দৌড়ঝাঁপে ভরা এই জীবনে খাবার হয়ে উঠেছে কেবলই ‘দ্রুত পেট ভরানো’র উপকরণ। ফাস্ট ফুডের চকচকে মোড়কের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে স্বাদ আর পুষ্টিগুণ। ফাস্ট ফুডের বদলে ‘স্লো ফুড’ খাওয়া কেন জরুরি, তা জানা যাবে এই লেখায়।
শতাব্দীকা ঊর্মি
সন্ধ্যা ৭টা। হালকা ক্ষুধা মেটাতে মিরপুর লাভ রোডের এক খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দুই বন্ধু। ঢাকা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানি আর তাঁর বন্ধু নিলয়। সানি নিলয়কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে বার্গার নাকি স্যান্ডউইচ খাবি?’ নিলয় একটু হেসে বললেন, ‘ফাস্ট ফুড তো রোজই খাই। চল, আজ তোকে ‘‘স্লো ফুড’’ খাওয়াই।’
প্রথমে স্লো ফুডের কথা শুনে একটু অবাক হলেন সানি! আসলে তিনি জানেন না, এই স্লো ফুড ব্যাপারটা আসলে কী! এরপর দুজনে দোকানে ঢুকে স্ট্রবেরি আর পেঁপে অর্ডার দিলেন। এরপর ফল খেতে খেতে সানির প্রশ্ন, ‘এই ফলই কী স্লো ফুড?’
স্লো ফুড বলতে এমন খাবারকে বোঝায়, যা সহজে হজম হয় আর অনেকক্ষণ পেটও ভরে রাখে। এগুলো ‘লো জিআই’ বা ‘নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচক’ সমৃদ্ধ খাবার। এই ‘জিআই’ মানে হলো, খাবার খাওয়ার পর রক্তে চিনি (শর্করা) কত দ্রুত বাড়ছে তা বোঝায়। সেই অনুসারেই ভাগ করা হয় উচ্চ জিআই আর নিম্ন জিআইয়ের খাবার।
যেমন ধরুন, সাদা ভাত বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের জিআই বেশি। মানে এগুলো খেলে রক্তে চিনি দ্রুত বাড়ে। আবার শস্য জাতীয় খাবার, কিছু ফল আর সবজির জিআই কম। সেগুলো খেলে রক্তে চিনি ধীরে বাড়ে।
এই কম জিআই-যুক্ত খাবার খেলে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা বা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাই স্লো ফুড মানে শুধু পেট ভরানো নয়, বরং একটু সচেতন আর স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেছে নেওয়া।
স্লো ফুড মানে শুধু ধীরে খাওয়াই না, এর পেছনে আছে একটা আন্তর্জাতিক আন্দোলনের গল্প। ১৯৮৬ সালে ইতালির রোম শহরে এই আন্দোলন শুরু হয়। তখন ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ফাস্ট ফুড দোকান খুব দ্রুত শহরে শহরে ছড়িয়ে পড়ছিল। এটা দেখে কিছু খাদ্যপ্রেমী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁদের নেতা ছিলেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট কার্লো পেট্রিনি। এই আন্দোলনের ভাষ্য ছিল, ‘আমরা ফাস্ট ফুড চাই না, স্লো ফুড চাই।’
রোমের ছোট শহরতলির সেই বাসিন্দারা শেষ পর্যন্ত ফাস্ট ফুডের এই দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়াকে থামাতে পারেননি। তবে এই পরাজয়ই জন্ম দেয় এক নতুন প্রতিরোধের। যা আজ বিশ্বজুড়ে পরিচিত ‘স্লো ফুড মুভমেন্ট’ নামে।
সেই ঘটনার ঠিক তিন বছর পর, এই আন্দোলনের নেতা কার্লো পেট্রিনি ও তাঁর সঙ্গীরা ফ্রান্সের প্যারিসে মিলিত হন। সেখানে ইউরোপের আরও ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা ছিল। সবাই মিলে তৈরি করেন ‘স্লো ফুড মেনিফেস্টো’। এই ইশতেহার আন্দোলনকে দেয় নতুন রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে স্লো ফুডের ধারণা।
বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশের লাখ লাখ মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত।
স্লো ফুড খাওয়া এক ধরনের সচেতন জীবন কৌশলের অংশ। এই ভাবনার পেছনে আছে সাতটি নীতিও। প্রথমত, খাওয়ার সময় যেন আনন্দ পাই। তাড়াহুড়ো নয়, আস্তে আস্তে খাবারটা উপভোগ করা দরকার। দ্বিতীয়ত, আমাদের খাবারের যেসব রীতি আর ঐতিহ্য আছে, সেগুলোকে ধরে রাখা জরুরি।
তৃতীয়ত, স্থানীয় কৃষকের উৎপাদিত খাবারকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। মানে দূর থেকে আসা ফলমূল নয়, বরং পাশের হাটের সবজি বা চালেই ভরসা করা ভালো। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর পেছনের গল্পও নতুনদের জানানো উচিত।
