২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল মোট বৈশ্বিক সম্পদের ৭৫ শতাংশ। মধ্যবর্তী ৪০ শতাংশের হাতে ছিল ২৩ শতাংশ। আর বাকী ৫০ শতাংশ মানুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল মাত্র ২ শতাংশ সম্পদ। আর বিশ্বের মাত্র ০.০০১ শতাংশ বা ৬০ হাজার ধনীর হাতে বিশ্বের ৫০ শতাংশ বা ৪০০ কোটি মানুষের তিনগুন সম্পদ। ১৯৯৫ সালে তাদের দখলে ছিল বৈশ্বিক সম্পদের প্রায় ৪ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
স্ট্রিম ডেস্ক

ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২৬ এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের মোট ব্যক্তিগত সম্পদের তিন-চতুর্থাংশের মালিক শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী মানুষ। আয়ের ক্ষেত্রেও চিত্র প্রায় একই। বৈশ্বিক আয়ের শীর্ষ ৫০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের ৯০ শতাংশের বেশি পায়। বিপরীতে, বিশ্বের দরিদ্র অর্ধেক মানুষ মিলে মোট আয়ের ১০ শতাংশেরও কম পায়।
২০১৮ সাল থেকে প্রতিবেদনটি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ২০২৬ সালের প্রতিবেদনটি এমন এক সময় এসেছে, যখন বিশ্বের বহু মানুষের জীবনমান স্থবির হয়ে আছে। অন্যদিকে সম্পদ ও ক্ষমতা ক্রমশই অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে।
ধন-সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য
সর্বোচ্চ ধনী মানুষরা সবসময় সর্বোচ্চ আয়কারী নন। এতে বোঝা যায়, মানুষ যা আয় করে এবং যা মালিকানায় রাখে, এই দুইয়ের মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে।
ধন-সম্পদ বলতে বোঝায় একজন ব্যক্তির মোট সম্পদের মূল্য। এর মধ্যে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, জমি-বাড়ি বা অন্যান্য সম্পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে। মোট সম্পদ গণনায় ঋণ বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়।
২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল মোট বৈশ্বিক সম্পদের ৭৫ শতাংশ। মধ্যবর্তী ৪০ শতাংশের হাতে ছিল ২৩ শতাংশ। আর বাকী ৫০ শতাংশ মানুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল মাত্র ২ শতাংশ সম্পদ।
১৯৯০-র দশক থেকে বিলিয়নেয়ার ও শত–মিলিয়নেয়ারের সম্পদ প্রতিবছর গড়ে ৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। এটি বিশ্বের দরিদ্র অর্ধেক মানুষের সম্পদ বৃদ্ধির হারের প্রায় দ্বিগুণ।
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ মাত্র ০.০০১ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৬০ হাজার অত্যন্ত ধনী ব্যক্তি নিচের অর্ধেক মানবজাতির চেয়ে তিন গুণ বেশি সম্পদের মালিক। ১৯৯৫ সালে তাদের দখলে ছিল বৈশ্বিক সম্পদের প্রায় ৪ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
যদিও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সম্পদ কিছুটা বেড়েছে, তবুও ধনীদের দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধি সেই অগ্রগতিকে ছাপিয়ে গেছে। ফলে আজকের বিশ্বে খুব অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে বিপুল আর্থিক ক্ষমতা জমা হয়েছে, অথচ কোটি মানুষ এখনো ন্যূনতম অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে।
আয়ের বৈষম্য
আয় নির্ধারণ করা হয় কর-পূর্ব উপার্জনের ভিত্তিতে। পেনশন ও বেকারত্ব বিমা কর্তনের পর যে আয় থাকে, সেটিকেই ধরা হয় প্রকৃত আয় হিসেবে।
২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষ মোট বৈশ্বিক আয়ের ৫৩ শতাংশ পেয়েছে। মধ্যবর্তী ৪০ শতাংশ পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। সবচেয়ে দরিদ্র ৫০ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ আয়।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, যদি বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ১০ জন হয় এবং মোট আয় হয় ১০০ ডলার, তাহলে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি পাবেন ৫৩ ডলার। পরবর্তী চারজন মিলে পাবেন ৩৮ ডলার। আর বাকি পাঁচজন মিলে ভাগ করবে মাত্র ৮ ডলার।
অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য
