সালেহ ফুয়াদ
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান চল্লিশ বছর পূর্ণ করেছেন গত ৩১ আগস্ট। সৌদি আরবের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৯ বছর। এ হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানের জীবনের অর্ধেক সময় এখনো বাকি। এই বয়সেই তিনি পরিণত হয়েছেন সৌদি আরবের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে। বলা ভালো, মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ প্রভাবশালী নেতা তিনি।
২০১৭ সালে যুবরাজের পদে অধিষ্ঠিত হন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি এমবিএস নামেই বেশি পরিচিত। পরবর্তী বাদশাহ হওয়ার দৌড়েও সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। তাঁর পিতা সালমান রাষ্ট্রপ্রধান হলেও কার্যত সৌদি আরবের নিরাপত্তা, তেল, অর্থনীতি—সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এমবিএসের হাতেই। এই নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে রাজপুত্রদের বন্দি করা থেকে, সাংবাদিক হত্যা, বাদশাহকে আত্মীয়দের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখাসহ আলোচিত-সমালোচিত অনেক কাজ করে চলেছেন তিনি।
অন্যদিকে ইসলামের জন্মভূমি সৌদি আরবের বহু দিনের প্রথা ও ঐতিহ্য বদলে দিচ্ছেন। খেলাধুলা ও পশ্চিমা সংস্কৃতির আমদানিসহ অবিশ্বাস্য পরিবর্তন আনছেন দেশটিতে। সৌদি সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হওয়ার আগে যার নামটিও সৌদি আরবের সব মানুষ জানতে না তিনি কী করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রায় সর্বেসর্বা ব্যক্তিতে পরিণত হলেন, এ লেখায় থাকলো তার হদিস। তাঁর উত্থানের গল্পটি আরব্য রজনীর গল্পের মতোই চমকপ্রদ।
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি। সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ হাসপাতালে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। তাঁর সৎভাই সালমান বিন আবদুল আজিজ সিংহাসনে বসার অপেক্ষা করছেন। এই সময়ে সামনে আসে সালমানের পুত্র মোহাম্মদের ক্ষমতা দখলের নিখুঁত পরিকল্পনা। মাত্র ২৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন সালমান, সংক্ষেপে এমবিএস নামে পরবর্তীতে যিনি ব্যাপক পরিচিতি পান, বলতে গেলে তখনই মানুষের সামনে আসতে থাকেন।
এমবিএসের শঙ্কা ছিল, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজপরিবারের ভেতরের সদস্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। তাই এক রাতে জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরিকে নিজের প্রাসাদে ডেকে আনেন তাঁর আনুগত্য নিশ্চিত করতে। জাবরিকে বলা হয়, নিজের মোবাইল বাইরে রেখে আসতে। এমবিএস নিজেও তা-ই করেন। এরপর তাওরা দুজনে একান্তে বসেন।
কথা ছিল বৈঠকটি আধঘণ্টার বেশি হবে না। এমবিএস তা টেনে প্রায় তিন ঘণ্টা দীর্ঘ করেন। বৈঠক শেষে বাইরে বের হয়ে জাবরি দেখেন তাঁর ফোনে সরকারি সহকর্মীদের বহু মিসড কল জমে আছে। দীর্ঘক্ষণ অনুপস্থিত থাকায় জাবরির সহকর্মীরা তাঁর জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
সেই বৈঠক প্রসঙ্গে বিবিসিকে সাদ আল-জাবরি জানান, সেদিন আলোচনা করতে করতে এমবিএস তাঁকে জানাতে থাকেন কীভাবে তিনি তাঁর দেশকে বিশ্বমঞ্চে ‘যথাযথ মর্যাদায়’ ফিরিয়ে নিতে চান। কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি আরামকোর শেয়ার বিক্রি করে তিনি অর্থনীতিকে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্ত করবেন। ট্যাক্সি কোম্পানি উবারসহ সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলোতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে সৌদি নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের স্বাধীনতা দিয়ে প্রায় ৬০ লাখ নতুন চাকরি কীভাবে তৈরি করতে চান।
এমবিএসের পরিকল্পনা শুনে হতবাক জাবরি তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার সীমা কোথায়? জবাবে এমবিএস বলেন, ‘আপনি কি আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট-এর নাম শুনেছেন?’ এরপর এই আলাপ থামিয়ে দেন আল-জাবরি।
