স্ট্রিম ডেস্ক
জাপানের রাজনীতিতে ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। সানায়ে তাকাইচি দেশটির ১০৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। আধুনিক জাপানের ইতিহাসে তিনি প্রথম নারী, যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন।
৬৪ বছর বয়সী এই কট্টর রক্ষণশীল নেতা সংসদীয় ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পান। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার পদত্যাগের পর তিন মাসের রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটল।
তাকাইচির উত্থান জাপানের শাসক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মধ্যে দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বের দিকে অগ্রযাত্রা নির্দেশ করে। সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারি ও নির্বাচনী ব্যর্থতায় জনগণের আস্থা নড়বড়ে হলেও, তাকাইচির জয় দলটিকে নতুন গতি দিয়েছে।
ক্ষমতায় ওঠার পথ: দলীয় নির্বাচন থেকে সংসদীয় ভোট পর্যন্ত
তাকাইচির ক্ষমতায় আসার যাত্রা শুরু হয় ২০২৫ সালের ৪ অক্টোবর, এলডিপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে। তিনি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রতিপক্ষদের পরাজিত করেন। দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হন।
আজ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোটে তিনি ২৩৭ ভোট পান, যা প্রথম দফাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। শেষ মুহূর্তে মধ্যপন্থী ও প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থন পাওয়ায় তিনি সহজেই জয়ী হন। বিভক্ত বিরোধী দলগুলো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে এলডিপি পরিপূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও সংসদে তাদের প্রভাব অটুট থাকে।
গত মাসে ইশিবার হঠাৎ পদত্যাগ আসে দলের লজ্জাজনক নির্বাচনী পরাজয়ের পর। অর্থ কেলেঙ্কারি ও নীতিগত ভুলে ভোটারদের ক্ষোভই তার পতনের কারণ। এই পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠদের সমর্থনে তাকাইচি ‘কিংমেকারদের প্রার্থী’হিসেবে উঠে আসেন।
তার জয়কে রক্ষণশীলদের পুনরুত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে—যেখানে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ইশিবার সংস্কার এজেন্ডার চেয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
রক্ষণশীল হলেও ব্যতিক্রমী এক নারী নেতা
১৯৬১ সালের ৭ মার্চ মিয়ে প্রিফেকচারে জন্মগ্রহণ করেন সানায়ে তাকাইচি। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ২০০৫ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি নারা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রয়াত শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ শিষ্য হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন—এর মধ্যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ বিষয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য।
তিনি ডিজিটাল রূপান্তর ও সরবরাহ শৃঙ্খলা শক্তিশালীকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। প্রতিরক্ষা বিষয়ে তার অবস্থান দৃঢ়; তিনি সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে জাপানের সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে। ইয়াসুকুনি মন্দিরে তার নিয়মিত সফরও রক্ষণশীল পরিচয়ের প্রতীক।
নীতির বাইরে তাকাইচির ব্যক্তিগত রুচিও আলোচিত। তিনি ব্রিটিশ ব্যান্ড ‘আয়রন মেইডেন’-এর ভক্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একটি রক ব্যান্ডে ড্রাম বাজাতেন। এই ব্যতিক্রমী দিক তাকে সাধারণ মানুষের কাছে অনন্য করে তুলেছে।
তবে সমালোচকদের মতে, তিনি অতিরিক্ত ডানপন্থী। নারী অধিকার ও ইতিহাসবিষয়ক তার মতাদর্শ সমাজে বিভাজন তৈরি করতে পারে। কিছু পর্যবেক্ষক আশঙ্কা করছেন, তার নেতৃত্বে দেশ আবার সামরিক জাতীয়তাবাদের দিকে ঝুঁকতে পারে। অন্যদিকে সমর্থকরা মনে করেন, তিনি নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক—এক এমন দেশে, যেখানে সংসদ সদস্যদের মাত্র ১০ শতাংশ নারী।
তাকাইচির ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
২০০৫: নারা জেলা থেকে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত
২০১৪–২০১৬: অর্থনীতি ও রাজস্বনীতির মন্ত্রী
২০২১–২০২২: অভ্যন্তরীণ বিষয় ও যোগাযোগ মন্ত্রী
২০২২–২০২৪: অর্থনৈতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী
৪ অক্টোবর ২০২৫: এলডিপি সভাপতি নির্বাচিত
২১ অক্টোবর ২০২৫: জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত
দেশ-বিদেশে প্রতিক্রিয়া: শুভেচ্ছা, সতর্কতা ও আশাবাদ
সানায়ে তাকাইচির নির্বাচনে দেশজুড়ে যেমন আনন্দ, তেমনি সতর্ক প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। লিঙ্গসমতার ঐতিহাসিক মাইলফলক উদযাপনের পাশাপাশি তার রক্ষণশীল নীতিগত অবস্থান নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
দেশের প্রগতিশীল গোষ্ঠী ও নারী অধিকারকর্মীরা এ ঘটনাকে ‘অনেক দেরিতে আসা এক অগ্রগতি’বলে প্রশংসা করেছেন। একজন বিশ্লেষক বলেছেন, জাপানের পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতিতে এটি একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
তবে বিরোধীদলীয় নেতা ইয়োশিহিকো নোদা সতর্ক করেছেন যে, তাকাইচির রক্ষণশীল অবস্থান অভিবাসন, এলজিবিটিকিউ+ অধিকারসহ সামাজিক ইস্যুতে বিভাজন বাড়াতে পারে।
এক্স-এ অনেক ব্যবহারকারী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আশাবাদ প্রকাশ করেছেন, তবে একই সঙ্গে অতিরিক্ত ডানপন্থায় ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কাও জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক পরিসরেও অভিনন্দনের ঢল নেমেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোট আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মন্তব্য করেছেন। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচসহ অন্য নেতারাও অর্থনীতি ও প্রযুক্তি-নবায়নে সহযোগিতা বাড়ানোর আশা ব্যক্ত করেছেন।
সিএনএন ও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস তাকাইচির উত্থানকে ‘অসম্ভাব্য এক সাফল্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা প্রয়াত শিনজো আবের দৃঢ় পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাপানের জন্য নতুন এক অধ্যায়?
তাকাইচির প্রধানমন্ত্রীত্ব এসেছে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। জাপান এখন অর্থনৈতিক মন্দা, জনসংখ্যার বার্ধক্য ও আঞ্চলিক উত্তেজনা—বিশেষত তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যু—মোকাবিলা করছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, তিনি প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো, প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াড জোটের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দেবেন। এতে জাপানের দীর্ঘদিনের শান্তিবাদী নীতি আরও বদলে যেতে পারে।
লিঙ্গসমতায় তার নির্বাচনের প্রভাব ইতিবাচক হতে পারে, যদিও সংশয়বাদীরা মনে করেন, এটি প্রতীকী সাফল্য ছাড়া আর কিছু নয়, কারণ জাপানের রাজনৈতিক কাঠামো এখনো পরিবর্তন-প্রতিরোধী।
এখন তাকাইচি তার মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে কাজ শুরু করছেন। সবাই নজর রাখছে, তিনি কি ভাঙা এলডিপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
তবে আপাতত তার জয় জাপানের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ—যা একদিকে নারীর নেতৃত্বের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, অন্যদিকে রক্ষণশীল রাজনীতির ভবিষ্যতও পরীক্ষা করছে।
জাপানের রাজনীতিতে ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। সানায়ে তাকাইচি দেশটির ১০৪তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। আধুনিক জাপানের ইতিহাসে তিনি প্রথম নারী, যিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন।
৬৪ বছর বয়সী এই কট্টর রক্ষণশীল নেতা সংসদীয় ভোটে নিরঙ্কুশ জয় পান। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার পদত্যাগের পর তিন মাসের রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটল।
