leadT1ad

ভারতের বিমান ভূপাতিত করার ভিডিও প্রমাণ আছে, দাবি পাকিস্তানের

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ০০
ভারতের বিমান ভূপাতিত করার ভিডিও প্রমাণ আছে, দাবি পাকিস্তানের। সংগৃহীত ছবি

মে মাসের সংঘাতের কয়েক মাস পরেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানাপোড়েন থামেনি। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। দুই পক্ষই দাবি করছে নিজেদের সাফল্য।

সম্প্রতি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভী বললেন, মে মাসের সংঘাতে পাকিস্তান যে পাঁচটি ভারতীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, পাকিস্তানের কাছে তার ভিডিও প্রমাণ আছে।

অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ পাকিস্তানের এই দাবিকে সমর্থন করেছেন। দিল্লি শুরু থেকেই এই ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। শুধু কয়েকজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত বক্তব্য এসেছে।

এরপরই এই মাসে ভারতের বিমান বাহিনীর প্রধান দাবি করেন, পাকিস্তানের ছয়টি বিমান ভূপাতিত হয়েছে। তবে তিনি দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি। সেই সূত্র ধরেই পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য।

ভিডিও ও গোয়েন্দা দক্ষতা

আইওয়ান-ই-ইকবাল-এ ‘পাকিস্তানের সামরিক ও কূটনৈতিক সাফল্য এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেওয়ার সময় নকভী বলেন, রাডার তথ্য নিশ্চিত করেছে যে, ভারতের বিমানগুলো ভূপাতিত হয়েছে। তবে সরকার জনসমক্ষে ঘোষণা করার আগে প্রত্যক্ষ প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।

তিনি আরও জানান, সংঘাতস্থল থেকে খুব কম সময়ের মধ্যে ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করা হয়েছে। এটা পাকিস্তানের গোয়েন্দা দক্ষতার প্রমাণ।

সংঘাতের পর ভারত অধিকৃত কাশ্মীর থেকে কিছু ছবি বেরিয়েছিল। ছবিতে একটি বিমান বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিমানটি দেখতে ভারতীয় রাফালে বিমানের মতো। এরকম আরও ছবি অনলাইনে ছড়িয়েছিল, কিন্তু তখন তা যাচাই করা যায়নি।

সংঘাতকালীন প্রস্তুতি ও ক্ষয়ক্ষতি

মন্ত্রী জানান, পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিগুলোতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করতে সক্ষম হয়নি। রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা গুরুতর কোনও ক্ষতি করতে পারেনি।

তিনি বলেন, কেবল একটি বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একজন সেনা শহীদ হয়েছেন। মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনীরের নেতৃত্ব অসাধারণ ছিল। পাকিস্তান চাইলে ভারতের আরও ক্ষতি করতে পারত। তবে যেটুকু আঘাত পেয়েছে নয়া দিল্লি তাই সামলাতে পারেনি।

ভারতীয় নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক ঐক্য

মন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের দুই শীর্ষ ব্যক্তি—অজিত দোভাল ও অমিত শাহ—‘পাহালগাম নাটকের’ মূল খেলোয়াড় এবং তাঁরা ভারতের পতনের কারণ হতে পারেন। নকভী বলেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ চালু রাখা খুব জরুরি। তাহলে দেশের ভেতর মতপার্থক্য দূর করে জাতীয় একতা বজায় রাখা যাবে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও কূটনৈতিক সাফল্য

একই অনুষ্ঠানে সিনেট চেয়ারম্যান ইউসুফ রেজা গিলানি বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠান পাকিস্তানের ভারতের বিরুদ্ধে বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাহেলগাম ঘটনার ভারতীয় মিথ্যাচার প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান সতর্কতা দেখিয়েছে এবং প্রতিরক্ষা বজায় রেখেছে, যাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা না বাড়ে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের পেশাদারিত্ব ও প্রস্তুতি দিয়ে বিশ্বের নজর কেড়েছে।’

পাঞ্জাব বিধানসভা স্পিকার মালিক মুহাম্মদ আহমেদ খান বলেন, পাকিস্তান সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, সফল সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং কার্যকর বিদেশনীতি পাকিস্তানকে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

শেষে তিনি বলেন, ভারতের আগ্রাসী মনোভাবকে বিশ্বমঞ্চে প্রকাশ করা পাকিস্তানের বড় অর্জন।


ডন থেকে নেওয়া ইংরেজির অনুবাদ

Ad 300x250

সম্পর্কিত