২০১৫ সালের শুরুতে মারা যান ৯০ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ। নতুন বাদশাহ হন সালমান বিন আবদুল আজিজ। ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তিনি মুকরিন বিন আবদুল আজিজের নাম ঘোষণা করেন। ৬৮ বছর বয়সী মুকরিন ইতিমধ্যে বাদশাহ আবদুল্লাহর উপদেষ্টা, বিশেষ দূত, সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক, উপপ্রধানমন্ত্রী ও উপযুবরাজের দায়িত্ব পালন করে আসা রাজপরিবারের অভিজ্ঞ সদস্য। কিন্তু মাত্র তিন মাস পরেই ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে মুকরিনকে বরখাস্ত করা হয়।
মুকরিনের জায়গায় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ক্রাউন প্রিন্স বানান তাঁরই ভাইয়ের ছেলে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। একই সময়ে এমবিএসকে বানানো হয় ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স। ওই সময় এমবিএসকে খুব বেশি মানুষ চিনত না। অন্যদিকে বিন নায়েফ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে এসেছেন ইতিমধ্যে। সন্ত্রাসবিরোধী কাযক্রমের সাফল্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত ছিলেন। অন্তত চারবার সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টার মুখে পড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছেন। তিনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এতটাই কাছের লোক ছিলেন যে তাঁকে পুরস্কৃতও করেছিল তারা। অন্যদিকে এমবিএস তখনো এতটাই অল্পবয়সী ও অনালোচিত ছিলেন যে তাঁর ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা গোয়েন্দাদেরও ধারণা ছিল না। সেই এমবিএসই ৫৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ বিন নায়েফকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করলেন। খুব দ্রুত তাঁদের বিরোধ সামনে চলে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ট যে বিন নায়েফ বাদশাহ হওয়ার দৌড়ে সবার সামনে ছিলেন, তাঁকে কয়েদি বানিয়ে ফেলেন এমবিএস।
ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার দুই বছর পর ২০১৭ সালের ২০ জুন মোহাম্মদ বিন নায়েফের ডাক পড়ে মক্কার রাজপ্রাসাদে। আগে থেকেই প্রাসাদের সব নিরাপত্তারক্ষীদের ভালো করে তল্লাশি চালিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। বিন নায়েফ সেখানে পৌঁছলে তাঁর মোবাইলও জব্দ করা হয়। এ কাজটি করেন এমবিএসের নির্দিষ্ট নিরাপত্তারক্ষীরা।
এরপর বিন নায়েফকে নিয়ে যাওয়া হয় এমবিএসের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা তুর্কি বিন আবদুল মোহসেন আল-শেখের কক্ষে। এই তুর্কি আল–শেখ এমবিএসের সমবয়সী। নিরাপত্তা বিজ্ঞানের স্নাতক তুর্কি আল-শেখ অপরাধবিদ্যা, তদন্ত, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি। এমবিএস যে এখন ক্রীড়া, চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দিয়ে পুরোনো সৌদি আরবকে বদলে দিতে চলেছেন এর পেছনের কারিগর এই তুর্কি আল–শেখ। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের ‘জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটি’র প্রধান।
সেই কক্ষে নায়েফকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তাঁকে যুবরাজের পদ ছাড়তে চাপ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁকে এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করতে বলা হয়। স্বাভাবিকভাবেই নায়েফ পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু শেষ পযন্ত তুর্কি আল–শেখের অপরাধবিদ্যার সামনে বিন নায়েফ নতি শিকার করতে বাধ্য হন।
পরবর্তীতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান রাজপ্রাসাদের সূত্রে প্রকাশ করে, ওই রাতে বিন নায়েফ পদত্যাগ করবেন না জানানোর পর তাঁকে বলা হয়, তিনি পদত্যাগ না করলে তাঁর পরিবারের নারীদের ধর্ষণ করা হবে। তাঁকে আরও বলা হয়, পদত্যাগ না করলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিন নায়েফ ভয় পেয়ে যান, হাসপাতালে নিয়ে তাঁর শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগী বিন নায়েফের এতটাই ভয়ে পেয়েছিলেন যে আটকাবস্থায় পানি খেতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বিন নায়েফ পদত্যাগে রাজি হন। ততক্ষণে রাতের আঁধার কেটে গেছে। ভোরে তাঁকে পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। সঙ্গে ছিল টেলিভিশনের ভারী ক্যামেরা আর সশস্ত্র দেহরক্ষী। উদ্বিগ্ন ও ক্লান্ত বিন নায়েফ ক্যামেরার সামনে এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গুরুত্ব দিয়ে সেটি পরে প্রচার করা হয়।
