leadT1ad

একটি বাদে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সব নৌযান আটক

স্ট্রিম ডেস্ক
একটি জাহাজকে আটক করছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। ছবি: আল জাজিরা।

ইসরায়েলি নৌবাহিনী গাজাগামী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র প্রায় সব নৌযান আটক করেছে। এ বহরে ছিল ৪০টিরও বেশি বেসামরিক নৌযান। এগুলোতে গাজার জন্য মানবিক সহায়তা এবং ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ অ্যাকটিভিস্ট ছিলেন।

তাদের উদ্দেশ্য ছিল গাজার ওপর ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙা। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কেবল একটি নৌকা আটক এড়াতে সক্ষম হয়।

ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার রাতে অভিযান শুরু করে। গাজা উপকূল থেকে প্রায় ১২৯ কিলোমিটার দূরে যুদ্ধজাহাজ দিয়ে বহরের নৌকা থামানো হয়। সেসময় ১৩টি জাহাজ আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার প্রায় ২৫টি জাহাজ গাজার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যায়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, সব নৌযান আটক করা হয়েছে এবং কেবল একটি বাকি রয়েছে।

ফ্লোটিলা ট্র্যাকাররা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় মোট নৌযান ছিল ৪৪টি।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আটক যাত্রীরা ‘নিরাপদ ও সুস্থ’ আছেন। প্রথম দলটিকে বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ আশদোদ বন্দরে নেওয়া হয়। পরে তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।

বৃহস্পতিবার ভোরে ‘মিকেনো’ নামের একটি নৌযান ফিলিস্তিনি জলসীমায় প্রবেশ করে। এটি আটক এড়িয়ে যায় এবং আংশিক সফলতা অর্জন করে। তবে পরে সম্ভবত সেটিকেও আটক করা হয়।

এই আটক অভিযান দ্রুত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তাদের নাগরিকদের মুক্তির দাবি জানায়। ফ্রান্স ও ইতালি আটক যাত্রীদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করছে।

হামাস বিশ্ববাসীকে এ ঘটনার নিন্দা জানানোর আহ্বান জানায়।

অন্যদিকে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন অভিযানের পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি বলেন, এটি একটি ‘বৈধ নৌ অবরোধ’, যা কার্যকর করা হয়েছে সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ফ্লোটিলার আয়োজকদের সঙ্গে হামাসের যোগসাজশ রয়েছে।

ঘটনাটি আবারও গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিয়ে বিতর্ককে আলোচনায় এনেছে। ইসরায়েল বলছে, মানবিক সহায়তা তাদের অনুমোদিত পথেই আসতে হবে। সমালোচকরা বলছেন, এই অবরোধ গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়াচ্ছে।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তিউনিসিয়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। এর আগে গত ৩১ আগস্ট বহরটি স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ছেড়ে আসে। পরে ৭ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ার সিদি বু সাঈদ বন্দরে থামে। সেখান থেকে নেলসন ম্যান্ডেলার পরিবার-সন্তানরাও এতে যুক্ত হন।

বহরটির লক্ষ্য ছিলো গাজায় খাদ্যসঙ্কটে ভোগা মানুষের জন্য জরুরি সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া। বর্তমানে সেখানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষে রয়েছেন।

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বহরটিতে ইতালির ওত্রান্তোসহ ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন বন্দর থেকে আরও অনেকে যোগে দেয়। এতে খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রসহ জরুরি সহায়তা পাঠানো হচ্ছিল।

আয়োজক গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এই উদ্যোগের নাম দেয় ‘সুমুদ’। আরবি এই শব্দের অর্থ হলো অটলতা বা প্রতিরোধ। তারা জানান, এটি ছিল অহিংস উদ্যোগ, যার উদ্দেশ্য গাজার মানবিক সঙ্কটকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা।

বহরে অংশ নেয় ৪৪ দেশের নাগরিক, যার মধ্যে মার্কিন নাগরিক, ইউরোপীয় সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা ছিলেন। সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং বাংলাদেশের আলোকচিত্র শিল্পী শহীদুল আলমও আছেন। সম্ভবত সকলকেই ইসরায়েল আটক করেছে।

সূত্র: সিএনএন, আল-জাজিরা

Ad 300x250

সম্পর্কিত