বিশ্বের কোথায় জন্ম হয়েছে, এই বিষয়টি এখনো আয় ও সম্পদ নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে প্রতিটি অঞ্চলে ধনী ও দরিদ্র দেশ রয়েছে বলে প্রতিবেদনের তথ্য গড় হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২৫ সালে উত্তর আমেরিকা ও ওশেনিয়ার মানুষের মাথাপিছু গড় সম্পদ ছিল বৈশ্বিক গড়ের ৩৩৮ শতাংশ। তাই এটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী অঞ্চল। তাদের আয়ও বৈশ্বিক গড়ের ২৯০ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এরপর ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার অবস্থান। এ অঞ্চলের সম্পদ ও আয়ের মাত্রা বৈশ্বিক গড়ের ওপরে। কিন্তু সাব–সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বহু অঞ্চল এখনো বৈশ্বিক গড়ের অনেক নিচে রয়েছে।
বিশ্বের সামগ্রিক বৈষম্য খুবই গভীর। তবে দেশভেদে এই ব্যবধান আরও তীব্র বা তুলনামূলক কম হতে পারে। কোথাও বিতরণ কিছুটা সমান, আবার কোথাও অল্প কয়েকজনের হাতে বিপুল সম্পদ জমে আছে। এই বৈচিত্র্যই বৈশ্বিক অসমতার চিত্রকে আরও জটিল করে তুলেছে।
কোন দেশে আয়ের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি
দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বে আয়ের বৈষম্যে শীর্ষে রয়েছে। সেখানে শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের ৬৬ শতাংশ পায়। বিপরীতে, নিচের ৫০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের মাত্র ৬ শতাংশ পায়।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, যেমন ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি ও কলম্বিয়ায় একই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। এসব দেশে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ নিজেদের হাতে রাখে।
ইউরোপে তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা যায়। সুইডেন ও নরওয়েতে নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ পায়। এদিকে শীর্ষ ১০ শতাংশের আয়ের অংশ ৩০ শতাংশেরও কম।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। এসব দেশে ধনী ১০ শতাংশ মোট আয়ের প্রায় ৩৩–৪৭ শতাংশ পায়। নিচের ৫০ শতাংশের অংশ মাত্র ১৬-২১ শতাংশের মধ্যে সীমিত।
এশিয়ায় আয় বৈষম্যের ধরন বৈচিত্র্যময়। বাংলাদেশ ও চীনে আয় বণ্টন তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ। তবে ভারত, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের অর্ধেকেরও বেশি পায়।
কোন দেশে সম্পদের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি?
সম্পদ বৈষম্যের ক্ষেত্রেও দক্ষিণ আফ্রিকা শীর্ষে রয়েছে। সেখানে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ব্যক্তিগত সম্পদের ৮৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর সম্পদের শেয়ার নেতিবাচক, অর্থাৎ তাদের ঋণ সম্পদের চেয়ে বেশি।
রাশিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল ও কলম্বিয়াতেও একই চিত্র পাওয়া যায়। এসব দেশে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের ৭০ শতাংশ বা তারও বেশি দখলে রাখে। আর দরিদ্র জনগোষ্ঠী মাত্র ২–৩ শতাংশ সম্পদের মালিক।
ইউরোপের ইতালি, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসে তুলনামূলকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বণ্টন দেখা যায়। এসব দেশে মধ্যবিত্ত ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের প্রায় ৪৫ শতাংশ ধরে রাখে, এবং নিচের ৫০ শতাংশের অংশও তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি। তবে শীর্ষ শ্রেণি এখনো প্রধান নিয়ন্ত্রক। উল্লেখযোগ্যভাবে, সুইডেন ও পোল্যান্ডে নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর সম্পদ শেয়ার নেতিবাচক, তাদেরও ঋণ সম্পদের চেয়ে বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মতো ধনী দেশেও সম্পদ বণ্টন সমান নয়। শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করে। বিপরীতে নিচের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর শেয়ার মাত্র ১-৫ শতাংশ।
চীন, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিতেও বৈষম্য স্পষ্ট। এসব দেশে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের প্রায় ৬৫-৬৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এ থেকে দেখা যায় যে সম্পদ এখনও অল্পসংখ্যক মানুষের হাতেই কেন্দ্রীভূত।
সূত্র: আল-জাজিরা

ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট ২০২৬ এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের মোট ব্যক্তিগত সম্পদের তিন-চতুর্থাংশের মালিক শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী মানুষ। আয়ের ক্ষেত্রেও চিত্র প্রায় একই। বৈশ্বিক আয়ের শীর্ষ ৫০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের ৯০ শতাংশের বেশি পায়। বিপরীতে, বিশ্বের দরিদ্র অর্ধেক মানুষ মিলে মোট আয়ের ১০ শতাংশেরও কম পায়।