আটকাবস্থায় বিন নায়েফ ‘অ্যালিজান্স কাউন্সিলের’ দুই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। রাজপরিবারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই কাউন্সিল কে বাদশাহ হবেন না হবেন সেটা ঠিক করে দেয়। বিন নায়েফ বুঝতে পারেন, ওই দুই সদস্যও এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বিন নায়েফ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাঁর উপদেষ্টাকে একটি খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমি যখন আনুগত্য স্বীকার করি, তখন আমার পেছনে বন্দুক তাক করা ছিল।’
বিন নায়েফ সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সাদ আল-জাবরি, যার আনুগত্য আগেই নিয়ে রেখেছিলেন এমবিএস। তবে এ কথা অজানা ছিল বিন নায়েফের। বিন নায়েফ তাঁর আমলে রাজপরিবারের বাইরে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বানিয়ে রেখেছিলেন সাদ আল-জাবরিকে। তাঁকেই খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি।
২০১৭ সালের ২১ জুন বিন নায়েফকে যুবরাজের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে রাজকীয় ফরমান জারি করে তাকে সব পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তাঁর স্থলে মুহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ মনোনীত করা হয়। এমবিএস এখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি আল সৌদ রাজদরবারের প্রধান এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নবিষয়ক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। বাদশাহ সালমানের পরেই তার ক্ষমতা বিবেচনা করা হয়। বয়স ও অসুস্থতার কারণে বাদশাহ সালমান কার্যত এমবিএসের ওপরেই নির্ভরশীল।
দায়িত্ব পাওয়ার পর মোহাম্মদ বিন সালমান রাজপরিবার থেকে পিতা সালমান বিন আবদুল আজিজকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই দিনগুলোতে এমনকি বাদশাহকে তাঁর স্ত্রী—অর্থাৎ মোহাম্মদ বিন সালমানের মা—এর সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হতো না।
লেখক ডেভিড ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান কার্যত তার মা ও দুই বোনকে গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর বাবাকে কিছুই জানতে দেননি তিনি। যখনই বাদশাহ স্ত্রীর খোঁজ করতেন তখনই বলা হতো যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে আছেন।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এমবিএস ইয়েমেনে হামলা চালান। ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের অজুহাতে ইয়েমেনকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করেছেন তিনি।
এমবিএস তাঁর নারীনীতির কারণে বিশ্বব্যাপী কোথাও প্রশংসা আবার কোথাও নিন্দা কুড়িয়েছেন। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে নারীদের পোশাকবিধি শিথিল করে দিয়েছেন। সৌদি নারীরা এখন গাড়ি চালাতেও পারেন। লেখক মার্ক থম্পসন তার বই ‘বিয়িং ইয়ং, মেল অ্যান্ড সৌদি’-বইয়ে লিখেছেন, গাড়ি চালানোর এই অনুমোদন নারীদের স্বাধীনতার জন্য নয়, বরং অর্থনৈতিক কারণে। নারীরা যেন কাজ করতে পারে।
রাজপরিবারের সব সিদ্ধান্ত ‘শুরা’ বা পরামর্শ কমিটি দিত। এমবিএস জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সিদ্ধান্তের কোনো বিরোধিতা তিনি বরদাস্ত করবেন না। এ ছাড়া তাঁর বিলাসী জীবনও বিতর্কের আরেক কারণ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, কারগারগুলো বিনাবিচারে আটক বন্দী দিয়ে ভরে রেখেছেন তিনি। সৌদি আরবে প্রায় ১০ হাজার রাজপুত্র আছেন। ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর তিনি ৩৮০ রাজপুত্র, ব্যবসায়ী ও শীর্ষ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে জিম্মি করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আরব নিউজ ও আল-ওয়াতান-এর সম্পাদক জামাল খাশোগির হত্যার পেছনে এমবিএসকে দায়ী করা হয়।
আল-জাজিরা, বিবিসি, গার্ডিয়ান অবলম্বনে
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান চল্লিশ বছর পূর্ণ করেছেন গত ৩১ আগস্ট। সৌদি আরবের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৯ বছর। এ হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানের জীবনের অর্ধেক সময় এখনো বাকি। এই বয়সেই তিনি পরিণত হয়েছেন সৌদি আরবের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে। বলা ভালো, মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ প্রভাবশালী নেতা তিনি।
