leadT1ad

দিল্লিতে পুতিন-মোদি শীর্ষ বৈঠক শুরু

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩১
৪ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এক অনানুষ্ঠানিক নৈশভোজে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত হন। ছবি: রয়টার্স।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে একদিনের শীর্ষ বৈঠক শুরু করেছেন। আলোচনায় বাণিজ্য বাড়ানো ও ইউক্রেন যুদ্ধ–সম্পর্কিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রধানভাবে উঠে আসবে। ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর পুতিনের এটি প্রথম ভারত সফর।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চাপ কমাতে ভারত রুশ তেল আমদানির বিষয়ে ছাড় খুঁজছে। অন্যদিকে রাশিয়া চায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও বাড়াতে। দুই দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে, যা ২০২৪ সালে ছিল ৬৮ বিলিয়ন ডলার।

মোদির ব্যক্তিগত অভ্যর্থনা দিয়ে পুতিনের সফর শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লি বিমানবন্দরে তিনি পুতিনকে আলিঙ্গন ও করমর্দনের মাধ্যমে স্বাগত জানান। পরে মোদি তার বাসভবনে পুতিনকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন। শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ পুতিনের প্রথম আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি।

এরপর তিনি মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধ রাজঘাট পরিদর্শন করবেন। পরে হায়দরাবাদ হাউসে মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, ব্যবসায়ী–নেতাদের সঙ্গে আলোচনা এবং গণমাধ্যমকে বক্তব্য দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। পুতিন স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টায় রাশিয়ায় ফেরার উদ্দেশে রওনা হবেন।

রাশিয়া ও ভারতের কৌশলগত অংশীদারত্ব ২৫ বছরের পুরোনো। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা ভারতের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যুদ্ধের পর পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেলের আমদানি কমালেও ভারত তার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্র গত আগস্টে ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ছিল রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে চাপ দেওয়া। ভারত সমালোচনা সত্ত্বেও তেল ক্রয় অব্যাহত রাখে।

নভেম্বর থেকে রুশ তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। এসব কোম্পানির তেল ভারতের মোট আমদানির প্রায় ৬০ শতাংশ। তৃতীয় দেশের কোম্পানিগুলোও এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করলে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়বে।

ভারত বলছে, তাদের অন্যায়ভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, কারণ পশ্চিমা দেশগুলোও নিজেদের স্বার্থে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করছে। দিল্লি সফরের আগে ভারতীয় সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন একই কথা বলেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কিনছে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের সে অধিকার থাকে, তবে ভারতেরও রুশ জ্বালানি কেনার একই অধিকার থাকা উচিত।

পুতিন সফরে ভারতকে আরও রুশ অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সু-৫৭ স্টেলথ যুদ্ধবিমান। ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকলেও মস্কো প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

শীর্ষ বৈঠকের আগে পুতিন মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। উভয় পক্ষই অগ্রগতির কথা বলেছে, যদিও কোনো চূড়ান্ত সমাধান হয়নি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। ভারত যুদ্ধের নিন্দায় সরাসরি অংশ নেয়নি। তারা সংলাপ ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তির আহ্বান জানাচ্ছে।

সূত্র: আল-জাজিরা

Ad 300x250

সম্পর্কিত