আরেকটা বড় কথা হলো, অর্গানিক আর ঘরের রান্না করা খাবারে ফিরে যাওয়া। প্রক্রিয়াজাত খাবার যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল। ষষ্ঠ দিকটি হলো, ছোটদের বাগান করা বা গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহ দেওয়া। যাতে তারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকে। আর সবশেষে, যেভাবে খাবার তৈরি হচ্ছে, তার কারণে যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয়, এটাও আমাদের ভাবনায় রাখতে হবে।
খাদ্য তালিকায় ‘স্লো ফুড’ যোগ করা হয়ে উঠতে পারে সুস্থ জীবন-যাপনের প্রথম ধাপ। স্লো ফুডের উপকারিতা নিয়ে পুষ্টিবিদ শামিমা আহমেদ জানান, ফাস্ট ফুডের উপাদানগুলো স্বাস্থ্যকর নয়। এতে অনেক ক্ষতিকর ক্যালরি থাকে। স্লো ফুড বা সহজপাচ্য খাবার স্বাস্থ্যঝুঁকি কমায়, মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকে যা ফ্যাটি লিভার, পিসিওসের মতো রোগ দূর করতে সাহায্য করে।’
আজকালের দৌড়ঝাঁপের জীবনে খাবার যেন শুধুই পেট ভরানোর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাইক্রোওয়েভে গরম করা রেডিমেড খাবার বা ফাস্ট ফুডের ঝলমলে প্যাকেটে আমাদের সময়ের অভাব আর স্বাদের বিরতি ও অপুষ্টি, সবই লুকিয়ে আছে। ঠিক এই ব্যস্ততার মাঝেই এক দমবন্ধ করা মুহূর্তে ফিরে আসে স্লো ফুডের ডাক।
সন্ধ্যা ৭টা। হালকা ক্ষুধা মেটাতে মিরপুর লাভ রোডের এক খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে দুই বন্ধু। ঢাকা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানি আর তাঁর বন্ধু নিলয়। সানি নিলয়কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে বার্গার নাকি স্যান্ডউইচ খাবি?’ নিলয় একটু হেসে বললেন, ‘ফাস্ট ফুড তো রোজই খাই। চল, আজ তোকে ‘‘স্লো ফুড’’ খাওয়াই।’
প্রথমে স্লো ফুডের কথা শুনে একটু অবাক হলেন সানি! আসলে তিনি জানেন না, এই স্লো ফুড ব্যাপারটা আসলে কী! এরপর দুজনে দোকানে ঢুকে স্ট্রবেরি আর পেঁপে অর্ডার দিলেন। এরপর ফল খেতে খেতে সানির প্রশ্ন, ‘এই ফলই কী স্লো ফুড?’
স্লো ফুড বলতে এমন খাবারকে বোঝায়, যা সহজে হজম হয় আর অনেকক্ষণ পেটও ভরে রাখে। এগুলো ‘লো জিআই’ বা ‘নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচক’ সমৃদ্ধ খাবার। এই ‘জিআই’ মানে হলো, খাবার খাওয়ার পর রক্তে চিনি (শর্করা) কত দ্রুত বাড়ছে তা বোঝায়। সেই অনুসারেই ভাগ করা হয় উচ্চ জিআই আর নিম্ন জিআইয়ের খাবার।
যেমন ধরুন, সাদা ভাত বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের জিআই বেশি। মানে এগুলো খেলে রক্তে চিনি দ্রুত বাড়ে। আবার শস্য জাতীয় খাবার, কিছু ফল আর সবজির জিআই কম। সেগুলো খেলে রক্তে চিনি ধীরে বাড়ে।
এই কম জিআই-যুক্ত খাবার খেলে ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা বা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাই স্লো ফুড মানে শুধু পেট ভরানো নয়, বরং একটু সচেতন আর স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেছে নেওয়া।
স্লো ফুড মানে শুধু ধীরে খাওয়াই না, এর পেছনে আছে একটা আন্তর্জাতিক আন্দোলনের গল্প। ১৯৮৬ সালে ইতালির রোম শহরে এই আন্দোলন শুরু হয়। তখন ম্যাকডোনাল্ডসের মতো ফাস্ট ফুড দোকান খুব দ্রুত শহরে শহরে ছড়িয়ে পড়ছিল। এটা দেখে কিছু খাদ্যপ্রেমী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁদের নেতা ছিলেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট কার্লো পেট্রিনি। এই আন্দোলনের ভাষ্য ছিল, ‘আমরা ফাস্ট ফুড চাই না, স্লো ফুড চাই।’
রোমের ছোট শহরতলির সেই বাসিন্দারা শেষ পর্যন্ত ফাস্ট ফুডের এই দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়াকে থামাতে পারেননি। তবে এই পরাজয়ই জন্ম দেয় এক নতুন প্রতিরোধের। যা আজ বিশ্বজুড়ে পরিচিত ‘স্লো ফুড মুভমেন্ট’ নামে।