২০১৭ সালে যুবরাজের পদে অধিষ্ঠিত হন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি এমবিএস নামেই বেশি পরিচিত। পরবর্তী বাদশাহ হওয়ার দৌড়েও সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। তাঁর পিতা সালমান রাষ্ট্রপ্রধান হলেও কার্যত সৌদি আরবের নিরাপত্তা, তেল, অর্থনীতি—সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এমবিএসের হাতেই। এই নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে রাজপুত্রদের বন্দি করা থেকে, সাংবাদিক হত্যা, বাদশাহকে আত্মীয়দের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখাসহ আলোচিত-সমালোচিত অনেক কাজ করে চলেছেন তিনি।
অন্যদিকে ইসলামের জন্মভূমি সৌদি আরবের বহু দিনের প্রথা ও ঐতিহ্য বদলে দিচ্ছেন। খেলাধুলা ও পশ্চিমা সংস্কৃতির আমদানিসহ অবিশ্বাস্য পরিবর্তন আনছেন দেশটিতে। সৌদি সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হওয়ার আগে যার নামটিও সৌদি আরবের সব মানুষ জানতে না তিনি কী করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রায় সর্বেসর্বা ব্যক্তিতে পরিণত হলেন, এ লেখায় থাকলো তার হদিস। তাঁর উত্থানের গল্পটি আরব্য রজনীর গল্পের মতোই চমকপ্রদ।
২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি। সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ হাসপাতালে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। তাঁর সৎভাই সালমান বিন আবদুল আজিজ সিংহাসনে বসার অপেক্ষা করছেন। এই সময়ে সামনে আসে সালমানের পুত্র মোহাম্মদের ক্ষমতা দখলের নিখুঁত পরিকল্পনা। মাত্র ২৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন সালমান, সংক্ষেপে এমবিএস নামে পরবর্তীতে যিনি ব্যাপক পরিচিতি পান, বলতে গেলে তখনই মানুষের সামনে আসতে থাকেন।
এমবিএসের শঙ্কা ছিল, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজপরিবারের ভেতরের সদস্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। তাই এক রাতে জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরিকে নিজের প্রাসাদে ডেকে আনেন তাঁর আনুগত্য নিশ্চিত করতে। জাবরিকে বলা হয়, নিজের মোবাইল বাইরে রেখে আসতে। এমবিএস নিজেও তা-ই করেন। এরপর তাওরা দুজনে একান্তে বসেন।
কথা ছিল বৈঠকটি আধঘণ্টার বেশি হবে না। এমবিএস তা টেনে প্রায় তিন ঘণ্টা দীর্ঘ করেন। বৈঠক শেষে বাইরে বের হয়ে জাবরি দেখেন তাঁর ফোনে সরকারি সহকর্মীদের বহু মিসড কল জমে আছে। দীর্ঘক্ষণ অনুপস্থিত থাকায় জাবরির সহকর্মীরা তাঁর জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
সেই বৈঠক প্রসঙ্গে বিবিসিকে সাদ আল-জাবরি জানান, সেদিন আলোচনা করতে করতে এমবিএস তাঁকে জানাতে থাকেন কীভাবে তিনি তাঁর দেশকে বিশ্বমঞ্চে ‘যথাযথ মর্যাদায়’ ফিরিয়ে নিতে চান। কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি আরামকোর শেয়ার বিক্রি করে তিনি অর্থনীতিকে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্ত করবেন। ট্যাক্সি কোম্পানি উবারসহ সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলোতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে সৌদি নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের স্বাধীনতা দিয়ে প্রায় ৬০ লাখ নতুন চাকরি কীভাবে তৈরি করতে চান।
এমবিএসের পরিকল্পনা শুনে হতবাক জাবরি তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার সীমা কোথায়? জবাবে এমবিএস বলেন, ‘আপনি কি আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট-এর নাম শুনেছেন?’ এরপর এই আলাপ থামিয়ে দেন আল-জাবরি।
২০১৫ সালের শুরুতে মারা যান ৯০ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ। নতুন বাদশাহ হন সালমান বিন আবদুল আজিজ। ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তিনি মুকরিন বিন আবদুল আজিজের নাম ঘোষণা করেন। ৬৮ বছর বয়সী মুকরিন ইতিমধ্যে বাদশাহ আবদুল্লাহর উপদেষ্টা, বিশেষ দূত, সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক, উপপ্রধানমন্ত্রী ও উপযুবরাজের দায়িত্ব পালন করে আসা রাজপরিবারের অভিজ্ঞ সদস্য। কিন্তু মাত্র তিন মাস পরেই ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে মুকরিনকে বরখাস্ত করা হয়।