২০১৮ সাল থেকে প্রতিবেদনটি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ২০২৬ সালের প্রতিবেদনটি এমন এক সময় এসেছে, যখন বিশ্বের বহু মানুষের জীবনমান স্থবির হয়ে আছে। অন্যদিকে সম্পদ ও ক্ষমতা ক্রমশই অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে।
ধন-সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য
সর্বোচ্চ ধনী মানুষরা সবসময় সর্বোচ্চ আয়কারী নন। এতে বোঝা যায়, মানুষ যা আয় করে এবং যা মালিকানায় রাখে, এই দুইয়ের মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে।
ধন-সম্পদ বলতে বোঝায় একজন ব্যক্তির মোট সম্পদের মূল্য। এর মধ্যে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, জমি-বাড়ি বা অন্যান্য সম্পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে। মোট সম্পদ গণনায় ঋণ বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়।
২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল মোট বৈশ্বিক সম্পদের ৭৫ শতাংশ। মধ্যবর্তী ৪০ শতাংশের হাতে ছিল ২৩ শতাংশ। আর বাকী ৫০ শতাংশ মানুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল মাত্র ২ শতাংশ সম্পদ।
১৯৯০-র দশক থেকে বিলিয়নেয়ার ও শত–মিলিয়নেয়ারের সম্পদ প্রতিবছর গড়ে ৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। এটি বিশ্বের দরিদ্র অর্ধেক মানুষের সম্পদ বৃদ্ধির হারের প্রায় দ্বিগুণ।
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ মাত্র ০.০০১ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৬০ হাজার অত্যন্ত ধনী ব্যক্তি নিচের অর্ধেক মানবজাতির চেয়ে তিন গুণ বেশি সম্পদের মালিক। ১৯৯৫ সালে তাদের দখলে ছিল বৈশ্বিক সম্পদের প্রায় ৪ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
যদিও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সম্পদ কিছুটা বেড়েছে, তবুও ধনীদের দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধি সেই অগ্রগতিকে ছাপিয়ে গেছে। ফলে আজকের বিশ্বে খুব অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে বিপুল আর্থিক ক্ষমতা জমা হয়েছে, অথচ কোটি মানুষ এখনো ন্যূনতম অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে।
আয়ের বৈষম্য
আয় নির্ধারণ করা হয় কর-পূর্ব উপার্জনের ভিত্তিতে। পেনশন ও বেকারত্ব বিমা কর্তনের পর যে আয় থাকে, সেটিকেই ধরা হয় প্রকৃত আয় হিসেবে।
২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষ মোট বৈশ্বিক আয়ের ৫৩ শতাংশ পেয়েছে। মধ্যবর্তী ৪০ শতাংশ পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। সবচেয়ে দরিদ্র ৫০ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ আয়।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, যদি বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ১০ জন হয় এবং মোট আয় হয় ১০০ ডলার, তাহলে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি পাবেন ৫৩ ডলার। পরবর্তী চারজন মিলে পাবেন ৩৮ ডলার। আর বাকি পাঁচজন মিলে ভাগ করবে মাত্র ৮ ডলার।
অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য
বিশ্বের কোথায় জন্ম হয়েছে, এই বিষয়টি এখনো আয় ও সম্পদ নির্ধারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে প্রতিটি অঞ্চলে ধনী ও দরিদ্র দেশ রয়েছে বলে প্রতিবেদনের তথ্য গড় হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২৫ সালে উত্তর আমেরিকা ও ওশেনিয়ার মানুষের মাথাপিছু গড় সম্পদ ছিল বৈশ্বিক গড়ের ৩৩৮ শতাংশ। তাই এটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী অঞ্চল। তাদের আয়ও বৈশ্বিক গড়ের ২৯০ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এরপর ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার অবস্থান। এ অঞ্চলের সম্পদ ও আয়ের মাত্রা বৈশ্বিক গড়ের ওপরে। কিন্তু সাব–সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বহু অঞ্চল এখনো বৈশ্বিক গড়ের অনেক নিচে রয়েছে।
বিশ্বের সামগ্রিক বৈষম্য খুবই গভীর। তবে দেশভেদে এই ব্যবধান আরও তীব্র বা তুলনামূলক কম হতে পারে। কোথাও বিতরণ কিছুটা সমান, আবার কোথাও অল্প কয়েকজনের হাতে বিপুল সম্পদ জমে আছে। এই বৈচিত্র্যই বৈশ্বিক অসমতার চিত্রকে আরও জটিল করে তুলেছে।
কোন দেশে আয়ের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি
দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বে আয়ের বৈষম্যে শীর্ষে রয়েছে। সেখানে শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের ৬৬ শতাংশ পায়। বিপরীতে, নিচের ৫০ শতাংশ মানুষ মোট আয়ের মাত্র ৬ শতাংশ পায়।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, যেমন ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি ও কলম্বিয়ায় একই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। এসব দেশে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ নিজেদের হাতে রাখে।
ইউরোপে তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা যায়। সুইডেন ও নরওয়েতে নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ পায়। এদিকে শীর্ষ ১০ শতাংশের আয়ের অংশ ৩০ শতাংশেরও কম।
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, জাপান ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। এসব দেশে ধনী ১০ শতাংশ মোট আয়ের প্রায় ৩৩–৪৭ শতাংশ পায়। নিচের ৫০ শতাংশের অংশ মাত্র ১৬-২১ শতাংশের মধ্যে সীমিত।
এশিয়ায় আয় বৈষম্যের ধরন বৈচিত্র্যময়। বাংলাদেশ ও চীনে আয় বণ্টন তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ। তবে ভারত, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট আয়ের অর্ধেকেরও বেশি পায়।
কোন দেশে সম্পদের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি?
সম্পদ বৈষম্যের ক্ষেত্রেও দক্ষিণ আফ্রিকা শীর্ষে রয়েছে। সেখানে ধনী ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ব্যক্তিগত সম্পদের ৮৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর সম্পদের শেয়ার নেতিবাচক, অর্থাৎ তাদের ঋণ সম্পদের চেয়ে বেশি।
রাশিয়া, মেক্সিকো, ব্রাজিল ও কলম্বিয়াতেও একই চিত্র পাওয়া যায়। এসব দেশে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের ৭০ শতাংশ বা তারও বেশি দখলে রাখে। আর দরিদ্র জনগোষ্ঠী মাত্র ২–৩ শতাংশ সম্পদের মালিক।
ইউরোপের ইতালি, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসে তুলনামূলকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বণ্টন দেখা যায়। এসব দেশে মধ্যবিত্ত ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের প্রায় ৪৫ শতাংশ ধরে রাখে, এবং নিচের ৫০ শতাংশের অংশও তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি। তবে শীর্ষ শ্রেণি এখনো প্রধান নিয়ন্ত্রক। উল্লেখযোগ্যভাবে, সুইডেন ও পোল্যান্ডে নিচের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর সম্পদ শেয়ার নেতিবাচক, তাদেরও ঋণ সম্পদের চেয়ে বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মতো ধনী দেশেও সম্পদ বণ্টন সমান নয়। শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করে। বিপরীতে নিচের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর শেয়ার মাত্র ১-৫ শতাংশ।
চীন, ভারত ও থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিতেও বৈষম্য স্পষ্ট। এসব দেশে শীর্ষ ১০ শতাংশ জনগোষ্ঠী মোট সম্পদের প্রায় ৬৫-৬৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এ থেকে দেখা যায় যে সম্পদ এখনও অল্পসংখ্যক মানুষের হাতেই কেন্দ্রীভূত।
সূত্র: আল-জাজিরা

বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে কোভিড-১৯ টিকার সঙ্গে সম্ভাব্য মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক আছে কি না খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রের স্থাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। কোভিড টিকার স্বাস্থ্য সুরক্ষার পর্যালোচনার অংশ হিসেবে এটি করা হচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরভাবে এগোতে পারছে না বলে জানিয়েছে হামাস। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৭৭ জন নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরা।
১৬ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সাংবাদিক হত্যায় শীর্ষে আছে ইসরারেল। এর মধ্য দিয়ে টানা তিন বছর সাংবাদিক হত্যায় শীর্ষে আছে দেশটি। আর এই সাংবাদিকদের প্রায় অর্ধেক হত্যা করা হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজায়।
১ দিন আগে
ভারতের ওড়িশার মালকানগিরি জেলায় অবস্থিত একটি বাঙালি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে সশস্ত্র আদিবাসীরা। গতকাল সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে এই ঘটনা ঘটে। এসময় আদিবাসীরা বাঙালিদের ওপরও আক্রমণ চালায়।
১ দিন আগে