সেই ঘটনার ঠিক তিন বছর পর, এই আন্দোলনের নেতা কার্লো পেট্রিনি ও তাঁর সঙ্গীরা ফ্রান্সের প্যারিসে মিলিত হন। সেখানে ইউরোপের আরও ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা ছিল। সবাই মিলে তৈরি করেন ‘স্লো ফুড মেনিফেস্টো’। এই ইশতেহার আন্দোলনকে দেয় নতুন রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দেশ থেকে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে স্লো ফুডের ধারণা।
বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশের লাখ লাখ মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত।
স্লো ফুড খাওয়া এক ধরনের সচেতন জীবন কৌশলের অংশ। এই ভাবনার পেছনে আছে সাতটি নীতিও। প্রথমত, খাওয়ার সময় যেন আনন্দ পাই। তাড়াহুড়ো নয়, আস্তে আস্তে খাবারটা উপভোগ করা দরকার। দ্বিতীয়ত, আমাদের খাবারের যেসব রীতি আর ঐতিহ্য আছে, সেগুলোকে ধরে রাখা জরুরি।
তৃতীয়ত, স্থানীয় কৃষকের উৎপাদিত খাবারকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। মানে দূর থেকে আসা ফলমূল নয়, বরং পাশের হাটের সবজি বা চালেই ভরসা করা ভালো। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর পেছনের গল্পও নতুনদের জানানো উচিত।
আরেকটা বড় কথা হলো, অর্গানিক আর ঘরের রান্না করা খাবারে ফিরে যাওয়া। প্রক্রিয়াজাত খাবার যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল। ষষ্ঠ দিকটি হলো, ছোটদের বাগান করা বা গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহ দেওয়া। যাতে তারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকে। আর সবশেষে, যেভাবে খাবার তৈরি হচ্ছে, তার কারণে যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয়, এটাও আমাদের ভাবনায় রাখতে হবে।
খাদ্য তালিকায় ‘স্লো ফুড’ যোগ করা হয়ে উঠতে পারে সুস্থ জীবন-যাপনের প্রথম ধাপ। স্লো ফুডের উপকারিতা নিয়ে পুষ্টিবিদ শামিমা আহমেদ জানান, ফাস্ট ফুডের উপাদানগুলো স্বাস্থ্যকর নয়। এতে অনেক ক্ষতিকর ক্যালরি থাকে। স্লো ফুড বা সহজপাচ্য খাবার স্বাস্থ্যঝুঁকি কমায়, মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান থাকে যা ফ্যাটি লিভার, পিসিওসের মতো রোগ দূর করতে সাহায্য করে।’
আজকালের দৌড়ঝাঁপের জীবনে খাবার যেন শুধুই পেট ভরানোর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাইক্রোওয়েভে গরম করা রেডিমেড খাবার বা ফাস্ট ফুডের ঝলমলে প্যাকেটে আমাদের সময়ের অভাব আর স্বাদের বিরতি ও অপুষ্টি, সবই লুকিয়ে আছে। ঠিক এই ব্যস্ততার মাঝেই এক দমবন্ধ করা মুহূর্তে ফিরে আসে স্লো ফুডের ডাক।
সম্প্রতি জনপ্রিয় রেসলার জন সিনা ডব্লিউডব্লিউই থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি কেন শীর্ষে থেকেও রেসলিং ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চাইছেন? আর তাঁর জনপ্রিয়তার কারণ-ই বা কী!
১২ ঘণ্টা আগেটুইটারের (বর্তমান ‘এক্স’) সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি সম্প্রতি এক ব্যতিক্রমধর্মী অ্যাপ চালু করেছেন। যার নাম ‘বিটচ্যাট’। যা এক নতুন ধরনের মেসেজিং অ্যাপ। এই প্রযুক্তির বিশেষত্ব হচ্ছে, চ্যাট করার জন্য ইন্টারনেট বা মোবাইল সিগন্যালের কোনো দরকার নেই।
১৬ ঘণ্টা আগেসারা দেশে প্রায় ঝড় তুলেছে ঘটনাটি, বিশেষ করে রাজনীতির অঙ্গনে। ফোনালাপটি ছিল দুজন প্রভাবশালী ব্যক্তির। যেখানে এমন কিছু কথা আছে যা জনমনে তুলেছে নানা রকম প্রশ্ন। কেউ বলছে এটি ষড়যন্ত্র আবার কেউ বলছে ঘটনা সত্য।
১৯ ঘণ্টা আগেইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এক্সএআই-এর তৈরি চ্যাটবট গ্রক নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের কিছু প্রশ্নের জবাবে গ্রক অ্যাডলফ হিটলারের প্রশংসা করে নিজেকে ‘মেকা-হিটলার’ বলে পরিচয় দিয়েছে। এ ছাড়া একের পর এক ইহুদি বিদ্বেষী ও বর্ণবাদী মন্তব্য করেছে...
২ দিন আগে