leadT1ad

জেন-জি বিক্ষোভের জেরে এবার নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ০২
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। ছবি: সংগৃহীত

জেন জি বিক্ষোভের জেরে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) তিনি পদত্যাগ করেন। এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর আগে বিক্ষোভের জেরে গতকাল (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও পদত্যাগ করেছিলেন।

বিট্রিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির বর্তমান সংকটের সাংবিধানিক সমাধানের পথ বের করতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। নিজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী অলি।

এর আগে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলতে থাকে। বিক্ষোভ চলাকালে অলির বাসাহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার বাসভবনেও হামলা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়ও আক্রমণের শিকার হয়েছে। কাঠমান্ডু থেকে পাওয়া ভিডিও চিত্রে ভবনের উপর ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এদিকে, দেশটির সিভিল সার্ভিস হসপিটালের নির্বাহী পরিচালক মোহন রেগমী বিবিসিকে বলেছেন, মঙ্গলবার বিক্ষোভ চলাকালে দুইজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্তত ৯০ জনকে এখন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, বিক্ষোভের জেরে অভ্যরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের দক্ষিণাঞ্চলীয় কোটেশ্বর-কান্দাগরী-বালকোট রুট প্রচন্ড ধোঁয়ায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। ফলে পাঁচটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।

নেপালের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটির মুখপাত্র জ্ঞানেন্দ্র ভুল বিবিসিকে বলেছেন, রাজধানীর বাইরের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ‘প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে’।

এদিকে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে সহিংস বিক্ষোভে কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হওয়ায় ত্রিভুন বিমানবন্দরের আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে।

এর আগে, গতকাল বিক্ষোভের প্রথমদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ বিক্ষোভকারী নিহত হন। আহত হয় শতাধিক। পরে এর জেরে সন্ধ্যায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের পর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে রাজধানী কাঠমান্ডু ও অন্যান্য শহরে কী ঘটেছে তা তদন্তে কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে এতেও বিক্ষোভকারীদের থামানো যায়নি। আজকে দ্বিতীয় দিনের মতো তারা বিক্ষোভ করতে থাকে।

উল্লেখ্য, বিনোদন, খবর ও ব্যবসার জন্য লাখ লাখ নেপালি ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন এবং এসব মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু নেপাল সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পরই হাজার হাজার তরুণ নেপালি বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশের বিভিন্ন শহরে এ বিক্ষোভ ছড়ায়। বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদের পাশাপাশি সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করেন এবং সরকারের জবাবদিহি ও সংস্কারের দাবি জানান। আন্দোলনের একপর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েন। এসময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে।

যদিও দেশটির সরকার ভুয়া খবর, ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য ও অনলাইন প্রতারণা মোকাবিলার কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপনকে সামনে এনে এবং তাদেরকে দুর্নীতির অর্থে অর্থায়নের অভিযোগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নেপো কিড’ নামে একটি প্রচারণা দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ে।

Ad 300x250

মাত্র দুইদিনের বিক্ষোভেই নেপালে সরকার পতন

‘গণছুটিতে’ ফেনীর পল্লী বিদ্যুতের ৫৪৮ কর্মচারী, ক্ষুদ্ধ গ্রাহকেরা

মলদোভার সংসদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে রাশিয়া: প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু

পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সঙ্গে জামায়াত আমিরের সৌজন্য সাক্ষাৎ

গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতার সিন্ডিকেট উৎখাতে এই আন্দোলন: নেপালি সাংবাদিক রমেশ ভুষাল

সম্পর্কিত