দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত এই নারী দেশটির তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন সততা ও আস্থার প্রতীক এবং স্থিতিশীলতার আশ্বাস। কিন্তু কে এই সুশীলা কার্কি এবং কেন এই সংকটময় মুহূর্তে নেপালের ভবিষ্যৎ তাঁর হাতেই তুলে দিতে চাইছে দেশটির তরুণরা?
তাহমীদ চৌধুরী
কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের পর নেপালের বিক্ষুব্ধ তরুণরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাবেক বিচারপতি সুশিলা কার্কিকে। দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত এই নারী দেশটির তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন সততা ও আস্থার প্রতীক এবং স্থিতিশীলতার আশ্বাস। কিন্তু কে এই সুশীলা কার্কি এবং কেন এই সংকটময় মুহূর্তে নেপালের ভবিষ্যৎ তাঁর হাতেই তুলে দিতে চাইছে দেশটির তরুণরা?
শৈশব ও শিক্ষাজীবন
নেপালের বিরাটনগরের এক সাধারণ কৃষক পরিবারে ১৯৫২ সালের ৭ জুন সুশীলা কার্কির জন্ম। সেই সময়ের নেপালি সমাজে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা একপ্রকার স্বপ্নই ছিল। কিন্তু সুশীলা ছিলেন ব্যতিক্রম। অদম্য ইচ্ছা আর মেধার জোরে তিনি প্রথাগত বাধা অতিক্রম করেন। নেপালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ভারতে আসেন এবং বিখ্যাত বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আইন পেশা থেকে শীর্ষ বিচারালয়ে
কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন শিক্ষকতা করলেও তাঁর লক্ষ্য ছিল বৃহত্তর পরিসরে দেশের সেবা করা। তাই তিনি আইন পেশায় প্রবেশ করেন এবং দ্রুতই একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ধাপে ধাপে নিজের যোগ্যতা ও সততার প্রমাণ দিয়ে তিনি নেপালের বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি ইতিহাস গড়েন।
ঐতিহাসিক রায় ও আপোসহীন মনোভাব
প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুশীলা কার্কির সময়কাল পরিচিত তাঁর আপোসহীন মনোভাবের জন্য। তিনি ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালাতে পিছপা হননি। ফলে তাঁর সময়ে বিচার বিভাগ হয়ে উঠেছিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্নীতি দমন সংস্থা। দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাতেও তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখেন। তাঁর দেওয়া একটি যুগান্তকারী রায় নেপালি নারীদের গর্ভজাত সন্তানদের দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। নারী অধিকার আন্দোলনের একটি মাইলফলক অর্জন ছিল এটি। তাঁর প্রতিটি কাজের মধ্য দিয়ে তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন যে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ বা আইনসভার অধীনস্থ নয়। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি সরকারের অনেক সিদ্ধান্তকেও অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
অভিশংসন বিতর্ক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা
সুশীলা কার্কির এই আপসহীনতাই তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। ২০১৭ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনে। প্রস্তাবে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সমাজ এই অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখে। দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতাসীন দল প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। এ ঘটনা তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভয় পায় এমন একজন নির্ভীক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
তরুণদের আস্থার প্রতীক হলেন কীভাবে
নেপালের তরুণ প্রজন্ম প্রচলিত রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ওপর সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস হারিয়েছে। তাঁদের চোখে রাজনৈতিক দলের নেতারা দুর্নীতি এবং অযোগ্যতার প্রতীক। এই শূন্যস্থানে সুশীলা কার্কির উত্থান আকস্মিক নয়। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব— এসব বৈশিষ্ট্য তাঁকে তরুণদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। আর তাছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত নন তিনি। তাই তরুণরা মনে করে, তিনিই পারবেন নিরপেক্ষভাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনা করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করতে।
কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের পর নেপালের বিক্ষুব্ধ তরুণরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাবেক বিচারপতি সুশিলা কার্কিকে। দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত এই নারী দেশটির তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন সততা ও আস্থার প্রতীক এবং স্থিতিশীলতার আশ্বাস। কিন্তু কে এই সুশীলা কার্কি এবং কেন এই সংকটময় মুহূর্তে নেপালের ভবিষ্যৎ তাঁর হাতেই তুলে দিতে চাইছে দেশটির তরুণরা?