মুকরিনের জায়গায় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ক্রাউন প্রিন্স বানান তাঁরই ভাইয়ের ছেলে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। একই সময়ে এমবিএসকে বানানো হয় ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স। ওই সময় এমবিএসকে খুব বেশি মানুষ চিনত না। অন্যদিকে বিন নায়েফ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে এসেছেন ইতিমধ্যে। সন্ত্রাসবিরোধী কাযক্রমের সাফল্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত ছিলেন। অন্তত চারবার সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টার মুখে পড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছেন। তিনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এতটাই কাছের লোক ছিলেন যে তাঁকে পুরস্কৃতও করেছিল তারা। অন্যদিকে এমবিএস তখনো এতটাই অল্পবয়সী ও অনালোচিত ছিলেন যে তাঁর ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা গোয়েন্দাদেরও ধারণা ছিল না। সেই এমবিএসই ৫৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ বিন নায়েফকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করলেন। খুব দ্রুত তাঁদের বিরোধ সামনে চলে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ট যে বিন নায়েফ বাদশাহ হওয়ার দৌড়ে সবার সামনে ছিলেন, তাঁকে কয়েদি বানিয়ে ফেলেন এমবিএস।
ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার দুই বছর পর ২০১৭ সালের ২০ জুন মোহাম্মদ বিন নায়েফের ডাক পড়ে মক্কার রাজপ্রাসাদে। আগে থেকেই প্রাসাদের সব নিরাপত্তারক্ষীদের ভালো করে তল্লাশি চালিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। বিন নায়েফ সেখানে পৌঁছলে তাঁর মোবাইলও জব্দ করা হয়। এ কাজটি করেন এমবিএসের নির্দিষ্ট নিরাপত্তারক্ষীরা।
এরপর বিন নায়েফকে নিয়ে যাওয়া হয় এমবিএসের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা তুর্কি বিন আবদুল মোহসেন আল-শেখের কক্ষে। এই তুর্কি আল–শেখ এমবিএসের সমবয়সী। নিরাপত্তা বিজ্ঞানের স্নাতক তুর্কি আল-শেখ অপরাধবিদ্যা, তদন্ত, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি। এমবিএস যে এখন ক্রীড়া, চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দিয়ে পুরোনো সৌদি আরবকে বদলে দিতে চলেছেন এর পেছনের কারিগর এই তুর্কি আল–শেখ। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের ‘জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটি’র প্রধান।
সেই কক্ষে নায়েফকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তাঁকে যুবরাজের পদ ছাড়তে চাপ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁকে এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করতে বলা হয়। স্বাভাবিকভাবেই নায়েফ পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু শেষ পযন্ত তুর্কি আল–শেখের অপরাধবিদ্যার সামনে বিন নায়েফ নতি শিকার করতে বাধ্য হন।
পরবর্তীতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান রাজপ্রাসাদের সূত্রে প্রকাশ করে, ওই রাতে বিন নায়েফ পদত্যাগ করবেন না জানানোর পর তাঁকে বলা হয়, তিনি পদত্যাগ না করলে তাঁর পরিবারের নারীদের ধর্ষণ করা হবে। তাঁকে আরও বলা হয়, পদত্যাগ না করলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিন নায়েফ ভয় পেয়ে যান, হাসপাতালে নিয়ে তাঁর শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগী বিন নায়েফের এতটাই ভয়ে পেয়েছিলেন যে আটকাবস্থায় পানি খেতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।
চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বিন নায়েফ পদত্যাগে রাজি হন। ততক্ষণে রাতের আঁধার কেটে গেছে। ভোরে তাঁকে পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। সঙ্গে ছিল টেলিভিশনের ভারী ক্যামেরা আর সশস্ত্র দেহরক্ষী। উদ্বিগ্ন ও ক্লান্ত বিন নায়েফ ক্যামেরার সামনে এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গুরুত্ব দিয়ে সেটি পরে প্রচার করা হয়।
আটকাবস্থায় বিন নায়েফ ‘অ্যালিজান্স কাউন্সিলের’ দুই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। রাজপরিবারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই কাউন্সিল কে বাদশাহ হবেন না হবেন সেটা ঠিক করে দেয়। বিন নায়েফ বুঝতে পারেন, ওই দুই সদস্যও এমবিএসের আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে বিন নায়েফ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাঁর উপদেষ্টাকে একটি খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমি যখন আনুগত্য স্বীকার করি, তখন আমার পেছনে বন্দুক তাক করা ছিল।’
