leadT1ad

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্প: আড়াই শতাধিক নিহত

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১: ১৭
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৮
আফগানিস্তানে ভূমিকম্প। সংগৃহীত ছবি

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬। প্রাথমিক প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ২৫০-এর বেশি এবং আহতের সংখ্যা ৫৩০-এর বেশি বলে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছে। তবে উদ্ধারকারী দলগুলো প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছাতে না পারায় সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) অনুমান করছে যে হতাহতের সংখ্যা ১০০ থেকে ১ হাজারের মধ্যে হতে পারে।

ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে, যা ক্ষয়ক্ষতি বাড়িয়েছে। এরপর অন্তত তিনটি আফটারশক অনুভূত হয়েছে, যাদের মাত্রা ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২ এর মধ্যে।

এর কেন্দ্রস্থল ছিল পাকিস্তান সীমান্তবর্তী প্রদেশ নানগারহারের কুজ কুনার জেলায়। জালালাবাদের প্রায় ২৭ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কাবুল এবং প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ থেকেও।

নানগারহার প্রদেশে কমপক্ষে ৯ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার প্রদেশের নুর গাল, সাওকি, ওয়াটপুর, মানোগি এবং চাপা দারা জেলা। ভূমিধসের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যেমন সাওকি জেলার দেওয়া গুল এবং নুর গুল জেলার মাজার দারা। ফলে উদ্ধারকারী দলগুলোকে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে হচ্ছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ না হওয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন। মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এবং ভূমিধসের কারণে অনেক এলাকায় প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

আফগান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (এআরসিএস) জানিয়েছে, নুর গাল জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং তারা সেখানে জরুরি সাহায্য পাঠাচ্ছে। এই ভূমিকম্পের পরও আফটারশক চলছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। তাদের এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্য দরকার, বিশেষ করে চিকিৎসা, আশ্রয় এবং খাদ্য সরবরাহে।

আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, দুঃখজনকভাবে, গত রাতের ভূমিকম্পে পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলো স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কাজ করছে, এবং জীবন রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে। উদ্ধার অভিযানে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে, কারণ ভূমিধস এবং বন্যার কারণে রাস্তাগুলো বিচ্ছিন্ন।

আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ, কারণ এটি ভারতীয় এবং ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ২০২২ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১ হাজার জন নিহত এবং ৩ হাজার জন আহত হয়েছিল। ২০২৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজার এর বেশি মানুষ মারা যায়। এই ধরনের বিপর্যয়ে দুর্গম এলাকা এবং দুর্বল অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি বাড়ায়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত