নরসিংদীতে ভূমিকম্পে মাটি চাপা পড়ে ও দেয়াল ধসে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দেড় শতাধিক মানুষ। ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুনসহ বিভিন্ন ভবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃতরা হলেন পলাশের কাজম আলী (৭৫), নাসির উদ্দীন (৬৫), সদরের দেলোয়ার হোসেন উজ্জল (৪১) ও তাঁর ছেলে হাফেজ ওমর ফারুক (৮) এবং শিবপুরের ফোরকান হোসেন (৩৫)। তাদের মধ্যে নাসির ভূমিকম্পের সময় দৌড়ে বাড়ি ফেরার সময় স্ট্রোক করেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। আর ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে মারা যান ফোরকান।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ভবনের দেয়াল ধসে ফাতেমা নামে ১০ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে স্বজনের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

আহত কয়েকশ’, হুড়োহুড়িতে বেশি

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ৭২ জন ভর্তি হয়েছেন। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ৪০০ জন।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালে আহত ৪৫ জনের মধ্যে গুরুতর তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের তিন তলা ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের চার তলা থেকে নিচে লাফ দিয়ে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়া সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পা ভেঙেছেন ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামিম, আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

ভূমিকম্পের আতঙ্কে কুমিল্লা ইপিজেডের একটি কারখানার অন্তত ৮০ নারী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ইপিজেডের ভেতর বেপজা মেডিকেল সেন্টারে (হাসপাতালে) চিকিৎসা নেন ৫০ জন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, সবক’টি হাসপাতালে জরুরি মেডিকেল টিম দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার জন্য সব প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করার চেষ্টা চলছে।

তিনি উল্লেখ করেন, আহতদের একটি বড় অংশ ভবন ধসে নয় বরং ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কের কারণে লাফ দিয়ে অথবা হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে পড়ে আঘাত পেয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে মনিটর করছে এবং জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ভূমিকম্পে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলে ৩৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত