ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে চর্চিত হিন্দি সিনেমা ‘শোলে’ মুক্তির ৫০ বছর পর আজ আবার বড় পর্দায় আসছে। ইতালির বোলোনিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ইল সিনেমা রিত্রোভাতায় প্রথমবার দেখানো হবে ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধিত সংস্করণ কিংবা ডিরেক্টরস কাট। লিখেছেন তাহমীদ চৌধুরী
স্ট্রিম ডেস্ক
তখন ১৯৭৫ সাল। ভারতে জরুরি অবস্থা চলছে, রাষ্ট্রযন্ত্রের কড়া নজরদারি সর্বত্র। ঠিক সেই সময়েই মুক্তি পায় অমিতাভ বচ্চন অভিনীত হিন্দি সিনেমা ‘শোলে’। আপাতদৃষ্টিতে এটি ছিল দুই ভাড়াটে অপরাধী আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ ডাকাতের লড়াইয়ের গল্প।
এর গভীরে ছিল তৎকালীন নৈরাজ্যের প্রতিচ্ছবি, যেখানে আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। ছবির মূল ক্লাইম্যাক্সে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ঠাকুর বলবীর সিং তাঁর কাঁটাওয়ালা জুতা দিয়ে পিষে হত্যা করেন ডাকাত গব্বর সিংকে—যে গব্বর তাঁর দুই হাত কেটে নিয়েছিল। একজন সাবেক আইনরক্ষক নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছেন, ১৯৭৫ সালে, ভারতে যখন জরুরি অবস্থা চলছিল, সে সময় এমন দৃশ্য ‘বিপজ্জনক’ ঠাহর করে সেন্সর বোর্ড ওই দৃশ্য তথা ‘প্রতিশোধের আদিম সত্য’ অনুমোদন করেনি। ফলে পরিচালক রমেশ সিপ্পিকে বাধ্য হয়ে বদলাতে হয় ক্লাইম্যাক্স। নতুন দৃশ্যে ঠাকুর গব্বরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। কায়েম হয় রাষ্ট্র এবং আইনের শ্রেষ্ঠত্ব, আহত হয় ছবির শৈল্পিক সত্যতা।
ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে চর্চিত এই হিন্দি সিনেমাটি মুক্তির ৫০ বছর পর আবার বড় পর্দায় আসছে। ইতালির বোলোনিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ইল সিনেমা রিত্রোভাতায় প্রথমবার দেখানো হবে ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধিত সংস্করণ কিংবা ডিরেক্টরস কাট। দর্শকদের স্মৃতিতে স্মরণীয় করে রাখতে এক বিরাট খোলা জায়গায় স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অতীতে তাকালে দেখা যায়, ‘শোলে’র পথচলা কোনো দিনই মসৃণ ছিল না। মুক্তির পর প্রথম দিকের রিভিউ ছিল মারাত্মক হতাশাজনক। ‘ইন্ডিয়া টুডে’ এই সিনেমাকে ‘মরা অঙ্গার’ বলে অভিহিত করেছিল। আরেক পত্রিকা লিখেছিল, ‘ওয়েস্টার্ন জনরার একটি ব্যর্থ দেশীয় অনুকরণ।’ প্রেক্ষাগৃহে প্রথম কয়েক দিন দর্শকদের মধ্যে ছিল অস্বস্তিকর নীরবতা। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলায়। মুখে মুখে ছবির কথা ছড়িয়ে পড়ে। আর. ডি. বর্মণের সংগীত এবং সেলিম-জাভেদের ধারালো সংলাপ মানুষের মনে ধরে যায়। বিশেষ করে যখন ছবির সংলাপের রেকর্ড বাজারে আসে, তখন একপ্রকার সামাজিক বিস্ফোরণ ঘটে। ‘কিতনে আদমি থে?’ থেকে ‘তেরা কেয়া হোগা, কালিয়া?’ এই সব সংলাপ চায়ের দোকান থেকে রাজনৈতিক মঞ্চ, সর্বত্রই উচ্চারিত হতে থাকে। ‘শোলে’ তখন সিনেমার সংজ্ঞা ছাপিয়ে এক সাংস্কৃতিক মাইলফলকের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
সিনেমার প্রধান দুই চরিত্র জয় (অমিতাভ বচ্চন) আর বীরুর (ধর্মেন্দ্র) বন্ধুত্ব ছিল গত প্রজন্মের কাছে আদর্শের মতো। যখন ভাঙা সাইডকারের বাইকে বসে তারা গাইতেন, ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোড়েঙ্গে’, তখন শুধু ধর্মেন্দ্র আর অমিতাভ নয়, প্রেক্ষাগৃহের দর্শকরাও বাঁধা পড়ত এক অদৃশ্য সুতায়। কয়েন টস করার দৃশ্যটা মনে আছে নিশ্চয়ই? যেখানে জয় বারবার বীরুকে জিতিয়ে দিত। বন্ধুত্ব সম্ভবত তা-ই।