তাকাইচির উত্থান জাপানের শাসক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মধ্যে দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বের দিকে অগ্রযাত্রা নির্দেশ করে। সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারি ও নির্বাচনী ব্যর্থতায় জনগণের আস্থা নড়বড়ে হলেও, তাকাইচির জয় দলটিকে নতুন গতি দিয়েছে।
ক্ষমতায় ওঠার পথ: দলীয় নির্বাচন থেকে সংসদীয় ভোট পর্যন্ত
তাকাইচির ক্ষমতায় আসার যাত্রা শুরু হয় ২০২৫ সালের ৪ অক্টোবর, এলডিপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে। তিনি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রতিপক্ষদের পরাজিত করেন। দলীয় সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হন।
আজ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোটে তিনি ২৩৭ ভোট পান, যা প্রথম দফাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে। শেষ মুহূর্তে মধ্যপন্থী ও প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থন পাওয়ায় তিনি সহজেই জয়ী হন। বিভক্ত বিরোধী দলগুলো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ফলে সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে এলডিপি পরিপূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও সংসদে তাদের প্রভাব অটুট থাকে।
গত মাসে ইশিবার হঠাৎ পদত্যাগ আসে দলের লজ্জাজনক নির্বাচনী পরাজয়ের পর। অর্থ কেলেঙ্কারি ও নীতিগত ভুলে ভোটারদের ক্ষোভই তার পতনের কারণ। এই পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠদের সমর্থনে তাকাইচি ‘কিংমেকারদের প্রার্থী’হিসেবে উঠে আসেন।
তার জয়কে রক্ষণশীলদের পুনরুত্থান হিসেবে দেখা হচ্ছে—যেখানে জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ইশিবার সংস্কার এজেন্ডার চেয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
রক্ষণশীল হলেও ব্যতিক্রমী এক নারী নেতা
১৯৬১ সালের ৭ মার্চ মিয়ে প্রিফেকচারে জন্মগ্রহণ করেন সানায়ে তাকাইচি। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ২০০৫ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি নারা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রয়াত শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ শিষ্য হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন—এর মধ্যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ বিষয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য।
তিনি ডিজিটাল রূপান্তর ও সরবরাহ শৃঙ্খলা শক্তিশালীকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। প্রতিরক্ষা বিষয়ে তার অবস্থান দৃঢ়; তিনি সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে জাপানের সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে। ইয়াসুকুনি মন্দিরে তার নিয়মিত সফরও রক্ষণশীল পরিচয়ের প্রতীক।
নীতির বাইরে তাকাইচির ব্যক্তিগত রুচিও আলোচিত। তিনি ব্রিটিশ ব্যান্ড ‘আয়রন মেইডেন’-এর ভক্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একটি রক ব্যান্ডে ড্রাম বাজাতেন। এই ব্যতিক্রমী দিক তাকে সাধারণ মানুষের কাছে অনন্য করে তুলেছে।
তবে সমালোচকদের মতে, তিনি অতিরিক্ত ডানপন্থী। নারী অধিকার ও ইতিহাসবিষয়ক তার মতাদর্শ সমাজে বিভাজন তৈরি করতে পারে। কিছু পর্যবেক্ষক আশঙ্কা করছেন, তার নেতৃত্বে দেশ আবার সামরিক জাতীয়তাবাদের দিকে ঝুঁকতে পারে। অন্যদিকে সমর্থকরা মনে করেন, তিনি নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক—এক এমন দেশে, যেখানে সংসদ সদস্যদের মাত্র ১০ শতাংশ নারী।
তাকাইচির ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
২০০৫: নারা জেলা থেকে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত
২০১৪–২০১৬: অর্থনীতি ও রাজস্বনীতির মন্ত্রী
২০২১–২০২২: অভ্যন্তরীণ বিষয় ও যোগাযোগ মন্ত্রী
২০২২–২০২৪: অর্থনৈতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী
৪ অক্টোবর ২০২৫: এলডিপি সভাপতি নির্বাচিত
২১ অক্টোবর ২০২৫: জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত
দেশ-বিদেশে প্রতিক্রিয়া: শুভেচ্ছা, সতর্কতা ও আশাবাদ
সানায়ে তাকাইচির নির্বাচনে দেশজুড়ে যেমন আনন্দ, তেমনি সতর্ক প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। লিঙ্গসমতার ঐতিহাসিক মাইলফলক উদযাপনের পাশাপাশি তার রক্ষণশীল নীতিগত অবস্থান নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
দেশের প্রগতিশীল গোষ্ঠী ও নারী অধিকারকর্মীরা এ ঘটনাকে ‘অনেক দেরিতে আসা এক অগ্রগতি’বলে প্রশংসা করেছেন। একজন বিশ্লেষক বলেছেন, জাপানের পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতিতে এটি একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
তবে বিরোধীদলীয় নেতা ইয়োশিহিকো নোদা সতর্ক করেছেন যে, তাকাইচির রক্ষণশীল অবস্থান অভিবাসন, এলজিবিটিকিউ+ অধিকারসহ সামাজিক ইস্যুতে বিভাজন বাড়াতে পারে।
এক্স-এ অনেক ব্যবহারকারী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আশাবাদ প্রকাশ করেছেন, তবে একই সঙ্গে অতিরিক্ত ডানপন্থায় ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কাও জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক পরিসরেও অভিনন্দনের ঢল নেমেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র-জাপান জোট আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মন্তব্য করেছেন। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচসহ অন্য নেতারাও অর্থনীতি ও প্রযুক্তি-নবায়নে সহযোগিতা বাড়ানোর আশা ব্যক্ত করেছেন।
সিএনএন ও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস তাকাইচির উত্থানকে ‘অসম্ভাব্য এক সাফল্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা প্রয়াত শিনজো আবের দৃঢ় পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাপানের জন্য নতুন এক অধ্যায়?
তাকাইচির প্রধানমন্ত্রীত্ব এসেছে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। জাপান এখন অর্থনৈতিক মন্দা, জনসংখ্যার বার্ধক্য ও আঞ্চলিক উত্তেজনা—বিশেষত তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যু—মোকাবিলা করছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, তিনি প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো, প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াড জোটের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দেবেন। এতে জাপানের দীর্ঘদিনের শান্তিবাদী নীতি আরও বদলে যেতে পারে।
লিঙ্গসমতায় তার নির্বাচনের প্রভাব ইতিবাচক হতে পারে, যদিও সংশয়বাদীরা মনে করেন, এটি প্রতীকী সাফল্য ছাড়া আর কিছু নয়, কারণ জাপানের রাজনৈতিক কাঠামো এখনো পরিবর্তন-প্রতিরোধী।
এখন তাকাইচি তার মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে কাজ শুরু করছেন। সবাই নজর রাখছে, তিনি কি ভাঙা এলডিপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
তবে আপাতত তার জয় জাপানের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ—যা একদিকে নারীর নেতৃত্বের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে, অন্যদিকে রক্ষণশীল রাজনীতির ভবিষ্যতও পরীক্ষা করছে।
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের তুরমুস আয়ার কাছে একদল মুখোশধারী ইহুদি বসতি স্থাপনকারী গত রবিবার ফিলিস্তিনি জলপাই চাষি ও তাঁদের সঙ্গে থাকা কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা লাঠি ও পাথর দিয়ে আক্রমণ করে, তিনটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং অন্য গাড়ির জানালা ভাঙচুর করে।
৭ ঘণ্টা আগেইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পারমাণবিক আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি একে ‘কূটনীতি নয়, বরং চাপ ও দমননীতি’ বলে অভিহিত করেন।
৯ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর যে নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, তার পর থেকে ইসরায়েল প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ২৩০ জনকে আহত করেছে। এই সময়টিতে দুই পক্ষের মধ্যে চলেছে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ।
১২ ঘণ্টা আগেযুক্তরাজ্যের কঠোর নতুন অভিবাসন নিয়ম অনুযায়ী কিছু অভিবাসীকে এখন এ-লেভেল মানের ইংরেজি জানতে হবে। দেশটির সরকার ঘোষণা করেছে, এই নিয়ম ২০২৬ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
১ দিন আগে