শৈশব ও শিক্ষাজীবন
নেপালের বিরাটনগরের এক সাধারণ কৃষক পরিবারে ১৯৫২ সালের ৭ জুন সুশীলা কার্কির জন্ম। সেই সময়ের নেপালি সমাজে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা একপ্রকার স্বপ্নই ছিল। কিন্তু সুশীলা ছিলেন ব্যতিক্রম। অদম্য ইচ্ছা আর মেধার জোরে তিনি প্রথাগত বাধা অতিক্রম করেন। নেপালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ভারতে আসেন এবং বিখ্যাত বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আইন পেশা থেকে শীর্ষ বিচারালয়ে
কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন শিক্ষকতা করলেও তাঁর লক্ষ্য ছিল বৃহত্তর পরিসরে দেশের সেবা করা। তাই তিনি আইন পেশায় প্রবেশ করেন এবং দ্রুতই একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ধাপে ধাপে নিজের যোগ্যতা ও সততার প্রমাণ দিয়ে তিনি নেপালের বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি ইতিহাস গড়েন।
ঐতিহাসিক রায় ও আপোসহীন মনোভাব
প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুশীলা কার্কির সময়কাল পরিচিত তাঁর আপোসহীন মনোভাবের জন্য। তিনি ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালাতে পিছপা হননি। ফলে তাঁর সময়ে বিচার বিভাগ হয়ে উঠেছিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্নীতি দমন সংস্থা। দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাতেও তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখেন। তাঁর দেওয়া একটি যুগান্তকারী রায় নেপালি নারীদের গর্ভজাত সন্তানদের দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। নারী অধিকার আন্দোলনের একটি মাইলফলক অর্জন ছিল এটি। তাঁর প্রতিটি কাজের মধ্য দিয়ে তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন যে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ বা আইনসভার অধীনস্থ নয়। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি সরকারের অনেক সিদ্ধান্তকেও অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
অভিশংসন বিতর্ক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা
সুশীলা কার্কির এই আপসহীনতাই তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। ২০১৭ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনে। প্রস্তাবে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ ও নাগরিক সমাজ এই অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখে। দেশজুড়ে তীব্র প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতাসীন দল প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। এ ঘটনা তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভয় পায় এমন একজন নির্ভীক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
তরুণদের আস্থার প্রতীক হলেন কীভাবে
নেপালের তরুণ প্রজন্ম প্রচলিত রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ওপর সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস হারিয়েছে। তাঁদের চোখে রাজনৈতিক দলের নেতারা দুর্নীতি এবং অযোগ্যতার প্রতীক। এই শূন্যস্থানে সুশীলা কার্কির উত্থান আকস্মিক নয়। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব— এসব বৈশিষ্ট্য তাঁকে তরুণদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। আর তাছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত নন তিনি। তাই তরুণরা মনে করে, তিনিই পারবেন নিরপেক্ষভাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনা করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করতে।
সুপ্রিম কোর্ট বলসোনারোর আরও সাত সহযোগীকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁদের মধ্যে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়াল্টার ব্রাগা নেটো ও পাওলো সার্জিও নোগুইরা রয়েছেন। এ ছাড়াও বলসোনারোর সাবেক সহকারী মাউরো সিড, সামরিক উপদেষ্টা অগাস্টো হেলেনো রিবেইরো, সাবেক বিচারমন্ত্রী অ্যান্ডারসন টরেস, সাবেক নৌপ্রধান আলমির গার্নিয
৪ ঘণ্টা আগেবিশ্বে প্রথমবারের মতো আলবেনিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি ঠেকোতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এদি রামা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগেনেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক বিচারপতি সুশিলা কারকি নিয়োগ পাচ্ছেন। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সরকারপ্রধান হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৮ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা সংসদে হামলা চালায়, বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়। কাঠমান্ডুর এই দৃশ্য অনেককেই গত বছর বাংলাদেশে এবং ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অস্থির পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগে