leadT1ad

রেসলিং থেকে কেন বিদায় নিচ্ছেন ‘পোস্টার বয়’ জন সিনা

সম্প্রতি জনপ্রিয় রেসলার জন সিনা ডব্লিউডব্লিউই থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি কেন শীর্ষে থেকেও রেসলিং ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চাইছেন? আর তাঁর জনপ্রিয়তার কারণ-ই বা কী!

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ২১: ২৬
জন সিনা। ছবি: কোটাকু

জন সিনার নাম শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে রেসলিং রিংয়ের দৃশ্য। ক্যারিয়ারে দুই দশক পার করা এই পেশাদার রেসলারকে বলা হয় ডব্লিউডব্লিউ-এর ‘পোস্টার বয়’। ১৭ বার ডব্লিউডব্লিউই ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে তিনি করেছেন বিশ্ব রেকর্ড।

কিন্তু এবারে জন সিনা তাঁর ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চলেছেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিদায়ের সময় হয়ে গেছে।’২৫ বছরের লম্বা পথ পেরিয়ে ডিসেম্বরে রেসলিং রিংয়ে নামবেন শেষবারের মতো। এরপর? জন সিনা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ‘ফিরে আসার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।’

জন সিনা কেন রেসলিং ছেড়ে দিতে চাইলেন

সবকিছুর মতো রেসলিং ক্যারিয়ারও একটা সময় শেষ হয়, এটা জন সিনা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডব্লিউডব্লিউই রিং মাতানোর পর তিনি এখন ভাবছেন, এবার একটু থামা দরকার। ৪৮ বছর বয়সে আগের মতো ‘রেসলিং খেলা’ তাঁর জন্য আর সহজ নয়।

তবে শুধু শরীরের কথাই নয়। তিনি মনে করেন, নতুন প্রজন্মের রেসলারদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত। জন সিনা ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’ অনুষ্ঠানে গিয়ে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ভালোভাবে বিদায় নিতে চাই। যেন অন্যরা সুযোগ পায়। রেসলিংয়ের সঙ্গে এত বছরের সম্পর্কটা শুধু নিজের স্বার্থে ধরে রাখতে চাই না।’

জন সিনা। ছবি: ব্রিটানিকা
জন সিনা। ছবি: ব্রিটানিকা

আরেকটা কারণ অবশ্যই হলিউড। গত কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত সিনেমায় কাজ করছেন জন সিনা। বিশেষ করে কমেডি সিনেমায় তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ছে দ্রুত। সামনে তাঁর নতুন সিনেমাও মুক্তি পাবে। অভিনয়ের এই নতুন অধ্যায়ে তিনি আরও মনোযোগ দিতে চান।

বিদায়ের প্রস্তুতি

জন সিনার এই বিদায়ের সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেওয়া নয়। অনেক ভেবে-চিন্তেই এই পরিকল্পনা করেছেন তিনি। ছয় মাস আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬টি রাজ্যে রেসলিং করবেন। তারপর ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত বিদায় জানাবেন।

তবে বিদায় মানেই সবকিছুর ইতি নয়। জন সিনা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ডব্লিউডব্লিউইর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। রেসলিং না করলেও দর্শক হয়ে পাশে থাকবেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি আর রিংয়ে নামব না, কিন্তু গ্যালারিতে বসে উপভোগ করব।’

জন সিনা কেন এত জনপ্রিয়

জন সিনার জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজতে গেলে ফিরে তাকাতে হবে তাঁর সমগ্র ক্যারিয়ারের দিকে। সেখানে তিনি নিজেই হয়ে উঠেছেন বিশাল এক ব্র্যান্ড। তাঁর নাম বা মুখ যেখানে থাকে সেখানে ভিড় জমে যায়। জন সিনার কারণে সিনেমার বাড়তি কাটতিও হয়।

আরেকটা বড় কারণ, রেসলিং রিংয়ে তাঁর কথা বলা। যখন তিনি মাইক্রোফোন হাতে নেন, তখন সবাই চুপ করে শোনেন। প্রতিপক্ষকে শুধু রিংয়ে নয়, কথা দিয়েও চাপে ফেলতে পারেন তিনি। র‍্যান্ডি ওরটন, আন্ডারটেকার, সিএম পাংক, দ্য রক—এসব তারকার সঙ্গে তাঁর কথার লড়াই এখনো ইউটিউবে জনপ্রিয়।

পোলভোরা থেকে নেওয়া ছবি
পোলভোরা থেকে নেওয়া ছবি

জন সিনাকে ‘বিগ ম্যাচ জন’ বলা হয়। কারণ, বড় ম্যাচ মানেই সিনার চমক। শক্ত প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হলে তিনি সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়েন। কখনো ভক্তদের নিরাশ করেননি। তাই বড় ম্যাচের ভরসা হিসেবে তাঁর একটা আলাদা পরিচিতি তৈরি হয়েছে।

পরিশ্রম আর ধৈর্যের দিক থেকেও জন সিনা অনন্য। জিমে সবার আগে জন সিনাকে দেখা যায়। আবার জিম থেকে বাড়ি ফেরেন সবার পর। চোট পেলে দীর্ঘদিন বিশ্রাম না নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরে আসেন রিংয়ে। এই আত্মনিবেদনই তাঁকে করেছে আলাদা।

জন সিনা চ্যারিটির জন্যও বিখ্যাত। বিভিন্ন সময়ে অনেক রেসলিং তারকাকে জন সিনার মানবিকতার তারিফ করতেও দেখা গেছে। ‘মেক-আ-উইশ’-এর মাধ্যমে তিনি পাঁচ শর বেশি অসুস্থ শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন।

বিষয়:

খেলা
Ad 300x250

সম্পর্কিত