বিন নায়েফ সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সাদ আল-জাবরি, যার আনুগত্য আগেই নিয়ে রেখেছিলেন এমবিএস। তবে এ কথা অজানা ছিল বিন নায়েফের। বিন নায়েফ তাঁর আমলে রাজপরিবারের বাইরে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি বানিয়ে রেখেছিলেন সাদ আল-জাবরিকে। তাঁকেই খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি।
২০১৭ সালের ২১ জুন বিন নায়েফকে যুবরাজের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে রাজকীয় ফরমান জারি করে তাকে সব পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তাঁর স্থলে মুহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ মনোনীত করা হয়। এমবিএস এখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি আল সৌদ রাজদরবারের প্রধান এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নবিষয়ক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। বাদশাহ সালমানের পরেই তার ক্ষমতা বিবেচনা করা হয়। বয়স ও অসুস্থতার কারণে বাদশাহ সালমান কার্যত এমবিএসের ওপরেই নির্ভরশীল।
দায়িত্ব পাওয়ার পর মোহাম্মদ বিন সালমান রাজপরিবার থেকে পিতা সালমান বিন আবদুল আজিজকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই দিনগুলোতে এমনকি বাদশাহকে তাঁর স্ত্রী—অর্থাৎ মোহাম্মদ বিন সালমানের মা—এর সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হতো না।
লেখক ডেভিড ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান কার্যত তার মা ও দুই বোনকে গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর বাবাকে কিছুই জানতে দেননি তিনি। যখনই বাদশাহ স্ত্রীর খোঁজ করতেন তখনই বলা হতো যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে আছেন।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এমবিএস ইয়েমেনে হামলা চালান। ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের অজুহাতে ইয়েমেনকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করেছেন তিনি।
এমবিএস তাঁর নারীনীতির কারণে বিশ্বব্যাপী কোথাও প্রশংসা আবার কোথাও নিন্দা কুড়িয়েছেন। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে নারীদের পোশাকবিধি শিথিল করে দিয়েছেন। সৌদি নারীরা এখন গাড়ি চালাতেও পারেন। লেখক মার্ক থম্পসন তার বই ‘বিয়িং ইয়ং, মেল অ্যান্ড সৌদি’-বইয়ে লিখেছেন, গাড়ি চালানোর এই অনুমোদন নারীদের স্বাধীনতার জন্য নয়, বরং অর্থনৈতিক কারণে। নারীরা যেন কাজ করতে পারে।
রাজপরিবারের সব সিদ্ধান্ত ‘শুরা’ বা পরামর্শ কমিটি দিত। এমবিএস জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সিদ্ধান্তের কোনো বিরোধিতা তিনি বরদাস্ত করবেন না। এ ছাড়া তাঁর বিলাসী জীবনও বিতর্কের আরেক কারণ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, কারগারগুলো বিনাবিচারে আটক বন্দী দিয়ে ভরে রেখেছেন তিনি। সৌদি আরবে প্রায় ১০ হাজার রাজপুত্র আছেন। ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর তিনি ৩৮০ রাজপুত্র, ব্যবসায়ী ও শীর্ষ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে জিম্মি করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আরব নিউজ ও আল-ওয়াতান-এর সম্পাদক জামাল খাশোগির হত্যার পেছনে এমবিএসকে দায়ী করা হয়।
আল-জাজিরা, বিবিসি, গার্ডিয়ান অবলম্বনে
বাণিজ্য শুল্ককে বেআইনি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন আদালতে দেওয়া রায় বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
১০ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা তহবিল বাতিলের সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন এক মার্কিন বিচারক। রায়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা ২২০ কোটি মার্কিন ডলার বাতিল করে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের তহবিল বাতিল করা যাবে না
১৬ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজায় রাতভর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এতে চার শিশুসহ অন্তত ৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
১৭ ঘণ্টা আগেইন্দোনেশিয়াজুড়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এতে ইতিমধ্যেই অন্তত ৮ জন নিহত ও ২০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। আগুনে পুড়েছে ও লুট হয়েছে বহু সরকারি ভবন।
২ দিন আগে