এরপর আসে ‘শোলে’র সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র গব্বর সিং। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে খলনায়কের সংজ্ঞাটাই বদলে দিয়েছিল এই চরিত্র। আমজাদ খানের সেই অট্টহাসি, খসখসে গলা আর নিষ্ঠুর চোখের চাহনি আজও দর্শকের শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেয়। ‘কিতনে আদমি থে?’ এই প্রশ্নটা কি শুধু সাম্বার প্রতি ছিল? না। এই প্রশ্ন ছিল গোটা ব্যবস্থার প্রতি তার স্পর্ধার আস্ফালন। শোনা যাচ্ছে, নতুন সংস্করণে গব্বরের নৃশংসতার আরও কিছু দিক তুলে ধরা হবে, যা তৎকালীন সেন্সর বোর্ড হজম করতে পারেনি। হয়তো আমরা সেই কুখ্যাত দৃশ্য দেখব, যেখানে ‘ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর’ বলতে বলতে গব্বর নিজের হাতে ঠাকুরের দুই হাত কেটে নিচ্ছে।
এটি তিন ঘণ্টার মধ্যে কাব্যিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, যা আমরা হয়তো সারা জীবনেও পাই না। অমিতাভ বচ্চন, ‘শোলে’ সিনেমার অভিনেতা
তবে ‘শোলে’র আবেদন শুধু তার গল্প বা সংলাপে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ভারতীয় সিনেমার কারিগরি উৎকর্ষের এক শিখর। ৭০এমএম পর্দায় রামগড়ের ল্যান্ডস্কেপ যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল, তা ছিল অভূতপূর্ব। এটিকে প্রায়ই ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলা হয়। সার্জিও লিওনের স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্নের অনুপ্রেরণা থাকলেও সিপ্পি তাঁকে সম্পূর্ণ ভারতীয় রূপে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। আর. ডি. বর্মনের আবহ সংগীত কি নিজেও একটা চরিত্র নয়? এমন প্রশ্ন করাই যায়। ট্রেনে ডাকাতির দৃশ্যে আবহ সংগীতের দুর্দান্ত ব্যবহার কিংবা ‘মেহবুবা মেহবুবা’র মাদকতা আজও মানুষের কানে লেগে আছে।
‘শোলে’ পুনরুদ্ধারের কাজটাও ছিল সিনেমার মতোই নাটকীয়। আসল ৭০এমএম প্রিন্ট কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছিল। ছবির নেগেটিভগুলোও প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ, ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুরের তত্ত্বাবধানে মুম্বাইয়ের এক গুদাম থেকে ছবির আসল ৩৫এমএম নেগেটিভ খুঁজে পাওয়া যায়। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় ব্রিটেন থেকে আরও কিছু উপাদান উদ্ধার করা হয়। এরপর বোলোগনার বিশ্বখ্যাত ল্যাবরেটরি লা ইমাজিন রিত্রোভাতাতে চলে দীর্ঘ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন জাগে, পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ এতটা প্রাসঙ্গিক? অমিতাভ বচ্চনের উত্তরই হয়তো সবচেয়ে সহজ এবং গভীর, ‘কারণ, এটি তিন ঘণ্টার মধ্যে কাব্যিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, যা আমরা হয়তো সারা জীবনেও পাই না।’ নতুন সংস্করণ হয়তো সেই কাব্যিক ন্যায়বিচার কিংবা ‘পোয়েটিক জাস্টিস’কে তার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নির্মম রূপে আমাদের সামনে তুলে ধরবে, নৈতিক এক আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হয়তো আমরা প্রশ্ন করব নিজেকেই, ন্যায় আর প্রতিশোধের মধ্যে সূক্ষ্ম রেখাটি ঠিক কোথায়!
কথায় আছে, যেকোনো ‘ভালো’ সিনেমার গভীরে নিজস্ব একটা সত্য লুকিয়ে থাকে। পঞ্চাশ বছর লম্বা সময়। সিনেমার ভাষা বদলেছে। বদলে গেছে দর্শক। পার হয়েছে একাধিক প্রজন্ম। তবু পঞ্চাশ বছর পরও রামগড়ের সেই অঙ্গার তথা ‘শোলে’ আরও উজ্জ্বল হয়ে আমাদের প্রচলিত সভ্যতার দিকে আজ তার সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটি ছুঁড়ে দিচ্ছে।
তখন ১৯৭৫ সাল। ভারতে জরুরি অবস্থা চলছে, রাষ্ট্রযন্ত্রের কড়া নজরদারি সর্বত্র। ঠিক সেই সময়েই মুক্তি পায় অমিতাভ বচ্চন অভিনীত হিন্দি সিনেমা ‘শোলে’। আপাতদৃষ্টিতে এটি ছিল দুই ভাড়াটে অপরাধী আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ ডাকাতের লড়াইয়ের গল্প।
এর গভীরে ছিল তৎকালীন নৈরাজ্যের প্রতিচ্ছবি, যেখানে আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচারব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। ছবির মূল ক্লাইম্যাক্সে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ঠাকুর বলবীর সিং তাঁর কাঁটাওয়ালা জুতা দিয়ে পিষে হত্যা করেন ডাকাত গব্বর সিংকে—যে গব্বর তাঁর দুই হাত কেটে নিয়েছিল। একজন সাবেক আইনরক্ষক নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছেন, ১৯৭৫ সালে, ভারতে যখন জরুরি অবস্থা চলছিল, সে সময় এমন দৃশ্য ‘বিপজ্জনক’ ঠাহর করে সেন্সর বোর্ড ওই দৃশ্য তথা ‘প্রতিশোধের আদিম সত্য’ অনুমোদন করেনি। ফলে পরিচালক রমেশ সিপ্পিকে বাধ্য হয়ে বদলাতে হয় ক্লাইম্যাক্স। নতুন দৃশ্যে ঠাকুর গব্বরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। কায়েম হয় রাষ্ট্র এবং আইনের শ্রেষ্ঠত্ব, আহত হয় ছবির শৈল্পিক সত্যতা।
ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে চর্চিত এই হিন্দি সিনেমাটি মুক্তির ৫০ বছর পর আবার বড় পর্দায় আসছে। ইতালির বোলোনিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ইল সিনেমা রিত্রোভাতায় প্রথমবার দেখানো হবে ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধিত সংস্করণ কিংবা ডিরেক্টরস কাট। দর্শকদের স্মৃতিতে স্মরণীয় করে রাখতে এক বিরাট খোলা জায়গায় স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অতীতে তাকালে দেখা যায়, ‘শোলে’র পথচলা কোনো দিনই মসৃণ ছিল না। মুক্তির পর প্রথম দিকের রিভিউ ছিল মারাত্মক হতাশাজনক। ‘ইন্ডিয়া টুডে’ এই সিনেমাকে ‘মরা অঙ্গার’ বলে অভিহিত করেছিল। আরেক পত্রিকা লিখেছিল, ‘ওয়েস্টার্ন জনরার একটি ব্যর্থ দেশীয় অনুকরণ।’ প্রেক্ষাগৃহে প্রথম কয়েক দিন দর্শকদের মধ্যে ছিল অস্বস্তিকর নীরবতা। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলায়। মুখে মুখে ছবির কথা ছড়িয়ে পড়ে। আর. ডি. বর্মণের সংগীত এবং সেলিম-জাভেদের ধারালো সংলাপ মানুষের মনে ধরে যায়। বিশেষ করে যখন ছবির সংলাপের রেকর্ড বাজারে আসে, তখন একপ্রকার সামাজিক বিস্ফোরণ ঘটে। ‘কিতনে আদমি থে?’ থেকে ‘তেরা কেয়া হোগা, কালিয়া?’ এই সব সংলাপ চায়ের দোকান থেকে রাজনৈতিক মঞ্চ, সর্বত্রই উচ্চারিত হতে থাকে। ‘শোলে’ তখন সিনেমার সংজ্ঞা ছাপিয়ে এক সাংস্কৃতিক মাইলফলকের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
সিনেমার প্রধান দুই চরিত্র জয় (অমিতাভ বচ্চন) আর বীরুর (ধর্মেন্দ্র) বন্ধুত্ব ছিল গত প্রজন্মের কাছে আদর্শের মতো। যখন ভাঙা সাইডকারের বাইকে বসে তারা গাইতেন, ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোড়েঙ্গে’, তখন শুধু ধর্মেন্দ্র আর অমিতাভ নয়, প্রেক্ষাগৃহের দর্শকরাও বাঁধা পড়ত এক অদৃশ্য সুতায়। কয়েন টস করার দৃশ্যটা মনে আছে নিশ্চয়ই? যেখানে জয় বারবার বীরুকে জিতিয়ে দিত। বন্ধুত্ব সম্ভবত তা-ই।
এরপর আসে ‘শোলে’র সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র গব্বর সিং। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে খলনায়কের সংজ্ঞাটাই বদলে দিয়েছিল এই চরিত্র। আমজাদ খানের সেই অট্টহাসি, খসখসে গলা আর নিষ্ঠুর চোখের চাহনি আজও দর্শকের শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেয়। ‘কিতনে আদমি থে?’ এই প্রশ্নটা কি শুধু সাম্বার প্রতি ছিল? না। এই প্রশ্ন ছিল গোটা ব্যবস্থার প্রতি তার স্পর্ধার আস্ফালন। শোনা যাচ্ছে, নতুন সংস্করণে গব্বরের নৃশংসতার আরও কিছু দিক তুলে ধরা হবে, যা তৎকালীন সেন্সর বোর্ড হজম করতে পারেনি। হয়তো আমরা সেই কুখ্যাত দৃশ্য দেখব, যেখানে ‘ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর’ বলতে বলতে গব্বর নিজের হাতে ঠাকুরের দুই হাত কেটে নিচ্ছে।
এটি তিন ঘণ্টার মধ্যে কাব্যিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, যা আমরা হয়তো সারা জীবনেও পাই না। অমিতাভ বচ্চন, ‘শোলে’ সিনেমার অভিনেতা
তবে ‘শোলে’র আবেদন শুধু তার গল্প বা সংলাপে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ভারতীয় সিনেমার কারিগরি উৎকর্ষের এক শিখর। ৭০এমএম পর্দায় রামগড়ের ল্যান্ডস্কেপ যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল, তা ছিল অভূতপূর্ব। এটিকে প্রায়ই ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলা হয়। সার্জিও লিওনের স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্নের অনুপ্রেরণা থাকলেও সিপ্পি তাঁকে সম্পূর্ণ ভারতীয় রূপে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। আর. ডি. বর্মনের আবহ সংগীত কি নিজেও একটা চরিত্র নয়? এমন প্রশ্ন করাই যায়। ট্রেনে ডাকাতির দৃশ্যে আবহ সংগীতের দুর্দান্ত ব্যবহার কিংবা ‘মেহবুবা মেহবুবা’র মাদকতা আজও মানুষের কানে লেগে আছে।
‘শোলে’ পুনরুদ্ধারের কাজটাও ছিল সিনেমার মতোই নাটকীয়। আসল ৭০এমএম প্রিন্ট কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছিল। ছবির নেগেটিভগুলোও প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ, ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুরের তত্ত্বাবধানে মুম্বাইয়ের এক গুদাম থেকে ছবির আসল ৩৫এমএম নেগেটিভ খুঁজে পাওয়া যায়। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় ব্রিটেন থেকে আরও কিছু উপাদান উদ্ধার করা হয়। এরপর বোলোগনার বিশ্বখ্যাত ল্যাবরেটরি লা ইমাজিন রিত্রোভাতাতে চলে দীর্ঘ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন জাগে, পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ এতটা প্রাসঙ্গিক? অমিতাভ বচ্চনের উত্তরই হয়তো সবচেয়ে সহজ এবং গভীর, ‘কারণ, এটি তিন ঘণ্টার মধ্যে কাব্যিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, যা আমরা হয়তো সারা জীবনেও পাই না।’ নতুন সংস্করণ হয়তো সেই কাব্যিক ন্যায়বিচার কিংবা ‘পোয়েটিক জাস্টিস’কে তার সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নির্মম রূপে আমাদের সামনে তুলে ধরবে, নৈতিক এক আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হয়তো আমরা প্রশ্ন করব নিজেকেই, ন্যায় আর প্রতিশোধের মধ্যে সূক্ষ্ম রেখাটি ঠিক কোথায়!
কথায় আছে, যেকোনো ‘ভালো’ সিনেমার গভীরে নিজস্ব একটা সত্য লুকিয়ে থাকে। পঞ্চাশ বছর লম্বা সময়। সিনেমার ভাষা বদলেছে। বদলে গেছে দর্শক। পার হয়েছে একাধিক প্রজন্ম। তবু পঞ্চাশ বছর পরও রামগড়ের সেই অঙ্গার তথা ‘শোলে’ আরও উজ্জ্বল হয়ে আমাদের প্রচলিত সভ্যতার দিকে আজ তার সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নটি ছুঁড়ে দিচ্ছে।
ঢাকায় একসময় আফিম থেকে তৈরি নেশাদ্রব্যের ব্যাপক প্রচলন ছিল। ফেসবুকে পুরান ঢাকার একটি আফিমের দোকানের ছবি মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা, 'আফিমের দোকান'। চার শ বছরের ঐহিত্যবাহী শহর ঢাকায় প্রথম কাদের হাত ধরে এসেছিল আফিম নামের নেশাদ্রব্য? কোন স্বার্থে কারা এর বিস্তার ঘটালেন?
১৪ ঘণ্টা আগেক্যানকুন আসলে চিচেন ইত্জা ভ্রমণের গেটওয়ে। চিচেন ইত্জায় যাঁরা বেড়াতে যান, তাঁদের অনেকেই প্রথমে এখান থেকে যাত্রা শুরু করেন। সাদাবালির দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের জন্য ক্যানকুন খুবই বিখ্যাত। তাই মেক্সিকোর অন্যতম ব্যস্ত এই ক্যানকুন বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশের মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।
১ দিন আগেরাশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ও তার পরপরই সুনামির ঢেউ আবার নতুন করে মনে করিয়ে দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে মানুষ কতটা অসহায়। এই ঘটনায় রাশিয়া, জাপান, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও জারি হয়েছে সুনামি সতর্কতা। এমন খবরের পর প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশ কি সুনামির ঝুঁকিতে আছে?
২ দিন আগেহাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গান নিয়ে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই। তবে গেল তিরিশ বছরে বাংলাদেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি একজন অনন্য একজন শিল্পী।
৩ দিন আগে