leadT1ad

পুলিশের ছোড়া গুলি আমার ছেলের মাথায় লেগে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়: আদালতে সাক্ষী

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ১১
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সংগৃহীত ছবি

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি এবং দুজনকে হত্যার মামলায় প্রসিকিউশনের দ্বিতীয় সাক্ষী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ৬ বছরের ছেলে মুসা জুলাই বিপ্লবে আহত হয়। পুলিশের গুলিতে শিশুটির খুলি উড়ে যায়। এরপর সেই গুলি গিয়ে লাগে তার দাদির গায়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দাদি মারা যান। আর আহত মুসার ডানপাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। সে কথা বলতে পারে না। চলাফেরা করতে পারে না। তাকে নাক দিয়ে খাবার গ্রহণ করতে হয়। তাকে ট্রাইব্যুনালে এনে মাথায় গুলির ক্ষতচিহ্ন এবং চিকিৎসার সরঞ্জামাদি দেখানো হয়।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই বিকালে আমার ছেলে মো. বাসিত খান মুসা আইসক্রিম খেতে চায়। আমি আমার মা ও ছেলেকে নিয়ে বাসার নিচে নামি। গেটের বাইরে থেকে পুলিশের ছোঁড়া একটি গুলি আমার ছেলের মাথায় লেগে মাথা ভেদ করে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আমি আমার ছেলেকে কোলে করে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাই।

সাক্ষী বলেন, আমার বাসা থেকে আনুমানিক ৭০ ফুট দূরে রামপুরা থানা ভবন অবস্থিত। আমি আমার বাসার গেট থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম, ওই থানার ওসি মশিউর রহমানসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সরাসরি গুলি করছিল। হাসপাতালের ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে আমি তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে পৌঁছাই।

এরপর আমার এক প্রতিবেশী জানান যে, আমার ছেলের মাথায় যে গুলিটি লেগেছিল, সেটি আমার ছেলের মাথা ভেদ করে আমার মায়ের পেটে লেগেছে। তারা আমার মাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

সাক্ষী জানান, পরে তার মা মারা যান। এ সময় সাক্ষী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমার মায়ের লাশ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন আমার ছেলে আইসিইউতে ছিল। আমার বাবা লাশ নিয়ে টাংগাইলের মির্জাপুর থানায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন। আমার ছেলে আইসিউতে থাকায় আমি আমার মায়ের লাশের সাথে যেতে পারিনি।

আমার ছেলে গত বছরের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এরপর তাকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সে গত বছরের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত আইসিইউতে ভর্তি ছিল। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ছেলেকে সিংগাপুরে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। তার চিকিৎসার সব খরচ সরকার বহন করেছে।

সাক্ষী বলেন, আমার ছেলে এনজিটিউবের মাধ্যমে নাক দিয়ে খাবার গ্রহণ করে। আমার ছেলের ডানদিক এখন প্যারালাইজড। সে কথাও বলতে পারে না। চলাফেরাও করতে পারে না।
আমি রামপুরা থানার ওসিকে সরাসরি অস্ত্র হাতে গুলি করতে দেখেছি। সেখানে আরও অনেক পুলিশ ছিল। পরবর্তীতে জানতে পেরেছি সেখানে চঞ্চল নামে একজন পুলিশ ছিল। আমার মায়ের হত্যা এবং আমার সন্তানের এই অবস্থা করার জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার চাই।

Ad 300x250

সম্পর্কিত